কফিনমিছিল থেকে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবি
Published: 12th, February 2025 GMT
গাজীপুরে সাবেক মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের বাড়িতে হামলায় গুরুতর আহত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যাওয়া আবুল কাশেমের কফিন নিয়ে বুধবার রাতে মিছিল হয়েছে। মিছিলটি শহীদ মিনার থেকে শাহবাগ পর্যন্ত ছিল। মিছিল থেকে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবি জানিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির শীর্ষ নেতারা।
আজ বেলা তিনটার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় আবুল কাশেমের (২০) মৃত্যু হয়।
আজ রাত নয়টার কিছু আগে লাশবাহী ফ্রিজিং গাড়িতে করে নিহত আবুল কাশেমের মরদেহ শহীদ মিনারে আনা হয়। এরপর শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে বাংলাদেশের পতাকায় মোড়ানো মরদেহটি রাখা হয়। সেখানে তাঁর প্রথম জানাজা হয়।
জানাজা শুরুর আগে কাতারে দাঁড়িয়ে বক্তব্য দেন জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্যসচিব আখতার হোসেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ ও সদস্যসচিব আরিফ সোহেল।
আখতার হোসেন বলেন, আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনার নির্দেশে বাংলাদেশের মানুষের ওপর গণহত্যা চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ‘গাজীপুরে আমাদের ভাইকে হত্যার পেছনে যারা সক্রিয়ভাবে থেকেছে, হুমকি দিয়েছে ও পরিকল্পনা করেছে, তারা সবাই ফ্যাসিবাদী লীগ। গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগ বাংলাদেশে রাজনীতি করার বিন্দু পরিমাণ অধিকার রাখে না।’
আইনিভাবে আওয়ামী লীগের রাজনীতিকে নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক কমিটির এই সদস্যসচিব। পাশাপাশি শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে সর্বোচ্চ শাস্তি দেওয়ারও দাবি জানান। তিনি বলেন, ‘শহীদ ভাইয়ের লাশের শপথ নিয়ে বলছি, আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটানোর চেষ্টা করলে শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে আমরা তাদের বিরুদ্ধে লড়ে যাব।’
হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানের ছয় মাস পর জুলাই বিপ্লবীদের আওয়ামী লীগের হাতে শহীদ হতে হচ্ছে। এটি ফ্যাসিবাদবিরোধী রাজনৈতিক দল ও শক্তিগুলোর সম্মিলিত ব্যর্থতা। অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার জন্য আপনারা আর কত সময় নেবেন? আপনারা দ্রুততম সময়ে আইনগত প্রক্রিয়ায় আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করুন।’
এ সময় হাসনাত বলেন, ‘আবুল কাশেমের লাশ সামনে রেখে শপথ নিচ্ছি, আওয়ামী লীগকে আমরা নিষিদ্ধ করে ছাড়ব। এই দেশে হয় আওয়ামী লীগ থাকবে, নয়তো আমরা থাকব।’ সাংস্কৃতিকসহ নানা তৎপরতার মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগের পক্ষে বৈধতা উৎপাদন করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
মিছিলটি শাহবাগ মোড়ের আগে গিয়ে শেষ হয়। এরপর সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ হয়.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন ষ দ ধ কর আওয় ম
এছাড়াও পড়ুন:
যে জীবন মানুষের উপকারে আসে না, সে জীবন সার্থক নয়: ববিতা
চিরসবুজ অভিনেত্রী ফরিদা আক্তার ববিতা। ১৯৫৩ সালের ৩০ জুলাই বাগেরহাটে জন্মগ্রহণ করেন। আজ ৭১ বছর পূর্ণ করলেন সত্তরের দশকের অন্যতম সেরা এই অভিনেত্রী। জন্মদিন উপলক্ষে গত বছর একটি সাক্ষাৎকার দেন ববিতা। এ আলাপচারিতায় জীবনবোধ নিয়ে কথা বলেন এই শিল্পী।
জীবন নিয়ে ববিতা বলেন, “যে জীবন মানুষের কোনো উপকারে আসে না, সে জীবন সার্থক নয়। মরে গেলে আমার ছেলে অনিক আমাকে অনেক মিস করবে। একমাত্র ছেলে তো, ওর কথা খুব ভাবি। ভক্তরা আমাকে কতটুকু মনে রাখবেন, জানি না।”
একটি ঘটনা উল্লেখ করে ববিতা বলেন, “এই জীবনে একটা জিনিস খুব ভালো লেগেছে। অনেক শিল্পীকে তা দেওয়া হয়নি, হোক তা ভারতে কিংবা বাংলাদেশ। ২০২৩ সালে আমাকে যুক্তরাষ্ট্রের ডালাসের মেয়র আজীবন সম্মাননা দিয়েছেন। সেদিন আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ সম্মান দিয়েছেন, ৬ আগস্টকে ‘ববিতা ডে’ ঘোষণা করেছেন। তার মানে আমি বেঁচে না থাকলেও দিনটা উদযাপিত হবে। এটা আমার ভীষণ ভালো লেগেছে।”
আরো পড়ুন:
বধূবেশে অভিষেক কন্যা
জসীম পুত্রের মৃত্যু: ভাই রাহুলের আবেগঘন পোস্ট
মৃত্যুর কথা স্মরণ করে ববিতা বলেন, “তবে কবরে একা থাকার কথা ভাবলে হঠাৎ কেমন যেন লাগে। আরেকটা বিষয়, আমি অনেক দিন বেঁচে থাকতে চাই না। অসুখ–বিসুখে কষ্ট পেয়ে, বিছানায় পড়ে বাঁচতে চাই না। আমি কারো বোঝা হয়ে বাঁচতে চাই না।”
কারণ ব্যাখ্যা করে ববিতা বলেন, “চারপাশে অনেক আত্মীয়স্বজনকে দেখেছি, দিনের পর দিন বিছানায় অসুস্থ হয়ে কষ্ট পেয়েছেন। যারা একা থাকেন, তাদের জন্য এই কষ্ট যেন আরো বেশি। তাই সব সময় এটা ভাবি, কখনোই যেন অন্যের বোঝা না হই।”
সিনেমায় অভিনয়ের ইচ্ছা ববিতার কখনো ছিল না। পরিচালক জহির রায়হানের ‘সংসার’ সিনেমায় অভিনয়ের প্রস্তাব পেলেও প্রথমে রাজি হননি। পরে মা আর বোনের পীড়াপীড়িতে অভিনয় করেন। তখন তিনি ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়েন। মুক্তির পর সিনেমাটি সুপারফ্লপ হয়।
পরিচালক জহির রায়হান আবারো ‘জ্বলতে সুরজ কে নিচে’ উর্দু সিনেমার নায়িকা চরিত্রে অভিনয় করতে বললে প্রথমে রাজি হননি ববিতা। তখন বয়স মাত্র ১৪। কিন্তু সিনেমার বেশির ভাগ শুটিং হওয়ার পরও শিল্পীদের শিডিউল মেলাতে না পারায় সিনেমাটি আর শেষ করা হয় না।
এরপর জহির রায়হান ববিতাকে নিয়ে বাংলা সিনেমা বানান। মুক্তির পর সিনেমাটি সুপারহিট হয়। অভিনয় করার ইচ্ছা না থাকলেও সিনেমা হিট হওয়ায় আবারো ক্যামেরার সামনে দাঁড়ান তিনি। এরপর ‘স্বরলিপি’, ‘পিচঢালা পথ’, ‘টাকা আনা পাই’ সিনেমায় জুটি বাঁধেন রাজ্জাক-ববিতা। প্রতিটি সিনেমাই সুপারহিট।
ঢাকা/শান্ত