Samakal:
2025-05-01@05:07:11 GMT

অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ার

Published: 8th, April 2025 GMT

অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ার

ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়কে অবৈধ অটোরিকশার দাপট ও যাত্রীদের জিম্মি করে অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ার অভিযোগে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেছে বিআরটিএ। এ ছাড়া জেলা ট্রাফিক পুলিশের পক্ষেও মহাসড়কে জরিমানা করা হয়েছে। সোমবার দৈনিক সমকালে ‘কমছে না অটোরিকশার দৌরাত্ম্য, বাড়ছে দুর্ঘটনা’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশের পর নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। 

রহমতপুর বাইপাসে বিআরটিএ পরিচালিত অভিযানে ছয়টি মামলায় ১১ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। অভিযানে নেতৃত্ব দেন ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রাফসান রাব্বি। 

তিনি সমকালকে জানান, মহাসড়কে অবৈধভাবে অটোরিকশা চলছে। এগুলোর বেশির ভাগেরই রেজিস্ট্রেশন ও লাইসেন্স নেই। এ ছাড়া ফিটনেসবিহীন অনেক লোকাল বাস ঢাকা থেকে দূরপাল্লায় যাত্রী পরিবহন করছে। তারা যাত্রীদের জিম্মি করে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছে। এসব অভিযোগের ভিত্তিতে ভ্রাম্যমাণ আদালতে তাদের জরিমানা করা হয়। এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি। 

অভিযানে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, মিনিবাস সার্ভিসসহ বেশ কয়েকজন চালকের বিরুদ্ধে সড়ক পরিবহন আইন লঙ্ঘনের প্রমাণ পাওয়া যায়। এ সময় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে অতিরিক্ত আদায়, ভাড়ার তালিকা প্রদর্শনে অবহেলা,  রেজিস্ট্রেশন ও ড্রাইভিং লাইসেন্স না থাকাসহ অন্যান্য অনিয়মের প্রমাণ পান ভ্রাম্যমাণ আদালত। 
বিআরটিএর সহকারী পরিচালক (ইঞ্জি.

) আবু নাঈম জানান, এখন পর্যন্ত ময়মনসিংহ বিআরটিএ থেকে প্রায় ছয় হাজার সিএনজিচালিত অটোরিকশাকে লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে। কিন্তু জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়ন সূত্র বলছে, মহাসড়কে চলা সিএনজি অটোরিকশার সংখ্যা বাস্তবে কয়েক গুণ বেশি।

জরিমানার শিকার এক অটোরিকশাচালক জানান, ঈদ উপলক্ষে যাত্রীচাপ থাকায় বেশি ভাড়া নেওয়া হচ্ছে। তবে জরিমানার কারণে আর বাড়তি ভাড়া আদায় করা হবে না বলে জানান তিনি।

এদিকে মহাসড়কে অবৈধ অটোরিকশার দাপট ও সড়ক পরিবহন আইন লঙ্ঘন করায় জোরালো অভিযান চালিয়েছে ময়মনসিংহ জেলা ট্রাফিক পুলিশ। গতকাল সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত ৪৪টি মামলায় ১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এ ছাড়া আইন অমান্য করায় আটক করা হয়েছে একাধিক যানবাহন। 

এ বিষয়ে ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক (প্রশাসন) আবু নাসের মো. জহির জানান, সিএনজি অটোরিকশাগুলো মহাসড়কের গলার কাঁটা হয়ে আছে। এগুলো বড় যানবাহনের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলায় দুর্ঘটনা বাড়ছে।
 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ময়মনস হ সড়ক দ র ঘটন ব আরট এ ব আরট এ স এনজ

এছাড়াও পড়ুন:

সুন্দর কাঠ ও ফুলের গামারি

ময়মনসিংহ শহরের ব্রহ্মপুত্র তীরের কাছারিঘাট ও শিল্পাচার্য জয়নুল উদ্যান সকালে প্রাতভ্র৴মণকারীদের পদচারণে মুখর থাকে। কয়েক দিন আগে হেঁটে ফেরার পথে জেলা নির্বাচন অফিসের পেছনে গামারিগাছে ফুল ফুটতে দেখলাম। এই গাছের পাতা শীতে ঝরে গিয়েছিল। বসন্তে পত্রশূন্য গাছে ফুল ফুটেছে। ফুল ফোটার পর আবার পাতা গজাচ্ছে। কাঠের জন্য লাগানো হলেও এর হলুদ ফুলও কিন্তু সুন্দর। গামারি ফুল ভ্রমরের খুব প্রিয়; কারণ, এই ফুলে বেশ মধু আছে। তাই গামারির আরেক নাম ভ্রমরপ্রিয়া। টিয়া ও কাঠবিড়ালিরও প্রিয় এই ফুল। ফুলের নিচের দিকটা খয়েরি বাদামি।

গামারি সবুজ ও ঘন পাতাবিশিষ্ট, দ্রুত বর্ধনশীল পত্রঝরা বৃক্ষ। গামারি কাঠের জন্য লাগানো হলেও এর ফুলও কম সুন্দর নয়। এর বৈজ্ঞানিক নাম Gmelina arborea, এটি Lamiaceae পরিবারের বৃক্ষ। ইংরেজিতে এই গাছ কান্ধার ট্রি, কাশ্মীর ট্রি, গুমার ট্রি, মালয় বুশ-বিচ, হোয়াইট বিচ, হোয়াইট টিক ইত্যাদি নামে পরিচিত। এ ছাড়া বাংলা নাম গামার, গাম্বার, গাম্ভারি, তার কাঠ, গাম্ভারিকা ইত্যাদি নাম রয়েছে। এর সংস্কৃত নামগুলো হলো মধুমতি, গাম্ভারি, সিন্ধুপর্ণী, ভাদ্রাপর্ণী, গামহার ইত্যাদি।

আদিনিবাস ভারতবর্ষ ও মিয়ানমার। বাংলাদেশসহ দক্ষিণ–পূর্ব এশিয়ায় জন্মে। ভারতের আসাম, দক্ষিণ বিহার, ওডিশা ও পশ্চিমবঙ্গের উত্তরাঞ্চল–সংলগ্ন এলাকায় এ গাছ হয়। বাংলাদেশের মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, চট্টগ্রাম, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি, বান্দরবান ও কক্সবাজার জেলায় বেশি দেখা যায়।

এই গাছ লম্বায় ১৫ থেকে ৩৫ মিটার উঁচু হয়। গাছের প্রশাখা ও কুঁড়ি রোমশ। বাকল সাদা বা উজ্জ্বল ধূসর। পাতা পানপাতার আকৃতির, ২০ থেকে ২৪ সেন্টিমিটার লম্বা হয়। পাতার ওপর দিক উজ্জ্বল সবুজ, নিচে পাণ্ডুর, বোঁটা ৬ থেকে ১০ সেন্টিমিটার লম্বা। শীতে পাতা ঝরে। এটি অত্যধিক খরা–সহনশীল। বসন্তকালে পাতাহীন ডালে ডালে দেখা যায় গাঢ় হলুদ ফুল। পাঁচটি পাপড়ি থাকলেও মাঝের পাপড়িটি অন্যগুলোর চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ লম্বা। বড় পাপড়িটির লম্বা পতাকার মতো অংশটি গাঢ় হলুদ। ফুলের গোড়ার দিকে হলুদ রঙের পাশাপাশি দেখা মেলে লালচে-বাদামি ও খয়েরি রঙের। ফুলের অনেক মিষ্টি গন্ধ, ফুল ৩ থেকে ৩ দশমিক ৫ সেন্টিমিটার লম্বা, ২ ভাগে বিভক্ত। এর পুষ্পমধু ভোমরাদের খুবই প্রিয়। গামারির ফল দেখতে গোলাকার, ডিম্বাকৃতির, ফলে এক-দুটি বীজ হয়। ফল তিন সেন্টিমিটার চওড়া, শাঁসাল, পাকলে হালকা হলুদ হয়। শীতের পর ফুল এবং তাঁর দুই মাস পর ফল হয়।

কাঠ হলুদ, খানিকটা লাল অথবা সাদা। কাঠ টেকসই, সহজে কাজ করা যায়। সেগুনের পরেই গামারি কাঠের স্থান। এ জন্য ইংরেজিতে একে হোয়াইট টিক বলে। এই কাঠ আসবাব নির্মাণের জন্য বিশেষ উপযোগী। খোদাইয়ের কাজ, তক্তা, বাক্স, চিরুনি, খেলনা, গাড়ি ও নৌকা এই কাঠ দিয়ে বানানো যায়। এই কাঠের প্লাইউড বেশ ভালো।

গামারির অনেক ভেষজ গুণ রয়েছে। কটু–তিক্ত রস, গুরুপাক, উষ্ণবীর্য, কফ ও ত্রিদোষনাশক, বিষদোষ দাহ, জ্বর, তৃষ্ণা ও রক্তদোষনাশক। এর ছাল এবং কাঠে আছে অনেক তিক্ত পদার্থ ও স্টেরোল। পাতার রসে আছে জীবাণুনাশক শক্তি। কচি পাতার রস গনোরিয়া ও কাশিতে উপকারী। শিকড় কৃমিনাশক ও কুষ্ঠরোগে উপকারী। ক্ষতের পুঁজ বের করে দেয়। ফল চর্মরোগ ও চুল ওঠা বন্ধ করার মহৌষধ। শিকড় কৃমিনাশক ও কুষ্ঠরোগে উপকারী। গামারিগাছের পাতা এবং ফল গবাদিপশুর খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এগুলো পুষ্টিকর এবং প্রাণীদের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।

চয়ন বিকাশ ভদ্র: অধ্যাপক, উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগ, মুমিনুন্নিসা সরকারি কলেজ, ময়মনসিংহ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ২৩৮ বছরে কী পেল আর কী পেল না ময়মনসিংহ জেলা
  • হাড়ভাঙা পরিশ্রমে পুরুষের অর্ধেকের কম বেতন নারীর
  • ময়মনসিংহে সাহিত্য আড্ডার স্থানসহ নানা স্থাপনা গুঁড়িয়ে দিল প্রশাসন
  • ময়মনসিংহ সাহিত্য সংসদের মুক্তমঞ্চ গুঁড়িয়ে দিল প্রশাসন, সংস্কৃতিকর্মীদের প্রতিবাদ
  • ময়মনসিংহ সাহিত্য সংসদের মুক্তমঞ্চ ভেঙে দিল প্রশাসন
  • যেভাবে আর্জেন্টিনার মার্তিনেজকে ময়মনসিংহে ফেরালেন শ্রাবণ
  • বকেয়া বেতনের দাবিতে টঙ্গীতে শ্রমিকদের বিক্ষোভ, দুই ঘণ্টা পর মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক
  • টঙ্গীতে বকেয়া বেতনের দাবিতে শ্রমিকদের মহাসড়ক অবরোধ
  • টঙ্গীতে শ্রমিকদের মহাসড়ক অবরোধ, সাউন্ড নিক্ষেপ
  • সুন্দর কাঠ ও ফুলের গামারি