রংপুরে শ্বশুর-জামাই হত্যাকাণ্ডের বিচার চেয়ে মানববন্ধন
Published: 16th, August 2025 GMT
রংপুরের তারাগঞ্জে চোর সন্দেহে শ্বশুর-জামাইকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় প্রকৃত অপরাধীদের গ্রেপ্তার এবং ভুক্তভোগী পরিবারের ক্ষতিপূরণ ও নিরাপত্তার দাবিতে মানববন্ধন করা হয়েছে।
শনিবার (১৬ আগস্ট) দুপুর ১২টার দিকে রংপুর প্রেসক্লাবের সামনে দলিত জনগোষ্ঠী অধিকার আন্দোলনের ব্যানারে ঘণ্টাব্যাপী আয়োজিত মানববন্ধনে এসব দাবি জানানো হয়।
এতে বক্তব্য দেন, দলিত জনগোষ্ঠী অধিকার আন্দোলনের রংপুর জেলা শাখার সভাপতি অ্যাডভোকেট মনিলাল দাস, সাধারণ সম্পাদক গোপাল চন্দ্র দাস, আইনজীবী পলাশ কান্তি নাগ প্রমুখ। মানববন্ধনে সংগঠনের অন্য সদস্যরা ছাড়াও নিহতদের স্বজনরা উপস্থিত ছিলেন।
আরো পড়ুন:
রমেক ক্যাম্পাসে অনৈতিক কর্মকাণ্ডের সময় ড্যাব নেতা আটক
কাঙ্ক্ষিত বাজেট চেয়ে বেরোবির শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ, ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম
বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, সন্ত্রাসীদের হাত-পা ধরেও জীবন রক্ষা হয়নি শ্বশুর-জামাইয়ের। পুলিশ ও প্রশাসনের অবহেলার কারণেই এই মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। তাই দ্রুত বিচার নিশ্চিতের পাশাপাশি সারাদেশে মব ভায়োলেন্স দমন করতে সরকার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে।
তারা বলেন, সারা দেশে যেভাবে মব ভায়োলেন্স সৃষ্টি করে একের পর এক তাণ্ডব, ধ্বংসযজ্ঞ ও হত্যাকান্ডের মত ঘটনা ঘটছে, এসব ঘটনায় সরকারের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর এখন পর্যন্ত কোনো তৎপরতা দেখা যায়নি। দেশের মানুষের নিরাপত্তা নিয়ে সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের সমালোচনা করেন বক্তারা।
অ্যাডভোকেট মনিলাল দাস বলেন, “প্রকাশ্যে চোর আখ্যা দিয়ে উগ্রবাদী সন্ত্রাসীরা দুইজন নিরপরাধ মানুষকে হত্যা করেছে। অথচ ঘটনাস্থলে উপস্থিত পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। উগ্রবাদীদের নিবৃত করতে কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ নেই। উপস্থিত থেকেও কেনো পুলিশ দায়িত্ব পালন করেনি, তার জবাব রাষ্ট্রকে দিতে হবে।”
তিনি আরো বলেন, “এই হত্যাকাণ্ডের মূল হোতাদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানাচ্ছি। একইসঙ্গে সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি নিহত পরিবারগুলোর ভরণপোষণের দায়িত্ব সরকারকে নিতে হবে।”
গত ৯ আগস্ট রাতে রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলার বুড়িহাট এলাকায় চোর সন্দেহে শ্বশুর-জামাইকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে তারাগঞ্জ থানায় অজ্ঞাতনামা ৭০০ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়।
পুলিশ এখন পর্যন্ত চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে। এছাড়া দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে আট পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
ঢাকা/আমিরুল/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর হত য ক সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
অন্তঃসত্ত্বা নারীকে মারধরের অভিযোগ, নওগাঁয় ইউএনওর অপসারণ চেয়ে মানববন্ধন
নওগাঁর ধামুইরহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহরিয়ার রহমান ও ধামুইরহাট পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুস সালামের বিরুদ্ধে অন্তঃসত্ত্বা নারীসহ দুজনকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় আজ বুধবার দুপুরে অভিযুক্ত কর্মকর্তাদের শাস্তি ও ইউএনওর অপসারণের দাবিতে উপজেলা পরিষদ চত্বরে মানববন্ধন করেছেন এলাকাবাসী।
মানববন্ধনে বক্তারা অভিযোগ করেন, উপজেলার মঙ্গলকোঠা আবাসিক এলাকায় ধামুইরহাট পৌরসভার ময়লা-আবর্জনা ফেলা নিয়ে গতকাল মঙ্গলবার সকালে পৌরসভার লোকজনের সঙ্গে এলাকাবাসীর বাগ্বিতণ্ডা হয়। ময়লা ফেলতে বাধা দেওয়ার খবর পেয়ে ইউএনও শাহরিয়ার রহমান ও পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুস সালাম ঘটনাস্থলে যান। এ সময় ওই দুই কর্মকর্তা প্রকাশ্যে মঙ্গলকোঠা এলাকার এক অন্তঃসত্ত্বা নারীসহ দুই নারীকে মারধর করেন।
গৃহবধূ সামিরন খাতুন বলেন, ‘পৌরসভার লোকজন গাড়িতে করে আমাদের এলাকায় ময়লা ফেলতে এলে এলাকার সবাই মিলে বাধা দিই। বসতবাড়ির আশপাশে ময়লা ফেললে সমস্যা হবে বলে ইউএনওকে ময়লা না ফেলতে এলাকাবাসী অনুরোধ করেন। কিন্তু ইউএনও আমাদের কথা না শুনে আমাকেসহ মিতুকে (অন্তঃসত্ত্বা নারী) নিজেই লাঠি দিয়ে মারধর করেন। আমরা ইউএনওর অপসারণসহ তাঁর কঠোর শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।’
মানববন্ধনে স্থানীয় আবদুল কুদ্দুস বলেন, ‘ইউএনও আমার গর্ভবতী স্ত্রীর গায়ে তুলেছে সবার সামনে। একজন ইউএনওর আচরণ এমন হলে আমরা বিচার কার কাছে পাব?’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইউএনও শাহরিয়ার রহমান বলেন, পৌরসভার পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা একটি খাস জমিতে ময়লা ফেলতে গেলে স্থানীয় কয়েকজন বাধা দেন এবং পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের গালমন্দ করে তাড়িয়ে দেন। বিষয়টি সমাধানের জন্য তিনি ওই এলাকায় গেলে এলাকার কিছু লোক তাঁর সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন। সেখানে কয়েকজন অবৈধ দখলদার নারী-পুরুষ বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করেন। একপর্যায়ে পরিচ্ছন্নতাকর্মী ও আনসারদের গায়ে হাত তোলেন। নারীদের মারধরের অভিযোগের বিষয়ে তিনি দাবি করেন, ‘সেখানে কারও গায়ে হাত তোলা হয়নি। কিছু স্বার্থান্বেষী মহল আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তুলছে।’
জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবদুল আউয়াল প্রথম আলোকে বলেন, আজ মানববন্ধন করে কিছু লোক ইউএনওর বিরুদ্ধে নারীকে মারধরের অভিযোগ করেন। উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি ও জেলা প্রশাসনের মধ্যস্থতায় বিষয়টি মীমাংসা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক।