ঈদুল ফিতরে মুক্তি পেয়েছে শাকিব খান অভিনীত ‘বরবাদ’ সিনেমা। মুক্তির পর থেকে হইহই পড়ে গেছে চারদিকে। এ সিনেমার মাধ্যমে চলচ্চিত্র পরিচালক হিসেবে অভিষেক হলো মেহেদী হাসান হৃদয়ের।

সাধারণ দর্শকদের পাশাপাশি অভিনয়শিল্পী, নির্মাতারাও সিনেমাটি দেখে প্রশংসা করছেন। আলোচিত চলচ্চিত্র পরিচালক মালেক আফসারী ‘বরবাদ’ দেখে সিনেমাটির রিভিউ দিয়েছেন। দুটো ভিডিওতে সিনেমাটি নিয়ে কথা বলেন ‘এই ঘর এই সংসার’খ্যাত পরিচালক।

শাকিব খানকে নিয়েও কয়েকটি সিনেমা নির্মাণ করেছেন মালেক আফসারী। একজন চলচ্চিত্র পরিচালকের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে ‘বরবাদ’ নিয়ে কথা বলেন তিনি। তার ভাষায়, “প্রথমে ধন্যবাদ জানাতে চাই মেহেদী হাসান হৃদয়কে। দারুণ বাইনাছে ‘বরবাদ’। সিনেমা দেখে মনে হয় না এটা তার প্রথম সিনেমা। মনে হয়, পাকা ডাইরেক্টর। সিনেমার কয়েকটা দিক তুলে ধরা দরকার। একটা জিনিস সিনেমাটিতে দেখলাম, যা আগে দেখি নাই। আর তা হলো— শাকিব খানের হিস্যু করার দৃশ্য। তামিল, হলিউডের কোনো সিনেমায় এমন দৃশ্য দেখি নাই। এই দৃশ্যটি পুরো সিনেমার হাইলাইট। যার মুখে হিস্যু করল, যে হিস্যু করল আর পুরো ব্যাপারটি যেভাবে দেখানো হলো তার কোনো জবাব নাই হৃদয়। এই সিনেমার সম্পাদনার কাজ যে করেছেন তাকে অবশ্যই স্মরণ করতে হবে। অসাধারণ কাজ করেছেন তিনি।”

আরো পড়ুন:

প্রেক্ষাগৃহ থেকে নামিয়ে দেওয়া হল শাকিবের সিনেমা

শাকিবের ‘বরবাদ’ উত্তাপ: কী বলছেন দর্শকরা?

মালেক আফসারীর ধারণা ছিল, ‘বরবাদ’ সিনেমা মেয়েরা দেখবেন না। এ বিষয়ে এই পরিচালক বলেন, “মেয়েরা ‘বরবাদ’ দেখবে কিনা তা নিয়ে আমার সন্দেহ হয়েছিল। কারণ এত ভায়োলেন্স মেয়েরা পছন্দ নাই করতে পারেন। কিন্তু আমাকে ভুল প্রমাণিত করে মেয়েরা সিনেমা হলে যাচ্ছেন, বয়স্করাও যাচ্ছেন। কেন মেয়েরা হলে যাচ্ছেন, তার কারণ খুঁজে বের করার চেষ্টা করেছি। আর তা হলো— ইধিকা পালের চরিত্র (নীতু)। সাংঘাতিক এই চরিত্র প্রত্যেক মেয়েই পছন্দ করবেন। এটি মেয়েদের পক্ষের চরিত্র।”

মিশা সওদাগরের অভিনয়ের তারিফ করে মালেক আফসারী বলেন, “মিশা সওদাগর তার চরিত্রে যা করছে! দারুণ করেছে! একটা নেশাখোর খারাপ ছেলের একটা মেয়েকে এক পলকে ভালো লেগে যায়। প্রেম হয়। তারপর বাবার সামনে মেয়েটিকে নিয়ে দাঁড়ায় ছেলেটি। বাবাটা কে জানেন? সেই বাবাই হলেন মিশা সওদাগর। এখান থেকেই সিনেমার শুরু। এখান থেকেই সবকিছু বরবাদ করে দেয়। ‘বরবাদ’ এখন সুপারহিট সিনেমা। অনকে দিন পর মিশা সওদাগর অনেক ভালো অভিনয় করেছে। আসলে এ ধরনের শিল্পীদের যদি ভালো চরিত্র না দেন তাহলে কিছুই করতে পারবেন না।” 

‘বরবাদ’ ঘরানার সিনেমায় অনেক দর্শক লজিক খুঁজেন। কিন্তু তা ঠিক নয়। বিষয়টি স্মরণ করে মালেক আফসারী বলেন, “মূল ধারার সিনেমায়’ অনেকে যুক্তি খুঁজেন। যুক্তি খুঁজলে আপনাকে দেখতে হবে ‘জংলি’, ‘দাগি’। ‘বরবাদ’ সিনেমায় পরিচালক মেহেদী হাসান হৃদয় অন্য জগত তৈরি করেছেন। এ জগৎ পরিচিত না। তবু মনে হবে চেনাচেনা! যেমন: ‘ট্রিপল আর’ সিনেমা দেখলে অন্য এক জগতের সিনেমা মনে হয়। তেমন আরকি! মূল ধারার সিনেমায় পরিচালক আলাদা একটা পরিবেশ তৈরি করেন। ফলে এসব সিনেমায় লজিক খুঁজতে নাই।”

‘বরবাদ’ সিনেমা পরিচালক রায়হান রাফীকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছে বলে মত মালেক আফসারীর। তার মতে, “বরবাদ’ সিনেমার সাফল্য পরিচালক রায়হান রাফীকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিয়েছে। কারণ শাকিবের পরবর্তী সিনেমা ‘তাণ্ডব’ নির্মাণ করছে রাফী। সে ভালো মেকার। কিন্তু ‘বরবাদ’ মেকিং করে শাকিবকে যে জায়গায় পৌঁছে দিয়েছে, রাফীকে তারচেয়ে উপরে যেতে হবে।” 

‘বরবাদ’ সিনেমায় শাকিব খানের বিপরীতে অভিনয় করেছেন ইধিকা পাল। এছাড়াও অভিনয় করেছেন যীশু সেনগুপ্ত, শহীদুজ্জামান সেলিম, মিশা সওদাগর, ইন্তেখাব দিনার, মামুনুর রশীদ প্রমুখ। একটি আইটেম গানে পারফর্ম করেছেন কলকাতার নায়িকা নুসরাত জাহান।      

ঢাকা/শান্ত

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চলচ চ ত র ম ল ক আফস র ত র পর কর ছ ন বরব দ

এছাড়াও পড়ুন:

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় চুলার ধোঁয়া নিয়ে বাগ্‌বিতণ্ডা, স্বজনদের হামলায় যুবক নিহত

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলায় চুলার ধোঁয়া নিয়ে বাগ্‌বিতণ্ডার জেরে ভাই-ভাবি-ভাতিজার হামলায় আহত হয়ে মনির হোসেন (৩৫) নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন। গতকাল রোববার দুপুরে উপজেলার সুলতানপুর ইউনিয়নের উড়শিউড়ার নন্দ দিঘিরপাড় গ্রামে হামলার ঘটনা ঘটে। পরে সন্ধ্যা সাতটার দিকে জেলা শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।

নিহত মনির হোসেন উড়শিউড়ার নন্দ দিঘিরপাড় গ্রামের মৃত খুরশিদ মিয়ার ছেলে। মনির পেশার দিনমজুর ছিলেন। পাঁচ ভাইয়ের মধ্যে তিনি চতুর্থ ছিলেন। তাঁর স্ত্রী এবং সাত ও দেড় বছর বয়সী দুটি ছেলে আছে।

নিহতের পরিবার ও পুলিশের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গতকাল দুপুরে মনিরের বড় ভাই বাবুল মিয়ার (৫৫) স্ত্রী জুবায়দা বেগম (৪৫) একটি মাটির চুলা নিয়ে মনিরের বসতঘরের দরজার সামনে রান্না বসান। মাটির চুলার ধোঁয়া বসতঘরে প্রবেশ করলে মনির আপত্তি জানান। এতে বাবুলের স্ত্রী উচ্চস্বরে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলা শুরু করেন। মনির প্রতিবাদ করলে বাবুল মিয়ার ছেলে শাওন মিয়া (১৫) এগিয়ে এসে চাচা মনিরের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে। কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে শাওন দা নিয়ে মনিরকে মারতে এগিয়ে এলে তাঁদের মধ্যে ঝগড়া হয়। এ সময় বড় ভাই বাবুল, সাচ্চু, সাচ্চুর স্ত্রী হালিমা বেগম (৪৩) ও ছেলে ইমন (২৬) এবং শাওন লাঠি ও কাঠ দিয়ে মনিরকে বেধড়ক মারধর করেন। একপর্যায়ে তাঁরা ইট দিয়ে মনিরের মাথায় আঘাত করেন। পরে স্থানীয় লোকজন মনিরকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখান থেকে তাঁকে শহরের বেসরকারি সেন্ট্রাল ডায়াগনস্টিক সেন্টার অ্যান্ড হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সন্ধ্যা সাতটার দিকে মনিরের মৃত্যু হয়।

হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসক মামুনুর রশিদ বলেন, ‘সাতটার দিকে ইসিজি পরীক্ষায় কোনো স্পন্দন না পাওয়ায় ওই রোগীকে মৃত ঘোষণা করি।’

নিহত ব্যক্তির স্ত্রী জুলেখা বেগম বলেন, ‘বসতঘরের সামনে মাটির চুলা এনে রান্না শুরু করেন বাবুল ভাইয়ের স্ত্রী। তিনি বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বকবক করছিলেন। আমার স্বামী পাল্টা কথা বলেন। এতে ভাতিজা শাওন দা নিয়ে স্বামীকে মারতে এগিয়ে আসে। স্বামীর বড় ভাই বাবুল ছেলেরে বলেছে, “ওরে ধর বেশি করে বাইরা।” তখন বাকিরা লাঠি, কাঠ ও ইট দিয়ে মারধর করে। শাওন আগেও স্বামীকে মারতে এসেছিল।’

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী প্রতিবেশী আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘মাটির চুলার ধোঁয়াকে কেন্দ্র করে তাদের মধ্যে ঝগড়ার উৎপত্তি। নিরীহ ছেলেটাকে একা পেয়ে তারা সবাই মারধর করে মেরে ফেলেছে।’

অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্যের জন্য বাবুল মিয়াসহ অন্যদের মুঠোফোন নম্বরে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও সেগুলো বন্ধ পাওয়া যায়।

খবর পেয়ে রাত ১১টার দিকে সদর থানা-পুলিশ ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) এম এম রকীব উর রাজা ওই বেসরকারি হাসপাতালে যান। সদর থানার কর্মকর্তা জিয়া উদ্দিন বলেন, ময়নাতদন্তের জন্য লাশ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। মামলার প্রক্রিয়া চলছে। জড়িত ব্যক্তিদের ধরতে অভিযান অব্যাহত আছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ