আইসিসির মাসসেরা হতে কী লাগে? প্রশ্নটা মোহাম্মদ সিরাজকে জিজ্ঞেস করলে বলতে পারেন, কী আর লাগে; এক ম্যাচ খেলেই তো মাসসেরা হওয়া যায়!

সেই এক ম্যাচও আবার একটু ব্যাখ্যার দাবি রাখে। ম্যাচটা শুরু হয়েছিল জুলাইয়ে, শেষ হয়েছে আগস্টে। অ্যান্ডারসন-টেন্ডুলকার ট্রফি সিরিজের পঞ্চম ও শেষ টেস্টটি ওভালে শুরু হয়েছিল গত ৩১ জুলাই। পাঁচ দিনের লড়াইয়ের পর শেষ হয় ৪ আগস্ট।ম্যাচসেরা সিরাজ ইংল্যান্ডের দুই ইনিংস মিলিয়ে ১৯০ রানে ৯ উইকেট নেন (২১.

১১ গড়)। ৬ রানের রোমাঞ্চকর জয়ে সিরিজে ২-২–এ সমতায় ফিরেছিল ভারত।

সিরাজের সেই পারফরম্যান্স তাঁকে এনে দিয়েছে আইসিসির আগস্ট মাসের ছেলেদের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার।

আরও পড়ুনহাত না মেলানোয় ভারতকে কি শাস্তি দেবে আইসিসি১ ঘণ্টা আগে

ওভাল টেস্টে জয়ের জন্য ৩৭৪ রানের লক্ষ্যে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নেমেছিল ইংল্যান্ড। ৮৫.১ ওভারে ইংল্যান্ডকে ৩৬৭ রানে অলআউট করার পথে সিরাজ একাই ৩০.১ ওভার বোলিং করে ১০৪ রানে নেন ৫ উইকেট। সেই টেস্টে ৪৬ ওভার বোলিং করেছিলেন, ইংল্যান্ডের প্রথম ইনিংসে ১৬.২ ওভারে ৮৬ রানে নেন ৪ উইকেট। সেই সিরিজে ভারতের একমাত্র পেসার হিসেবে পাঁচটি টেস্টই খেলে ২৩ উইকেট নিয়ে দুই দলের মধ্যে সর্বোচ্চ উইকেটশিকারিও হন সিরাজ।

আগস্ট মাসের সেরা খেলোয়াড় হওয়ার দৌড়ে সিরাজের প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন নিউজিল্যান্ডের পেসার ম্যাট হেনরি ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের পেসার জেইডেন সিলস। কিন্তু সিরাজের তাঁদের পেছনে ফেলায় সম্ভবত ভূমিকা রেখেছে ওভাল টেস্টে তাঁর শেষ দিনের পারফরম্যান্স। জয়ের জন্য হাতে ৪ উইকেট রেখে ৩৫ রান দরকার ছিল ইংল্যান্ডের। সিরাজ ৩ উইকেট নেন।

আরও পড়ুন‘এটাই ভারতের আসল রূপ’—হাত না মেলানোয় পাকিস্তানে ক্ষোভ৪ ঘণ্টা আগে

আগস্ট মাসের সেরা খেলোয়াড় হয়ে সিরাজ বলেছেন, ‘আইসিসির মাসসেরা হওয়াটা আমার জন্য বিশেষ সম্মানের। অ্যান্ডারসন-টেন্ডুলকার ট্রফি স্মরণীয় সিরিজ, আমার অংশ নেওয়া সিরিজগুলোর মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অন্যতম। গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে অবদান রাখতে পেরে আমি গর্বিত। এই পুরস্কার যতটা আমার, ততটা আমার সতীর্থ ও সাপোর্ট স্টাফদেরও।’

ওভালে দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের পর টেস্টে ক্যারিয়ার–সেরা র‌্যাঙ্কিংয়েও উঠে আসেন সিরাজ। ১২ ধাপ লাফ দিয়ে উঠে আসেন ১৫তম স্থানে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আগস ট ম আইস স উইক ট

এছাড়াও পড়ুন:

খেলার নামে আদম পাচার ঠেকাতে তৎপর জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ

বিদেশে খেলোয়াড় পাঠানোর নামে মানব পাচারের ঝুঁকি রোধ এবং যোগ্য খেলোয়াড়দের জাতীয় দলে সুযোগ পাওয়া নিশ্চিত করতে নতুন নিয়ম চালু করেছে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি)। ৯ অক্টোবর এনএসসি এক চিঠিতে ফেডারেশনগুলোকে জানিয়েছে, এখন থেকে বিদেশে ক্রীড়া দল পাঠানোর আগে ফেডারেশন ও অ্যাসোসিয়েশনগুলোকে ফ্লাইটের কমপক্ষে ১০ দিন আগে জিওর (সরকারি আদেশ) জন্য প্রস্তাব পাঠাতে হবে। একই সঙ্গে নির্বাচিত খেলোয়াড়দের ফিটনেস ও পারফরম্যান্স–সংশ্লিষ্ট প্রমাণপত্রও এনএসসিকে দিতে হবে।

অভিযোগ আছে, কিছু ফেডারেশন ও অ্যাসোসিয়েশন অনেক বছর ধরেই দলের সঙ্গে ভুয়া খেলোয়াড়-কর্মকর্তা পাঠিয়ে আদম পাচার করে আসছে। দুই একটা ঘটনা সামনে এলেও এসবের বেশির ভাগই থেকে যায় আড়ালে। ছোট খেলাগুলো থেকেই এ ধরনের অভিযোগ বেশি আসে। এনএসসির একটি সূত্র জানিয়েছে, মূলত এ ধরনের অপকর্ম ঠেকাতেই বিদেশ সফরের ক্ষেত্রে ফ্লাইটের অন্তত ১০ দিন আগে জিওর প্রস্তাব পাঠানোর নিয়ম করা হয়েছে। এনএসসির পরিচালক (ক্রীড়া) আমিনুল এহসান সরাসরি তা না বললেও তাঁর কথায়ও সে আভাস আছে, ‘আমি বলব না শুধু আদম পাচার রোধ করতে এই নিয়ম করেছি। তবে কোথাও কোথাও এসব খেলার নামে মানব পাচারের প্রশ্ন চলে আসে।’

অনেক সময় শুনি, কোনো কোনো ফেডারেশন ভুয়া খেলোয়াড় নিয়ে যায়। এনএসসির উদ্যোগটাকে তাই ভালোই বলব। এটা জবাবদিহির মধ্যে পড়ে।ফারহাদ জেসমিন, সাবেক অ্যাথলেট ও বিএও অ্যাথলেটস কমিশনের চেয়ারম্যান

এনএসসির কাছে ফেডারেশন বা অ্যাসোসিয়েশন এত দিন জিওর জন্য খেলোয়াড়দের নামই শুধু পাঠাত। যাঁর নাম দেওয়া হতো, তিনি আসলেই খেলোয়াড় কি না বা খেলোয়াড় হলে তাঁর যোগ্যতা কী বা যোগ্য কাউকে বাদ দিয়ে অযোগ্য কাউকে নেওয়া হচ্ছে কি না, এসব যাচাই–বাছাই করা হতো না। এনএসসি তাই জানত না কিসের ভিত্তিতে একজন খেলোয়াড়কে দলে নির্বাচিত করা হয়েছে। নতুন নিয়মে এনএসসিকে এসব দিতে হবে।

জিওর জন্য আবেদনকারীদের ব্যাপারে তথ্য সংগ্রহ করতে সময় লাগে বলে ১০ দিন আগে তালিকা চাওয়ার যুক্তি আছে। কিন্তু পারফরম্যান্স আর ফিটনেসের তথ্যপ্রমাণও পাঠানোর নিয়মটা একটু অভিনবই, যা নিয়ে অবশ্যই নানা রকম প্রশ্ন তোলা যায়। তবে জিওর জন্য ফ্লাইটের ১০ দিন আগে নাম চাওয়ার নিয়মটাকে স্বাগত জানিয়ে বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের অ্যাথলেটস কমিশনের চেয়ারম্যান ও সাবেক অ্যাথলেট ফারহাদ জেসমিন লিটি বলেছেন, ‘অনেক সময় শুনি, কোনো কোনো ফেডারেশন ভুয়া খেলোয়াড় নিয়ে যায়। এনএসসির উদ্যোগটাকে তাই ভালোই বলব। এটা জবাবদিহির মধ্যে পড়ে।’

আরও পড়ুনবিশ্বকাপের আগে সৌদি লিগে খেলতে চেয়েছিলেন মেসি, সৌদি সরকারের ‘না’১১ ঘণ্টা আগেআদম পাচার যেহেতু সব ফেডারেশন করে না, ক্রিকেট-ফুটবলসহ অনেক ফেডারেশনের জন্য নির্বাচিত খেলোয়াড়দের তথ্য এনএসসিকে দেওয়াটা বিব্রতকর হতে পারে। কারণ, এই ফেডারেশনগুলো একটা নির্বাচনী প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই দল গড়ে। তাদের সব তথ্য চাওয়া ফেডারেশনের কার্যক্রমে হস্তক্ষেপ কি না, এমন প্রশ্ন আসেই।

ক্রীড়াঙ্গনে স্বজনপ্রীতি ঠেকাতেও এ নিয়ম ভূমিকা রাখবে বলে ফারহাদ জেসমিনের আশা, ‘অনেক ফেডারেশন অনেক সময় যোগ্যতার বিচার না করে নিজেদের পছন্দের খেলোয়াড় নিয়ে যায়। দেখে মনে হয়, বিদেশভ্রমণই মুখ্য, পারফরম্যান্স মুখ্য নয়।’ বাংলাদেশ কারাতে ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মোয়াজ্জেম হোসেন বলেছেন, ‘এটা ভালো উদ্যোগ। কারণ, এনএসসির জানার অধিকার আছে, বিদেশে টুর্নামেন্টে আমরা কাদের নিয়ে যাচ্ছি।’ সম্প্রতি হকি তারকা রাসেল মাহমুদকে বয়সের অজুহাতে বাদ দেয় হকি ফেডারেশন। এ নিয়ে সমালোচনা হলে এনএসসিকে বিষয়টি তদন্তও করতে হয়।

এনএসসির নতুন নিয়ম অনুযায়ী ক্রিকেট-ফুটবলসহ সব খেলাতেই বিদেশে দল পাঠানোর জন্য নির্বাচিত খেলোয়াড়দের নির্বাচনী প্রক্রিয়া ও প্রয়োজনীয় তথ্য দিতে হবে। কিন্তু আদম পাচার যেহেতু সব ফেডারেশন করে না, ক্রিকেট-ফুটবলসহ অনেক ফেডারেশনের জন্য নির্বাচিত খেলোয়াড়দের তথ্য এনএসসিকে দেওয়াটা বিব্রতকর হতে পারে। কারণ, এই ফেডারেশনগুলো একটা নির্বাচনী প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই দল গড়ে। তাদের সব তথ্য চাওয়া ফেডারেশনের কার্যক্রমে হস্তক্ষেপ কি না, এমন প্রশ্ন আসেই।

আরও পড়ুনআগে চা পরে লাঞ্চ—বদলে যাচ্ছে ক্রিকেটের শতবর্ষ পুরোনো এক রীতি১৫ ঘণ্টা আগে

এনএসসির পরিচালক আমিনুল এহসান অবশ্য তা মনে করেন না, ‘প্রায় প্রতিদিনই এনএসসির কাছে অনেক খেলোয়াড় অভিযোগ করেন, কোনো না কোনো কর্মকর্তার অপছন্দের কারণে নাকি তিনি দল থেকে বাদ পড়েছেন। এ কারণেই খেলোয়াড় নির্বাচনের তথ্যগুলো এনএসসির জানা থাকলে সংশ্লিষ্ট খেলোয়াড়কে একটা উত্তর দেওয়া যায়। এটা ফেডারেশনের কাজে হস্তক্ষেপ নয়। স্বচ্ছতার স্বার্থে এনএসসি তা জানতে চাইতে পারে।’

আরও পড়ুনঅনুশীলনে বলের আঘাতে অস্ট্রেলিয়ার ১৭ বছর বয়সী ক্রিকেটারের মৃত্যু২১ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • অ্যালবামের গল্প বলবে ‘পেনোয়া’
  • খেলার নামে আদম পাচার ঠেকাতে তৎপর জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ
  • বোলাররা ভাসান, ব্যাটসম্যানেরা ডোবান—আজ কী করবে বাংলাদেশ