জমিয়তে ওলামা ইসলাম বাংলাদেশ এর নারায়ণগঞ্জ জেলার সাধারণ সম্পাদক মাওলানা ফেরদাউসুর রহমান একজন ফ্যাসিস্ট আওয়ামীলীগের দোসর। ৫ আগস্টের পর আওয়ামী দোসর রাজ্জাক বেপারী পালিয়ে যাওয়ার পর তার সম্পদ রক্ষায় মাঠে নেমেছেন তিনি। 

নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার সাইনবোর্ড এলাকায় জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ’র কার্যালয় ভাঙচুরের ঘটনায় মাওলানা ফেরদাউসুর রহমানের বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে সংবাদ সম্মেলনে জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য কাজী মাজেদুল হক এমন অভিযোগ করেন।

‎‎সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ভূঁইঘর রূপায়ণ টাউনে নিজ অফিসে এই সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি।

‎সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য কাজী মাজেদুল হক বলেন, গত ৭ সেপ্টেম্বর সংবাদ মাধ্যমে জানতে পারি যে, সাইনবোর্ডে অবস্থিত জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ’র দলীয় কার্যালয় ভাঙচুর করা হয়েছে।

জমিয়তে উলামা নেতা মাওলানা ফেরদাউসুর রহমান কার্যালয় ভাঙচুরের সাথে আমিসহ তিনজনকে জড়িত করে সংবাদ মাধ্যমে বক্তব্য দিয়েছে, যা সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট, ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত। কোন প্রকার তথ্য প্রমাণ ছাড়া আমাদের নামে মিথ্যাচার করেছেন তিনি। আমরা কোনভাবেই এসব অপকর্মের সাথে জড়িত না।

‎‎মাজেদুল হক বলেন, সাইনবোর্ড শান্তিধারায় আমার পৈতৃক জায়গায় একটি মার্কেট রয়েছে। বিগত ১৫ বছর স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা রাজ্জাক বেপারী ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে দখল করে রেখেছিলো।

গত বছরের ৫ই আগস্টের পর রাজ্জাক বেপারী পালিয়ে গেলে আমি আমার পৈত্রিক সম্পত্তি  উদ্ধার করতে সক্ষম হই, কিন্তু চলতি মাসের ৬ সেপ্টেম্বর শান্তিধারায় আমাদের কালা চান সুপার মার্কেটে একদল সন্ত্রাসী অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে দখলের উদ্দেশ্যে হামলা করে।

ভাড়াটিয়া দোকানদের মারধর করে নগদ টাকা লুট করে দোকানীদের দোকান থেকে বের করে দিয়ে তালা মেরে দেয়। পরবর্তীতে দোকান খুললে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে চলে যায়। এই ঘটনায় আমি ফতুল্লা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি।

‎‎‎তিনি আরও বলেন, আমরা লক্ষ্য করছি যে, মাওলানা ফেরদাউসুর রহমান ক্ষমতা হারানো ফ্যাসিস্টদের দোসর রাজ্জাক বেপারীর পক্ষ নিয়ে সম্পত্তি দখলের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। আমি কিছু সংবাদ মাধ্যম মারফত জানতে পারি কাকতালীয় ভাবে জমিয়তে ওলামা দলের অফিস ভাংচুর হয় এবং ভাংচুরের সাথে আমাকে সহ আরো দুজনের নাম মিডিয়ায় প্রচার করেন মাওলানা ফেরদৌস। উদ্ধত ঘটনায় আমার ধারনা আমার মার্কেটে হামলা এবং একই দিনে জমিয়তে উলামা দলের অফিস ভাংচুর দুটি একই সূত্রে গাঁথা এবং পরিকল্পিত।

‎‎আমার বক্তব্য হলো, জমিয়তে উলামা দলের অফিসের সিসিটিভি ফুটেজ এবং আশেপাশের সিসিটিভি ফুটেজ দেখলেই পরিস্কার হয়ে যাবে কারা এই ভাংচুরের সাথে জড়িত। কিছুদিন আগে মাওলানা ফেরদাউস আমার মার্কেট দখলের হুমকি দেন। আপনারা খোঁজ নিলে জানতে পারবেন এই মার্কেটের চারটি দোকান থেকে মাওলানা ফেরদাউস প্রতি মাসে ভাড়া নিয়ে যান।

রাজ্জাক বেপারীর সাথে মালিকানা নিয়ে আমার দ্বন্দ্ব। আপনাদের কাছে আমার প্রশ্ন এখানে মাওলানা ফেরদাউসের কি স্বার্থ?এই সম্পত্তির আশেপাশে ওনার জায়গা নাই।

‎‎ফ্যাসিস্ট দোসরদের সাথে হাত মিলিয়ে নিজের স্বার্থ হাসিলের উদ্দেশ্যে তাদের অফিস ভাঙচুরের ঘটনায় আমাকেসহ তিনজনকে জড়িয়ে মিথ্যাচার করেছে মাওলানা ফেরদাউসুর রহমান। তিনি ফ্যাসিবাদের দোসরদের আশ্রয় প্রশ্রয় দেয় এবং নিজের আধিপত্য ও প্রভাব বিস্তারের লক্ষ্যে দোসরদের পুনর্বাসনের চেষ্টা করছে বলেও অভিযোগ করেন এই স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা।  তিনি বলেন, পুরো ঘটনাটি অনুসন্ধান করে প্রকৃত সত্য উন্মোচন করুন।

আমি দোষী প্রমাণিত হলে আমার বিচার করবেন। কেউ বাক্তিস্বার্থ হাসিলের উদ্দেশ্যে পরিকল্পিত ভাবে দলের কার্যালয় ভাংচুর করার মত ন্যারেটিভ তৈরি করে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে চায় কিনা সেটা খুঁজে বের করার আহ্বান জানাই।
 

.

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ স ব চ ছ স বক উদ দ শ য র অফ স চ র কর ঘটন য়

এছাড়াও পড়ুন:

আদাবরে কুপিয়ে হত্যা: তিনজনকে গ্রেপ্তারের তথ্য দিল সেনাবাহিনী

রাজধানীর আদাবরে আধিপত্য বিস্তার ও মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিরোধে রিপন সরদার (৪২) খুনের ঘটনায় তিনজন গ্রেপ্তার হয়েছে বলে জানিয়েছে সেনাবাহিনী। গতকাল মঙ্গলবার রাত নয়টার দিকে অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।

সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়, রিপন হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ইমন ওরফে ভাইগ্না ইমন ওরফে দাঁতভাঙা ইমনকে তাঁর দুই সহযোগীসহ গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁদের কাছ থেকে দুটি সামুরাই উদ্ধার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে ইমন হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। তাঁদের সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

সেনাবাহিনী জানায়, গতকাল ভোরের দিকে রাজধানীর আদাবর থানার বালুর মাঠ এলাকায় বাসায় ঢুকে রিপন নামের এক যুবককে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। কিশোর গ্যাং এই হত্যাকাণ্ড ঘটায় বলে অভিযোগ। পরে আহত অবস্থায় রিপনকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় সন্ধ্যা পৌনে ছয়টার দিকে তিনি মারা যান।

৪৬ স্বতন্ত্র পদাতিক ব্রিগেডের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, গতকাল সকালে বালুমাঠ এলাকায় একটি হত্যাকাণ্ডের খবর পাওয়া যায়। বিভিন্নভাবে তথ্য সংগ্রহ করে জানা যায় এলেক্স সবুজ, মনির ও ইমন এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। পরে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় অবস্থান নির্ণয় করে অভিযান চালিয়ে ইমন ও তাঁর দুই সহযোগীকে দুটি সামুরাইসহ গ্রেপ্তার করা হয়। অভিযান চালানোর কিছুক্ষণ আগে সবুজ ও মনির সেই জায়গা থেকে পালিয়ে যান। তাই তাঁদের গ্রেপ্তার করা যায়নি। বাকিদের গ্রেপ্তারে বিভিন্ন জায়গায় অভিযান অব্যাহত রয়েছে। গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

এদিকে পুলিশ জানায়, মঙ্গলবার সকাল সাতটার দিকে আদাবরের ১০ নম্বরের বালুর মাঠ এলাকায় ‘বেলচা মনির’ ও ‘রাজু গ্রুপে’র মধ্যে এ মারামারি হয়। ‘বেলচা মনিরের’ লোকজন ‘রাজু গ্রুপের’ রিপনকে হাঁসুয়া দিয়ে কুপিয়ে আহত করে। সন্ধ্যা সাতটার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রিপন সরদারের মৃত্যু হয়।

আদাবর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম জাকারিয়া প্রথম আলোকে বলেন, স্থানীয় মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ ও বিরোধকে কেন্দ্র করে মারামারির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় একজনের মৃত্যু হয়েছে। ঘটনাটির বিষয়ে বিস্তারিত তদন্ত চলছে।

আরও পড়ুনআদাবরে মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে মারামারিতে নিহত ১১৮ ঘণ্টা আগে

তবে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রিপন সরদারের ছেলে ইমন সরদার গতকাল দাবি করেন, রিপন মাদক ব্যবসায়ী ছিলেন না। রিপন পেশায় চা–দোকানি। বেলচা মনিরের লোকজনের সঙ্গে দুই দিন আগে তাঁর বাবার কথা-কাটাকাটি হয়। এর জেরে তাঁর বাবাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় তাঁর মা আরজু বেগমও আহত হয়েছেন। তাঁদের বাড়ি ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলায়।

পুলিশের ভাষ্য, নিহত রিপন সরদার মাদক কারবারি রাজুর চাচাতো ভাই। ‘রাজু গ্রুপ’ ও ‘বেলচা মনিরের’ নেতৃত্বে আদাবরের ১০ ও ১৭ নম্বর এলাকায় মাদক ব্যবসা হয়। ওই বিরোধের জেরেই এই হত্যাকাণ্ড হয়েছে বলে প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা গেছে। নিহত রিপনের বিরুদ্ধে ভোলায় একাধিক মামলা থাকার তথ্য পাওয়া গেছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আদাবরে কুপিয়ে হত্যা: তিনজনকে গ্রেপ্তারের তথ্য দিল সেনাবাহিনী