মরিনিওর বিরুদ্ধে বর্ণবাদের অভিযোগ এনে মামলা করার হুমকি গালাতাসারাইয়ের
Published: 25th, February 2025 GMT
গতকাল সোমবার টার্কিশ ফুটবলের শীর্ষ লিগের ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল শীর্ষ দুই ক্লাব গালাতাসারাই ও ফেনেরবাচে। হাইভোল্টেজ এই লড়াইটি শেষ পর্যন্ত নিষ্পত্তি হয় গোলশূন্য ড্রয়ে।
এই ম্যাচের পর প্রতিপক্ষের ওপর চড়াও হন ফেনেরবাচ কোচ জোসে মরিনিও। মরিনিও বলেন, ঘরের মাঠে গালাতাসারাইয়ের বেঞ্চে থাকা সদস্যরা ‘বানরের মতো লাফালাফি করেছে।’ এ সময় রেফারি স্লোভেনিয়ান স্লাভকো ভিনচিচকে নিয়েও কথা বলেছেন তিনি। এ প্রসঙ্গে সমালোচনা করেছে তুরস্কের রেফারিদেরও।
মরিনিওর এমন মন্তব্য গালাতাসারাইয়ের সদস্যদের মধ্যে বেশ বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে। জবাবে তারা মারিনিওকে ‘বর্ণবাদী’ বলে মন্তব্য করে এবং পর্তুগিজ কোচের বিরুদ্ধে বারবার তুর্কি জনগোষ্ঠীর প্রতি অবমাননাকর মন্তব্যের অভিযোগ এনেছে। গালাতাসারাই অবশ্য এটুকুতেই থামেনি।
তারা এখন মরিনিওর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থাও নিতে যাচ্ছে বলে জানিয়েছে। পাশাপাশি বর্ণবাদী মন্তব্যের জের মরিনিওর বিরুদ্ধে ফিফা ও উয়েফাতেও অভিযোগ দিতে যাচ্ছে গালাতাসারাই।
এর আগে দুই দলের অনুরোধে এই ম্যাচ পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয় স্লোভেনিয়ান রেফারি বেনচিচকে। আর ম্যাচ শেষে মরিনিও বলেছেন, ‘আমি অবশ্যই রেফারিকে ধন্যবাদ দিতে চাই। প্রতিপক্ষের বেঞ্চের সদস্যরা তো বানরের মতো লাফালাফি করেছে। টার্কিশ রেফারি হলে প্রথম মিনিটেই আমাদের হলুদ কার্ড দেখানো হতো এবং আমাকে ৫ মিনিট পরই তাকে বদলি করে ফেলতে হতো।’
মরিনিও আরও যোগ করে বলেছেন,“‘আমি ম্যাচ শেষে ড্রেসিংরুমে রেফারির সঙ্গে দেখা করেছি। সেখানে চতুর্থ রেফারিও সে ছিল, যে একজন টার্কিশ। আমি তাকে (বেনচিচ) এই বড় ম্যাচটায় দায়িত্ব পালন করতে আসার জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছি। এরপর আমি চতুর্থ রেফারিকে বলেছি, ‘যদি তুমি এই ম্যাচে রেফারি থাকতে তবে বিপর্যয় হয়ে যেত।’”
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
মাঠে ধান কাটতে গিয়ে বজ্রপাতে সুনামগঞ্জে ২, নেত্রকোনায় ১ কৃষকের মৃত্যু
সুনামগঞ্জের হাওরে ধান কাটতে গিয়ে বজ্রপাতে দুই কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে দিরাই উপজেলায় আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে রিংকু দাস এবং দুপুরে জামালগঞ্জ উপজেলায় মানিক মিয়া নামের আরেক কৃষক মারা যান। নেত্রকোনার মোহনগঞ্জে বাড়ির পাশের খেতে ধান কাটতে গিয়ে বজ্রপাতে গোলাপ মিয়া (৩০) নামের আরও এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দিরাই উপজেলায় থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছিল। বিকেলে গ্রামের পাশের উদগল হাওরে ধান কাটছিলেন কৃষকেরা। ধান কাটায় অন্যদের সঙ্গে রিংকু দাসও (২৪) ছিলেন। তখন বৃষ্টির সঙ্গে বজ্রপাত হলে ঘটনাস্থলে বজ্রপাতে আহত হন রিংকু দাস। স্থানীয় কৃষকেরা তাঁকে উদ্ধার করে দিরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। রিংকু দাস উপজেলার গোপালপুর গ্রামের বাসিন্দা।
দিরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুর রাজ্জাক বজ্রপাতে রিংকু দাসের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আইনি প্রক্রিয়া শেষে পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হবে।
জামালগঞ্জ উপজেলায় হাওরে ধান কাটতে গিয়ে বৃহস্পতিবার দুপুর দেড়টার দিকে বজ্রপাতে মানিক মিয়া (৩৫) নামের এক কৃষকের মৃত্যু হয়। মানিক মিয়া জামালগঞ্জ উপজলার লক্ষ্মীপুর গ্রামের বাসিন্দা।
আরও পড়ুনবজ্রপাতে ২৪ ঘণ্টায় ১৩ জনের মৃত্যু ২৮ এপ্রিল ২০২৫পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন জানান, উপজেলার পাকনার হাওরে সকালে ধান কাটতে যান মানিক মিয়া। দুপুরে বৃষ্টির সঙ্গে বজ্রপাত হচ্ছিল। বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই মারা যান তিনি। পরে হাওরে থাকা অন্য কৃষকেরা তাঁর লাশ বাড়িতে নিয়ে আসেন। জামালগঞ্জ থানার ওসি মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে নেত্রকোনার মোহনগঞ্জে খেতে ধান কাটতে গিয়ে বজ্রপাতে মারা যাওয়া গোলাপ মিয়া ওই গ্রামের পাইক মিয়ার ছেলে।
এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা ও থানা-পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার দুপুরে বাড়ির সামনের খেতে বোরো ধান কাটছিলেন গোলাপ মিয়া। এ সময় সঙ্গে তাঁর বাবা, ভাইসহ পরিবারের অন্য লোকজনও ছিলেন। দুপুর দুইটার দিকে হঠাৎ করে বৃষ্টি শুরু হয়। একপর্যায়ে গোলাপ মিয়ার পাশেই বজ্রপাতের ঘটনা ঘটে। এতে চিৎকার দিয়ে দৌড়ে গিয়ে জমির একপাশে গিয়ে পড়েন গোলাপ। সঙ্গে থাকা পরিবারের লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে দ্রুত মোহনগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। তবে পরীক্ষা–নিরীক্ষার পর চিকিৎসক গোলাপকে মৃত ঘোষণা করেন।
মোহনগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. শফিকুজ্জামান বলেন, বজ্রপাতের ঘটনায় মৃত্যু হওয়ায় এ বিষয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ নেই। তাই তাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে।
আরও পড়ুনবজ্রপাত কমলেও বছরে মৃত্যু দেড় শ মানুষের০৫ জুন ২০২১