হত্যা মামলার আসামির মরদেহ দাফনে বাঁধা, রাতভর থানায় আশ্রয়ের পর বোনের বাড়ি দাফন
Published: 26th, February 2025 GMT
যশোরের ঝিকরগাছায় যুবদলকর্মী পিয়াল হাসান হত্যা মামলার আসামি আমিরুল ইসলামের মরদেহ দাফনে বাঁধা ও স্বজনদের পিটিয়ে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। মঙ্গলবার রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান আমিরুল ইসলাম (৫৬)। রাতে তার মরদেহ পৈত্রিক নিবাস মোবারকপুরে নেওয়া হয়। এরপর আমিরুলের স্ত্রী আয়েশা বেগম, বড় মেয়ে রিনিকে বেদম মারপিট করে মরদেহসহ বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয় নিহত পিয়ালের স্বজনরা। রাতভর লাশ নিয়ে থানায় অবস্থানের পর আজ বুধবার আসরের নামাজের পর জানাজা শেষে বোনের শ্বশুরবাড়ির কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়েছে।
জানা যায়, ঝিকরগাছার যুবদলকর্মী পিয়াল হাসান হত্যা মামলার ১০ নম্বর আসামি আমিরুল ইসলাম (৫৬) খুলনা জেলখানায় অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গত ২৩ জানুয়ারি উচ্চ আদালত তার জামিন মঞ্জুর করেন। ২৭ জানুয়ারি জেলখানা থেকে মুক্তি পান তিনি। এরপর যশোর সদর উপজেলার পুলেরহাট গ্রামে আমিরুল ইসলামের মেয়ে রিনির বাড়ি থেকে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। মঙ্গলবার রাতে আমিরুল ইসলাম অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে যশোর কুইন্স হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
আমিরুল ইসলামের বোন পলি খাতুন জানান, ওই রাতেই আমিরুল ইসলামের মরদেহ ঝিকরগাছা পৌর সদরের মোবারকপুর গ্রামে পৈত্রিক বাড়িতে নিয়ে গেলে মৃতের মেয়ে রিনি ও স্ত্রী আয়েশা বেগমকে মারপিট করে নিহত পিয়ালের পরিবারের লোকজন। এ সময় মরদেহসহ তাদেরকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়। এক পর্যায়ে মরদেহ নিয়ে সারারাত ঝিকরগাছা থানায় অবস্থান করেন।
তিনি আরও বলেন, আজ বুধবার আমিরুলের মরদেহ ঝিকরগাছা পৌর সদরের কাটাখাল বেলে বটতলা গ্রামে বোন পলি খাতুনের বাড়িতে নেওয়া হয়। বিকেলে তাকে উপজেলা শহরের কাটাখাল কবরস্থানে দাফন করা হয়।
তবে পিয়ালের বাবা কিতাব আলী বলেন, আমাদের বাড়ির পরের বাড়িটি আমিরুল ইসলামের। আমার ছেলে খুনের পর তারা সবাই পলাতক ছিল। হঠাৎ আমিরুল মারা গেলে, তার মরদেহ নিয়ে বাড়িতে আসে। এরপর আমার বাড়ির পাশে তাদের জমিতে দাফন করার সিদ্ধান্ত নেন। এ সময় আমিরুলের স্বজনদের সঙ্গে আমার স্বজনদের বাকবিতন্ডা হয়। একপর্যায়ে উভয় পক্ষ মারামারিতে জড়িয়ে পড়েন। পরে তারা অন্য স্থানে দাফন করেছে বলে শুনেছি।
নাভারণ সার্কেলের সহকারি পুলিশ সুপার আল নাহিয়ান বলেন, আমিরুল ইসলামের মরদেহ নিয়ে থানায় আসে স্বজনরা। পরে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের ডাকা হয় দাফনের ব্যবস্থা করার জন্য। কিন্তু আমিরুলের স্বজনরা গ্রামে দাফন করতে রাজি হয়নি। পরে স্বজনরা তাকে পছন্দের করবস্থানে দাফন করেছে।
উল্লেখ্য, গত ৯ নভেম্বর যশোরের ঝিকরগাছায় যুবদল কর্মী পিয়াল হাসানকে কুপিয়ে হত্যা করে প্রতিপক্ষ। তিনি মোবারকপুর বিশ্বাসপাড়ার কিতাব আলীর ছেলে। তার নামে বিস্ফোরক আইনসহ ১০টি মামলা ছিল।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: যশ র ম র মরদ হ আম র ল র ঝ করগ ছ স বজনর
এছাড়াও পড়ুন:
টাকার জন্য দেশে ছেড়েছি, এখন টাকা খরচের সময় নেই: পিয়া বিপাশা
লাক্স চ্যানেল আই সুপারস্টার প্রতিযোগিতার মাধ্যমে বিনোদন অঙ্গনে পা রাখেন পিয়া বিপাশা। এরপর অভিনয় করেছেন মিউজিক ভিডিও, নাটক ও সিনেমায়। কিন্তু হুট করেই নাই হয়ে গেলেন। পরে জানা গেল অভিনেত্রী আমেরিকায়। গেল পাঁচ বছর সেখানেই বাস করছেন তিনি। সম্প্রতি দেশের একটি গণমাধ্যমে প্রবাসজীবনসহ নানা বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন তিনি।
পিয়া বিপাশা জানান, একমাত্র মেয়েকে নিয়ে নিউইয়র্কে বসবাস শুরু করেন। এরপর যুক্তরাষ্ট্রের এক নাগরিকের সঙ্গে তাঁর প্রেম ও ভালোবাসা তৈরি হয়। তারপর তাঁরা বিয়ে করেন। দুজনে মিলে বিয়ে করলেও আনুষ্ঠানিকতা সারেননি। চলতি বছরের শেষ দিকে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সেরে নেওয়ার ইচ্ছা।
পিয়া বিপাশা বলেন, ‘বাংলাদেশে ভালো লাগত না। কারণ, লবিং ছাড়া কাজ হতো না। ভালো একটা সিনেমা করার কথা ছিল। কিন্তু সেটা আর হয়নি। এরপর আমার মিডিয়ায় কাজ করার ইচ্ছাই নষ্ট হয়ে যায়। আমি আসলে কাজ করতে চেয়েছিলাম টাকা কামানোর জন্য। কাজ না করতে পারলে টাকা কামাব কী করে। তাই সিদ্ধান্ত নিই অন্য কিছু করার।’
বিপাশার কথায়, ‘টাকা রোজগারের জন্য আমি বিনোদন অঙ্গনে কাজ করেছিলাম। কারণ, আমার একটা মেয়ে ছিল। মেয়েকে নিয়ে টিকে থাকার বিষয় ছিল। পরে দেখলাম, যেভাবে কাজ হয়, আমাকে দিয়ে ইন্ডাস্ট্রিতে টিকে থাকা সম্ভব নয়। তাই সিদ্ধান্ত নিলাম, আমেরিকায় চলে আসার। এখানে এসে বাংলাদেশের সঙ্গে সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ করে দিই। অনেক টাকাও আয় করছি।’
পিয়া বিপাশা বলেন, ‘সত্যি বলতে এখন আমার এমন অবস্থা, টাকা ইনকাম না করলেও হয়। আমার এখন আর কোনো স্বপ্ন নেই। যা চেয়েছি, গত পাঁচ বছরে সবই পেয়েছি। টাকাপয়সা, সুন্দর জীবন, প্রতিষ্ঠিত হওয়া, ভালো স্বামী—সবই আমার হয়েছে। টাকা নিয়ে এখন কোনো চিন্তা নেই আমার—যা আয় করি, তা ব্যয় করার সময় পাই না।’
পিয়া বিপাশা জানান, ইনস্টাগ্রাম ও ফেসবুকে বিভিন্ন পণ্যের যেসব পোস্ট করেন, তার জন্য বেশ ভালো সম্মানী পান। তাঁর দাবি, এই সম্মানী কখনো দুই হাজার ডলার, আবার কখনো তিন হাজার ডলারের মধ্যে।
২০১৩ সালে ‘দ্বিতীয় মাত্র’ নাটকে তাহসান খানের বিপরীতে অভিনয় করেন। ছোটবেলায় রূপকথার বই পড়তে পছন্দ করতেন। বই পড়ার সময় গল্পের নায়িকার চরিত্রে নিজেকে কল্পনাও করতেন। বড় পর্দায়ও অভিনয় করেছিলেন। ‘রুদ্র: দ্য গ্যাংস্টার’ নামের সেই ছবি মুক্তি পায়। এরপর ‘রাজনীতি’ ছবিতে শাকিব খানের বিপরীতে অভিনয়ের কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত হয়ে ওঠেনি। পরে সেই ছবিতে পিয়া বিপাশার পরিবর্তে অপু বিশ্বাস অভিনয় করেন।