ঢাকায় আসছেন টিআই চেয়ারপারসন ফ্রাঁসোয়া ভ্যালেরিয়াঁ
Published: 1st, September 2025 GMT
বার্লিনভিত্তিক আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের (টিআই) আন্তর্জাতিক পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারপারসন ফ্রাঁসোয়া ভ্যালেরিয়াঁ মঙ্গলবার তিন দিনের সফরে ঢাকায় আসছেন।
২০২৩ সালে টিআই পরিচালনা পর্ষদের চেয়ার নির্বাচিত হওয়ার পর এটি তার প্রথম বাংলাদেশ সফর।
আরো পড়ুন:
রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়ন স্বাভাবিক, দলগুলোর আত্মজিজ্ঞাসার এখনই সময়: টিআইবি
বাজেটে কালো টাকা সাদা করার বিধান সংবিধান পরিপন্থি: টিআইবি
একশটিরও বেশি দেশের জাতীয় চ্যাপ্টারের মাধ্যমে কর্মরত বৈশ্বিক দুর্নীতিবিরোধী কোয়ালিশন টিআই-এর সর্ববৃহৎ ও অন্যতম সক্রিয় চ্যাপ্টার হিসেবে স্বীকৃত ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)-এর অতিথি হিসেবে বাংলাদেশে আসছেন তিনি।
দুর্নীতি প্রতিরোধ ও সুশাসন প্রতিষ্ঠায় বৈশ্বিক ও জাতীয় পর্যায়ের অভিজ্ঞতা বিনিময়, টিআইবির কার্যক্রম, সম্ভাবনা এবং চ্যালেঞ্জসমূহের প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা বিনিময় তার এই সফরের মূল উদ্দেশ্য। তিন দিনের সফরে টিআইবির কর্মী, টিআইবির উদ্যোগে দেশের ৪৫টি অঞ্চলে স্বেচ্ছাসেবাভিত্তিক সচেতন নাগরিক কমিটির (সনাক) সভাপতি, তরুণদের প্ল্যাটফরম ৬৫টি ইয়ুথ এনগেজমেন্ট অ্যান্ড সাপোর্ট (ইয়েস) নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময়ের সুযোগ নেবেন তিনি। পাশাপাশি, তিনি সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ের সংশ্লিষ্ট অংশীজন, নাগরিক সমাজ সদস্য এবং গণমাধ্যম ব্যক্তিত্বদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন।
খ্যাতিমান শিক্ষাবিদ ও গবেষক ফ্রাঁসোয়া ভ্যালেরিয়াঁ টিআই-এর আন্তর্জাতিক পরিচালনা পর্ষদের সদস্য হিসেবে ২০১৯ সাল থেকে সক্রিয় ছিলেন এবং বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কমিটিতে কাজ করেছেন। ২০১৩ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত তিনি টিআই-ফ্রান্সের বোর্ড সদস্য হিসেবে অবৈধ অর্থ প্রবাহ ও পাচার, সংশ্লিষ্ট কৌশলগত আইনি পদক্ষেপ ও রাজনৈতিক শুদ্ধতা ইত্যাদি বিষয়ে কাজ করেছেন। এর আগে তার নেতৃত্বে টিআই সেক্রেটারিয়েটের উদ্যোগে ব্যবসায়িক শুদ্ধতার অংশ হিসেবে জি-২০ পর্যায়ে আর্থিক নিয়ন্ত্রণ ও দুর্নীতিরোধ বিষয়ক অধিপরামর্শ কার্যক্রম শুরু হয়।
ফ্রান্সের নামকরা ইকোল পলিটেকনিক এবং ইকোল দে মাইন্স দে প্যারিস থেকে ইতিহাসে স্নাতক ও পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি। পেশাগত জীবনে সরকারি ও বেসরকারি উভয় খাতে কাজ করেছেন এবং ফ্রান্সের খ্যাতনামা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সিএনএএমে সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/সাইফ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ট আইব কর ছ ন ট আইব সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
সুদানে কারা গণহত্যা চালাচ্ছে, আরব আমিরাতের ভূমিকা কী
২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে সুদান এক ভয়াবহ গৃহযুদ্ধের মধ্যে পড়ে। ক্ষমতার নিয়ন্ত্রণ নিতে দেশটির সামরিক বাহিনী এবং শক্তিশালী আধা সামরিক গোষ্ঠী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) মধ্যে শুরু হওয়া তীব্র লড়াই থেকে এই গৃহযুদ্ধ শুরু হয়। এই যুদ্ধে পশ্চিম দারফুর অঞ্চলে দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি হয় এবং সেখানে গণহত্যা সংঘটিত হওয়ার অভিযোগও ওঠে।
সম্প্রতি আরএসএফ এল-ফাশের শহরটি দখল করার পর এর বাসিন্দাদের নিয়ে বড় ধরনের উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। এই সংঘাতে এখন পর্যন্ত সারা দেশে দেড় লাখের বেশি মানুষ মারা গেছেন এবং প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ মানুষ নিজেদের ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়েছেন। জাতিসংঘ এটিকে বিশ্বের বৃহত্তম মানবিক সংকট বলে অভিহিত করেছে।
পাল্টাপাল্টি অভ্যুত্থান ও সংঘাতের শুরু১৯৮৯ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসা দীর্ঘদিনের প্রেসিডেন্ট ওমর আল-বশিরকে ২০১৯ সালে ক্ষমতাচ্যুত করার পর থেকেই দফায় দফায় যে উত্তেজনা চলছিল, তার সর্বশেষ পরিস্থিতি হচ্ছে বর্তমান গৃহযুদ্ধ।
বশিরের প্রায় তিন দশকের শাসনের অবসানের দাবিতে বিশাল জনবিক্ষোভ হয়েছিল। তারই প্রেক্ষিতে তাঁকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেয় সেনাবাহিনী। কিন্তু দেশটির মানুষ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলন চালিয়ে যায়। যার পরিপ্রেক্ষিতে একটি যৌথ সামরিক-বেসামরিক সরকার গঠিত হয়। কিন্তু ২০২১ সালের অক্টোবর মাসে আরও একটি সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকারটিকে উৎখাত করা হয়। এই অভ্যুত্থানের কেন্দ্রে ছিলেন সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান ও দেশটির কার্যত প্রেসিডেন্ট জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান এবং তাঁর ডেপুটি ও আরএসএফ নেতা জেনারেল মোহাম্মদ হামদান দাগালো।
এই দুই জেনারেল দেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ ও বেসামরিক শাসনে ফিরে যাওয়া নিয়ে প্রস্তাবিত পদক্ষেপে একমত হতে পারেননি। তাঁদের মধ্যে মূল বিরোধের বিষয় ছিল প্রায় এক লাখ সদস্যের আরএসএফ-কে সেনাবাহিনীর সঙ্গে একীভূত করার পরিকল্পনা এবং নতুন এই যৌথ বাহিনীর নেতৃত্ব নিয়ে। ধারণা করা হয়, দুজন জেনারেলই তাঁদের ক্ষমতা, সম্পদ ও প্রভাব ধরে রাখতে চেয়েছিলেন।
আরএসএফ সদস্যদের দেশের বিভিন্ন স্থানে মোতায়েন করা হলে সেনাবাহিনী বিষয়টিকে নিজেদের জন্য হুমকি হিসেবে দেখে। এ নিয়ে ২০২৩ সালের ১৫ এপ্রিল দুই পক্ষের মধ্যে গোলাগুলি শুরু হয়। সেই লড়াই দ্রুত তীব্র আকার ধারণ করে এবং আরএসএফ খার্তুমের বেশির ভাগ অংশ দখল করে নেয়। যদিও প্রায় দুই বছর পর সেনাবাহিনী খার্তুমের নিয়ন্ত্রণ ফিরে পায়।
জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান (বামে) এবং আরএসএফ নেতা জেনারেল মোহাম্মদ হামদান দাগালো (ডানে)