আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবি গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের
Published: 21st, March 2025 GMT
আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়েছে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া শিক্ষার্থীদের সংগঠন গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ। আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ দাবি জানিয়েছে ছাত্রসংগঠনটি।
সংগঠনের সহ-মুখপাত্র ফারদিন হাসান আন্তন প্রেরিত ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ কোনোরকম টালবাহানা ছাড়া ফ্যাসিস্ট, গণহত্যাকারী দল ‘আওয়ামী লীগ’ নিষিদ্ধ চায় এবং অনতিবিলম্বে তাদের সকল অপরাধের বিচার চায়। জুলাইয়ে যুদ্ধ করে ছাত্র-শ্রমিক-জনতা যেই দলকে প্রত্যাখ্যান করেছে তাদের পুনর্বাসন কখনোই মেনে নেওয়া হবেনা।”
প্রসঙ্গত, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েও (ঢাবি) একাধিক বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে। মিছিল থেকে দলটিকে নিষিদ্ধ করা নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড.
আজ জুমার নামাজের পর থেকে ঢাবির কেন্দ্রীয় মসজিদের সামনে থেকে মিছিল শুরু করে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ। সংগঠনটি আওয়ামী লীগ ও নৌকা প্রতীক দ্রুত নিষিদ্ধের দাবি জানায়। পরে তারা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা প্রদক্ষিণ করে কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে এসে সমাবেশ করে।
একই সময় আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করা ও সম্প্রতি যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করে ফিলিস্তিনের ওপর গণহত্যা চালানোর প্রতিবাদ জানিয়ে মিছিল আয়োজন করে ইনকিলাব মঞ্চ। জুমার নামাজের পর তারা কেন্দ্রীয় মসজিদ থেকে মিছিল শুরু করে রাজু ভাস্কর্যে এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে মিছিলের সমাপ্তি টানে।
এদিকে বিকেল সাড়ে ৩টায় ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীবৃন্দে’র ব্যানারে বিশ্ববিদ্যালয়ের হলপাড়া থেকে মিছিল নিয়ে এসে রাজু ভাস্কর্যের সামনে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ চেয়ে মিছিল করে শিক্ষার্থীদের একটি দল।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আওয় ম ল গ ন ষ দ ধ কর আওয় ম
এছাড়াও পড়ুন:
সুদানে কারা গণহত্যা চালাচ্ছে, আরব আমিরাতের ভূমিকা কী
২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে সুদান এক ভয়াবহ গৃহযুদ্ধের মধ্যে পড়ে। ক্ষমতার নিয়ন্ত্রণ নিতে দেশটির সামরিক বাহিনী এবং শক্তিশালী আধা সামরিক গোষ্ঠী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) মধ্যে শুরু হওয়া তীব্র লড়াই থেকে এই গৃহযুদ্ধ শুরু হয়। এই যুদ্ধে পশ্চিম দারফুর অঞ্চলে দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি হয় এবং সেখানে গণহত্যা সংঘটিত হওয়ার অভিযোগও ওঠে।
সম্প্রতি আরএসএফ এল-ফাশের শহরটি দখল করার পর এর বাসিন্দাদের নিয়ে বড় ধরনের উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। এই সংঘাতে এখন পর্যন্ত সারা দেশে দেড় লাখের বেশি মানুষ মারা গেছেন এবং প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ মানুষ নিজেদের ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়েছেন। জাতিসংঘ এটিকে বিশ্বের বৃহত্তম মানবিক সংকট বলে অভিহিত করেছে।
পাল্টাপাল্টি অভ্যুত্থান ও সংঘাতের শুরু১৯৮৯ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসা দীর্ঘদিনের প্রেসিডেন্ট ওমর আল-বশিরকে ২০১৯ সালে ক্ষমতাচ্যুত করার পর থেকেই দফায় দফায় যে উত্তেজনা চলছিল, তার সর্বশেষ পরিস্থিতি হচ্ছে বর্তমান গৃহযুদ্ধ।
বশিরের প্রায় তিন দশকের শাসনের অবসানের দাবিতে বিশাল জনবিক্ষোভ হয়েছিল। তারই প্রেক্ষিতে তাঁকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেয় সেনাবাহিনী। কিন্তু দেশটির মানুষ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলন চালিয়ে যায়। যার পরিপ্রেক্ষিতে একটি যৌথ সামরিক-বেসামরিক সরকার গঠিত হয়। কিন্তু ২০২১ সালের অক্টোবর মাসে আরও একটি সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকারটিকে উৎখাত করা হয়। এই অভ্যুত্থানের কেন্দ্রে ছিলেন সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান ও দেশটির কার্যত প্রেসিডেন্ট জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান এবং তাঁর ডেপুটি ও আরএসএফ নেতা জেনারেল মোহাম্মদ হামদান দাগালো।
এই দুই জেনারেল দেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ ও বেসামরিক শাসনে ফিরে যাওয়া নিয়ে প্রস্তাবিত পদক্ষেপে একমত হতে পারেননি। তাঁদের মধ্যে মূল বিরোধের বিষয় ছিল প্রায় এক লাখ সদস্যের আরএসএফ-কে সেনাবাহিনীর সঙ্গে একীভূত করার পরিকল্পনা এবং নতুন এই যৌথ বাহিনীর নেতৃত্ব নিয়ে। ধারণা করা হয়, দুজন জেনারেলই তাঁদের ক্ষমতা, সম্পদ ও প্রভাব ধরে রাখতে চেয়েছিলেন।
আরএসএফ সদস্যদের দেশের বিভিন্ন স্থানে মোতায়েন করা হলে সেনাবাহিনী বিষয়টিকে নিজেদের জন্য হুমকি হিসেবে দেখে। এ নিয়ে ২০২৩ সালের ১৫ এপ্রিল দুই পক্ষের মধ্যে গোলাগুলি শুরু হয়। সেই লড়াই দ্রুত তীব্র আকার ধারণ করে এবং আরএসএফ খার্তুমের বেশির ভাগ অংশ দখল করে নেয়। যদিও প্রায় দুই বছর পর সেনাবাহিনী খার্তুমের নিয়ন্ত্রণ ফিরে পায়।
জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান (বামে) এবং আরএসএফ নেতা জেনারেল মোহাম্মদ হামদান দাগালো (ডানে)