পাবনায় দলীয় কাউন্সিলে অস্ত্র নিয়ে বিশৃঙ্খলার অভিযোগে বিএনপি নেতা বহিষ্কার
Published: 13th, January 2025 GMT
পাবনার সাঁথিয়া উপজেলা বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক শামসুর রহমানকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে দলীয় কাউন্সিল অধিবেশনে অস্ত্র নিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অভিযোগ রয়েছে। একই সঙ্গে তাঁকে স্থায়ী বহিষ্কারের জন্য কেন্দ্রীয় বিএনপির কাছে সুপারিশ করা হয়েছে।
গতকাল রোববার রাতে পাবনা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক হাবিবুর রহমান ও সদস্যসচিব মাসুদ খন্দকার স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এই সিদ্ধান্ত জানানো হয়েছে। চিঠির অনুলিপি বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীসহ কেন্দ্রীয় নেতাদের দেওয়া হয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে দলীয় শৃঙ্খলাপরিপন্থী কাজে জড়িত থাকায় শামসুর রহমানকে বিভিন্ন সময় সতর্ক করা হয়েছে। এরপরেও তিনি দলীয় সিদ্ধান্তের প্রতি কোনো সম্মান না দেখিয়ে গত ১০ জানুয়ারি জেলার বেড়া পৌরসভার দলীয় কাউন্সিল বাধাগ্রস্ত ও ভন্ডুল করার লক্ষ্যে কাউন্সিলস্থলের পাশে নেতা-কর্মীদের মারাত্মক অস্ত্র নিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেন। একই সঙ্গে দলীয় নেতা-কর্মীদের প্রতি অসম্মান প্রদর্শন ও অশোভন আচরণ করেন। সে কারণে দলীয় সিদ্ধান্ত মোতাবেক তাঁকে দল থেকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হলো। স্থায়ী বহিষ্কারের জন্য কেন্দ্রীয় কমিটিতেও চিঠি পাঠান হলো।
এ প্রসঙ্গে জানতে যোগাযোগ করা হলে সাঁথিয়া উপজেলা বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক শামসুর রহমান বলেন, ‘আমাকে বিধিবহির্ভূতভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। রাজনৈতিকভাবে আমাকে হেয়প্রতিপন্ন করতে এমন কাজ করা হয়েছে। এ বিষয়ে আমি দলের ঊর্ধ্বতন নেতাদের অবগত করব।’
জেলা বিএনপির সদস্যসচিব মাসুদ খন্দকার বলেন, দলীয় শৃঙ্খলার বিরুদ্ধে কাজ করায় তাঁকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। স্থায়ী বহিষ্কারের জন্য কেন্দ্রে সুপারিশ করা হয়েছে। দলীয় শৃঙ্খলাপরিপন্থী কাজ যারা করবে তাদের কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ঘাড়ব্যথার কারণগুলো কী কী, প্রতিরোধ ও চিকিৎসা জেনে রাখুন
অনেক কারণে ঘাড়ে ব্যথা হতে পারে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য—
১. সারভাইক্যাল স্পন্ডেলোসিস
২. সারভাইক্যাল স্পন্ডেলোসিস
৩. সারভাইক্যাল রিবস
৪. সারভাইক্যাল ক্যানেল স্টেনোসিস বা স্পাইনাল ক্যানাল সরু হওয়া
৫. সারভাইক্যাল ডিস্ক প্রলেপস বা হারনিয়েশন যেখানে হারনিয়াটেড ডিস্ক নার্ভের ওপর চাপ প্রয়োগ করে
৬. মাংসপেশি, হাড়, জোড়া, লিগামেন্ট, ডিস্ক (দুই কশেরুকার মাঝখানে থাকে) ও স্নায়ুর রোগ বা ইনজুরি
৭. অস্বাভাবিক পজিশনে নিদ্রা
৮. উচ্চ রক্তচাপ ও হৃদ্রোগ
৯. হাড় ও তরুণাস্থির প্রদাহ এবং ক্ষয়
১০. অস্টিওপরোসিস বা হাড়ের ক্ষয় ও ভঙ্গুরতা রোগ
১১. হাড় নরম ও বাঁকা হওয়া
১২. রিউমাটয়েড-আর্থ্রাইটিস ও সেরো নেগেটিভ আর্থ্রাইটিস
১৩. সারভাইক্যাল অস্টিও-আর্থ্রাইটিস
১৪. ফাইব্রোমায়ালজিয়া
১৫. সামনে ঝুঁকে বা পাশে কাত হয়ে ভারী কিছু তুলতে চেষ্টা করা
১৬. হাড়ের ইনফেকশন
১৭. ডিস্কাইটিস (ডিস্কের প্রদাহ)
১৮. পেশাগত কারণে দীর্ঘক্ষণ ঘাড় নিচু বা উঁচু করে রাখলে ইত্যাদি।
উপসর্গ
ঘাড়ব্যথা কাঁধ, বাহু, হাত ও আঙুল পর্যন্ত ছড়াতে পারে।
কাঁধ, বাহু, হাত ও আঙুলে অস্বাভাবিক অনুভূতি বা অবশ ভাব।
বাহু, হাত ও আঙুল দুর্বল হতে পারে।
সব সময় ঘাড় ধরে বা জমে আছে মনে হয়।
ঘাড়ের মুভমেন্ট করলে, ঘাড় নিচু করে ভারী কিছু তোলার পর তীব্র ব্যথা।
হাঁচি, কাশি দিলে বা সামনে ঝুঁকলে ব্যথা বেড়ে যায়।
ব্যথা মাথার পেছন থেকে শুরু হয়ে মাথার সামনে আসতে পারে।
পরীক্ষা-নিরীক্ষা
ঘাড়ব্যথার কারণ নির্ণয় করার জন্য প্রয়োজনীয় ল্যাবরেটরি পরীক্ষা হতে পারে—রক্তের বিভিন্ন পরীক্ষা, ঘাড়ের এক্স-রে, এমআরআই বা সিটি স্ক্যান।
চিকিৎসা
চিকিৎসা এর কারণগুলোর ওপর নির্ভর করে।
কনজারভেটিভ চিকিৎসা: ১. ব্যথা বা প্রদাহনাশক ওষুধ ২.ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা। বিভিন্ন ধরনের ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা যেমন ম্যানুয়াল বা ম্যানুপুলেশন থেরাপি, থেরাপিউটিক এক্সারসাইজ ব্যবহৃত হয়। বিভিন্ন ধরনের ইলেকট্রোমেডিকেল ইকুইপমেন্ট যেমন ইন্টারফ্যারেনশিয়াল থেরাপি, অতি লোহিত রশ্মি, মাইক্রোওয়েভ ডায়াথারমি, আল্ট্রাসাউন্ড থেরাপি, শর্টওয়েভ ডায়াথার্মি ও ইন্টারমিটেন্ট ট্র্যাকশন ইত্যাদির মাধ্যমে চিকিৎসা করা যায়।
সার্জিক্যাল চিকিৎসা: মেডিকেল চিকিৎসায় ভালো না হলে, ব্যথা ক্রমান্বয়ে বাড়তে থাকলে, স্নায়ু সমস্যা দেখা দিলে, বাহু, হাত ও আঙুলে দুর্বলতা এবং অবশ ভাব দেখা দিলে এবং প্রস্রাব বা পায়খানার নিয়ন্ত্রণ না থাকলে দ্রুত সার্জিক্যাল চিকিৎসা গ্রহণ করতে হবে।
ঘাড়ব্যথা প্রতিরোধে করণীয়
১. সামনের দিকে ঝুঁকে দীর্ঘক্ষণ কাজ করবেন না।
২. মাথার ওপর কোনো ওজন নেবেন না।
৩. প্রয়োজনীয় বিশ্রাম নিতে হবে।
৪. শক্ত বিছানায় ঘুমাবেন।
৫. শোবার সময় একটা মধ্যম সাইজের বালিশ ব্যবহার করবেন, যার অর্ধেকটুকু মাথা ও অর্ধেকটুকু ঘাড়ের নিচে দেবেন।
৬. তীব্র ব্যথা কমে গেলেও ঘাড় নিচু বা উঁচু করা, মোচড়ানো (টুইসটিং) বন্ধ করা।
৭. সেলুনে কখনোই ঘাড় মটকাবেন না।
৯. কাত হয়ে শুয়ে পড়বেন না বা টেলিভিশন দেখবেন না।
১০. কম্পিউটারে কাজ করার সময় মনিটর চোখের লেভেলে রাখবেন।
১১. গরম প্যাড, গরম পানির বোতল দিয়ে গরম সেঁক দেবেন।
১২. ঘাড়ের পেশি নমনীয় ও শক্তিশালী হওয়ার ব্যায়াম করতে হবে।
এম ইয়াছিন আলী, চেয়ারম্যান ও চিফ কনসালট্যান্ট, ঢাকা সিটি ফিজিওথেরাপি হাসপাতাল, ঢাকা
আরও পড়ুনকাঁধের ব্যথা বা কাঁধ জমে যাওয়ার কারণ ও করণীয়১৭ এপ্রিল ২০২৫