পরিচয় মিলেছে অর্ধগলিত তরুণীর মরদেহের
Published: 3rd, September 2025 GMT
নড়াইলের নড়াগাতী থানার যোগানিয়া-নলামারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পেছনের ডোবা থেকে উদ্ধার হওয়া অজ্ঞাত সেই মরদেহটির পরিচয় মিলেছে। তার নাম মুন্নি খানম (২০)। তিনি নড়াগাতী থানার বাঐসোনা ইউনিয়নের নলামারা গ্রামের প্রবাসী শিমুল মিনার মেয়ে।
মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টার তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
আরো পড়ুন:
ছুরি দিয়ে খুঁচিয়ে নির্যাতনের অভিযোগ, মামলা
দ্বিতীয় বিয়ে করায় ঘুমন্ত স্বামীর সঙ্গে যা করলেন স্ত্রী
নিহতের স্বজনরা জানান, দুইবছর আগে খুলনার তেরখাদা উপজেলার কুশলা গ্রামের হৃদয় হাসানের সঙ্গে পারিবারিকভাবে মুন্নির বিয়ে হয়। গত শুক্রবার (২৯ আগস্ট) সকালে শ্বশুর বাড়ি থেকে বাবার বাড়ি নলামারা গ্রামে বেড়াতে যান মুন্নি। ওইদিন রাতেই বাড়ির উঠান থেকে নিখোঁজ হন তিনি। পরে স্বজনরা বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুজি করেও তার সন্ধান পায়নি। এ ঘটনায় সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) নড়াগাতী থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন মুন্নির মা।
মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে নড়াগাতী থানার যোগানিয়া-নলামারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পেছনের ডোবা থেকে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয় লোকজন ডোবায় থাকা কচুড়িপানার মধ্যে অর্ধগলিত মরদেহ দেখতে পান। পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থল গিয়ে ডোবার কচুড়িপানার ভেতর থেকে মরদেহটি উদ্ধার করেন। রাতে স্বজনরা নিহতের পরিচয় শনাক্ত করে।
নড়াগাতী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আশিকুর রহমান বলেন, “মরদেহটির পরিচয় শনাক্ত হয়েছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য নড়াইল সদর আধুনিক হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘটনাটি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ঢাকা/শরিফুল/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
গাইবান্ধায় চোর সন্দেহে মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যা
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় তিস্তা নদীর দুর্গম চরাঞ্চলে গরু চোর সন্দেহে আব্দুস সালাম (৫০) নামে মানসিক ভারসাম্যহীন এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যা করেছে স্থানীয়রা। এ ঘটনায় দুলালী বেগম (৪৩) নামে এক নারীকে আটক করেছে পুলিশ।
শনিবার (১ নভেম্বর) সকালে উপজেলার বেলকা ইউনিয়নের বেলকা নবাবগঞ্জ গ্রামের তিস্তার চরে তাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। খবর পেয়ে সুন্দরগঞ্জ থানা পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।
আরো পড়ুন:
গাজীপুরে যুবককে কুপিয়ে হত্যা
ঝিনাইদহে কৃষকের হাত-পা ও গলা বাঁধা মরদেহ উদ্ধার
নিহত আব্দুস সালাম একই ইউনিয়নের রামডাকুয়া গ্রামের ওমেদ আলীর ছেলে। স্বজনরা জানান, সালাম দীর্ঘদিন ধরে মানসিক ভারসাম্যহীন অবস্থায় মানবেতর জীবন যাপন করছিল।
আটক দুলালী বেগম বেলকা নবাবগঞ্জ গ্রামের আব্দুল গণি মিয়ার স্ত্রী।
সুন্দরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল হাকিম আজাদ বলেন, ‘‘খবর পাওয়ার পর পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাইবান্ধা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে। হত্যাকাণ্ডে গ্রেপ্তার দুলালী বেগম ছাড়াও যারা জড়িত ছিল, তা শনাক্তে তদন্ত চলছে।’’
নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) গভীর রাতে সালাম আব্দুল গণি মিয়ার গোয়ালঘরে প্রবেশ করে। বিষয়টি টের পেয়ে দুলালী বেগম স্বামী ও আশপাশের লোকজনকে খবর দেয়। স্থানীয়রা সালামকে রশি দিয়ে বেঁধে বেধড়ক মারধর করে। একপর্যায়ে তিনি অচেতন হয়ে পড়লে তাকে পুকুরপাড়ে রেখে দেওয়া হয়। ভোরের দিকে আবার তাকে পাশের গোয়ালঘরে নিয়ে নির্যাতন চালানো হয়। এতে ঘটনাস্থলে তার মৃত্যু হয়।
অভিযুক্ত আব্দুল গণি মিয়া বলেন, ‘‘কয়েক দিন আগে শ্যালো মেশিন চুরি হয়ে গেছে। রাতে গোয়ালে সালামকে দেখি। তাই প্রতিবেশীদের খবর দেই। পরে তারা এসে মারধর করে।’’
আটক দুলালী বেগম বলেন, ‘‘এক সপ্তাহ আগে মেশিন হারিয়েছে। রাতে শব্দ শুনে দেখি গোয়ালের বাঁধন খুলছে। পরে লোকজন এসে মারধর করে।’’
নিহতের স্বজনরা জানান, আব্দুস সালাম দীর্ঘদিন ধরে মানসিকভাবে ভারসাম্যহীন ছিলেন এবং মানুষের সাহায্যে জীবন চলত। তার বিরুদ্ধে আগে কখনো চুরির অভিযোগ ওঠেনি। তারা দাবি করেন, পরিকল্পিতভাবে নির্যাতন করে তাকে হত্যা করা হয়েছে। নিহতের তিনটি ছোট ছেলে রয়েছে, বাবাকে হারিয়ে তারা অসহায় অবস্থায় পড়েছে।
বেলকা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইব্রাহিম খলিলুল্যাহ জানান, ঘটনাস্থল দুর্গম চরাঞ্চল হওয়ায় খবর পেতে দেরি হয়। স্বজনদের বক্তব্য অনুযায়ী নিহত ব্যক্তি মানসিকভাবে অসুস্থ ছিলেন।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এ সার্কেল) বিদ্রোহ কুমার কুণ্ডু, সুন্দরগঞ্জ থানার ওসি আব্দুল হাকিম আজাদ এবং স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
ঢাকা/মাসুম/বকুল