বিচার বিভাগের সংস্কার না হলে অন্য কোনো সংস্কার স্থায়িত্ব পাবে না: প্রধান বিচারপতি
Published: 7th, April 2025 GMT
‘একটা কথা আমি সব সময়ই বলি, যখন আমি বিভাগীয় শহরগুলোতে যাই। আপনারা দেখেছেন সংস্কার কার্যক্রমের ব্যাপ্তিটা কত। বিভিন্ন খাতে এখন সংস্কারের প্রশ্ন এসেছে, প্রস্তাব এসেছে ও সুপারিশ এসেছে। কিন্তু আমি একটা কথা আপনাদের বলতে চাই, আমি আমার বিচারক ভাই–কর্মকর্তাদেরও বলি, কোনো ক্ষেত্রেই, কোনো সেক্টরেই সংস্কার কার্যক্রম স্থায়িত্ব পাবে না, যদি বিচার বিভাগের সংস্কার না ঘটে।’
আজ সোমবার বেলা ১১টার দিকে দিনাজপুরের হাকিমপুর মহিলা ডিগ্রি কলেজে একটি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথাগুলো বলেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ। সৈয়দ জাফর আহমেদ ও তাবসেরুন্নেসা মেমোরিয়াল স্কলারশিপ ফান্ডের অর্থায়নে দরিদ্র ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের মধ্যে বৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠান ছিল এটি। সৈয়দ জাফর আহমেদ ও তাবসেরুন্নেসা প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের দাদা-দাদী। আজ ওই প্রতিষ্ঠানের ১০ শিক্ষার্থীর হাতে পাঁচ হাজার টাকা করে শিক্ষাবৃত্তির অর্থ তুলে দেন প্রধান বিচারপতি।
প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আপনারা হয়তো জানেন, জুলাই–আগস্টের অভ্যুত্থানের পরেই আমার এই দায়িত্বভার গ্রহণ করা। খুব অল্প সময়ের মধ্যেই আমি আমাদের বিচারব্যবস্থা, বিচার বিভাগের অবকাঠামোগত সাংবিধানিক সুদূরপ্রসারী সংস্কারের একটি পথরেখা জাতির সামনে তুলে ধরেছিলাম।’
দিনাজপুরের হাকিমপুর মহিলা ডিগ্রি কলেজের ১০ জন শিক্ষার্থীর হাতে বৃত্তির টাকা তুলে দেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আহম দ
এছাড়াও পড়ুন:
কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন
টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।
এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।
গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।
প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।