ওয়েস্ট ইন্ডিজের বাংলাদেশ সফরের সময়সূচি ঘোষণা
Published: 16th, September 2025 GMT
বছরের শেষভাগটা ভীষণ ব্যস্ত সময় কাটাতে যাচ্ছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট দল। ঘরের মাঠে অস্ট্রেলিয়া ও পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ শেষ করেই এবার তারা পাড়ি জমাবে বাংলাদেশে। অক্টোবর-নভেম্বরে নির্ধারিত এই সফরে সীমিত ওভারের ক্রিকেট খেলবে ক্যারিবীয়রা।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট বোর্ড ইতোমধ্যেই আসন্ন তিনটি সিরিজের সূচি চূড়ান্ত করেছে। বাংলাদেশের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ মাঠে গড়াবে অক্টোবরের ১৮, ২০ ও ২৩ তারিখে। এরপর শুরু হবে সমান সংখ্যক টি-টোয়েন্টি, যা অনুষ্ঠিত হবে অক্টোবরের ২৭, ৩০ ও নভেম্বরের ১ তারিখে।
আরো পড়ুন:
৭ উইকেটের হার, সিরিজ খোয়ালো বাংলাদেশ
শান্তর পরিবর্তে ওয়েস্ট ইন্ডিজ যাচ্ছেন দিপু, ভিসা হয়নি অঙ্কনের
তবে এর আগেই শারজাহতে নেপালের বিপক্ষে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি খেলবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সেপ্টেম্বরের ২৭, ২৯ ও ৩০ তারিখে অনুষ্ঠিতব্য এই ম্যাচগুলো হবে শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে।
বাংলাদেশে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সফরের ভেন্যুগুলো আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা না হলেও নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে, প্রথম দুটি ওয়ানডে অনুষ্ঠিত হবে সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। তৃতীয় ওয়ানডে ও প্রথম টি-টোয়েন্টি হবে চট্টগ্রামে। বাকি দুটি টি-টোয়েন্টি আয়োজন করা হবে ঢাকার মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে।
বাংলাদেশের সর্বশেষ ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে মিশ্র অভিজ্ঞতা হয়েছিল টাইগারদের। ক্যারিবীয়দের মাটিতে প্রথমবারের মতো টি-টোয়েন্টি সিরিজে হোয়াইটওয়াশ করার ঐতিহাসিক কীর্তি গড়লেও ওয়ানডে সিরিজে উল্টো হোয়াইটওয়াশের শিকার হতে হয়। দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ শেষ হয়েছিল ১-১ সমতায়।
বাংলাদেশ সফর শেষে ওয়েস্ট ইন্ডিজ অক্টোবরেই পাড়ি দেবে ভারতে। যেখানে দুটি টেস্ট খেলবে তারা। প্রথম টেস্ট শুরু হবে ২ অক্টোবর আহমেদাবাদে। আর দ্বিতীয় টেস্ট হবে ১০ অক্টোবর দিল্লিতে। এরপর নভেম্বর-ডিসেম্বরে পূর্ণাঙ্গ সফরে যাবে নিউ জিল্যান্ডে। যেখানে পাঁচটি টি-টোয়েন্টি, তিনটি ওয়ানডে ও তিনটি টেস্ট খেলবে তারা।
বাংলাদেশ-ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজের ম্যাচ সূচি:
ওয়ানডে সিরিজ:
১ম ওয়ানডে – ১৮ অক্টোবর,
২য় ওয়ানডে – ২০ অক্টোবর,
৩য় ওয়ানডে – ২৩ অক্টোবর।
টি-টোয়েন্টি সিরিজ:
১ম টি–টোয়েন্টি – ২৭ অক্টোবর,
২য় টি–টোয়েন্টি – ৩০ অক্টোবর,
৩য় টি–টোয়েন্টি – ১ নভেম্বর।
ঢাকা/আমিনুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব ল দ শ উইন ড জ স র জ
এছাড়াও পড়ুন:
ট্রেন থেকে পড়ে ৮ দিন ধরে হাসপাতালে ছেলে, ফেসবুকে ছবি দেখে ছুটে এলেন মা
প্রতিদিনের মতো কাজ শেষে গতকাল সোমবার বাসায় ফিরছিলেন নাজমা বেগম। ঢাকার টঙ্গী এলাকায় থাকেন তিনি। পরিচিত এক ব্যক্তি তাঁকে হঠাৎ ফোন করে জানান, তাঁর নিখোঁজ ছেলের সন্ধান পাওয়া গেছে। দ্রুত ওই ব্যক্তির সঙ্গে দেখা করেন নাজমা। তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করা একটি ভিডিও দেখান নাজমাকে। সে ভিডিওতে দেখতে পান, তাঁর ১০ দিন ধরে নিখোঁজ ছেলে আবদুল্লাহ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি।
ছেলের খোঁজ পেয়ে আজ মঙ্গলবার সকালে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে ছুটে আসেন তিনি। রেলস্টেশন থেকে সরাসরি চলে আসেন চমেক হাসপাতালের নিউরোসার্জারি বিভাগে। এখানেই ৮ দিন ধরে ভর্তি আবদুল্লাহ।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ৮ সেপ্টেম্বর আহত অবস্থায় আবদুল্লাহকে হাসপাতালে আনা হয়। সে সময় তার নাম-ঠিকানা কিছুই জানা যায়নি। অজ্ঞাতপরিচয় হিসেবেই হাসপাতালের নিউরোসার্জারি ওয়ার্ডে নেওয়া হয় তাকে। পরদিন তার অস্ত্রোপচার হয়। গত শনিবার আবদুল্লাহর জ্ঞান ফেরে। এরপর নিজের ও বাবা-মায়ের নাম আর বাসার ঠিকানা জানায় সে।
চিকিৎসকেরা সেই সূত্রে ধরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ নানাভাবে খোঁজ নেওয়ার চেষ্টা করেন। ফেসবুকে আবদুল্লাহর ছবি দিয়ে খোঁজ চাওয়া হয় বাবা-মায়ের। সেই ছবি পরিচিতদের মাধ্যমে দেখেন নাজমা বেগম। এরপর ছুটে আসেন চট্টগ্রামে। হাসপাতালে এসেই নার্সদের সহায়তায় যান নিউরোসার্জারি বিভাগে। সেখানে হাই ডিপেন্ডেন্সি ইউনিটে (এইচডিইউ)চিকিৎসাধীন আবদুল্লাহকে দেখেন।
আজ বিকেলে হাসপাতালের নিউরোসার্জারি ওয়ার্ডের সামনে কথা হয় আবদুল্লাহর মা নাজমা বেগমের সঙ্গে। সকালেই চট্টগ্রাম পৌঁছেছেন তিনি। জানালেন, তিন ছেলেমেয়ের মধ্যে ১০ বছর বয়সী আবদুল্লাহ সবার বড়। ছোট মেয়ের বয়স পাঁচ ও আরেক ছেলের বয়স দুই। আবদুল্লাহ সুস্থ আছে জেনে স্বস্তি পেলেও দুশ্চিন্তায় আছেন তিনি। কারণ, এটিই প্রথমবার নয়, এর আগেও কয়েকবার ঘর থেকে কিছু না বলে বেরিয়ে যায় সে।
নাজমা বেগম বলেন, প্রায়ই আবদুল্লাহ ঘর থেকে বেরিয়ে যায়। এদিক–সেদিক চলে যায়। পরে আবার ফিরে আসে। এর আগেও ঢাকার আশপাশে এদিক-সেদিক চলে গিয়েছিল সে। ৬ সেপ্টেম্বর সে ভাত খাওয়া থেকে উঠে হঠাৎ চলে যায়। সে ফিরে আসবে এই আশায় থানায় যাননি। কিন্তু ১০ দিন হয়ে যাওয়ায় এদিক–সেদিক খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। ঢাকায় বিভিন্ন স্টেশনে ছেলের খোঁজে গেছেন বলে জানান নাজমা।
চমেক হাসপাতালে চিকিৎসকেরা আবদুল্লাহর বরাত দিয়ে জানান, বাসা থেকে বেরিয়ে সে কক্সবাজার যাচ্ছিল। পথে চট্টগ্রামে ট্রেন থামলে সে ট্রেন থেকে পড়ে যায়। চিকিৎসার পর এখন সুস্থ হয়ে উঠছে সে।
চিকিৎসকেরা জানান, আবদুল্লাহকে যখন আনা হয় তার মাথায় গুরুতর আঘাত ছিল। তার মাথার এক পাশের হাড় ভেঙে গিয়েছিল। ট্রেন থেকে পড়ার কারণে মাথায় আঘাত লাগে। হাড়ের কিছু অংশ মস্তিষ্কের ভেতরে গেঁথে যায়। অস্ত্রোপচারও সফল হয়েছে। তবে জ্ঞান না ফেরায় তার পরিচয় জানা যায়নি। জ্ঞান ফেরার পর তার তথ্য নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট করা হয়।
শুরু থেকে আবদুল্লাহর অস্ত্রোপচার ও চিকিৎসা করেছেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিউরোসার্জারি বিভাগে সহকারী অধ্যাপক মু. ইসমাইল হোসেন। তিনি বলেন, ‘তার হাড় ভেঙে মস্তিষ্কের ভেতরে চলে গিয়েছিল। অস্ত্রোপচারের পর স্বাভাবিকভাবে সেটি জোড়া দেওয়া হয়েছে। এখন সে পুরোপুরি সুস্থ। তাকে আমরা আজ-কালের মধ্যে ডিসচার্জ করে দেব। শিশুকে পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দিতে পেরে আমরাও আনন্দিত।’