৩ চোর ছেড়ে দিল পুলিশ, বাড়ি ঘেরাও
Published: 4th, September 2025 GMT
কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে ভ্যানসহ তিন চোরকে আটকের পর ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। ভ্যান চুরির একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে এক চোরের বাড়ি প্রায় তিন ঘন্টা ঘিরে রাখেন ভ্যানচালক ও তাদের স্বজনরা।
বুধবার (৩ সেপ্টেম্বের) উপজেলার যদুবয়রা ইউনিয়নের বহলবাড়য়িা গ্রামে সকাল ৭টা থেকে ১০টা পর্যন্ত ওই বাড়ি ঘিরে রাখেন তারা।
আরো পড়ুন:
শিশু সন্তানের সামনে মাকে কুপিয়ে হত্যা, আটক ১
সুমন বাহিনীর ৫ টর্চার সেলের সন্ধান
গত মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) বিকেলে উপজেলার চাপড়া ইউনয়িনরে মাদুলয়িা ব্রিজ এলাকা থেকে তিন চোরকে আটক করে ছেড়ে দেয় পুলিশ বলে জানান এলাকাবাসী।
অভিযুক্ত চোররা হলেন- বহলবাড়ীয়া গ্রামের আতিয়ার রহমানরে ছেলে রিদয় হোসেন (১৮), আব্দুল সালামের ছেলে আসাদুল ইসলাম (১৯) ও আলমগীর হোসনেরে ছেলে রাকিবুল ইসলাম (২০)। তাদের মধ্যে আসাদের বাড়ি ভ্যানচালক ও তাদের স্বজনরা ঘিরে রাখেন।
স্থানীয়দরে ভাষ্য, এ উপজেলা ও আশপাশরে এলাকায় প্রায় ভ্যান চুরি হচ্ছে। থানায় অভিযোগ দিয়েও চোর ও ভ্যানের সন্ধান মিলছে না। ফেসবুকে চোরের ভিডিও দেখে চুরি যাওয়া ভ্যান ফিরে পেতে চালক ও স্বজনরা ভিড় জমান এবং আসাদের বাড়ি ঘেরাও করেন। ঘটনার পর থেকেই অভিযুক্ত তিন চোর এলাকা ছাড়া।
এলাকাবাসী জানান, গত মঙ্গলবার বিকেলে উপজলোর পান্টি এলাকা থেকে একটি মোটরচালিত ভ্যান চুরি করেন রিদয়, আসাদুল ও রাকিব। টরে পেয়ে স্থানীয়রা অপর একটি ভ্যান নিয়ে তাদরে ধাওয়া করেন। চাপড়া ইউনয়িনরে মাদুলয়িা ব্রিজ এলাকায় পৌঁছালে ভ্যানসহ অভিযুক্তদের আটক করে জনতা গণধোলাই দেয়। পরে বাঁধবাজার পুলশি ক্যাম্পের ইনর্চাজ এসআই মোহাম্মদ আলী সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে সেখানে উপস্থিত হলে ভ্যানসহ আটককৃতদের পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়। পুলিশ চোরদের বিরুদ্ধে কোনো আইনগত ব্যবস্থা না নিয়েই তাদের ছেড়ে দেয়।
ধাওয়া করে চোর ধরা এবং চোরদের মারধররে ঘটনা মঙ্গলবার রাতে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। বুধবার সকাল থেকে অভিযুক্ত আসাদরে বাড়িতে ভ্যানচালক ও তাদরে স্বজনরা ভিড় করনে। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরস্থিতি সমাল দেয়।
বাঁধবাজার পুলিশ ক্যাম্পরে ইনর্চাজ এসআই মোহাম্মদ আলী ফোনে বলেন, “জনগণ ভ্যানসহ তিন চোর ধরে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছিল এ কথা সত্য। কেউ বাদী না হওয়ায় স্থানীয় মোতাহার মেম্বারের জিম্মায় তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।”
যদুবয়রা পুলিশ ক্যাম্পরে ইনর্চাজ বিশ্বনাথ মন্ডল বলেন, “চুরি যাওয়া ভ্যান ফিরে পেতে চোরের বাড়িতে বিভিন্ন এলাকার লোকজন জড়ো হন। পরে তাদের বুঝিয়ে ফেরত পাঠানো হয়েছে।”
কুমারখালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) খোন্দকার জিয়াউর রহমান জানান, চুরি যাওয়া ভ্যান পেতে অনকেইে বুধবার সকালে এক চোররে বাড়ি ঘেরাও করেন। ফেসবুকে সেই ভিডিও দেখে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। পুলিশ যে তিন চোর ধরে ছেড়ে দিয়েছে এমন অভিযোগ কেউ তাদেরকে জানায়নি।
ঢাকা/কাঞ্চন/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অভ য গ ভ য নসহ স বজনর চ লক ও
এছাড়াও পড়ুন:
গাইবান্ধায় চোর সন্দেহে মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যা
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় তিস্তা নদীর দুর্গম চরাঞ্চলে গরু চোর সন্দেহে আব্দুস সালাম (৫০) নামে মানসিক ভারসাম্যহীন এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যা করেছে স্থানীয়রা। এ ঘটনায় দুলালী বেগম (৪৩) নামে এক নারীকে আটক করেছে পুলিশ।
শনিবার (১ নভেম্বর) সকালে উপজেলার বেলকা ইউনিয়নের বেলকা নবাবগঞ্জ গ্রামের তিস্তার চরে তাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। খবর পেয়ে সুন্দরগঞ্জ থানা পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।
আরো পড়ুন:
গাজীপুরে যুবককে কুপিয়ে হত্যা
ঝিনাইদহে কৃষকের হাত-পা ও গলা বাঁধা মরদেহ উদ্ধার
নিহত আব্দুস সালাম একই ইউনিয়নের রামডাকুয়া গ্রামের ওমেদ আলীর ছেলে। স্বজনরা জানান, সালাম দীর্ঘদিন ধরে মানসিক ভারসাম্যহীন অবস্থায় মানবেতর জীবন যাপন করছিল।
আটক দুলালী বেগম বেলকা নবাবগঞ্জ গ্রামের আব্দুল গণি মিয়ার স্ত্রী।
সুন্দরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল হাকিম আজাদ বলেন, ‘‘খবর পাওয়ার পর পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাইবান্ধা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে। হত্যাকাণ্ডে গ্রেপ্তার দুলালী বেগম ছাড়াও যারা জড়িত ছিল, তা শনাক্তে তদন্ত চলছে।’’
নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) গভীর রাতে সালাম আব্দুল গণি মিয়ার গোয়ালঘরে প্রবেশ করে। বিষয়টি টের পেয়ে দুলালী বেগম স্বামী ও আশপাশের লোকজনকে খবর দেয়। স্থানীয়রা সালামকে রশি দিয়ে বেঁধে বেধড়ক মারধর করে। একপর্যায়ে তিনি অচেতন হয়ে পড়লে তাকে পুকুরপাড়ে রেখে দেওয়া হয়। ভোরের দিকে আবার তাকে পাশের গোয়ালঘরে নিয়ে নির্যাতন চালানো হয়। এতে ঘটনাস্থলে তার মৃত্যু হয়।
অভিযুক্ত আব্দুল গণি মিয়া বলেন, ‘‘কয়েক দিন আগে শ্যালো মেশিন চুরি হয়ে গেছে। রাতে গোয়ালে সালামকে দেখি। তাই প্রতিবেশীদের খবর দেই। পরে তারা এসে মারধর করে।’’
আটক দুলালী বেগম বলেন, ‘‘এক সপ্তাহ আগে মেশিন হারিয়েছে। রাতে শব্দ শুনে দেখি গোয়ালের বাঁধন খুলছে। পরে লোকজন এসে মারধর করে।’’
নিহতের স্বজনরা জানান, আব্দুস সালাম দীর্ঘদিন ধরে মানসিকভাবে ভারসাম্যহীন ছিলেন এবং মানুষের সাহায্যে জীবন চলত। তার বিরুদ্ধে আগে কখনো চুরির অভিযোগ ওঠেনি। তারা দাবি করেন, পরিকল্পিতভাবে নির্যাতন করে তাকে হত্যা করা হয়েছে। নিহতের তিনটি ছোট ছেলে রয়েছে, বাবাকে হারিয়ে তারা অসহায় অবস্থায় পড়েছে।
বেলকা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইব্রাহিম খলিলুল্যাহ জানান, ঘটনাস্থল দুর্গম চরাঞ্চল হওয়ায় খবর পেতে দেরি হয়। স্বজনদের বক্তব্য অনুযায়ী নিহত ব্যক্তি মানসিকভাবে অসুস্থ ছিলেন।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এ সার্কেল) বিদ্রোহ কুমার কুণ্ডু, সুন্দরগঞ্জ থানার ওসি আব্দুল হাকিম আজাদ এবং স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
ঢাকা/মাসুম/বকুল