এর চেয়েও বাজে ব্যাটিংয়ের রেকর্ড আছে বাংলাদেশের
Published: 20th, February 2025 GMT
চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে ভারতের বিপক্ষে টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়ে নাজমুল হোসেন শান্ত ভুল করলেন কিনা সেটা এখন বিরাট প্রশ্নের বিষয়। পাওয়ার প্লে’ শেষ হওয়ার আগেই স্কোরবোর্ডের যে চিত্র তাতে প্রশ্নবিদ্ধ তাদের ব্যাটিং অ্যাপ্রোচ। ৮.৩ ওভারে বাংলাদেশের রান ৫ উইকেটে ৩৫। রোহিত শর্মা নবম ওভারের চতুর্থ বলে জাকের আলীর ক্যাচ মিস না করলে উইকেটের সংখ্যাটা আরো বাড়ত।
অধিনায়ক শান্ত যেখানে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, রোহিত সেখানে বোলিং করতে চেয়েছিলেন। নিজের বোলারদের ওপর তার প্রবল আত্মবিশ্বাস আছে বোঝাই যাচ্ছে। নয়তো বাংলাদেশকে শুরুতেই এভাবে ভসিয়ে দেয় কিভাবে। পাঁচ ব্যাটসম্যানের তিনজনই খুলতে পারেননি রানের খাতা। সৌম্য সরকার প্রথম ওভারে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন। দ্বিতীয় ওভারে শান্ত ক্যাচ দেন কাভারে। নবম ওভারে মুশফিক ক্যাচ দেন উইকেটের পেছনে। তিনজনই আউট শূন্য রানে। তানজিদ তামিম আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে আলোর আলো দেখিয়েছিলেন। কিন্তু ২৫ রানের বেশি করতে পারেননি। আর মিরাজ ৫ রানেই ফেরেন সাজঘরে।
দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির শুরুতে এমন বিপর্যয়ে পড়বে কতজনই বা ভেবেছিলেন? তবে এর চেয়েও বাজে শুরু পেয়েছিল বাংলাদেশ। সেটাও চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে। ২০০২ চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে কলম্বোর এসএসসি মাঠে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে শুরুর ১০ ওভারে বাংলাদেশ ৬ উইকেট হারিয়েছিল ৪৪ রানে।
আরো পড়ুন:
চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে বাংলাদেশের যাত্রা
ভারতকে হারানোর মন্ত্রে মাঠে নামবে বাংলাদেশ
চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে প্রথম ১০ ওভারে সবচেয়ে বাজে শুরুর রেকর্ডটা বাংলাদেশ নিজেদের দখলেই রেখেছে। ২০০৪ সালেও প্রায় একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি। সেবার ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সাউদাম্পটনে বাংলাদেশ ৫ উইকেট হারিয়েছিল ২৬ রানে। এবার ৩৯ রানে নেই ৫ উইকেট। ষষ্ঠ উইকেটে প্রতিরোধ গড়ে দলের রান এরই মধ্যে শতরান পেরিয়ে নিয়ে গেছেন জাকের আলী ও তাওহীদ হৃদয়। শূন্য রানে জাকের ও ২৩ রানে তাওহীদ জীবন পেয়েছেন। দ্বিতীয় জীবনে তাদের ব্যাট কতদূর যায় সেটাই দেখার।
ঢাকা/ইয়াসিন/নাভিদ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা কমাতে গুরুত্ব আরোপ
কাশ্মীরের পেহেলগামে হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা কার্যত সামরিক সংঘাতে রূপ নেওয়ার আশঙ্কা ক্রমেই বাড়ছে। এ পরস্থিতিতে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করকে ফোন করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। বুধবার দুজনকে করা এ ফোন কলে তিনি ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সৃষ্টি হওয়া উত্তেজনা কমানোর ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। এছাড়া দুই
ফোনালাপের বিষয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর থেকে দেওয়া পৃথক বিবৃতিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে ফোনে কথা বলার সময় মার্কো রুবিও বলেন, তিনি পেহেলগাম হামলায় নিহতদের জন্য দুঃখ প্রকাশ করছেন এবং যুক্তরাষ্ট্র সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের সঙ্গে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
তবে তিনি আরও বলেন, ভারত যেন পাকিস্তানকে অভিযুক্ত করার আগে সতর্ক থাকে, কারণ এখনও পর্যন্ত ভারত এই হামলায় পাকিস্তানের সম্পৃক্ততার কোনও প্রমাণ প্রকাশ করেনি।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস এক বিবৃতিতে বলেছেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় প্রাণহানির জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন এবং সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের সঙ্গে সহযোগিতার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন। তিনি দক্ষিণ এশিয়ায় উত্তেজনা কমাতে এবং শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখতে ভারতকে পাকিস্তানের সঙ্গে কাজ করার জন্য বলেছেন।
পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস বলেন, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের সঙ্গে ফোনালাপে রুবিও- ২২ এপ্রিল ভারত-শাসিত কাশ্মীরের পর্যটন কেন্দ্র পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার নিন্দা করার প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছেন।
তিনি এক বিবৃতিতে বলেছেন, রুবিও এই অযৌক্তিক হামলার তদন্তে পাকিস্তানি কর্মকর্তাদের সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছেন।
জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ বলেন, ভারতের উস্কানিমূলক আচরণ শুধু উত্তেজনাই বাড়াচ্ছে এবং পাকিস্তানের সন্ত্রাসবিরোধী প্রচেষ্টাকে বিভ্রান্ত করছে। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানান, যেন তারা ভারতের ওপর দায়িত্বশীল আচরণ ও ভাষার ব্যবহার নিশ্চিত করতে চাপ প্রয়োগ করে।
এর আগে গত ২২ এপ্রিল মঙ্গলবার বিকেলে কাশ্মীরের পেহেলগাম জেলার বৈসরণ তৃণভূমিতে বন্দুকধারীদের হামলায় অন্তত ২৬ জন নিহত হন, যাদের প্রায় সবাই পর্যটক। হামলার দায় স্বীকার করে রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট নামে একটি সংগঠন। এটিকে পাকিস্তানভিত্তিক লস্কর-ই-তৈয়্যেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বলে মনে করা হয়।
এ ঘটনায় আরও বেশ কয়েকজনকে আহত হন। যাদের গুলি করে হত্যা করা হয়েছে, তারা সবাই পুরুষ। বস্তুত, ২২ এপ্রিলের হামলা ছিল ২০১৯ সালের পুলোয়ামা হামলার পর জম্মু ও কাশ্মীরে সবচেয়ে বড় প্রাণঘাতী হামলা। বর্তমানে এ ঘটনায় দুই দেশের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।
পেহেলগামের ভয়াবহ ওই হামলার জেরে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক তলানিতে ঠেকেছে। দুই দেশের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ সিন্ধু পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিত করেছে ভারত। জবাবে সিমলা চুক্তি স্থগিত ও ভারতীয় বিমানের জন্য নিজেদের আকাশসীমা বন্ধের ঘোষণা দেয় পাকিস্তান।
তাছাড়া, হামলার পরে দুই দেশই ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে প্রতিবেশী দেশের নাগরিকদের ভিসা বাতিল করে ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দেয়। সূত্র-এএফপি