‘মব’ বানিয়ে দুই বিদেশিকে মারধর মামলা, গ্রেপ্তার ২
Published: 6th, March 2025 GMT
বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময়ের (ডলার বদলে টাকা নেওয়ার) সময় ভুল বোঝাবুঝির জের ধরে রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় ইরানের দুই নাগরিককে মারধর করা হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ। ওই সময় তাদের ছিনতাইকারী আখ্যা দিয়ে ‘মব’ সৃষ্টি করা হয়।
মারধরের এক পর্যায়ে তাদের উদ্ধার করতে গিয়ে পুলিশও আহত হয়। এ ঘটনায় জড়িত অভিযোগে দু’জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তার দু’জন হলেন– সাব্বির ও আব্দুল্লাহ। তারা স্থানীয় বলে জানতে পেরেছে পুলিশ।
ঢাকা মহানগর পুলিশের বাড্ডা অঞ্চলের সহকারী কমিশনার এইচ এম শফিকুর রহমান সমকালকে বলেন, পুলিশের ওপর আক্রমণ ও গুরুতর আঘাতের অভিযোগ এনে গতকাল বুধবার পুলিশ বাদী হয়ে একটি মামলা করেছে। এতে দুই ইরানি নাগরিককে মারধরের ঘটনার বর্ণনাও রয়েছে। ভাটারা থানার এই মামলায় গ্রেপ্তার দু’জনসহ অজ্ঞাতপরিচয় আরও ২৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে। সিসিটিভি ফুটেজ দেখে জড়িতদের শনাক্তের চেষ্টা চলছে।
পুলিশের এই কর্মকর্তা জানান, আহত দুই বিদেশির ভাষ্য, গত মঙ্গলবার দুপুরে তারা এক বাংলাদেশির কাছ থেকে ডলার বদলে টাকা নেন। লেনদেনের এক পর্যায়ে বাংলাদেশি ব্যক্তি দাবি করেন, তিনি কম ডলার পেয়েছেন। এ নিয়ে বাগ্বিতণ্ডার একপর্যায়ে তিনি বিদেশিদের বহনকারী গাড়িতে আঘাত করে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এই দৃশ্য দেখে আশপাশের লোকজন জড়ো হতে থাকে। ভয় পেয়ে দুই বিদেশি দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগের চেষ্টা চালান। তখন লোকজন ধাওয়া করে তাদের মারধর করে। ওই সময় তাদের বাংলাদেশি গাড়িচালক পিটুনির শিকার হয়ে পালিয়ে যান। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, ফুটপাতে দাঁড়িয়ে দুই পক্ষ আর্থিক লেনদেন করছেন। ঘটনার সূত্রপাত কীভাবে, তা ফুটেজ দেখে স্পষ্ট হওয়া যায়নি।
মারধরের শিকার ব্যক্তিরা হলেন– ইরানের নাগরিক মোহাম্মদ আহমদ (৭৪) ও তাঁর নাতি মো.
ভাটারা থানার ওসি মাজহারুল ইসলাম বলেন, ছিনতাইয়ের একটি অভিযোগ উঠলেও তেমন কোনো ভুক্তভোগীকে পাওয়া যায়নি। ফলে প্রকৃতপক্ষে কী ঘটেছে, তা পূর্ণাঙ্গ তদন্ত ছাড়া বলার সুযোগ নেই।
ভাটারা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সুজন হক বলেন, ইরানের দুই নাগরিকের ভাষ্যে ঘটনাটির একরকম বর্ণনা পাওয়া গেছে। কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে ছিনতাইয়ের অভিযোগ ওঠার কারণ নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তারা নিরপরাধ কিনা, তা নিয়েও সন্দেহ রয়েছে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ম রধর
এছাড়াও পড়ুন:
জকসুতে এআই ব্যবহারে থাকবে শিথিলতা, তবে অপব্যবহার করা যাবে না: নির্বাচন কমিশন
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জকসু) নির্বাচনে এআই (কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা) ব্যবহারে শিথিলতা থাকবে। তবে এর অপব্যবহার করা যাবে না বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনের সদস্য জুলফিকার মাহমুদ।
রোববার উপাচার্যের সভাকক্ষে রাজনৈতিক ও সক্রিয় সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত জকসু ও হল সংসদ নির্বাচন-২০২৫-এর আচরণবিধিবিষয়ক মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।
ছাত্রশক্তির আহ্বায়ক ফয়সাল মুরাদের এক দাবির জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন। এর আগে ফয়সাল মুরাদ বলেন, ‘নির্বাচনী আচরণবিধির ৭–এর ঘ ধারায় বলা হয়েছে, নির্বাচনী প্রচারণায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই ব্যবহার করা যাবে না। আমরা যারা ছোট সংগঠন, আমাদের তহবিল সীমিত। আমরা নির্বাচনী প্রচারের জন্য এআই ব্যবহার করে দু-এক মিনিটের ভিডিও বানিয়ে প্রচার কার্যক্রম চালাতে চাই। আমাদের দাবি, এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশন যেন শিথিল নীতি গ্রহণ করে।’
মুরাদ আরও বলেন, বিগত চারটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচনে কিছু ত্রুটি লক্ষ করা গেছে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জকসু) নির্বাচনকে স্বচ্ছ, সুষ্ঠু ও বিতর্কমুক্ত রাখার জন্য যতগুলো ভোটকক্ষ থাকবে, সব কটি সিসিটিভি ফুটেজের আওতায় রাখতে হবে। সবার জন্য সেই সিসিটিভি ফুটেজ উন্মুক্ত রাখতে হবে। ভোট গ্রহণকে স্বচ্ছ রাখার জন্য ভোটকক্ষের ভেতরে জাতীয় গণমাধ্যমকে সরাসরি সম্প্রচার করার অনুমতি দেওয়ার কথা বলেন তিনি।
দাবির পরিপ্রেক্ষিতে জকসুর নির্বাচন কমিশনার জুলফিকার মাহমুদ বলেন, ‘এআই ব্যবহার করে বিভিন্নজনের চরিত্র হনন করা হয়, অপপ্রচার চালানো হয়। সেদিক থেকে চিন্তা করে এআই ব্যবহার নিষিদ্ধ রেখেছিলাম। তোমাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এআই ব্যবহারে শিথিলতা থাকবে প্রচার–প্রসারে, তবে অপব্যবহার করা যাবে না। আর সরাসরি সম্প্রচারের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে আলোচনা করে।’
প্রধান নির্বাচন কমিশনার মোস্তফা হাসানের সভাপতিত্বে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপাচার্য রেজাউল করিম, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ ও হল শিক্ষার্থী সংসদ নির্বাচন ২০২৫–এর নির্বাচন কমিশনার ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্রিয়াশীল সংগঠন ও রাজনৈতিক সংগঠনের নেতারা।