সুনাম ছড়াচ্ছে পাটকেলঘাটার নৌকা, বাড়ছে কর্মসংস্থান
Published: 10th, September 2025 GMT
বর্ষা মৌসুমে নদ-নদীর বাড়তি পানি ও জলাবদ্ধতার কারণে সাতক্ষীরার কিছু কিছু এলাকা বছরে ছয় মাসেরও বেশি সময় জলমগ্ন থাকে। ফলে চলাফেরার জন্য দেশের দক্ষিণের এ জনপদে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে নৌকার ব্যবহার।
স্থানীয় চাহিদার ভিত্তিতেই জেলার পাটকেলঘাটায় সাতক্ষীরা-খুলনা মহাসড়কের পাশে গত ১০ বছরে গড়ে উঠেছে প্রায় ২০টি নৌকা তৈরির কারখানা। দিন-রাত কর্মব্যস্ততায় মুখর থাকে কারখানাগুলো।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শ্রমিকরা কেউ বসে নেই। কেউ কাঠ কাটছেন, কেউ নৌকার দাড়া (কাঠামো) তৈরি করছেন, কেউ কাঠ জোড়া লাগাচ্ছেন, কেউবা মেশিন দিয়ে ফিনিশিংয়ের কাজ করছেন, কেউ আবার নৌকার গায়ে আলকাতরা লাগাচ্ছেন। যে যার কাজ নিয়ে ব্যস্ত। যেন দম ফেলার ফুরসত নেই কারো। এসব কারখানা থেকে প্রতিবছর দুই হাজারেরও বেশি নৌকা বিক্রি হয়।
আষাঢ়, শ্রাবণ ও ভাদ্র এই তিন মাস নৌকা ব্যবহারের মৌসুম বলা হলেও জলাবদ্ধতার কারণে প্রায় সারা বছরই এখানে নৌকা তৈরি ও বেচাকেনা চলে। এখানকার তৈরি নৌকা স্থানীয়দের চাহিদা মিটিয়ে দেশের অন্যান্য জেলায়ও সরবরাহ হচ্ছে। নৌকার চাহিদা ও কারখানা সম্প্রসারণের সাথে সাথে স্থানীয় বহু মানুষের কর্ম সংস্থানও তৈরি হয়েছে এ শিল্পকে ঘিরে।
একেকটি নৌকা তৈরিতে কারিগরদের দুই থেকে তিন দিন লাগে। এসব নৌকাই সারাদেশে বিশেষভাবে পরিচিত করে তুলেছে পাটকেলঘাটাকে। সারাবছর নৌকা তৈরি হলেও বর্ষা মৌসুমে এর চাহিদা ও কদর বাড়ে কয়েক গুণ। সেসময় কারিগরদের কর্মব্যস্ততাও বাড়ে।
স্থানীয়রা জানান, সাতক্ষীরা-খুলনা মহাসড়ক ধরে যেতে পাটকেলঘাটা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় রাস্তার দুই ধারে কয়েক যুগ আগে গড়ে ওঠে সুমি ফার্নিচার অ্যান্ড নৌকা কারখানা, তৈয়াবা ফার্নিচার অ্যান্ড নৌকা কারখানা, রহমান ফার্নিচার অ্যান্ড নৌকা কারখানা, আল ইমরান ফার্নিচার অ্যান্ড নৌকা কারখানা, রফিক নৌকার কারখানা, ঐশী নৌকা কারখানাসহ প্রায় ২০টি নৌকা তৈরির কারখানা।
এসব কারখানা মালিকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, পাটকেলঘাটায় ট্রলার, পাল তোলা নৌকা, কোষা কিংবা ডিঙি সব ধরনের নৌকাই তৈরি হয়। আকার-আকৃতি অনুযায়ী সেসব নৌকার মূল্য ১০ হাজার থেকে শুরু করে কয়েক লাখ টাকা পর্যন্ত হয়। এখানে তৈরি নৌকা জেলার চাহিদা মিটিয়ে খুলনা, বাগেরহাট, যশোর, নড়াইলসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় চলে যায়। অনেকে এসে রেডিমেড নৌকা কিনে নিয়ে যান। আবার অনেকে নিজেদের পছন্দমতো অর্ডার দিয়ে তৈরি করিয়ে নেন।
এসব নৌকা তৈরিতে মেহগনি, খৈ ও চম্বল কাঠ ব্যবহার করা হয়। মাঝারি আকারের একটি নৌকা বানাতে দুই জন কারিগরের দুই থেকে তিন দিন সময় লাগে।
স্থানীয় নৌকা তৈরির কারখানা মালিক মো.
পাটকেলঘাটা বাজার ব্যবস্থাপনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল লতিফ সরদার বলেন, “প্রয়োজনীয় সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে পাটকেলঘাটার নৌকার সুনামকে কাজে লাগিয়ে এ শিল্পে আরো বেশি মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা সম্ভব।”
তিনি আরো বলেন, “নৌকার জন্য প্রসিদ্ধ সাতক্ষীরার পাটকেলঘাটা। এ শিল্পকে কেন্দ্র করে স্থানীয় বহু মানুষ জীবিকা নির্বাহ করেন। সরকার একটু নজর দিলে এ শিল্পের সম্প্রসারণ সম্ভব। যা কর্মসংস্থান সৃষ্টির পাশাপাশি অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিও বয়ে আনবে।”
সাতক্ষীরা বিসিক শিল্প নগরীর উপ-ব্যবস্থাপক গৌরব দাস বলেন, “সাতক্ষীরার পাটকেলঘাটায় যারা নৌকা নিয়ে কাজ করেন, তাদের কারখানা আমরা বিভিন্ন সময় পরিদর্শন করেছি। ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের আওতায় বিসিক থেকে যে ঋণের সুবিধা রয়েছে, আমরা সেই ঋণ দিয়ে তাদের সহযোগিতা করতে পারি।”
ঢাকা/শাহীন/এস
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
বিনা মূল্যে কম্পিউটার প্রশিক্ষণের সুযোগ, সারা দেশে ৮টি কেন্দ্রে
ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ইমাম প্রশিক্ষণ একাডেমি ২০২৫-২৬ অর্থবছরে হাফেজ, ইমাম, মাদ্রাসাছাত্র ও বেকার যুবকদের বিনা কোর্স ফিতে কম্পিউটার প্রশিক্ষণের দ্বিতীয় কোর্সে প্রক্রিয়া শুরু করেছে। এ প্রশিক্ষণের মেয়াদ দুই মাস। প্রশিক্ষণটি আগামী ১২ অক্টোবর শুরু হবে, চলবে ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত। প্রশিক্ষণ শেষে ইসলামিক ফাউন্ডেশন থেকে প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে সরকারি সনদ দেওয়া হবে। আগ্রহী প্রার্থীদের ৯ অক্টোবরের মধ্যে ইমাম প্রশিক্ষণ একাডেমিতে আবেদন করতে হবে।
প্রশিক্ষণের বিষয়১. বেসিক কম্পিউটার,
২. অফিস অ্যাপ্লিকেশন ও ইউনিকোড বাংলা,
৩. ইন্টারনেট,
৪. গ্রাফিক ডিজাইন,
৫. ফ্রিল্যান্সিং,
৬. মার্কেটপ্লেস ও কনসালটিং।
আরও পড়ুনহার্ভার্ড এনভায়রনমেন্টাল ফেলোশিপ, দুই বছরে ১ লাখ ৮৫ হাজার ডলার১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫আবেদনের যোগ্যতা১. ন্যূনতম দাখিল বা সমমানের পরীক্ষায় পাস হতে হবে,
২. হাফেজদের ক্ষেত্রে শিক্ষাগত যোগ্যতা শিথিল করা হবে,
৩. উচ্চতর শিক্ষাগত যোগ্যতা সম্পন্ন প্রার্থীকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে,
৪. প্রার্থীকে কম্পিউটার চালনায় বেসিক জ্ঞান থাকতে হবে,
৫. যাঁদের নিজস্ব কম্পিউটার আছে, তাঁদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।
ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ইমাম প্রশিক্ষণ একাডেমি ২০২৫-২৬ অর্থবছরে হাফেজ, ইমাম, মাদ্রাসাছাত্র ও বেকার যুবকদের বিনা কোর্স ফিতে কম্পিউটার প্রশিক্ষণের দ্বিতীয় কোর্সে প্রক্রিয়া শুরু করেছে।যে ৮টি কেন্দ্রে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে১. ঢাকা,
২. চট্টগ্রাম,
৩. রাজশাহী,
৪. খুলনা,
৫. বরিশাল,
৬. সিলেট,
৭. দিনাজপুর,
৮. গোপালগঞ্জ।
আরও পড়ুনবিনা মূল্যে ২ লাখ টাকার প্রশিক্ষণ, নন-আইটি স্নাতক শিক্ষার্থীদের সুযোগ ৭ ঘণ্টা আগেদরকারি কাগজপত্র১. শিক্ষাগত যোগ্যতার সব সনদের সত্যায়িত ফটোকপি,
২. জাতীয় পরিচয়পত্রের সত্যায়িত ফটোকপি,
৩. এক কপি পাসপোর্ট সাইজের সত্যায়িত ছবি জমা দিতে হবে,
৪. ইমামদের ক্ষেত্রে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান অথবা ওয়ার্ড কমিশনারের কাছ থেকে নেওয়া ইমামতির প্রমাণপত্রের সত্যায়িত কপি জমা দিতে হবে,
৫. মাদ্রাসাছাত্রদের ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানের প্রধানের কাছ থেকে ছাত্রত্ব প্রমাণের কপি জমা দিতে হবে।
নিবন্ধন ফিমনোনীত প্রার্থীদের নিবন্ধন ফি হিসেবে ৫০০ টাকা দিতে হবে।
দেশের ৮টি প্রশিক্ষণকেন্দ্রে এ প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে