শেরে বাংলাকে ‘সুপার স্টার মুসলিম জাতীয়তাবাদী` ঘোষণা
Published: 27th, April 2025 GMT
অবিভক্ত বাংলার মুখ্যমন্ত্রী শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হককে ‘সুপার স্টার মুসলিম জাতীয়তাবাদী’ বলে ঘোষণা করেছে বিপ্লবী ছাত্র পরিষদ।
রবিবার (২৭ এপ্রিল) ফজলুল হকের ৬৩তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) কেন্দ্রীয় মসজিদে বিপ্লবী ছাত্র পরিষদ আয়োজিত দোয়া মাহফিলে এ ঘোষণা দেন সংগঠনটির নেতারা। দোয়া পরিচালনা করেন ঢাবি কেন্দ্রীয় মসজিদে সিনিয়র ইমাম ও খতিব ড.
দোয়া শেষে সংক্ষিপ্ত বক্তৃতায় দেশ ও মানুষের জন্য শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকের অবদানের কথা তুলে ধরা হয়।
আরো পড়ুন:
ঢাবিতে পরীক্ষা ছাড়াই শূন্যপদে নিয়োগের অভিযোগ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত
‘শহীদ পরিবারগুলোর পাশে দাঁড়াচ্ছে না অন্তর্বর্তী সরকার’
এ সময় বলা হয়, মহান মুসলিম জাতীয়তাবাদী নেতা শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক উপমহাদেশের একজন প্রজ্ঞাবান ও বিচক্ষণ রাজনীতিক ছিলেন। তিনি জমিদারী প্রথা উচ্ছেদ ও মহাজনী আইন পাশ এবং ঋণশালিশী বোর্ড গঠন করে মহাজনদের শোষণ থেকে বাংলার মুসলিম ও নিম্নবর্ণের হিন্দু কৃষকদের মুক্ত করেছিলেন। অবিভক্ত বাংলার মূখ্যমন্ত্রী হিসেবে তিনি গোটা বাংলায় শিক্ষা বিস্তারে অসামান্য ভূমিকা পালন করেন। বিশেষ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করার জন্য নিয়ামক ভূমিকা পালন করেছিলেন।
ফজলুল হক জমিদারী প্রথা উচ্ছেদ করে ও ঐতিহাসিক লাহোর প্রস্তাবের মাধ্যমে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠা করে উপমহাদেশের মুসলমানদের স্বাধীনতা ও মুক্তি নিশ্চিত করে গেছিলেন। তার অনন্য অবদানের কারণে আজ উপমহাদেশে বাংলাদেশ ও পাকিস্তান নামে দুটি মুসলিম রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। কারণ তিনি একজন সুপার স্টার মুসলিম জাতীয়তাবাদী নেতা।
দোয়া মাহফিলে আরো উপস্থিত ছিলেন, জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের সহকারী সদস্য সচিব গালীব ইহসান, বিপ্লবী ছাত্র পরিষদের আহ্বায়ক আবদুল ওয়াহেদ, সদস্য সচিব ফজলুর রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার যুগ্ম-আহ্বায়ক গোলাম নূর শাফায়েতুল্লাহ, সহকারী সদস্য সচিব ফারজায়ান আহসান কৃতিত্ব, বাংলাদেশ ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম, ঢাকা মাদ্রাসা-ই আলিয়া শাখার সদস্য সচিব মো. জিনাত হোসেন, সহকারী সদস্য সচিব মো. শরীফুদ্দীন, মো. জোবায়ের প্রমুখ।
ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
সব্যসাচী কাজী মোতাহার হোসেন বিজ্ঞান ও শিল্পের মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন
প্রথিতযশা অধ্যাপক ও পরিসংখ্যানবিদ কাজী মোতাহার হোসেন ছিলেন একজন সব্যসাচী মানুষ। তিনি নিজের কাজের মাধ্যমে বিজ্ঞান ও শিল্পের মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন। তাঁর ঐতিহ্য শিক্ষার্থীদের ধারণ করতে হবে।
জ্ঞানতাপস কাজী মোতাহার হোসেনের ১২৮তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আজ বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তারা এ কথাগুলো বলেন।
অনুষ্ঠানে স্মারক বক্তৃতা, বৃত্তি, পদক, পুরস্কার ও সনদ দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানের যৌথ আয়োজক কাজী মোতাহার হোসেন ফাউন্ডেশন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগ এবং পরিসংখ্যান গবেষণা ও শিক্ষণ ইনস্টিটিউট।
অনুষ্ঠানে ‘যুগলের বন্ধন: কাজী নজরুল ইসলাম-কাজী মোতাহার হোসেন’ শীর্ষক স্মারক বক্তৃতা দেন অধ্যাপক ভীষ্মদেব চৌধুরী। তিনি দুই বন্ধুর সম্পর্কের রসায়নের নানা দিক তুলে ধরেন।
প্রধান অতিথি বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, এই অনুষ্ঠানের দুটো প্রাপ্তি আছে। প্রথমত, মানুষের অবদান ও মেধাকে স্বীকার করা হচ্ছে। দ্বিতীয়ত, এই উপমহাদেশের একজন প্রথিতযশা সব্যসাচী মানুষের ঋণ স্বীকার করা হচ্ছে।
কাজী মোতাহার হোসেন যেকোনো বিবেচনায় একজন দার্শনিক বলে উল্লেখ করেন নিয়াজ আহমেদ খান। তিনি বলেন, কাজী মোতাহার হোসেন বিজ্ঞান ও শিল্পের মধ্যে মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন। প্রথম সারির পরিসংখ্যানবিদ, বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা ছাড়াও তিনি অনেকগুলো সামাজিক আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন, প্রভাব বিস্তার করেছেন। একজন মানুষের ছোট জীবদ্দশায় এত গুণ সন্নিবেশিত করা কঠিন। কিন্তু তিনি তা করে দেখিয়েছেন।
সবাইকে নিয়ে চলা, প্রতিষ্ঠান তৈরি করা, নিজের জগতের বাইরে নানা কিছুতে হাত বাড়িয়ে দেওয়ার মতো ঐতিহ্য কাজী মোতাহার হোসেন করে গেছেন বলে উল্লেখ করেন নিয়াজ আহমেদ খান। তিনি বলেন, তাঁর সম্মানে যাঁরা আজ স্বীকৃতি পেলেন, তাঁরা এই ঐতিহ্যকে ধারণ করবেন। এটা (বিশ্ববিদ্যালয়) যে সামাজিক প্রতিষ্ঠান, সে বার্তা দেবেন। যেসব শিক্ষার্থী সম্মাননা পাচ্ছেন, তাঁদের ছোট প্রোফাইল তৈরি করে ওয়েবসাইটে তুলে দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
কাজী মোতাহার হোসেন ফাউন্ডেশনের সভাপতি অধ্যাপক আবদুল মাজেদ বলেন, কাজী মোতাহার হোসেন একজন সব্যসাচী মানুষ ছিলেন। বিজ্ঞানের এমন কোনো দিক নেই, যেখানে তাঁর পদচারণা ছিল না। তিনি দাবা খুব পছন্দ করতেন। দাবা খেলার কথা শুনলে তিনি ছুটে যেতেন। কাজী মোতাহার হোসেনকে নিয়ে তাঁর শোনা নানা গল্প তিনি স্মৃতিচারণা করেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক জাফর আহমেদ খান বলেন, কাজী মোতাহার হোসেন পরিসংখ্যান চর্চার পথিকৃৎ ছিলেন। বিজ্ঞান, দাবাচর্চারও পথিকৃৎ ছিলেন। এমন কোনো পুরস্কার নেই যে, তিনি পাননি। তাঁর দেখানো পথে যেন শিক্ষার্থীরা নিজেদের আলোকিত করতে পারেন।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন কাজী মোতাহার হোসেন ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক কাজী রওনাক হোসেন। এই আয়োজনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের বিভিন্ন বর্ষের সেরা শিক্ষার্থীদের বই, নগদ অর্থ ও সনদ তুলে দেওয়া হয়। এ ছাড়া কাজী মোতাহার হোসেনকে নিয়ে আয়োজিত রচনা প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।