শাকিবের হিস্যু করার দৃশ্যের জবাব নাই: মালেক আফসারী
Published: 3rd, April 2025 GMT
ঈদুল ফিতরে মুক্তি পেয়েছে শাকিব খান অভিনীত ‘বরবাদ’ সিনেমা। মুক্তির পর থেকে হইহই পড়ে গেছে চারদিকে। এ সিনেমার মাধ্যমে চলচ্চিত্র পরিচালক হিসেবে অভিষেক হলো মেহেদী হাসান হৃদয়ের।
সাধারণ দর্শকদের পাশাপাশি অভিনয়শিল্পী, নির্মাতারাও সিনেমাটি দেখে প্রশংসা করছেন। আলোচিত চলচ্চিত্র পরিচালক মালেক আফসারী ‘বরবাদ’ দেখে সিনেমাটির রিভিউ দিয়েছেন। দুটো ভিডিওতে সিনেমাটি নিয়ে কথা বলেন ‘এই ঘর এই সংসার’খ্যাত পরিচালক।
শাকিব খানকে নিয়েও কয়েকটি সিনেমা নির্মাণ করেছেন মালেক আফসারী। একজন চলচ্চিত্র পরিচালকের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে ‘বরবাদ’ নিয়ে কথা বলেন তিনি। তার ভাষায়, “প্রথমে ধন্যবাদ জানাতে চাই মেহেদী হাসান হৃদয়কে। দারুণ বাইনাছে ‘বরবাদ’। সিনেমা দেখে মনে হয় না এটা তার প্রথম সিনেমা। মনে হয়, পাকা ডাইরেক্টর। সিনেমার কয়েকটা দিক তুলে ধরা দরকার। একটা জিনিস সিনেমাটিতে দেখলাম, যা আগে দেখি নাই। আর তা হলো— শাকিব খানের হিস্যু করার দৃশ্য। তামিল, হলিউডের কোনো সিনেমায় এমন দৃশ্য দেখি নাই। এই দৃশ্যটি পুরো সিনেমার হাইলাইট। যার মুখে হিস্যু করল, যে হিস্যু করল আর পুরো ব্যাপারটি যেভাবে দেখানো হলো তার কোনো জবাব নাই হৃদয়। এই সিনেমার সম্পাদনার কাজ যে করেছেন তাকে অবশ্যই স্মরণ করতে হবে। অসাধারণ কাজ করেছেন তিনি।”
আরো পড়ুন:
প্রেক্ষাগৃহ থেকে নামিয়ে দেওয়া হল শাকিবের সিনেমা
শাকিবের ‘বরবাদ’ উত্তাপ: কী বলছেন দর্শকরা?
মালেক আফসারীর ধারণা ছিল, ‘বরবাদ’ সিনেমা মেয়েরা দেখবেন না। এ বিষয়ে এই পরিচালক বলেন, “মেয়েরা ‘বরবাদ’ দেখবে কিনা তা নিয়ে আমার সন্দেহ হয়েছিল। কারণ এত ভায়োলেন্স মেয়েরা পছন্দ নাই করতে পারেন। কিন্তু আমাকে ভুল প্রমাণিত করে মেয়েরা সিনেমা হলে যাচ্ছেন, বয়স্করাও যাচ্ছেন। কেন মেয়েরা হলে যাচ্ছেন, তার কারণ খুঁজে বের করার চেষ্টা করেছি। আর তা হলো— ইধিকা পালের চরিত্র (নীতু)। সাংঘাতিক এই চরিত্র প্রত্যেক মেয়েই পছন্দ করবেন। এটি মেয়েদের পক্ষের চরিত্র।”
মিশা সওদাগরের অভিনয়ের তারিফ করে মালেক আফসারী বলেন, “মিশা সওদাগর তার চরিত্রে যা করছে! দারুণ করেছে! একটা নেশাখোর খারাপ ছেলের একটা মেয়েকে এক পলকে ভালো লেগে যায়। প্রেম হয়। তারপর বাবার সামনে মেয়েটিকে নিয়ে দাঁড়ায় ছেলেটি। বাবাটা কে জানেন? সেই বাবাই হলেন মিশা সওদাগর। এখান থেকেই সিনেমার শুরু। এখান থেকেই সবকিছু বরবাদ করে দেয়। ‘বরবাদ’ এখন সুপারহিট সিনেমা। অনকে দিন পর মিশা সওদাগর অনেক ভালো অভিনয় করেছে। আসলে এ ধরনের শিল্পীদের যদি ভালো চরিত্র না দেন তাহলে কিছুই করতে পারবেন না।”
‘বরবাদ’ ঘরানার সিনেমায় অনেক দর্শক লজিক খুঁজেন। কিন্তু তা ঠিক নয়। বিষয়টি স্মরণ করে মালেক আফসারী বলেন, “মূল ধারার সিনেমায়’ অনেকে যুক্তি খুঁজেন। যুক্তি খুঁজলে আপনাকে দেখতে হবে ‘জংলি’, ‘দাগি’। ‘বরবাদ’ সিনেমায় পরিচালক মেহেদী হাসান হৃদয় অন্য জগত তৈরি করেছেন। এ জগৎ পরিচিত না। তবু মনে হবে চেনাচেনা! যেমন: ‘ট্রিপল আর’ সিনেমা দেখলে অন্য এক জগতের সিনেমা মনে হয়। তেমন আরকি! মূল ধারার সিনেমায় পরিচালক আলাদা একটা পরিবেশ তৈরি করেন। ফলে এসব সিনেমায় লজিক খুঁজতে নাই।”
‘বরবাদ’ সিনেমা পরিচালক রায়হান রাফীকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছে বলে মত মালেক আফসারীর। তার মতে, “বরবাদ’ সিনেমার সাফল্য পরিচালক রায়হান রাফীকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিয়েছে। কারণ শাকিবের পরবর্তী সিনেমা ‘তাণ্ডব’ নির্মাণ করছে রাফী। সে ভালো মেকার। কিন্তু ‘বরবাদ’ মেকিং করে শাকিবকে যে জায়গায় পৌঁছে দিয়েছে, রাফীকে তারচেয়ে উপরে যেতে হবে।”
‘বরবাদ’ সিনেমায় শাকিব খানের বিপরীতে অভিনয় করেছেন ইধিকা পাল। এছাড়াও অভিনয় করেছেন যীশু সেনগুপ্ত, শহীদুজ্জামান সেলিম, মিশা সওদাগর, ইন্তেখাব দিনার, মামুনুর রশীদ প্রমুখ। একটি আইটেম গানে পারফর্ম করেছেন কলকাতার নায়িকা নুসরাত জাহান।
ঢাকা/শান্ত
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চলচ চ ত র ম ল ক আফস র ত র পর কর ছ ন বরব দ
এছাড়াও পড়ুন:
৫ আগস্টের মধ্যে জুলাই সনদ না হলে অবরোধের হুঁশিয়ারি আপ বাংলাদেশের
জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারির দাবিতে অন্তর্বর্তী সরকারকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছে ইউনাইটেড পিপলস (আপ) বাংলাদেশ। আজ শুক্রবার রাজধানীর শাহবাগে গণজমায়েত থেকে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। দাবি পূরণ না হলে ৬ আগস্ট থেকে দেশজুড়ে অবরোধ কর্মসূচি পালনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে সংগঠনটি।
‘৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র ও সনদের দাবি’ শীর্ষক গণজমায়েতে অংশ নেন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা আপ বাংলাদেশের নেতা–কর্মীরা। জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পার হলেও জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারি না হওয়াকে অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যর্থতা হিসেবে দেখছেন তাঁরা।
আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক আলী আহসান জুনায়েদ বলেন, ‘আমরা একটি বৈষম্যহীন বাংলাদেশ চেয়েছিলাম। কিন্তু আহতদের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি। আমরা দেখেছি, যারা জুলাইয়ের নেতৃত্বে ছিল, জুলাইয়ের পরে তাদের পকেট ভারী হয়েছে। আমি বলতে চাই, আপনাদের এই পকেটের হিসাব দিতে হবে।’
অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ করে আলী আহসান বলেন, ‘আপনারা জুলাই ঘোষণাপত্র দিতে পারবেন কি পারবেন না, তা জানান; না পারলে আমরা আছি। যারা জীবন দিতে প্রস্তুত ছিলাম, বাংলাদেশের (সেই) ২০ কোটি জনগণ জুলাই ঘোষণাপত্র জারি করবে।’
আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক বলেন, ‘৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে যদি জুলাই ঘোষণাপত্র না হয়, তাহলে ৬ আগস্ট থেকে দেশজুড়ে অবরোধ শুরু হবে। এ সরকারের কোনো হুমকি আমাদের দমিয়ে রাখতে পারবে না।’
গণজমায়েতে অংশ নিয়ে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান বলেন, আপ বাংলাদেশের নেতারা এখনো কোনো প্রটোকল ছাড়া রাস্তাঘাটে হাঁটেন। কিন্তু তাঁরা যেদিন প্রটোকল নিতে শুরু করবেন, সেদিন থেকে তাঁদের বিরুদ্ধেও তিনি কথা বলা শুরু করবেন।
জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারির আহ্বান জানিয়ে শরীফ ওসমান বলেন, এখন পর্যন্ত বিদ্যমান আইনি কাঠামোয় জুলাই শহীদেরা রাষ্ট্রদ্রোহী। তাঁদেরকে আইনি স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। আজকের মধ্যে সরকার দিনক্ষণ না জানালে আগামী ৩ তারিখ (আগস্ট) ইনকিলাব মঞ্চের উদ্যোগে কফিন মিছিল নিয়ে সচিবালয় অবরোধ করা হবে।
বিগত এক বছর থেকে একটি দুর্বল সরকার দেশ চালাচ্ছে উল্লেখ করে আপ বাংলাদেশের সদস্যসচিব আরেফিন মোহাম্মদ বলেন, ‘জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তিতে ঘোষণাপত্রের জন্য আমাদের আবারও গণজমায়েত করতে হচ্ছে। এর চেয়ে লজ্জাজনক আর কী হতে পারে?’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এ বি জুবায়ের বলেন, ‘আমরা যে মৌলিক সংস্কার চেয়েছিলাম, এখনো তার কিছুই হয়নি। এখনো শহীদ পরিবারের পুনর্বাসন ও আহতদের চিকিৎসা নিশ্চিত হয়নি। আমি উপদেষ্টাদের উদ্দেশে বলতে চাই, অবিলম্বে জুলাই সনদ ঘোষণা করুন। আপনাদের কাছে আমাদের চাওয়া–পাওয়া খুব বেশি নেই।’
গণজমায়েতে র্যাপ গান পরিবেশন করেন আপ বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সদস্য আহনাফ তাহমিদ। স্বাগত বক্তব্য দেন জুলাই শহীদ ওসমান পাটোয়ারীর বাবা আবদুর রহমান। গণজমায়েতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন আপ বাংলাদেশের প্রধান সমন্বয়কারী রাফে সালমান রিফাত, প্রধান সংগঠক নাঈম আহমেদ, মুখপাত্র শাহরিন সুলতানা প্রমুখ।