শাকিবের সঙ্গে সন্ধ্যা আর রাতটা ছিল বিশেষ, ছিলেন অপু-বুবলীও
Published: 29th, March 2025 GMT
ঢাকাই সিনেমার সুপারস্টার শাকিব খানের জন্মদিন ছিল শুক্রবার। দিনটি ঘিরে ছিল নানা আয়োজন। তবে সন্ধ্যা আর রাতটা ছিল বিশেষ। কারণ ইফতারের পর দুই ছেলে আব্রাম খান জয় ও শেহজাদ খান বীরকে নিয়ে হাজির হয়েছিলেন অপু বিশ্বাস ও শবনম বুবলী। তবে আলাদা সময়ে! দারুণ ও সুন্দর কিছু সময় সন্তানদের সঙ্গে কাটান এ অভিনেতা।
জানা যায়, ইফতারের পর বীরকে নিয়ে শাকিবের বাসায় যান বুবলী। বেশ কিছু সময় কাটানোর পর তারা ফিরে গেলে হাজির হন অপু বিশ্বাস ও জয়।
অন্যদিকে, শাকিবের জন্মদিন উদযাপনের সেই মুহূর্তের ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করেছেন তার দুই ছেলের মা-অপু বিশ্বাস ও শবনম বুবলী।
জন্মদিনের জন্য বিশেষভাবে আনা হয়েছে লাল রঙের একটি কেক, যেখানে আব্রামের পক্ষ থেকে লেখা ছিল- ‘হ্যাপি বার্থডে, মাই কিং-পাপা।’ শুধু কেকেই সীমাবদ্ধ থাকেনি আব্রামের ভালোবাসা; নিজের হাতে একটি ক্যানভাসে বিশেষ উক্তি লিখে রেখেছে সে, সঙ্গে যোগ করেছে ছোট্ট হাতের আঁকিবুঁকি।
ছবিগুলোর ক্যাপশনে অপু বিশ্বাস লিখেছেন, ‘সন্তানের কাছে তার বাবা সুপারস্টার বা সেলিব্রিটি নয়, বরং একজন আপনজন, যার সঙ্গে আত্মার বন্ধন সবচেয়ে গভীর। শুধু দোয়া আর ভালোবাসায় ভরিয়ে দিন এই সম্পর্ককে। বাবা-ছেলে মেতে ছিল পুরোদিন আনন্দে।’
বিশেষ এই মুহূর্তের ছবি শেয়ার করে বুবলী লিখেছেন, ‘‘পুরো মার্চ মাসটাই বাবা-ছেলে মেতে ছিল জন্মদিনের উদযাপনে। মনে হচ্ছে, পুরো মাসটাই যেন ‘এস কে মাস’!’’
জন্মদিন উপলক্ষে অপু বিশ্বাস ও শবনম বুবলী দুজনেই শাকিব খানের প্রশংসা করে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। অপু যেখানে প্রাক্তন স্বামীকে বলিউড সুপারস্টার শাহরুখ খানের সঙ্গে তুলনা করেছেন, সেখানে বুবলীর কাছে শাকিব ‘মহারাজা’।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
আজও আছে পরতে পরতে সৌন্দর্য
কারুকার্যখচিত বিশাল ভবন। দেয়ালের পরতে পরতে মনোহর সৌন্দর্য। মনোরম পরিবেশে ভবনের চারপাশে দাঁড়িয়ে সুন্দরী পরীর আবক্ষ মূর্তি। ছবির মতো সাজানো ‘পাকুটিয়া জমিদারবাড়ি’ এখন কালের সাক্ষী।
মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া থেকে ১২ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে টাঙ্গাইলের নাগরপুরের কলমাই নদীতীরে ১৫ একর জমিতে জমিদারবাড়িটি। ঢুকতেই চোখে পড়ে পুরোনো মন্দির। লোকমুখে প্রচলিত, শরতের দিনে দেবী দুর্গার প্রতিমা তৈরিতে এখানে ব্যস্ত থাকতেন ভারতবর্ষের নামকরা কারিগররা। কালের বিবর্তনে স্থানটি এখন নির্জন। নেই আগের গৌরব-আভিজাত্যের ছাপ, এমনকি প্রতিমা তৈরির ব্যস্ততাও।
মন্দির ঘুরে দেখা যায়, এর কোথাও কোথাও ইট খসে পড়েছে। পুরোনো দিনের নকশা হারাচ্ছে তার সৌন্দর্য। মন্দিরের পেছনে বিশাল তিনটি মহল, যা সেকালে তিন তরফ নামে পরিচিত ছিল। মহলগুলোর আলাদা কোনো নাম পাওয়া যায়নি। সবচেয়ে বড় মহলে বর্তমান পাকুটিয়া বিসিআরজি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ পরিচালিত হচ্ছে।
দোতলা ভবনের নির্মাণশৈলী মুগ্ধ করবে সবাইকে। যদিও সংস্কারের অভাবে ভবনটিতে ফাটল দেখা দিয়েছে। পাশেই অপূর্ব লতাপাতার কারুকার্যখচিত বিশাল আরেকটি ভবন, যার মাথায় ময়ূরের মূর্তি। এ ছাড়া কিছু নারী মূর্তিরও দেখা মেলে। জমিদার আমলের টিনের চৌচালা ঘরে অস্থায়ীভাবে সরকারি তহশিল অফিস স্থানান্তর হলেও, সেটি এখন স্থায়িত্ব পেয়েছে।
লতাপতায় আচ্ছন্ন ভবনের একাংশ বর্তমানে উপস্বাস্থ্যকেন্দ্র এবং আরেকাংশে একটি বেসরকারি দাতব্য সেবা সংস্থা কার্যক্রম চালাচ্ছে। ভবনটির পিলারের মাথায় এবং দেয়ালেও অসাধারণ নকশা মুগ্ধ করে।
দোতল আরেকটি মহল, যার সামনে বিশাল শান বাঁধানো সিঁড়ি। অন্য সব ভবনের সঙ্গে এটির নকশার যথেষ্ট মিল খুঁজে পাওয়া যায়। ভবনটির বারান্দা ও পুরোনো কাঠের দরজা সৌন্দর্য বাড়িয়ে তুলেছে কয়েক গুণ। ভবনটির মাথায় ময়ূরের সঙ্গে দুই পাশে দুই নারী মূর্তির দেখা মেলে। সিঁড়ি বেয়ে ছাদে গেলে গাছগাছালির সবুজে ঘেরা পুরো জমিদারবাড়ির সৌন্দর্য বিমোহিত করতে বাধ্য। যদিও ভবনের ভিন্ন অংশ খসে পড়ছে, হারাচ্ছে রূপ-লাবণ্য।
জমিদারবাড়ির পেছনে রয়েছে দীঘি ও দুটি পরিত্যক্ত কূপ। এ ছাড়া জমিদারবাড়ির বিশাল মাঠের এক কোণে নাটমন্দির। জানা যায়, নাগরপুরের সঙ্গে কলকাতার একটি বাণিজ্যিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এর পরিপ্রেক্ষিতে পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা থেকে আসেন ধনাঢ্য ব্যক্তি রামকৃষ্ণ সাহা মণ্ডল। তিনিই ঊনবিংশ শতাব্দীর শুরুতে ব্রিটিশদের কাছ থেকে বিপুল অর্থের বিনিময়ে জমি কিনে জমিদারি শুরু করেন।
রামকৃষ্ণ সাহার দুই ছেলে বৃন্দাবন ও রাধাগোবিন্দ। রাধা নিঃসন্তান। তবে বৃন্দাবনের তিন ছেলে– ব্রজেন্দ্র মোহন, উপেন্দ্র মোহন ও যোগেন্দ্র মোহন দীর্ঘকাল রাজত্ব করেন। এভাবে পাকুটিয়া জমিদারবাড়ি তিন ভাইয়ের তরফে বিভক্ত থাকলেও, জমিদাররা সবাই ছিলেন প্রজানন্দিত। বৃন্দাবনের মেজ ছেলে উপেন্দ্রকে কাকা রাধাগোবিন্দ দত্তক নেন। ফলে উপেন্দ্র কাকার জমিদারির পুরো সম্পত্তি লাভ করেন।
দৃষ্টিনন্দন পাকুটিয়া জমিদারবাড়িতে প্রতিনিয়ত পর্যটকের ভিড় বাড়ছে। ইতিহাসের সাক্ষী বাড়িটি সংস্কার না হওয়ায় একদিকে যেমন সৌন্দর্য হারাচ্ছে, অন্যদিকে তরুণ প্রজন্মের কাছে অজানা থেকে যাচ্ছে ইতিহাস। জমিদারবাড়িটি পুরাকীর্তি হিসেবে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের অধীনে নিয়ে সংস্কার ও সংরক্ষণের দাবি জোরালো হচ্ছে।