চাকসুর ভিপি পদে নির্বাচিত হওয়ার পর ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেলের প্রার্থী মো. ইব্রাহিম হোসেন বলেছেন, ‘এ নির্বাচনে কেউ পরাজিত হননি। সবাই বিজয়ী হয়েছেন। আমরা এখান থেকে অনেক কিছু শিখেছি। আমরা নির্বাচনে বিভিন্ন প্রার্থীকে সৃজনশীল চিন্তা প্রকাশ করতে দেখেছি। সবার ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টায় চাকসু সারা দেশে দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।’

আজ বৃহস্পতিবার সকাল ছয়টার দিকে ক্যাম্পাসে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন মো.

ইব্রাহিম হোসেন।

ইব্রাহিম বলেন, দীর্ঘ ৩৫ বছর পর এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। আমরা কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি আমাদের শিক্ষার্থী ভাই-বোনদের প্রতি। তাঁরা আমাদের ওপর আস্থা রেখেছেন। আমরা তাঁদের কাছে গিয়েছি। তাঁদের কথাগুলো জানার চেষ্টা করেছি। তাঁরাও আমাদের অসম্ভব সম্মান করেছেন। ভালোবেসেছেন। যে দায়িত্ব শিক্ষার্থীরা আমাদের ওপর দিয়েছেন, তা সম্পূর্ণ আমাদের জন্য আমানত। আমরা চাই, যে আমানত তাঁরা আমাদের ওপর দিয়েছেন, তা পুঙ্খানুপুঙ্খরূপে যেন পালন করতে পারি।’

সবার প্রতি ধন্যবাদ জানিয়ে ইব্রাহিম বলেন, ‘যদি আমাদের ব্যাপারে বা আমাদের দায়িত্বের ব্যাপারে কোনো প্রশ্ন থাকে, তবে অবশ্যই আমাদের জানাবেন। আমাদের অবশ্যই বুদ্ধি–পরামর্শ দেবেন। সমালোচনা করবেন।’

এর আগে চাকসুর নবনির্বাচিত জিএস সাঈদ বিন হাবিব সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমাদের প্রথম কাজ হলো ইশতেহারে দেওয়া প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া।’

চাকসুতে ফিরল শিবির

দীর্ঘ ৪৪ বছর পর আবারও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (চাকসু) নেতৃত্বে ফিরেছে ইসলামী ছাত্রশিবির। সংগঠনটির সমর্থিত প্যানেল ‘সম্প্রীতির শিক্ষার্থী জোটের’ প্রার্থীরা ভিপি-জিএসসহ ২৪টি পদে নির্বাচিত হয়েছেন।

আজ বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে চারটায় সপ্তম চাকসু নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। ভিপি (সহসভাপতি) পদে ছাত্রশিবিরের মো. ইব্রাহিম হোসেন ৭ হাজার ৯৮৩ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি সংগঠনটির চট্টগ্রাম মহানগর দক্ষিণের সভাপতি ও ইতিহাস বিভাগের এমফিলের শিক্ষার্থী। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্রদলের প্যানেলের সাজ্জাদ হোসেন পেয়েছেন ৪ হাজার ৩৭৪ ভোট।

জিএস (সাধারণ সম্পাদক) পদে ৮ হাজার ৩১ ভোট নির্বাচিত হয়েছেন একই প্যানেলের সাঈদ বিন হাবিব। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবিরের সাহিত্য সম্পাদক ও ইতিহাস বিভাগের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্রদলের মো. শাফায়াত পেয়েছেন ২ হাজার ৭৩৪ ভোট।

চাকসুতে ২৬টি পদে নির্বাচন হয়েছে। এর মধ্যে মাত্র একটি পদে নির্বাচিত হয়েছেন ছাত্রদলের প্যানেলের প্রার্থী আইয়ুবুর রহমান। তিনি এজিএস (সহসাধারণ সম্পাদক) পদে পেয়েছেন ৭ হাজার ১৪ ভোট। একই পদে ছাত্রশিবিরের সাজ্জাত হোছেন পেয়েছেন ৫ হাজার ৪৫ ভোট। এ ছাড়া সহখেলাধুলা ও ক্রীড়া সম্পাদক পদে জিতেছেন তামান্না মাহবুব। তিনি বিনির্মাণ শিক্ষার্থী ঐক্য প্যানেলের প্রার্থী ছিলেন।

চাকসু নির্বাচনে শিবিরের সর্বশেষ জয় এসেছিল ১৯৮১ সালে। ওই নির্বাচনে ভিপি হন জসিম উদ্দিন সরকার আর জিএস হন আবদুল গাফফার। দুজনই ছাত্রশিবিরের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার তৎকালীন নেতা। এরপর দীর্ঘ ৪৪ বছর পর আবারও শিবির-সমর্থিত প্রার্থীরা সেই নেতৃত্বের আসনে ফিরলেন।

দীর্ঘ এক দশক পর

আশির দশক থেকেই চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে জামায়াতে ইসলামীর ছাত্রসংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবিরের প্রভাব ছিল উল্লেখযোগ্য। তবে ২০১৪ সালে আওয়ামী লীগ (বর্তমানে কার্যক্রম নিষিদ্ধ) সরকারের আমলে ক্যাম্পাসের নিয়ন্ত্রণ হারায় সংগঠনটি।

এরপর প্রায় এক দশকের নীরবতা কাটিয়ে গত বছরের ৫ আগস্ট আবার প্রকাশ্য রাজনীতিতে ফেরে ছাত্রশিবির। তাদের এই প্রত্যাবর্তনের এক বছর না যেতেই চাকসু নির্বাচনে এমন বিজয় ক্যাম্পাসজুড়ে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

এখন পর্যন্ত চাকসু নির্বাচন হয়েছে মাত্র সাতবার— ১৯৭০, ১৯৭২, ১৯৭৪, ১৯৭৯, ১৯৮১, ১৯৯০ এবং এবার ২০২৫ সালে। ১৯৮১ সালের নির্বাচনে ছাত্রশিবির পেয়েছিল প্রথম জয়। এরপর ১৯৯০ সালের নির্বাচনে ‘সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্য’র কাছে হেরে যায় তারা।

এর পরের দীর্ঘ তিন দশক চাকসু নির্বাচনই হয়নি। বন্ধ ছিল ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতির গুরুত্বপূর্ণ এই প্ল্যাটফর্মের কার্যক্রম। নতুন প্রজন্মের ভোটে নতুন নেতৃত্ব পেয়েছে চাকসু। প্রথমবার ভোট দেওয়া একাধিক শিক্ষার্থী বলেন, জাতীয় নির্বাচনে ভোট দিতে পারিনি; কিন্তু চাকসুতে দিয়েছি—এটাই আমাদের গণতান্ত্রিক অভিজ্ঞতার শুরু।

গতকাল পাঁচটি অনুষদ ভবনে ১৫টি ভোটকেন্দ্রে মোট ৭০০টি বুথে শিক্ষার্থীরা ভোট দেন। প্রত্যেক ভোটার একসঙ্গে ৪০টি ভোট দেন—চাকসুর ২৬টি পদ ও ১৪টি হল সংসদের জন্য। ভোটার ছিলেন ২৭ হাজার ৫১৬ জন। শুরুতে নির্বাচন কমিশন জানায়, ভোট পড়েছে প্রায় ৭০ শতাংশ। তবে ভোরে আনুষ্ঠানিক ফলাফল ঘোষণার সময় বলা হয়, ভোট পড়েছে ৬৫ শতাংশ।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ন র ব চ ত হয় ছ ন আম দ র

এছাড়াও পড়ুন:

ডিভোর্সের পর প্রাক্তন স্বামীর সঙ্গে এক ফ্রেমে মাহি!

ঢালিউডের জনপ্রিয় চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি বছর দেড়েক আগে বিচ্ছেদের ঘোষণা দিয়েছিলেন। সেই সময় তিনি জানান, রাকিব সরকারের সঙ্গে তার দাম্পত্য সম্পর্কের ইতি ঘটেছে। এরপর থেকেই দুজনকে আর একসঙ্গে দেখা যায়নি।

বেশ কিছুদিন হলো মাহি যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করছেন। তবে রাকিব সরকারের বর্তমান অবস্থান সম্পর্কে তেমন কোনো তথ্য পাওয়া যাচ্ছিল না। তবে এবার সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া দুটি ছবিকে ঘিরে শুরু হয়েছে আলোচনার ঝড়।

ছবিতে মাহিকে তার প্রাক্তন স্বামী রাকিব সরকার এবং সন্তানদের সঙ্গে দেখা গেছে। মাহি নিজেই ছবিটি প্রকাশ করে ক্যাপশনে লিখেছেন, “মাশাল্লাহ।”

অন্যদিকে একই ছবি পোস্ট করেছেন রাকিব সরকারও। তার ক্যাপশন— “সোয়াইব, সাইয়ারা, ফারিশ ও আমরা এক ফ্রেমে।

এরপর নেটমাধ্যমে প্রশ্ন উঠেছে—তবে কি আবারও এক হয়েছেন মাহি ও রাকিব? মন্তব্যের ঘরে নেটিজেনরা দিচ্ছেন ভালোবাসার প্রতিক্রিয়া। কেউ লিখেছেন, “আবার সব আগের মতো হয়ে যাক,” কেউ আবার সন্তানসহ পরিবারের ছবিতে অভিনন্দন জানিয়েছেন।
ঘনিষ্ঠ সূত্রের দাবি, মাহি ও রাকিব আবারও এক হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আবার কেউ বলছেন, তারা আসলে পুরোপুরি আলাদা হননি, তবে সম্পর্কের কিছুটা অবনতি ঘটেছিল।

তবে এ বিষয়ে মাহি বা রাকিব— কেউই মন্তব্য করেননি।

উল্লেখ্য, গত বছরের মাঝামাঝি মাহি ফেসবুক লাইভে এসে বিচ্ছেদের খবর নিশ্চিত করেছিলেন। পরে রাকিব সরকারও একই তথ্য জানান।
এরপর থেকে মাহি দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন। অনেকের ধারণা, সেখানে স্থায়ী হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন তিনি। অন্যদিকে রাকিব সরকার দীর্ঘদিন ধরেই রাজনীতির মাঠে সক্রিয় ছিলেন। রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর থেকে তিনি আড়ালে রয়েছেন। 
 

ঢাকা/রাহাত

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ৪৪ বছর পর চাকসুর নেতৃত্বে ফিরল ছাত্রশিবির
  • বিশ্বকাপের আরও এক ম্যাচ বৃষ্টির পেটে
  • এবার বিপিএলে রেভেনিউ শেয়ারিং মডেল, ১৭ নভেম্বর ড্রাফট
  • নতুন বউ ঘরে রেখে মাঠে নেমেই সামির ৫ উইকেট
  • বাসে স্কুলছাত্রীকে শ্লীলতাহানীর অভিযোগ, গ্রেপ্তার চালক কারাগারে
  • ইয়াংওয়ান করপোরেশন পেল ডব্লিউসিডি ভিশনারি অ্যাওয়ার্ডস
  • ডিভোর্সের পর প্রাক্তন স্বামীর সঙ্গে এক ফ্রেমে মাহি!
  • ইলুমিনাতি স্যাটানিজম বা শয়তানবাদ সম্পর্কে কতটুকু জানেন?
  • ছাত্রশিবিরের ফিরে আসার লড়াই