চাষাড়ায় ব্যক্তি মালিকানাধীন জমি রেলওয়ের উচ্ছেদ ঘোষণার প্রতিবাদে মানববন্ধন
Published: 2nd, September 2025 GMT
নারায়ণগঞ্জ শহরের চাষাঢ়ায় ব্যক্তিমালিকানাধীন জমি রেলওয়ে কর্তৃক উচ্ছেদের পায়তারার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে জমির মালিকরা। মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) সকালে চাষাঢ়া রেলস্টেশন সংলগ্ন এলাকায় চাষাঢ়া- ইসদাইর সংযোগ সড়কে মানববন্ধনে অংশ নেন তারা। মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, নিউ চাষাঢ়া পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি আব্দুল গফুর রাজা, সাধারণ সম্পাদক মোঃ ইউসুফ আল নোমান, সিনিয়র সহসভাপতি আবুল কাশেম, আরবান স্কুলের প্রধান শিক্ষক মাহমুদা বেগম, সিরাজুল ইসলাম, মিজানুর রহমানসহ আরো অনেকে।
জমির মালিকরা বলেন, তাদের জমিগুলো সি এস রেকর্ড থেকে আর এস রেকর্ড পর্যন্ত তিনটি পর্চায় সম্পূর্ন ব্যাক্তি মালিকানা রেকর্ড রয়েছে। তারা নিয়মিত সরকারকে খাজনা, ট্যাক্স প্রদান করে আসছেন। প্রায় ২ একর জমিতে অন্তত ৮০ টি বসতবাড়ি রাজউকের অনুমোদিত সুউচ্চ দালান, সরকার অনুমোদিত সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের আরবান স্কুল, মহিলা মাদরাসাসহ বিভিন্ন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান রয়েছে। সেখানে তারা কয়েক দশক ধরে পরিবার পরিজন নিয়ে বসবাস করে আসছে। কয়েকদিন আগে রেলওয়ের জমি থেকে আমাদের উচ্ছেদ করার জন্য মাইকিং সহ লাল রং দ্বারা বিভিন্ন জাগায় স্থাপনা চিহ্নিত করে ব্যক্তি মালিকানা সম্পত্তিতে উচ্ছেদের কথা বলে যায়। আমারা তাদের কাছে লিখিত নোটিশ চাইলে তারা বলে আমাদের জমি আমরা উচ্ছেদ কার্যক্রম চালাবো আমরা কাউকে উচ্ছেদের নোটিশ দিবো না। রেলওয়ের ডিএম তাদের মালিকানার কোন কাগজ দেখাতে পারেনি। তারা তাদের সৃজিত একটি ম্যাপের দ্বারা আমাদের উচ্ছেদ করতে চায় এবং মৌখিকভাবে বলে গেছে তিন সেপ্টেম্বরের মধ্যে আমাদেরকে জমি ছেড়ে দিতে হবে অন্যথায় ৪ সেপ্টেম্বর তারা আমাদের জমি থেকে উচ্ছেদ করবে। আরো বলে এই জমিতে বসবাস করতে হলে রেল হইতে লিজ নিয়ে বসবাস করিতে হইবে। এমনকি উচ্ছেদের সময় আমাদের কোন কাগজপত্র দেখা হবে না। তাদের এই আচরণ আমাদেরকে আতঙ্কিত করেছে।
এর আগে ২০১৭ সালে ঢাকা নারায়ণগঞ্জ ডাবল লাইনের কাজের সময় উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা হয়েছে তখন আমাদের জমি নিয়ে রেলওয়ের কোন দাবি করা হয়নি এবং কোন অপ্রতিকর ঘটনাও ঘটেনি। রেলের নিজস্ব অধিগ্রহনকৃত জায়গাতে কাজ চলমান তবে এখন কেন এই অভিযানের নামে ব্যক্তিমালিকানাধীন জমির মালিকদের হয়রানি করা হচ্ছে। বিষয়টি যাচাই বাচাই করে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে জেলা প্রশাাসকের কাছে স্মারকলিপির মাধ্যমে দাবি জানানো হয়। ৪ সেপ্টেম্বর রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ উচ্ছেদ করতে আসলে যদি আইনশৃংখলার অবনতি ঘটে কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনাসহ হতাহতের ঘটনা ঘটে তার জন্য রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ এবং প্রশাসন দায়ী থাকবে বলেও হুশিয়ারী উচ্চারণ করেন মানববন্ধনে অংশ নেয়া জমির মালিকরা।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ স প ট ম বর র লওয় র আম দ র
এছাড়াও পড়ুন:
শিক্ষার্থীদের উপর অটো চালকদের হামলা, আহত ২০
নারায়ণগঞ্জ শহরে যানজট নিরসনে সড়কে কাজ করা শিক্ষার্থীদের ওপর ব্যাটারিচালিত রিকশা (ইজিবাইক) চালকরা হামলা চালিয়েছে। এ নিয়ে ইজিবাইক চালকদের সাথে সংঘাতে জড়ালে উভয় পক্ষের কমপক্ষে ২০ জন আহত হয়েছেন।
এ ঘটনায় ইজিবাইকচালকরা প্রায় দুই ঘণ্টা ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোড অবরোধ করে রাখেন। তাদের অবরোধে পুরো শহরজুড়ে যানজট সৃষ্টি হয়।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টায় ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের চাষাঢ়া ও জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের প্রবেশ গেটে এ ঘটনা ঘটে। পরে বিকেলে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে প্রশাসন ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, শিক্ষার্থী ও ইজিবাইক চালকদের প্রতিনিধিদের নিয়ে প্রায় দেড় ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকে বিষয়টি সমাধান হয়।
এদিকে আহত শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৯ জনের নাম পাওয়া গেছে। তারা হলো- মোঃ আবু সাঈদ (১৯), মারুফ (১৯), আসিফ (৩০), মাহিম (২২), ফয়সাল আহমেদ (২৮), হুমায়ন কবির (২৬), এনামুল হক শান্ত (২৩), শাহীন খন্দকার (২২) ও নুহেল মুন্সী আপন (২২)। তবে আহত ইজিবাইক চালকদের নাম পাওয়া যায়নি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, সড়কে ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করা শিক্ষার্থীরা চাষাড়ায় ঢুকতে বাঁধা দেয় ইজিবাইক চালকদের। এ নিয়ে কথাকাটাকিাটি হয় উভয়ের মধ্যে এক পর্যায়ে ইজিবাইকরা চালকরা সংঘবদ্ধ হয়ে শিক্ষার্থীদের উপর হামলা চালায়। শিক্ষার্থীরা প্রতিরোধ করতে গেলে উভয়ের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ও সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অনেকেই আহত হয়।
এ ঘটনার প্রতিবাদে ইজিবাইক চলকরা সড়ক অবরোধ করে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয়। ফলে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। ভোগান্তিতে পড়ে হাজার হাজার যাত্রী সাধারণ। পরে আইনশৃংখলাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
এদিকে স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি জানান, সংঘর্ষের সময় ইজিবাইক চালকদের অনেকেই তাদের গাড়ির সিটের নিচ থেকে লাঠি ও লোহার রড বের করে শিক্ষার্থীদের উপর হামলা চালায়।
ধারণা করা হয়, আগে থেকেই প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিল ইজিবাইক চালকরা যে শিক্ষার্থীদের উপর সুযোগ পেলেই হামলা করবে। কারণ গত এক দেড় মাস ধরেই চাষাড়ায় ইজিবাইক ঢুকতে বাধা দিয়ে আসছিল শিক্ষার্থীরা। এতে ক্ষোভ জমতে থাকে ইজিবাইক চালকদের মধ্যে। আজকে তারা সুযোগটি কাজে লাগিয়েছে।
ওদিকে যানজট নিরসনে কাজ করা শিক্ষার্থী ইয়াসিন আরাফাত বলেন, ‘আমরা এক মাস ধরে শহরের যানজট নিরসনে কাজ করে যাচ্ছি। চেম্বার অব কমার্স এবং বিকেএমই থেকে আমাদেরকে ট্রাফিক মনিটরিং সেলে দেওয়া হয়। আমাদের দায়িত্ব দেওয়ার পর থেকেই বড় অটোরিকশাগুলো চাষাঢ়ায় প্রবেশ নিষিদ্ধ ছিল।
কিন্তু তারা নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে চাষাঢ়ায় প্রবেশ করেন। পরে বাধা দিলে তারা আমাদের ওপর ক্ষেপে যান। এবং পরিকল্পিতভাবে হামলা চালায়। এতে আমাদের বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে।
তবে উজ্জল নামে এক অটোরিকশাচালক জানায়, ‘আমাদের চাষাঢ়া যাওয়া নিষেধ। আমরা নিষেধ উপেক্ষা করে চাষাঢ়া গেছি, এটা আমাদের অপরাধ। কিন্তু তারা আমাদের অটোরিকশার গ্লাস ভেঙে দিয়েছে। গ্লাস ভাঙার কারণ জানতে চাইলে তারা আমাদের ওপর হামলা করেছে। আমাদের অনেককে তারা মারধর করেছে। কয়েকজন হাসপাতালে ভর্তি আছে।’
নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন বলেন, সব পক্ষকে নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে ভালো একটি সমাধানে আসা সম্ভব হয়েছে। আলোচনা সভায় দুই পক্ষই ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় জেলা প্রশাসনের সব সিদ্ধান্ত মানতে একমত হয়েছেন। এ ঘটনায় একটি কমিটি গঠন করা হবে।