ভারতে ওয়াক্ফ বিল পাসের নিন্দা জানাল ছাত্রশিবির
Published: 5th, April 2025 GMT
ভারতের পার্লামেন্টে সংশোধিত ওয়াক্ফ বিল পাসের নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির। সংগঠনটি এই বিল বাতিল এবং আন্তর্জাতিক মহলকে এ বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
আজ শনিবার বিকেলে রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে ঢাকা মহানগর শিবিরের উদ্যোগে আয়োজিত এক মানববন্ধন থেকে এসব দাবি জানানো হয়।
মানববন্ধনে শিবিরের কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক আজিজুর রহমান আজাদ বলেন, বৃহস্পতিবার ভারতের পার্লামেন্টে পাস হওয়া ওয়াক্ফ সংশোধনী বিলটি মুসলমানদের ধর্মীয় স্বাধীনতা, মালিকানা এবং মৌলিক অধিকার হরণের একটি সুপরিকল্পিত চক্রান্ত। এ আইন বিজেপি সরকারের মুসলিমবিদ্বেষী অবস্থানকে আবারও স্পষ্টভাবে উন্মোচন করেছে। এই বিলের মাধ্যমে মুসলমানদের দানকৃত ধর্মীয় সম্পদ যেমন মসজিদ, মাদ্রাসা, কবরস্থান ও আশ্রয়কেন্দ্রে সরকারি হস্তক্ষেপ এবং দখলের সুযোগ সৃষ্টি করা হয়েছে।
শিবিরের কেন্দ্রীয় প্রকাশনা সম্পাদক সাদিক কাইয়ুম বলেন, ভারতে বিভিন্ন সময়ে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা লাগিয়ে উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা মুসলমানদের হত্যা করেছে। ভারতে ওয়াক্ফ বোর্ডে মসজিদ, এতিমখানা এবং হেরিটেজসহ প্রায় ১০ লাখ একর ওয়াক্ফকৃত সম্পত্তি রয়েছে। সেখানে অবৈধভাবে হিন্দুত্ববাদী এজেন্ট নিয়োগ করে মুসলমানদের সম্পত্তি দখলের চেষ্টা চলছে।
আরও পড়ুনভারতের নতুন ওয়াক্ফ বিল মুসলমানদের জন্য যে সমস্যা ডেকে আনবে৫ ঘণ্টা আগেমানববন্ধনে আরও বক্তব্য দেন ছাত্রশিবিরের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মু’তাসিম বিল্লাহ শাহেদী, কেন্দ্রীয় কলেজ কার্যক্রম ও ব্যবসায়িক শিক্ষা সম্পাদক মো.
এর আগে গতকাল শুক্রবার শিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম ও সেক্রেটারি জেনারেল নূরুল ইসলাম সাদ্দাম এক বিবৃতিতে ভারতের সংশোধিত ওয়াক্ফ বিলের তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা জানান। বিবৃতিতে বলা হয়, ওয়াক্ফ বোর্ড ও কেন্দ্রীয় ওয়াক্ফ কাউন্সিলে মুসলিম নয় এমন দুজন সদস্য রাখা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে, যা ওয়াক্ফের ধর্মীয় স্বাতন্ত্র্যকে নস্যাৎ করার শামিল।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
‘ডাকসু হলো, রাকসু হলো, চাকসু কেন থেমে গেল’
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (চাকসু) দ্রুত তফসিল ঘোষণার দাবিতে মানববন্ধন করেছেন শিক্ষার্থীরা।
বুধবার (৩০ জুলাই) বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা ‘হয় মোদের চাকসু দে, নইলে গদি ছাইড়া দে’, ‘ডাকসু হলো, রাকসু হলো, চাকসু কেন থেমে গেল’, ‘চাকসু মোদের অধিকার, রুখে দেওয়ার সাধ্য কার’—এমন স্লোগান দেন।
আরো পড়ুন:
আনাতোলিয়ান রোভার চ্যালেঞ্জে বিশ্বে তৃতীয় ইউআইইউ
জবির প্রভাবশালী আওয়ামীপন্থি ‘ক্যাডার’ শিক্ষকরা যেখানে আছেন
আইন বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সাব্বির হোসেন রিয়াদ বলেন, “জুলাই মাসে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে শহীদ হওয়ার ঘটনাগুলো আমাদের জানা। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের দুজন শিক্ষার্থীও সে সময় শহীদ হয়েছিলেন। এই বিশ্ববিদ্যালয়েই সবার আগে চাকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার কথা ছিল, কিন্তু এখনও কোনো অগ্রগতি নেই। অথচ ডাকসু, রাকসু, জাকসুর তফসিল ঘোষণা হয়েছে।”
তিনি আরও জানান, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে আগামী ১ আগস্ট সিন্ডিকেট সভায় চাকসুর নীতিমালা অনুমোদনের বিষয়টি চূড়ান্ত হবে। এরপর আগস্টের প্রথম সপ্তাহেই তফসিল ঘোষণার প্রত্যাশা করা হচ্ছে। “যদি তা না হয়, তাহলে আমরা দুর্বার ছাত্রআন্দোলনের দিকে যাব,” বলেন তিনি।
বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের (বাগছাস) কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক ও নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থী খান তালাত মাহমুদ রাফি বলেন, “দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে এরইমধ্যে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষিত হলেও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নীরব ভূমিকা পালন করছে। আমরা এতদিন রোডম্যাপ চেয়েছিলাম, এখন আর রোডম্যাপ নয়—তফসিল চাই।”
তিনি আরো বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল সমস্যার একমাত্র সমাধান হচ্ছে সক্রিয় ছাত্র সংসদ। তাই আগামী আগস্টের প্রথম সপ্তাহে তফসিল এবং সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে নির্বাচন চাই।”
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিন বলেন, “আগামী ১ আগস্ট সিন্ডিকেট সভায় চাকসুর নীতিমালা চূড়ান্ত হলে নির্বাচন কমিশনার তফসিল ঘোষণা করবেন।”
চাকসু গঠনের ধারণা মূলত এসেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকসুর আদলে। বাংলাদেশে ১৯৭৩ সালে প্রথমবারের মতো বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছাত্রসংসদ গঠন প্রক্রিয়া শুরু হয়।
১৯৭০ সালে চাকসুর প্রথম কেবিনেট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সর্বশেষ নির্বাচন হয় ১৯৯০ সালের ৮ মে। এই নির্বাচনে ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেল বিজয়ী হয়েছিল। এরপর দীর্ঘ ৩৫ বছর ধরে আর কোনো চাকসু নির্বাচন হয়নি।
২০২৫ সালে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি হওয়ায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকসু, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রাকসু ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের জাকসুর মতো চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও চাকসু নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন করছেন।
ঢাকা/মিজানুর রহমান/ইভা