কুমিল্লায় কেএফসিতে ভাঙচুরের ঘটনায় গ্রেপ্তার ৪
Published: 8th, April 2025 GMT
কুমিল্লা নগরীর রাণীর বাজার এলাকায় কেএফসি রেস্টুরেন্টে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় মঙ্গলবার পুলিশ বাদী হয়ে থানায় মামলা করেছে। এ ঘটনায় পুলিশ মঙ্গলবার দিনভর অভিযান চালিয়ে ৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। বুধবার তাদেরকে এ মামলায় আদালতে পাঠানো হবে।
মঙ্গলবার রাতে বিষয়টি সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মহিনুল ইসলাম। এদিকে মঙ্গলবার কেএফসি রেস্টুরেন্ট, নগরীর একাধিক স্থানের বাটার শোরুম বন্ধ দেখা গেছে। এদিকে অপ্রীতিকর ঘটনার আশঙ্কায় জেলার আদর্শ সদর উপজেলার আলেখারচর এলাকায় কোকাকোলা কোম্পানি কর্তৃপক্ষ প্রধান ফটকে কর্মবিরতির ব্যান্যার টানিয়ে দেয়।
গ্রেপ্তাররা হচ্ছে- জেলার সদর দক্ষিণ উপজেলার মাটিয়ারা গ্রামের সাফায়েত মজুমদার (২৭), নগরীর কাপ্তান বাজার এলাকার মো.
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, গাজায় ইসরায়েলি হামলার প্রতিবাদে সোমবার দিনভর কুমিল্লার শহরে বিক্ষোভ করে বিভিন্ন সংগঠনের লোকজন। এরই মধ্যে সোমবার রাতে নগরীর রাণীর বাজার সড়কে ইসরায়েলি পণ্য উৎপাদন ও বিক্রির অভিযোগে কেএফসি রেস্টুরেন্টে হামলা চালায় একদল লোক। এ সময় রেস্টুরেন্টের চেয়ার টেবিল ও কাচের দেয়ালে ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হয়।
মঙ্গলবার রাতে কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মহিনুল ইসলাম সমকালকে জানান, এ ঘটনায় থানার এসআই বীরঙ্গচন্দ্র মণ্ডল বাদী হয়ে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা দায়ের করেন। পাঁচ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত ৩০-৩২ জনের বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করা হয়। সিসিটিভি ফুটেজ দেখে মঙ্গলবার দুপুরে অভিযান পরিচালনা করে চার জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অপর আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
তিনি আরও জানান, মঙ্গলবার সকাল থেকে কেএফসি রেস্টুরেন্ট, নগরীর বাটা স্যুজের শোরুম আউটলেটসমূহে এবং কোকাকোলা কোম্পানির ফ্যাক্টরির সামনে নিরাপত্তার জন্য পুলিশ মোতায়েন রাখা হয়েছে।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
নড়াইলে সরকারি গাছ বিক্রির অভিযোগে চেয়ারম্যানসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা
নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ ইউনিয়নে সড়কের পাশে সরকারি গাছ চুরি করে বিক্রির অভিযোগে মামলা হয়েছে। গতকাল বুধবার রাতে শাহবাদ ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মশিউর রহমান বাদী হয়ে সদর থানায় মামলাটি করেন।
মামলায় ওই ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমানসহ ১৩ জন আসামি করা হয়েছে। অন্য আসামিরা হলেন প্রশিকা নড়াইল উন্নয়ন এলাকা ব্যবস্থাপক শাহাব উদ্দিন ও প্রশিকার গঠিত সংগঠন প্রভাতী যুব সংঘের সভাপতি নড়াইল সদর উপজেলার তুজরডাঙ্গা এলাকার মুজিবুর রহমান, সদস্য একই এলাকার জরিনা বেগম, রজব আলী, মো. আজিবর, মো. ইলিয়াছ, ইমান আলী, মো. ওমর, মো. হায়দার, আবু সাঈদ, মো. এনামুল ও মো. শরিফুল।
এ বিষয়ে আজ বৃহস্পতিবার সকালে নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাজেদুল ইসলাম বলেন, ‘সরকারি গাছ চুরি করে বিক্রির অভিযোগে একটি মামলা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
মামলার এজহারে বাদী অভিযোগ করেছেন, গত ২৯ এপ্রিল নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ বাজার থেকে হাজির বটতলা পর্যন্ত সরকারি রাস্তার জায়গা থেকে গাছ কাটা ও চুরি করে বিক্রির সংবাদ পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে যান। উপস্থিত হয়ে দেখেন, কাটা গাছবোঝাই একটি ট্রাক এবং নছিমন জব্দ করেছেন নড়াইল সদর উপজেলা ভূমি অফিসের সহকারী কমিশনার দেবাশীষ অধিকারী। তখন ঘটনাস্থলে শ্রমিকদের জিজ্ঞাসাবাদ ও খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, মামলার আসামিরা কোনো ধরনের অনুমতি ছাড়াই খাসজমি থেকে গাছ কেটে বিক্রি করেছেন। এর আগেও একবার তাঁরা ওই জমি থেকে গাছ বিক্রি করেছিলেন। জব্দ করা গাছের লগ, ডালপালা এবং আগে কাটা গাছের অবশিষ্ট ভূমিসংলগ্ন গুঁড়ি পর্যবেক্ষণ করে বোঝা গেছে, ওই স্থান থেকে আনুমানিক পাঁচ লাখ টাকার অধিক গাছ চুরি করে কাটা ও বিক্রি হয়েছে।
প্রশিকা নড়াইল উন্নয়ন এলাকার ব্যবস্থাপক শাহাব উদ্দিন বলেন, ২০০৯ সালে প্রশিকা, ইউনিয়ন পরিষদ ও প্রভাতী যুব সংঘের যৌথ উদ্যোগে একটি চুক্তির মাধ্যমে সড়কের পাশে গাছগুলো রোপণ করেছিল। সে সময় সড়কটি খাস খতিয়ানভুক্ত ছিল না। বর্তমানে তা সরকারের আওতায় পড়ায় গাছ কাটার অনুমতি চেয়ে ইউএনওর কাছে আবেদন করা হয়েছিল, তবে প্রশাসন কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি। কিছুদিন আগে ইউপি সদস্য ইব্রাহিম তাঁকে ফোনে জানান, বিদ্যুৎ বিভাগের কাটা ডালপালা বিক্রি করতে চান চেয়ারম্যান। বিদ্যুৎ বিভাগের কাটা ডালপালাগুলো পড়ে থেকে নষ্ট হবে ভেবে তিনি বিক্রিতে সম্মতি দেন। পরে গাছ কীভাবে বা কারা কেটেছে, তা তিনি জানেন না।
মামলা করার আগে অবৈধভাবে গাছ কাটার অভিযোগের ব্যাপার জানতে চাইলে ইউপি চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান বলেছিলেন, প্রশিকার সঙ্গে চুক্তির একটি পক্ষ ছিল ইউনিয়ন পরিষদ। সেই হিসেবে গাছ কাটার অনুমতি নিতে ইউএনও বরাবর প্রশিকার আবেদন তিনি চেয়ারম্যান হিসেবে সুপারিশ করেছিলেন। তবে গাছ কেটেছে প্রশিকা আর তাদের সংগঠন। এখানে চেয়ারম্যান-মেম্বরের কিছু নেই।
নড়াইল সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) দেবাশীষ অধিকারী বলেন, প্রশিকার চুক্তির সময় সড়কটি ব্যক্তিমালিকানাধীন জমিতে ছিল, পরে ২০১৫ সালে এটি খাস খতিয়ানভুক্ত হয়। খাসজমি থেকে গাছ কাটা বেআইনি। এ কারণে তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।