হাঁটার সময় না পেলে যে ব্যায়াম করতে পারেন
Published: 18th, October 2025 GMT
বর্তমানে অসংখ্য মানুষ ডেস্ক জব করেন। চাকরির সুবাদে দীর্ঘক্ষণ বসে থাকতে হয়। আর দীর্ঘক্ষণ বসে থাকার ফলে রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যায়।
চিকিৎসকেরা বলেন, ‘রক্ত সঞ্চালন ধীর হয়ে পড়লে পেশিগুলো ধীরে ধীরে নিষ্ক্রিয় হতে থাকে।’’
আরো পড়ুন:
আজ প্রাক্তনকে ক্ষমা করার দিন
ত্বক সতেজ রাখতে এই ফল খেতে পারেন
যারা ডেস্ক জব করেন তাদের রক্ত সঞ্চালন ঠিক রাখার জন্য দিনে প্রতি ৪৫ মিনিটে মাত্র ১০টি স্কোয়াট করার পরামর্শ দিয়েছেন গবেষকেরা।
যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক বলছেন,‘‘ দিনে প্রতি ৪৫ মিনিট পরপর ১০টি স্কোয়াট করলে শরীরে রক্ত সঞ্চালন ঠিক থাকে। যা প্রতিদিন ১০,০০০ ধাপ হাঁটার সমান উপকার দিতে পারে।’’
স্কোয়াট করলে বসে থাকার একঘেয়েমি দূর হয়। এই অল্প সময়ের ব্যায়াম রক্তে শর্করা কমায়, রক্ত সঞ্চালন বাড়ায় এবং শরীরের সবচেয়ে বড় পেশিগুলো যেমন- পা ও গ্লুটসকে (নিতম্বের পেছনে) সক্রিয় করে।
স্কোয়াট করার সময় শরীরের বড় অংশ নড়াচড়া করে বলে হৃদ্যন্ত্রও সক্রিয় হয়ে ওঠে, যা হৃদ্রোগ প্রতিরোধে সহায়ক। এতে রক্ত চলাচল দ্রুত হয়, অক্সিজেন পরিবহন বাড়ে এবং মেটাবলিজম বা বিপাকক্রিয়া আরও কার্যকর হয়।
গবেষণার তথ্য, দীর্ঘ সময় বসে থাকার চেয়ে এভাবে মাঝেমধ্যে উঠে দাঁড়িয়ে অল্প সময় ব্যায়াম করা শরীরের জন্য অনেক বেশি উপকারী।
স্কোয়াট করলে মস্তিষ্কে রক্তপ্রবাহ বাড়ে, রক্তচাপ ঠিক থাকে, হৃৎস্বাস্থ্য ও মানসিক সুস্থতা বজায় থাকে।
উল্লেখ্য, যাদের হাঁটু বা জয়েন্টে সমস্যা আছে, তাদের স্কোয়াট শুরু করার আগে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে পারেন।
সূত্র: হেলথ সোর্স ডট কম
ঢাকা/লিপি
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স ব স থ যকর জ বন
এছাড়াও পড়ুন:
তালেবান, দেওবন্দ এবং ভারতের ‘ধর্মীয় কূটনীতি’
১০ অক্টোবর। শরতের বাতাসে দিল্লির পাতা ঝরছে। ভারতের মাটিতে পা রাখলেন কাবুলের প্রভাবশালী নেতা মৌলভি আমির খান মুত্তাকি, যিনি আফগানিস্তানের ইসলামিক ইমারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। ভারতে তাঁর ছয় দিনের সফর দক্ষিণ এশিয়ার ভূরাজনীতির নতুন মানচিত্র আঁকছে।
দিল্লিতে নেমে মুক্তাকি ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে বসলেন নিরাপত্তা, বাণিজ্য ও উন্নয়ন নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করতে। যৌথ বিবৃতিতে বলা হলো, কাবুলে ভারত আবার দূতাবাস খুলবে, যা তালেবান ক্ষমতায় আসার পর থেকে বন্ধ। এরপর ১১ অক্টোবর মুত্তাকি গেলেন সাহারানপুরের দারুল উলুম দেওবন্দে; যা ইসলামিক ইমারতের কোনো জ্যেষ্ঠ নেতার প্রথম এই ভারতীয় মাদ্রাসা পরিদর্শন।
ভারতের কট্টর হিন্দুত্ববাদী বিজেপি সরকার কীভাবে কট্টর ইসলামপন্থী তালেবান সরকারের একজন মন্ত্রীকে গ্রহণ করল—এ রকম প্রশ্ন নিয়ে বিচার-বিশ্লেষণ চলছে নিশ্চয়ই। কাবুলের সঙ্গে দিল্লি এমন এক সময়ে ঘনিষ্ঠ হচ্ছে, যখন পাকিস্তানের সঙ্গে আফগানিস্তানের দূরত্ব বাড়ছে, সীমান্তে রক্তাক্ত সংঘর্ষ চলছে। তাহলে দেওবন্দ পরিদর্শন কি শুধু প্রতীকী, নাকি এর মধ্যে কোনো গভীর রাজনৈতিক ইঙ্গিতও রয়েছে?
২.২০২১ সালের আগস্ট তো বেশি দূরের সময় নয়। মার্কিন বাহিনী চলে যাওয়ার পর তালেবান ক্ষমতায় এলে পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে তাল মিলিয়ে আফগানিস্তানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে ভারত। চার বছর ‘সম্পর্কহীন’ থাকার পর তালেবান সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবার দিল্লিতে এসে বললেন, অমৃতসর-কাবুল ফ্লাইট শুরু হবে শিগগিরই। চার দশকের যুদ্ধে ক্লান্ত আফগানিস্তানের মানুষ উন্নয়নের জন্য উদ্গ্রীব।
আফগানিস্তানের আগের সরকারের সময় ভারত সেখানে তিন বিলিয়ন ডলারের বেশি বিনিয়োগ করেছে সালমা ড্যাম, জারঞ্জ-দেলারাম হাইওয়ে ও পার্লামেন্ট ভবনের মতো প্রকল্পে। এবার মুত্তাকি এসে আফগানিস্তানের খনিজ ক্ষেত্রেও ভারতীয় কোম্পানিগুলোকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। অনেকে বলছেন, এটা ‘তালেবান ২.০’-এর ইঙ্গিত। আসলেই কি তাই, নাকি এটা ‘শত্রুর শত্রু হলো বন্ধু’ কৌশলের খেলা? ভারতের চিরশত্রু পাকিস্তান, যারা এখন আফগানিস্তানের ইসলামিক ইমারতের শত্রু।
■ দেওবন্দের যে চিন্তাধারা তালেবানকে প্রভাবিত করেছে, সেটি এসেছে পাকিস্তানের ‘ছাঁকনি’ দিয়ে। ■ প্রথমবারের মতো দেওবন্দ মাদ্রাসার সঙ্গে এবং দেওবন্দি ভারতীয় রাজনীতিকদের সঙ্গে আফগানিস্তানের রাষ্ট্রীয় সম্পর্ক রচিত হলো পাকিস্তানের ছায়ার বাইরে গিয়ে।বোঝার জন্য বলি, আফগানিস্তানের সঙ্গে পাকিস্তানের সম্পর্ক অনেকটাই বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্কের সঙ্গে তুলনীয়। ভারত বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে সহযোগিতা করেছে বটে; কিন্তু নানা যৌক্তিক কারণেই স্বাধীনতার পর থেকে আজ পর্যন্ত বাংলাদেশের জনগণের মধ্যে ভারতবিরোধী মনোভাব রয়েছে। কিন্তু ভারত ছাড়া আমাদের আবার চলেও না। চিকিৎসা, শিক্ষা, ভ্রমণ এমনকি ঈদের বাজার করতে ভারতেই ভরসা ছিল এতকাল; এমনকি বাংলাদেশের সন্ত্রাসীদেরও ‘শেষ আশ্রয়স্থল’ ভারত। বাংলাদেশের আলেম-ওলামাদের যদিও আগ্রাসী ভারতের প্রতি পুঞ্জীভূত ক্ষোভ রয়েছে, কিন্তু দেওবন্দ মাদ্রাসার কারণে ভারতের আলেম-ওলামার সঙ্গে তাদের নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগও রয়েছে। এ কারণেই বাংলাদেশে বড় কোনো ইসলামি সম্মেলন মানেই ভারতের কোনো আলেমের আগমন।
দিল্লি সফরে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর ও তালেবান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি