রোববারের পতনের পর গতকাল সোমবার মিশ্র ধারা দেখা গেছে শেয়ারবাজারে। দর হ্রাস বা বৃদ্ধি পাওয়া শেয়ারের সংখ্যা ছিল প্রায় সমান। এর মধ্যে এ ক্যাটেগরির শেয়ারগুলোর বেশির ভাগ দর হারিয়েছে। বিপরীতে বেশির ভাগ বি ক্যাটেগরির শেয়ারদর বেড়েছে। জেড ক্যাটেগরিতে ছিল মিশ্রধারা। মূল্যসূচক ও টাকার অঙ্কে শেয়ার কেনাবেচা কিছুটা বেড়েছে।
সার্বিক হিসাবে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) তালিকাভুক্ত ৩৬০ কোম্পানির মধ্যে ১৬৪টির শেয়ারদর বেড়েছে, কমেছে ১৪৮টির এবং অপরিবর্তিত থেকেছে ৫১টির দর। এ ছাড়া তালিকাভুক্ত ৩৭ মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে ৫টির দর বৃদ্ধির বিপরীতে ১৪টির দর কমেছে, অপরিবর্তিত বাকিগুলোর দর।
পর্যালোচনায় দেখা গেছে, এ ক্যাটেগরিভুক্ত ২১৪ কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে ৭৭টির দর বৃদ্ধির বিপরীতে ৯২টি দর হারিয়েছে। বেশি সংখ্যক শেয়ার দর হারালেও এই ক্যাটেগরির শেয়ারগুলোর গড়ে বাজারদর বেড়েছে শূন্য দশমিক ৫৫ শতাংশ।

পর্যালোচনায় আরও দেখা গেছে, বি ক্যাটেগরিভুক্ত ৮৪ কোম্পানির মধ্যে ৪৪টির দর বেড়েছে, কমেছে ২৮টির। এসব শেয়ারের গড় শেয়ারদর বেড়েছে ১ দশমিক ৩৮ শতাংশ। জেড ক্যাটেগরিভুক্ত ৯২ কোম্পানির শেয়ারের মধ্যে সমান ৪২টি করে শেয়ারের দর বেড়েছে ও কমেছে। বাকি শেয়ারগুলোর দর অপরিবর্তিত।
সার্বিক মিশ্রধারার মধ্যে ৫ থেকে ১০ শতাংশ পর্যন্ত বাজারদর বেড়েছে ২৪ কোম্পানির। এর মধ্যে এ ক্যাটেগরির শেয়ার সাতটি। বি ক্যাটেগরির ৯টি এবং জেড ক্যাটেগরির আটটি। ৯ শতাংশের ওপর দর বৃদ্ধি পাওয়া শেয়ারগুলো ছিল সোনালি পেপার, পেপার প্রসেসিং, আলহাজ টেক্সটাইল, পাওয়ার গ্রিড, খুলনা প্রিন্টিং, ইনটেক, এনার্জিপ্যাক পাওয়ার, খুলনা পাওয়ার এবং কাট্টলী টেক্সটাইল। বিপরীতে প্রায় ১০ শতাংশ হারে দর হারিয়েছে আইসিবি সোনালি প্রথম মিউচুয়াল ফান্ড এবং এক্সপ্রেস ইন্স্যুরেন্স।

খাতওয়ারি শেয়ারের দর ওঠানামা পর্যালোচনায় দেখা গেছে, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ, প্রকৌশল, ওষুধ ও রসায়ন, খাদ্য ও আনুষঙ্গিক, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, কাগজ ও ছাপাখানা, তথ্যপ্রযুক্তি খাতের অধিকাংশ শেয়ারের দর বেড়েছে। বস্ত্রসহ অন্যসব খাতে দেখা গেছে মিশ্রধারা। কমেছে ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং বীমা খাতের অধিকাংশ শেয়ার। 
এমন অবস্থার মধ্যে গতকাল প্রধান মূল্য সূচক ডিএসইএক্স ৮ পয়েন্ট বেড়ে ৫১৭৪ পয়েন্টে উঠেছে। আবার টাকার অঙ্কে শেয়ার কেনাবেচা সাড়ে ৪৬ কোটি টাকা বেড়ে ৪২০ কোটি ৬৫ লাখ টাকায় উন্নীত হয়েছে। সর্বাধিক ১৫ কোটি টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়েছে বিচ হ্যাচারির। পরের অবস্থানে থাকা আলহাজ টেক্সটাইলের পৌনে ৯ কোটি টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়েছে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: রদর ব ড় ছ দর ব ড় ছ দর ব দ ধ দর হ র র দর ব ব পর ত

এছাড়াও পড়ুন:

মায়ের বৃদ্ধাঙ্গুলির মতো সরু গাজার শিশুদের হাত

গাজার নাসের হাসপাতালের শিশু অপুষ্টি ওয়ার্ডের শিশুরা একরকম নিশ্চল হয়ে পড়ে আছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তীব্র ক্ষুধার কারণে ক্লান্ত হয়ে এই শিশুরা কাঁদতে পারেন না।

চিকিৎসকরা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, সবচেয়ে তীব্র অপুষ্টিতে ভোগা শিশুদের চিকিৎসা করানো জায়গাগুলোতে নীরবতা এখন সাধারণ ঘটনা। শিশুদের এই নীরবতা তাদের শরীর কাজ না করার লক্ষণ।

১০ মাস বয়সী মারিয়া সুহাইব রাদওয়ানের মা জেইনা রাদওয়ান বলেন, “সে সবসময় নিশ্চল হয়ে পড়ে থাকে, এভাবে শুয়ে থাকে... ডাক দিলেও তার সাড়া পাওয়া যায় না।”

জেইনা তার শিশু সন্তানের জন্য দুধ বা পর্যাপ্ত খাবার খুঁজে পাচ্ছেন না এবং বুকের দুধ খাওয়াতে পারছেন না। কারণ তিনি নিজেও কম খাচ্ছেন, দিনে একবার খাবার খেয়ে বেঁচে আছেন।

গত সপ্তাহে, রয়টার্সের সাংবাদিকরা নাসের মেডিকেল কমপ্লেক্সে পাঁচ দিন কাটিয়েছেন। এটি গাজার সবচেয়ে বিপজ্জনক ক্ষুধার্ত শিশুদের চিকিৎসা করতে সক্ষম মাত্র চারটি কেন্দ্রের মধ্যে একটি। রয়টার্সের সাংবাদিকরা সেখানে উপস্থিত থাকাকালেই তীব্র অপুষ্টিতে ভোগা ৫৩ জন শিশুকে ভর্তি করা হয়েছিল।

ইসরায়েল মার্চ মাসে ত্রাণের প্রবেশ সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেওয়ার পর থেকে গাজার খাদ্য মজুদ ফুরিয়ে আসছে। খাদ্য মজুদ ফুরিয়ে যাওয়ার সাথে সাথে জুন এবং জুলাই মাসে পরিস্থিতি আরো খারাপ হয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ব্যাপক দুর্ভিক্ষের সতর্কবার্তা দেয় এবং ক্ষীণকায় শিশুদের ছবি বিশ্বকে হতবাক করে দেয়। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ৮৯ জন শিশুসহ ১৫৪ জন অপুষ্টিতে মারা গেছে। 

নাসের মেডিকেল কমপ্লেক্সের শিশু ও প্রসূতি বিভাগের প্রধান ডা. আহমেদ আল-ফাররা বলেন, “আমাদের শিশুদের জন্য দুধ দরকার। আমাদের চিকিৎসা সরঞ্জাম দরকার। আমাদের কিছু খাবার দরকার, পুষ্টি বিভাগের জন্য বিশেষ খাবার। হাসপাতালের জন্য আমাদের সবকিছু দরকার।”

তিনি জানান,তার হাসপাতাল এখন অপুষ্টিতে ভোগা শিশুদের চিকিৎসা করছে যাদের আগে কোনো স্বাস্থ্য সমস্যা ছিল না, যেমন শিশু ওয়াতিন আবু আমুনাহ। প্রায় তিন মাস আগে সুস্থভাবে জন্মগ্রহণ করেছিল। জন্মের সময় তার ওজনের চেয়ে ১০০ গ্রাম কম এখন তার ওজন।

ফাররা বলেন, “গত তিন মাসে তার ওজন এক গ্রামও বাড়েনি। বরং শিশুটির ওজন কমেছে। পেশী সম্পূর্ণরূপে হ্রাস পেয়েছে। হাড়ের উপরে কেবল ত্বক রয়েছে, যা ইঙ্গিত দেয় যে শিশুটি তীব্র অপুষ্টির পর্যায়ে প্রবেশ করেছে। এমনকি শিশুটির মুখ: তার গাল থেকে চর্বি টিস্যুও হারিয়ে গেছে।"

শিশুটির মা ইয়াসমিন আবু সুলতান শিশুটির অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের দিকে ইঙ্গিত করে জানান, তার বাহু তার মায়ের বৃদ্ধাঙ্গুলির মতো মোটা

তিনি বলেন, “দেখতে পারছেন? এগুলো তার পা... তার বাহুগুলোর দিকে তাকান।”
 

ঢাকা/শাহেদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ