চবি শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশায় ছাত্র সংসদ
Published: 2nd, August 2025 GMT
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সূতিকাগার ছিল দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। ছাত্র-জনতার এ অভ্যুত্থান সফল হওয়ার পর ক্যাম্পাসগুলোতে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবি জোরালো হয়। এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা পাবে তাদের কাঙ্ক্ষিত প্রতিনিধিদের, যারা বিশ্ববিদ্যালয়ের যাবতীয় সংকটে এগিয়ে আসবে সর্বাগ্রে।
ইতোমধ্যে দেশের স্বায়ত্তশাসিত তিন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে। এদিকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) চাকসুর তফসিলও খুব শীগ্রই ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
প্রতিষ্ঠার সুদীর্ঘ ৫৮ বছরে চাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে মাত্র ছয়বার। সর্বশেষ চাকসু নির্বাচন হয়েছিল ১৯৯০ সালে। এরপর দীর্ঘ ৩৪ বছরে শিক্ষার্থীরা পাননি তাদের যোগ্য প্রতিনিধিদের। তাই এবারের চাকসু নির্বাচন নিয়ে শিক্ষার্থীদের আকর্ষণ ও প্রত্যাশা অত্যধিক। শিক্ষার্থীরা বলছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজারো সমস্যার একমাত্র সমাধান সচল চাকসু।
আরো পড়ুন:
ছাত্রী হলের সান্ধ্য আইন নিয়ে প্রচারিত সংবাদ ভিত্তিহীন: চবি প্রক্টর
পরীক্ষা না দিয়েও পাস ছাত্রলীগ নেত্রী, ৬ মাসেও জমা হয়নি তদন্ত প্রতিবেদন
কেমন চাকসু চান শিক্ষার্থীরা- এমন প্রশ্নে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন তাদের মতামত। রাইজিংবিডি ডটকমের পাঠকদের জন্য তাদের প্রত্যাশা ও ভাবনাগুলো তুলে ধরা হলো।
চাকসু হবে সব অধিকার আদায়ের মাধ্যম
বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে যদি সবচেয়ে অবহেলিত কেউ থেকে থাকে, তবে তা শিক্ষার্থীরা। দীর্ঘদিনের লেজুড়বৃত্তিক রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড শিক্ষার্থীদের অধিকারবোধকে আড়ালে ঠেলে দিয়েছে। এ অবস্থায় শিক্ষার্থীদের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠা ও ছাত্র রাজনীতির সুষ্ঠু অনুশীলনের জন্য চাকসু ও হল সংসদের বিকল্প নেই।
চাকসু হলো আমাদের প্রত্যাশার বাতিঘর; যা শিক্ষার্থীদের পরিবহন, আবাসন, ক্যান্টিনের খাবারের মান, প্রশাসনিক জটিলতা, গবেষণা ও সংস্কৃতি চর্চার সুযোগ এবং একটি শিক্ষাবান্ধব ক্যাম্পাস নিশ্চিত করা থেকে শুরু করে সব অধিকার আদায়ের মাধ্যম। এটি হবে নেতৃত্ব তৈরির একটি স্বাধীন প্ল্যাটফর্ম, যেখানে থাকবে না কারো আনুগত্যের সংস্কৃতি বা বিশেষ কোনো গোষ্ঠীকে খুশি করার চেষ্টা।
আমরা এমন একটি চাকসু চাই, যেখানে থাকবে গণতান্ত্রিক চর্চা, নিয়মিত নির্বাচন, জবাবদিহিতা ও শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ। চাকসু যেন পরিণত না হয় দখলদারিত্ব, দমন-পীড়ন কিংবা অধিকার হরণের হাতিয়ার। বরং এটি হয়ে উঠুক শিক্ষার্থীদের অধিকার বাস্তবায়নের প্রতীক এবং নতুন বাংলাদেশের জন্য অনুকরণীয় নেতৃত্ব তৈরির সূতিকাগার।
(লেখক: মো.
একপেশে আধিপত্য বজায় রাখতেই চাকসু নির্বাচন নিয়ে গড়িমসি চলছে
চাকসু বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অধিকার। শিক্ষার্থীদের অধিকার, শিক্ষার মান ও গণতান্ত্রিক নেতৃত্বের চর্চার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর ১৯৬৬ সালে চাকসু প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠার পর থেকে মোট ছয়বার চাকসু নির্বাচন হয়েছে। তবে ১৯৯০ সালের পর থেকে আর কোনো ছাত্র সংসদের নির্বাচন এখানে অনুষ্ঠিত হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে সঠিক নেতৃত্বের বিকাশ না ঘটায় প্রশাসনে ছাত্রদের প্রতিনিধিত্বও নিশ্চিত হচ্ছে না। ফলে প্রশাসনের লাগামহীন দুর্নীতি অনিয়ম নিয়ে কথা বলার মতো ঐক্য নির্ভর কোনো মাধ্যম শিক্ষার্থীরা পাচ্ছে না।
তবে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মধ্যে নতুন আশার সঞ্চার হয়েছিল। কিন্তু ১ বছর পেরিয়ে গেলেও বারবার ছাত্র সংগঠন এবং শিক্ষার্থীরা চাকসুর দাবি জানালেও প্রশাসন যেন বধির হয়ে আছে। মূলত প্রশাসন তাদের একপেশে আধিপত্য বজায় রাখতেই চাকসু নির্বাচন নিয়ে গড়িমসি করছে। ঢাকা, রাজশাহী এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হয়েছে। অতএব, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যে কালক্ষেপণ করা হচ্ছে, এটা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি শিক্ষার্থীর জন্যই বিব্রতকর। আমরা চাই, দ্রুত সময়ে প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষ করে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হোক। চাকসু প্রশাসনের দয়ায় দেওয়া কোনো বিষয় নয়, এটা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অধিকার।
(লেখক: আকিজ মাহমুদ, ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষ, ইতিহাস বিভাগ)
চাকসুর প্রতিনিধিরা যেন শুধু সিনিটের গ্যালারিতে দর্শক না হয়
চাকসু মানে শুধু একটি নির্বাচন না, বরং প্রতিনিধিত্ব। চবি শিক্ষার্থীরা এমন একটি ছাত্র সংসদ চান, যা শুধুই আনুষ্ঠানিকতা নয়, বরং চিন্তা, সংলাপ ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের একটি কার্যকর প্ল্যাটফর্ম হবে। যেখানে শিক্ষার্থীদের স্বার্থ রক্ষাই হবে মূল লক্ষ্য, যা শিক্ষার্থীদের বিশ্বাস আর অধিকার প্রতিষ্ঠার একটি মাধ্যম হবে। আমরা এমন এক ছাত্র সংসদ চাই, যেখানে আবাসিক হলগুলোর সমস্যা, অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ, বাস-ট্রেনের নিরাপত্তাহীন যাত্রা, লাইব্রেরির অব্যবস্থাপনা, মানসিক স্বাস্থ্য ও অ্যাকাডেমিক সংকট নিয়ে নিয়মিত আলোচনা হবে।
শিক্ষার্থীরা এমন চাকসু চায়, যেখানে শিক্ষার্থীদের কণ্ঠ বিশ্ব দরবারে পৌঁছে দিবে। যেই কণ্ঠে উচ্চারিত হবে গঠনমূলক সমালোচনা আর নীতিনির্ধারণের ভাষা। চাকসু হবে এমন, যেখানে নিপীড়নের বিরুদ্ধে শব্দ উঠবে, নিয়মের নামে অন্যায়ের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া হবে। চাকসু হবে একটি সচল ছাত্র সংসদ, যার প্রতিনিধিগণ শুধু সিনেটের গ্যালারিতে দর্শক হবেন না, বরং তারা অংশীদার হয়ে দাঁড়াবে। তারা শিক্ষার্থীদের কথা বলবে। তারা প্রশ্ন করবে, প্রস্তাব রাখবে, চাপ তৈরি করবে।
একটা চাকসু, যা নির্বাচনের পর আর নিস্তব্ধ থাকবে না, বরং সেশনজট থেকে শুরু করে শিক্ষার্থীদের অধিকার, নিরাপত্তা, আবাসন ব্যবস্থা থেকে শুরু করে সব দাবি আদায়ে অপ্রতিরোধ্য কণ্ঠস্বর হবে। চাকসু হবে চবি শিক্ষার্থীদের চেতনার প্রতিধ্বনি শুধু কথায় নয়, বরং কাজে ও কর্ষণে।
(লেখক: মোহাম্মদ ফুয়াদ হোসেন, ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষ, আরবি সাহিত্য বিভাগ)
নির্বাচনে ছাত্র সংগঠনগুলোর পারস্পরিক সহাবস্থান নিশ্চিত হোক
আমি চাই, শিক্ষার্থীদের আত্মমর্যাদা ও নেতৃত্ব বিকাশের অন্যতম মাধ্যম হিসেবে চাকসু নির্বাচন হোক স্বচ্ছ ও সৌহার্দপূর্ণ পরিবেশে। দীর্ঘ ৩ দশকেরও বেশি সময় ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের নির্বাচিত প্রতিনিধি না থাকায় যে জটিলতার মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে, তা কাটিয়ে উঠার জন্য অন্যান্য ক্যাম্পাসের চেয়ে আমাদের আকাঙ্ক্ষা ছিল বেশি। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান পরবর্তী চবি প্রশাসনের কাছে আমাদের প্রত্যাশা ছিল, তারা দ্রুত সময়ের মধ্যে ফ্যাসিবাদের সহযোগীদের বিচারের আওতায় নিয়ে এসে শিক্ষার্থীদের প্রাণের দাবি, চাকসু নির্বাচনের রোডম্যাপ দিবেন। কিন্তু পরবর্তীতে দেখা গেল আমাদের হতাশ হতে হয়েছে।
স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে চবির শিক্ষার্থীদের আবাসনের সংকট বেশি। সর্ববৃহৎ ক্যাম্পাস ও ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে যাতায়াত নিয়ে সবসময় দুর্ভোগ পোহাতে হয়। শিক্ষার্থীদের সব সমস্যা নিরসন ও অধিকার নিয়ে কাজ করার সুযোগ দ্রুত ফিরে আসুক। আমি আরো চাই, সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে যারা বিশ্ববিদ্যালয়ের নানাবিধ সমস্যা সমাধান ও উন্নয়ন নিয়ে সোচ্চার, তারা যেন নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন।
হাজার হাজার ছাত্র-জনতার রক্তের বিনিময়ে যে নতুন বাংলাদেশ আমরা পেয়েছি, সেখানে যেন আগের মত কোনো সহিংস কর্মকাণ্ডে কেউ না জড়ায়। সব ছাত্র সংগঠন পারস্পরিক সহাবস্থানের মাধ্যমে সুন্দর চাকসু নির্বাচন আয়োজনে সহযোগিতা করুক।
(লেখক: মুসলেমা খানম, স্নাতকোত্তর, উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগ)
সব কার্যক্রমে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত হোক
চাকসু হোক আমার কণ্ঠস্বর। একটি স্বায়ত্বশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হিসেবে চাকসু আমার অধিকার। আমি মনে করি, এই সময়ে এসেও আমাকে চাকসু চাইতে হচ্ছে, এটি প্রশাসনের সব থেকে বড় ব্যর্থতা। পরবর্তীতে যেন আমাদের কখনো চাকসু নির্বাচনের জন্য এভাবে কাঠখড় পোড়াতে না হয়, সেই সুযোগ তৈরি করতেই এই মুহূর্তে সব থেকে বেশি প্রয়োজন চাকসু নির্বাচন। যেখানে একজন শিক্ষার্থী শিক্ষার্থীদের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করবে, তুলে ধরবে তাদের সব চলমান সমস্যা এবং সেই সমস্যা সমাধানে সরব থাকবে সবার আগে। প্রশাসনিকসহ সব কার্যক্রমে শিক্ষার্থীদের সমান অংশগ্রহণের সুযোগ তৈরি করবে, এমন একটি চাকসু চাই।
শিক্ষার্থীদের অ্যকাডেমিক ব্যবস্থা, পরীক্ষার ফলাফল পুনর্বিবেচনা এসব ক্ষেত্রে যেন প্রশাসনের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতেও চাকসু প্রয়োজন। চাকসু একটি গণতান্ত্রিক অনুশীলন। এই গণতান্ত্রিক চর্চাই আমাদের ভবিষ্যতে নেতৃত্ব গঠনে সহায়তা করবে।
(লেখক: শারমিন আক্তার, ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষ, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ)
সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ নির্বাচনে চাকসুর প্রতিনিধি নির্বাচিত হোক
দীর্ঘ ৩৫ বছর ধরে চাকসু বন্ধ রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় চাকসু নামে একটি ভবন থাকলেও সেটা ভাতের হোটেল নামেই অধিক পরিচিত। অথচ এটি হওয়া উচিত ছিল শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক অধিকার আদায়ের জন্য একটি প্লাটফর্ম।
কেমন চাকসু চাই বলতে গেলে বলতে হয়- যেখানে দল-মত নির্বিশেষে শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ের জন্য আওয়াজ উঠবে- সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ একটি নির্বাচনের মাধ্যমে চাকসুর প্রতিনিধি নির্বাচিত হবে। আমি প্রত্যাশা রাখি, তারাই হয়ে উঠবে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবি আদায়ের সম্মিলিত কণ্ঠস্বর।
(লেখক: তামান্না খান, ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষ, লোকপ্রশাসন বিভাগ)
ঢাকা/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর গণত ন ত র ক শ ক ষ বর ষ র তফস ল আম দ র র জন য সমস য গ রহণ
এছাড়াও পড়ুন:
উয়েফার বিরুদ্ধে ক্ষতিপূরণের মামলা করবে রিয়াল মাদ্রিদ
ইউরোপীয় ফুটবল সংস্থা উয়েফার বিরুদ্ধে ক্ষতিপূরণ দাবি করে মামলা করতে যাচ্ছে রিয়াল মাদ্রিদ। দাবিকৃত ক্ষতিপূরণের অঙ্ক হতে পারে ৪৫০ কোটি ইউরো, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ৬৩ হাজার কোটি টাকার বেশি। ইউরোপিয়ান সুপার লিগ নিয়ে স্পেনের একটি আদালতের সর্বশেষ রায়ের পর এমন অবস্থান নিয়েছে রিয়াল।
সুপার লিগের পরিকল্পনা আটকে দিয়ে উয়েফা ইউরোপীয় প্রতিযোগিতা আইন ভঙ্গ করেছে বলে এর আগে যে রায় দেওয়া হয়েছিল, সেই রায়ের বিরুদ্ধে করা উয়েফার আপিল বুধবার মাদ্রিদের প্রাদেশিক আদালত খারিজ করে দেন। একই আদালত স্প্যানিশ লিগ লা লিগা এবং স্প্যানিশ ফুটবল ফেডারেশনের আপিলও খারিজ করেন।
২০২৩ সালের ডিসেম্বরে ইউরোপীয় ইউনিয়নের আদালত সিজেইউ রায় দিয়েছিল, ২০২১ সালে উয়েফা ও ফিফা যে নিয়মগুলো প্রস্তাবিত সুপার লিগ ঠেকাতে ব্যবহার করেছিল, তা ইউরোপীয় আইনের পরিপন্থী। সেই রায় আপিলের পরও বহাল থাকায় রিয়াল মাদ্রিদ এক বিবৃতিতে বলেছে, তারা এই রায়ে ‘আনন্দিত’, কারণ এটি ‘ক্লাবের উল্লেখযোগ্য ক্ষতির ক্ষতিপূরণ দাবি করার পথ খুলে দিয়েছে।’
আপিল খারিজের পর বিবৃতি দিয়েছে উয়েফাও। ইউরোপীয় ফুটবল সংস্থাটি বলেছে, সর্বশেষ এই রায় ‘২০২১ সালে ঘোষিত এবং ইতিমধ্যে পরিত্যক্ত ‘সুপার লিগ’ প্রকল্পকে বৈধতা দেয় না। একই সঙ্গে এটি উয়েফার ২০২২ সালে গৃহীত ও ২০২৪ সালে হালনাগাদ করা বর্তমান অনুমোদন-নিয়মকেও খর্ব করে না, যেগুলো এখনো কার্যকর রয়েছে।’
আদালতের রায় বিস্তারিত পর্যালোচনার পর পরবর্তী পদক্ষেপ সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে জানিয়েছে উয়েফা। আর লা লিগা জানিয়েছে, তারা আদালতের নতুন রায়কে সম্মান জানালেও এর গুরুত্বকে খাটো করে দেখছে। লিগ কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, ‘এই সিদ্ধান্ত কোনো নির্দিষ্ট প্রতিযোগিতা কাঠামো অনুমোদন বা সমর্থন করে না, আর ২০২১ সালে ঘোষিত প্রাথমিক প্রকল্প সম্পর্কেও কিছু বলে না, যা পরবর্তীতে আয়োজকেরা পরিবর্তন করেছে।’
২০২১ সালের এপ্রিলে স্পেন, ইতালি ও ইংল্যান্ডের ১২টি ক্লাবের অংশগ্রহণে চালু হওয়ার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই সুপার লিগ প্রকল্প ভেস্তে যায়। প্রথমে ইংলিশ ক্লাবগুলো, পরে ধীরে ধীরে ইতালি ও স্পেনের ক্লাবগুলো সুপার লিগ থেকে সরে আসে। তবে রিয়াল মাদ্রিদ এবং আয়োজক কর্তৃপক্ষ এ২২ স্পোর্টস ম্যানেজমেন্ট এ নিয়ে উয়েফার সঙ্গে আলোচনা ও আইনি লড়াই চালিয়ে যায়।
মাদ্রিদভিত্তিক দৈনিক এএস জানিয়েছে, রিয়াল মাদ্রিদ ও সুপার লিগের আয়োজক সংস্থা এ২২-এর আইনজীবীরা ইতিমধ্যেই উয়েফার বিরুদ্ধে ক্ষতিপূরণের দাবি প্রস্তুত করছেন। এই পত্রিকার সূত্রমতে, ক্ষতিপূরণের পরিমাণ দাঁড়াতে পারে প্রায় ৪,৫০০ মিলিয়ন ইউরো, যা আর্থিক ক্ষতি, সম্ভাব্য লাভ হারানো এবং ভাবমূর্তিতে নেতিবাচক প্রভাব হিসেবে যোগ করা হচ্ছে।