সদ্য শেষ হওয়া আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সেরা একাদশ ঘোষণা করেছে আইসিসি। চ্যাম্পিয়ন ভারত থেকে সর্বাধিক পাঁচ ক্রিকেটার জায়গা পেয়েছেন দলে, যদিও অধিনায়ক রোহিত শর্মা জায়গা করে নিতে পারেননি।

রানার্সআপ নিউজিল্যান্ড থেকে চারজন অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন এই একাদশে। দলের অধিনায়ক মিচেল স্যান্টনারকে করা হয়েছে সেরা একাদশেরও অধিনায়ক। এছাড়া আফগানিস্তানের দুজন ক্রিকেটার আছেন এই তালিকায়। তবে জায়গা হয়নি অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা, বাংলাদেশ কিংবা স্বাগতিক পাকিস্তানের কোনো ক্রিকেটারের।

রোববার ফাইনালে নিউ জিল্যান্ডকে ৪ উইকেটে হারিয়ে ২০১৩ সালের পর দ্বিতীয়বারের মতো চ্যাম্পিয়ন হয় ভারত। সোমবার আইসিসি এই সেরা একাদশ প্রকাশ করে। টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হয়েছেন নিউজিল্যান্ডের রাচীন রবীন্দ্র, যিনি ৪ ম্যাচে করেন ২৬৩ রান। তার সঙ্গে ওপেনার হিসেবে আছেন আফগানিস্তানের ইব্রাহিম জাদরান, যিনি ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ১৭৭ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলেন।

ভারতের বিরাট কোহলি (২১৮ রান), শ্রেয়াস আইয়ার (২৪৩ রান) ও লোকেশ রাহুল (১৪০ রান) ব্যাটিংয়ে অবদান রেখে জায়গা পেয়েছেন একাদশে। রাহুল থাকছেন উইকেটরক্ষক হিসেবেও। নিউজিল্যান্ডের গ্লেন ফিলিপস ১৭৭ রান ও দুর্দান্ত ফিল্ডিংয়ে নজর কেড়ে জায়গা করে নেন দলে। পেস অলরাউন্ডার হিসেবে আছেন আফগানিস্তানের আজমতউল্লাহ উমারজাই (১২৬ রান ও ৭ উইকেট)। বোলিং বিভাগে আছেন মিচেল স্যান্টনার (৯ উইকেট), মোহাম্মদ শামি (৯ উইকেট), বরুণ চক্রবর্তী (৯ উইকেট) ও ম্যাট হেনরি (সর্বোচ্চ ১০ উইকেট)।

দলটির দ্বাদশ ক্রিকেটার হিসেবে আছেন ভারতের অক্ষর প্যাটেল, যিনি ৫ উইকেটের সঙ্গে ১০৯ রানও করেছেন।

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সেরা একাদশ: রাচীন রবীন্দ্র, ইব্রাহিম জাদরান, বিরাট কোহলি, শ্রেয়াস আইয়ার, লোকেশ রাহুল (উইকেটরক্ষক), গ্লেন ফিলিপস, আজমতউল্লাহ উমারজাই, মিচেল স্যান্টনার (অধিনায়ক), মোহাম্মদ শামি, ম্যাট হেনরি, বরুণ চক্রবর্তী। দ্বাদশ ক্রিকেটার: অক্ষর প্যাটেল।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: উইক ট

এছাড়াও পড়ুন:

গোপালগঞ্জে সহিংসতার ঘটনায় গত চার দিনে ১২ শিশুর জামিন নামঞ্জুর

গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) পথসভাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনায় গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে ১৮ জন শিশু রয়েছে। এর মধ্যে গত চার দিনে ১২ শিশুর জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছেন আদালত।

গতকাল বৃহস্পতিবার সাত শিশুর জামিন আবেদনের শুনানি হয়। গোপালগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) সৈয়দ আরাফাত হোসেন তাদের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন। এর আগে সোম ও মঙ্গলবার পাঁচ শিশুর জামিন আবেদন করা হয়। তাদের জামিন নামঞ্জুর করা হয়। ওই পাঁচজনের জামিন আবেদন করা হয়েছিল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে।

কারাগার সূত্র জানায়, গত ১৬ জুলাই সংঘর্ষের পর ১৭ ও ১৮ জুলাই জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ১৮ শিশুকে আটক করে পুলিশ। ১৮ জুলাই তাদের আদালতে হাজির করে গোপালগঞ্জ জেলা কারাগারে পাঠানো হয়। পরে ২১ জুলাই তাদের যশোরের পুলেরহাট শিশু-কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানো হয়।

আদালতের নথি অনুযায়ী, গ্রেপ্তার হওয়া শিশুদের বয়স, ঠিকানা পরিষ্কারভাবে উল্লেখ নেই। তবে গতকাল পর্যন্ত ১২ শিশুর নাম ও পরিচয় শনাক্ত হয়েছে। প্রথম আলোর পক্ষ থেকে চার পরিবারের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে। অভিভাবকদের অভিযোগ, তাদের সন্তানদের কোনো ধরনের তদন্ত ছাড়াই আটক করা হয়েছে।

আরও পড়ুনগ্রেপ্তার হওয়া শিশুদের বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ২৭ জুলাই ২০২৫

একজন শিশুর বাবা বলেন, ‘সংসারে অভাব–অনটন, নিজেরাই সংসার চালাইতে পারি না। আমার কষ্ট দেখে ছেলে রাজমিস্ত্রির কাজে যোগ দেয়। সে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার রমজান শেখ নামের একটা রাজমিস্ত্রির সহকারী হিসেবে কাজ করে। কাজের সময় পুলিশ তাদের ধরে নিয়ে যায়।’

আরেক শিশুর ভ্যানচালক বাবা বলেন, ‘আমরা গরিব মানুষ, কোথাও কোনো কাইজের মধ্যে নেই। তিনডা ছেলে, বড়টা একটা মাদ্রাসার শিক্ষক। ছোট দুইডা এখনো পড়ে। যারে ধরছে, সে সবার ছোট। ওই দিন সকালে আমার মাদ্রাসায় গেছে, পরীক্ষা ছিল। পরে দুপুরের আগে আমি নিজে যাইয়ে নিয়ে আসছি। সেদিন বাড়িতেই ছিল। পরের দিনও সারা দিন বাড়ি ছিল, সেদিন তো কারফিউ ছিল। আসরের নামাজের পর আমার কাছ থেকে ২০ টাকা নিয়ে গেছে চটপটি খাইতে। পাশে মাদ্রাসার সামনেই চটপটির দোকান বসে। সেই হান দে ওরে ধইরে নিছে।’

ওই ব্যক্তি আরও বলেন, ‘ধরার ঘণ্টাখানেক পর থানা থেইকা ফোন দিছে, কয় ছেলে ধরা হইছে। আমরা থানায় গিয়া অনেক কইছি, ও তো কোথাও যায় না, কোনো গ্যাঞ্জামের ছেলে না। মাদ্রাসায় পড়ে। কিন্তু কেউ কিছুই শুনল না। ছেলেরে ছাড়ায় আনতে অনেক জায়গায় দৌড়াইছি।’ তিনি জানান, এ ঘটনার পর থেকে তাঁদের প্রায় ২০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে।

এ ছাড়া জামিনের আশ্বাস দিয়ে কয়েকজন লোক তাদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছে বলেও অভিযোগ করেন একজন অভিভাবক।

আরও পড়ুনগোপালগঞ্জে এনসিপির সমাবেশে হামলার ঘটনায় আরও একটি মামলা, আসামি ৪৭৭ জন৩১ জুলাই ২০২৫

গ্রেপ্তার এক শিশুর আইনজীবী ফিরোজা বেগম বলেন, ১৬ জুলাই সহিংসতার ঘটনায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় এই শিশুকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। ফৌজদারি কার্যবিধির ১৭৩ ধারায় দ্রুত তদন্ত করে নির্দোষ প্রমাণিত হলে তাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার সুযোগ রয়েছে।

এ বিষয়ে সরকারি কৌঁসুলি তৌফিকুল ইসলাম বলেন, শিশুরা অল্প সময় আগে গ্রেপ্তার হয়েছে, এখনো তদন্ত চলছে। তাই হয়তো বিচারক জামিন নামঞ্জুর করেছেন। এ মামলায় এখনো কারও জামিন হয়নি।

আরও পড়ুনগোপালগঞ্জে সংঘাতের ইঙ্গিত ছিল স্পষ্ট, নিরাপত্তা প্রস্তুতি নিয়ে প্রশ্ন ১৮ জুলাই ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ