নারায়ণগঞ্জের বন্দরে চোর আখ্যা দিয়ে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে মোহাম্মদ রাহিম ওরফে রইস রাহিম (২৩) নামে এক যুবককে ইট দিয়ে মাথা থেঁতলে হত্যা করা হয়েছে। মঙ্গলবার রাতে বন্দর উপজেলার মুছাপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ বারইপাড়ার ইকবালের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। রাহিম বন্দর উপজেলার বারইপাড়া এলাকার শাহাবুদ্দিনের বাড়ির ভাড়াটিয়া হাবিবুর রহমানের ছেলে। স্থানীয়দের তথ্যমতে, প্রবাসীর স্ত্রীর সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক নিয়ে সন্দেহ থেকে এ হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়। 

নিহতের মা রাশিদা বেগমের অভিযোগ, চোর আখ্যা দিয়ে প্রতিবেশী ইকবাল মিয়ার নেতৃত্বে এ হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়। বিষয়টি ‘ডাকাতি করতে গিয়ে গণপিটুনির ঘটনা’ বলে চালানোর চেষ্টা হচ্ছে। 

রাশিদা জানান, রাহিমকে প্রতিবেশী ইকবাল মঙ্গলবার রাতে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায়। রাত দেড়টার দিকে ছেলের চিৎকার শুনে ঘুম থেকে উঠে ইকবালের বাড়িতে গিয়ে দেখি ছেলের শরীরের কাটা স্থানে মরিচের গুঁড়া ও লবণ লাগানো হচ্ছে। এ অবস্থায় আমার চোখের সামনে ইকবাল, রমজান, আমজাদ, মাসুদ, বাঁধন, সালাউদ্দিন, শিল্পীসহ ১০-১২ জন মিলে ইট দিয়ে রাহিমের মাথা থেঁতলে দেয়। পরে তাকে মুমূর্ষু অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বুধবার সকাল ১০টায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় রাহিম। 

স্থানীয়রা জানান, রাহিম ইট বালু বহনকারী পিকআপচালক। ইকবালের প্রবাসী বড় ভাইয়ের স্ত্রীর সঙ্গে রাহিমের অনৈতিক সম্পর্ক আছে- এমন সন্দেহে তাকে হত্যা করেছে ইকবাল ও তার পরিবারের লোকজন। এ ঘটনায় প্রবাসীর স্ত্রী হাবিবাকেও মারধর করে তারা। সে বর্তমানে স্থানীয় একটি ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন।

বন্দর থানার ওসি তরিকুল ইসলাম বলেন, প্রাথমিকভাবে ওই বাড়িতে চুরি বা ডাকাতির ঘটনার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। হত্যার কারণ আমরা খতিয়ে দেখছি। ঘটনায় জড়িতরা পালিয়ে গেছে। তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ হত য ইকব ল

এছাড়াও পড়ুন:

খামেনি ও পেজেশকিয়ানকে লক্ষ্য করে হামলার চেষ্টা

ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান ও সুপ্রিম লিডার আয়াতুল্লাহ আলি খামেনিকে লক্ষ্য করে হামলার চেষ্টা চালাচ্ছে ইসরায়েল। নিউইয়র্ক টাইমস শনিবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ইরানের রাজধানী তেহরানের পাস্তুর এলাকায় এই হামলার চেষ্টা হয়। ওই এলাকাতেই অবস্থান করেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ও সর্বোচ্চ নেতা। হামলা প্রতিহত করতে ইরানি সেনাবাহিনী ব্যাপকভাবে আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ব্যবহার করছে।

পাস্তুর এলাকার একাধিক বাসিন্দা জানিয়েছেন, হামলার আশঙ্কায় সেখানে নিয়মিতভাবে আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা থেকে মিসাইল ছোড়া হচ্ছে। তাদের মতে, এসব ব্যবস্থা কার্যকরভাবে মোতায়েন করা হয়েছে যেন ইসরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্র কোনোভাবেই ওই এলাকায় আঘাত হানতে না পারে।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ইরানের শীর্ষ নেতৃত্বকে লক্ষ্য করে সরাসরি হামলার এই চেষ্টা মধ্যপ্রাচ্যের সংকটকে আরও ঘনীভূত করতে পারে। যদিও এখন পর্যন্ত ইসরায়েল সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে এই হামলার বিষয়টি স্বীকার করেনি, তবে পরিস্থিতির দ্রুত পরিবর্তনে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা উদ্বেগ প্রকাশ করছেন।

শুক্রবার ভোরে ইরানের বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক হামলা চালায় ইসরায়েল। এর পর সারাদিনই দেশটিতে হামলা অব্যাহত রাখে তারা। ভয়াবহ এ হামলায় ইরানের সেনাপ্রধান মোহাম্মদ বাঘেরি, সামরিক বাহিনীর এলিট শাখা ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পসের (আইআরজিসি) প্রধান জেনারেল হোসেইন সালামিসহ অন্তত ২০ জ্যেষ্ঠ কমান্ডারকে হত্যা করে ইসরায়েল। এ অবস্থায় ২৪ ঘণ্টা পার না হতেই বাহিনীটির নতুন প্রধানের নাম ঘোষণা করেন দেশটির সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি।

দায়িত্ব নিয়েই ইসরায়েলের উদ্দেশে কঠিন হুঁশিয়ারি দেন নতুন আইআরজিসিপ্রধান। তিনি বলেন, ইসরায়েলি হামলার জবাবে শিশু হত্যাকারী জায়নবাদী শাসকের জন্য শিগগিরই জাহান্নামের দরজা খুলে যাবে।

নতুন আইআরজিসিপ্রধানের এ বার্তার কয়েক ঘণ্টা না যেতেই ইসরায়েলে মিসাইল হামলা শুরু করে ইরান। স্বল্প সময়ের মধ্যে তিন দফায় মিসাইল হামলা করেছে তেহরান, যেখানে প্রথম দফায় ছোড়া হয়েছে শতাধিক মিসাইল। ইরানি কর্মকর্তারা দাবি করেছেন, ‘অপারেশন ট্রু প্রমিস-৩ নামের’ এ অভিযানে ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে এরই মধ্যে কয়েকশ মিসাইল ছোড়া হয়েছে। ইরানের এ হামলার পরই মূলত নতুন করে আবারও হামলা শুরু করে ইসরায়েল।

সম্পর্কিত নিবন্ধ