লেখক ও অধ্যাপক ড. সলিমুল্লাহ খান বলেছেন, আমাদের বুকে হাত দিয়ে স্বীকার করতে হবে, পুলিশের জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়েছে। পুলিশের যে পজিশনে থাকার কথা ছিল সে পজিশনে নেই। পুলিশ যেই আইনে চলে সেখানে পদে পদে সমস্যা আছে। এসব বিষের মাঝেমধ্যে আলোচনা করা উচিত এবং খোলাখুলি আলোচনা হওয়া উচিত।

বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজারবাগে পুলিশ সপ্তাহের বিশেষ আয়োজন ‘নাগরিক ভাবনায় জনতার পুলিশ: নিরাপত্তা ও আস্থার বন্ধন’ আলোচনা সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

ড.

সলিমুল্লাহ খান বলেন, পুলিশ শুধু রাষ্ট্রযন্ত্রের অংশ নয়, সমাজেরও অংশ। পুলিশের সঙ্গে জনতার বিভক্তির মূলে যেতে হবে, এটা হলো জনতার সঙ্গে রাষ্ট্রের বিভক্তি। আর এই সমস্যার সমাধান হলো গণতন্ত্র।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সাবেক আইজিপি আব্দুল কায়ুম বলেন, এত বড় একটা পরিবর্তন হয়ে গেল, একটা গণঅভ্যুত্থান হয়ে গেল; ছাত্র-জনতা তাদের আশা-আকাঙ্ক্ষার কথা বলেছে, তারা নতুন একটি বাংলাদেশ গড়তে চায়। একটা সুযোগ সৃষ্টি হয়েছিল স্বাধীনতার পর। কিন্তু সঠিকভাবে আমরা এগোতে পারিনি, আমরা ব্যর্থ হয়েছি। এই যে একটা সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হয়েছে। অনেক আশা-আকাঙ্ক্ষা অনেক স্বপ্ন, এই স্বপ্ন যেন ব্যর্থ না হয়। সে জন্য সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, ২০০৯ থেকে ২৪ পর্যন্ত আমরা যা দেখলাম, তা কল্পনা করা যায় না। আগেও গণতন্ত্র ছিল না, কিন্তু আমরা সেবা দিতে পেরেছি। তবে গত ১৫ বছরের মতো আমরা দারোয়ানে পরিণত হইনি। গণতন্ত্র থাকলে যে সুবিধাটা হয়, সেটা হলো, পাঁচ বছর পর আপনাকে ভোটারদের কাছে যেতে হবে এবং মেন্ডেট নিতে হবে আপনি যা ইচ্ছা তাই করতে পারবেন না। ২০০৯ সালের নির্বাচন যে খুব নিখুঁত হয়েছে, তা বুকে হাত দিয়ে বলতে পারব না। তার পরবর্তী তিনটা নির্বাচনে যা হয়েছে তা আমরা সবাই জানি। যখন একচ্ছত্র ক্ষমতা এসে যায় তখন প্রশাসন ভেঙে পড়ে। এটা ভয়, খুন-গুম ও সন্ত্রাস দ্বারা সম্ভব হয়েছে। এ সময়টাতে শুধু এক শ্রেণির পুলিশ কর্মকর্তা না সব সেক্টরের এক শ্রেণির কর্মকর্তা অতি উৎসাহিত হয়ে কাজ করেছে।

তিনি বলেন, যা হওয়ার হয়েছে, আমাদের আবার নতুন করে মানুষের সেবা দিতে হবে। সমাজের সব শ্রেণির মানুষকে সঙ্গে নিয়ে কমিউনিটি পুলিশিং করতে হবে।

সাবেক আইজিপি মোহাম্মদ নুরুল হুদা পুলিশ সংস্কার কমিশনকে ব্যর্থ উল্লেখ করে বলেন, সংস্কার কমিশন পুলিশের বিষয়ে বলছে, অনেক বিষয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা দরকার। পরীক্ষা-নিরীক্ষা দরকার–যদি এই কথা বলা হয়, তাহলে এই সংস্কার কমিশনের কী দরকার। এই পুলিশ কমিশন ১৮৬১ সালের পুলিশ আইন নিয়ে কিছু বলে না গণ্ডগোল কিন্তু ওইখানেও আছে।

তিনি বলেন, রাজনৈতিক সদিচ্ছা যদি না থাকে তাহলে পুলিশ কীভাবে কাজ করবে। যাদের সুবাদে আমরা আজ কথা বলতে পারছি, সেটা কতদিন বলতে পারবো সেটার কোনও গ্যারান্টি নেই। রাজনৈতিক দলগুলোর যদি সদিচ্ছা না থাকে তাহলে সম্ভব না।

তিনি বলেন, পুলিশের সঙ্গে জনগণের সম্পর্ক কিন্তু ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়ার। এটা বদলানো পুলিশের হাতে নাই। পুলিশের অনেক অফিসাররা দুর্নীতিতে জড়িয়েছে।

পুলিশের বিশেষ শাখার অতিরিক্ত আইজিপি গোলাম রসুলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও ছিলেন– নিউ এইজের সম্পাদক নুরুল হুদা, এপেক্স কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাসির মঞ্জু, কর্ম কমিশনের সদস্য অধ্যাপক সায়মা চৌধুরী, নির্বাচন কমিশনের সদস্য ডা. জাহেদ করিম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, সাহিত্যিক, খেলোয়াড়সহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার ব্যক্তিরা।

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

সাবেক বিচারপতি খায়রুল হককে গ্রেপ্তারের দাবিতে বিক্ষোভ 

‘দেশের বিচার বিভাগ ও গণতন্ত্র ধ্বংসের মূল কারিগর’ সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হককে অবিলম্বে গ্রেপ্তার ও বিচারে সোপর্দকরণ এবং উচ্চ আদালত এবং নিম্ন আদালতে ফ্যাসিবাদের দোসর ও চিহ্নিত দুর্নীতিবাজ ও দলবাজ বিচারকদের অপসারণের দাবিতে নারায়ণগঞ্জ জেলা জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের বিক্ষোভ মিছিল ও আইনজীবী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। 

মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) দুপুরে কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির বার ভবনের সামনে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশ শেষে আদালত পাড়ায় বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়।

বিক্ষোভ মিছিল থেকে সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হককে অবিলম্বে গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে শ্লোগান দেয় আইনজীবী ফোরামের নেতারা। 

এসময়ে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে বক্তারা বলেন, সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক ছিলেন ফ্যাসিস শেখ হাসিনার অন্যতম দোসর। দেশের বিচার বিভাগ ও গণতন্ত্র ধ্বংসের মূল কারিগর খায়রুল হক। তার কারনেই দেশের আইনের শাসন কলঙ্কিত হয়েছিল।

অবিলম্বে সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হককে  গ্রেপ্তার ও বিচারে সোপর্দকরণ করার দাবি জানাচ্ছি। পাশপাশি সমাবেশ থেকে উচ্চ আদালত এবং নিম্ন আদালতে ফ্যাসিবাদের দোসর ও চিহ্নিত দুর্নীতিবাজ ও দলবাজ বিচারকদের অপসারণের দাবিও জানান তারা। 

নারায়ণগঞ্জ জেলা জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের আহ্বায়ক এড. জাকির হোসেনের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব এড. কাজী আঃ গাফফারের সঞ্চালনায় বিক্ষোভ মিছিল ও আইনজীবী সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন, জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ও নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এড. সাখাওয়াত হোসেন খান, মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব এড. আবু আল ইউসুফ খান টিপু, জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এড. আঃ বারী ভূঁইয়া, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এড. সরকার হুমায়ূন কবির, সাধারণ সম্পাদক এড. এইচ এম আনোয়ার প্রধান, জেলা আইনজীবী ফোরামের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এড. খোরশেদ আলম মোল্লা, সাবেক সাধারণ সম্পাদক এড. আবুল কালাম আজাদ জাকির, জেলা আইনজীবী ফোরামের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক এড. বেনজির আহমেদ, যুগ্ম আহ্বায়ক এড. জহিরুল হক, এড. মেহেবুব আরেফিন শিমু, এড. কায়সার আলম চৌধুরী টুটুল, এড. আসমা হেলেন বিথি, এড. শামসুন্নুর বাঁধন, সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি আজিজুল হক হান্টু, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক এড. একেএম ওমর ফারুক নয়ন, সিনিয়র আইনজীবী এড. রফিক আহমেদ, এড. বেনজীর আহমেদ, এড. বোরহান উদ্দিন সরকার, এড. হাফিজুর রহমান মোল্লা, এড.সৈয়দ মশিউর রহমান শাহিন, এড. রকিবুল হাসান শিমুল, এড. মানিক মিয়া, এড. আলম চৌধুরী, এড. আজিজুর রহমান মোল্লা, এড. ফয়সাল আরেফিন টুটুল, এড. জাহিদ হাসান মুক্তা, এড.একেএম মাহমুদুল হক আলমগীর, এড. নজরুল ইসলাম মাসুম, এড. সিদ্দিকুর রহমান, এড. সুমন মিয়া, এড. হৃদয়, এড.এসএম সায়েম রানা, এড. মাঈনউদ্দিন রেজা, এড. সালাউদ্দীন ভুঁইয়া সবুজ, এড. ফজলুর রহমান ফাহিম, এড. সুমন মিয়া, এড. মাসুদা আক্তার ,এড. লিজা, এড. আসমা হেলেন বিথী, এড. রাসেল মিয়া, এড. আমিনুল ইসলাম, এড. শাহআলম শামীম, এড. জামান মিয়া, এড. কাজী সুমন, এড.আবুল কালাম আজাদ, এড. আদনান মোল্লা, এড.আবু রায়হান, এড. আশরাফুল বারী ভুঁইয়া, এড. খোরশেদ আলমসহ প্রমূখ।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সংস্কার ও নির্বাচন উভয়টি প্রয়োজন: তারেক রহমান
  • বিএনপির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র আর গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র একই: গয়েশ্বর
  • গণতন্ত্রে যাওয়ার ওপরে নির্ভর করছে বাংলাদেশের অস্তিত্ব: মির্জা ফখরুল
  • ‘মিয়ানমারকে মানবিক করিডোর দেওয়া স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বকে সংকট’
  • মিয়ানমারকে মানবিক করিডর দেওয়ার অধিকার অন্তর্বর্তী সরকারের নেই: সিপিবি
  • সাবেক বিচারপতি খায়রুল হককে গ্রেপ্তারের দাবিতে বিক্ষোভ