কেমন সংবিধান চান, জানালেন এনসিপি নেতা আখতার হোসেন
Published: 15th, September 2025 GMT
‘আমরা চাই এমন সংবিধান, যে সংবিধান মানুষের গণতন্ত্রকে সুরক্ষা দিতে পারে। এমন সংবিধান, যেটা বাংলাদেশের মানুষের অভিপ্রায়কে ধারণ করতে পারে। বাংলাদেশের মানুষের ভোটের অধিকারকে সুরক্ষিত করতে পারে। বাংলাদেশের বিচার বিভাগকে স্বাধীন রাখতে পারে। যাঁরা রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসবেন, তাঁদের জবাবদিহির আওতায় নিয়ে আসতে পারে। ক্ষমতাকে কেন্দ্রীভূত না করে ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণকে জারি রাখতে পারে।’ সংবিধান নিয়ে আকাঙ্ক্ষা তুলে ধরে কথাগুলো বলেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যসচিব আখতার হোসেন।
আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবস উপলক্ষে আজ সোমবার সন্ধ্যায় ‘বাংলাদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় কেমন সংবিধান চাই’ শীর্ষক সেমিনারে এসব কথা বলেন আখতার হোসেন। রাজধানীর বাংলামোটরে যুবশক্তির কার্যালয়ে এ সেমিনারের আয়োজন করে এনসিপির যুব সংগঠন জাতীয় যুবশক্তি।
বাংলাদেশের রাষ্ট্র ক্ষমতায় ভারসাম্য নিশ্চিত করতে পারে, এমন সংবিধান চান উল্লেখ করে এনসিপির সদস্যসচিব আরও বলেন, ‘আমরা এমন সংবিধান চাই, যেটা বাংলাদেশের সকল শ্রেণির মানুষকে ধারণ করতে পারে। বাংলাদেশের সকল ধর্মের মানুষ, সকল সম্প্রদায়ের মানুষ, সকল জনগোষ্ঠীর মানুষের অধিকারকে ধারণ করতে পারে।’
নতুন সংবিধান না হলে এসব চাওয়া চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে উল্লেখ করে আখতার হোসেন বলেন, ‘যেকোনো সময় কোর্টে এটাকে চ্যালেঞ্জ করা হবে; কোর্ট সিদ্ধান্ত যদি বাতিল করার অথরিটি দেখে, যেহেতু এই সংবিধানের বেসিক স্ট্রাকচার ৭২–এর বেসিক স্ট্রাকচার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়ে আছে। আমরা এমন সংবিধান চাই, যে সংবিধান তার নতুন বেসিক স্ট্রাকচার নিয়ে জাতির কাছে হাজির হবে।’
জুলাই সনদকে ‘সম্পদ’ হিসেবে বর্ণনা করে সেটাকে বাস্তবায়ন করা হবে নাকি অঙ্গীকারের মধ্য ফেলে রাখা হবে, এমন প্রশ্ন তোলেন আখতার হোসেন।
সেমিনারে এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘৭২ সালে গৃহীত সংবিধানে ফ্যাসিবাদী সকল কাঠামো বিদ্যমান ছিল। কারণ তার কয়েক বছর পরেই শেখ মুজিবুর রহমান বাকশাল কায়েমের মাধ্যমে সংবিধানের যতটুকু কাঠামো ছিল, সেটুকু ধ্বংস করে দিলেন। সে সংবিধান জনগণের অভিপ্রায় ধরে রাখতে পারেনি। ৩৬ জুলাই জনরায়ের মাধ্যমে সেই সংবিধান আসলে বাতিল হয়ে গেছে। সে জন্য আমাদের একমাত্র মুক্তির পথ হচ্ছে নতুন একটি গণপরিষদ নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন একটি গণতান্ত্রিক সংবিধান নির্মাণ।’
আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবস উপলক্ষে আয়োজিত ‘বাংলাদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় কেমন সংবিধান চাই’ শীর্ষক সেমিনারে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতারা। আজ সোমবার সন্ধ্যায় রাজধানীর বাংলামোটরে যুবশক্তির কার্যালয়ে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: এমন স ব ধ ন আখত র হ স ন গণতন ত র এনস প ক ষমত
এছাড়াও পড়ুন:
জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ইস্যু সমাধান আলোচনার টেবিলেই সম্ভব: সালাহউদ্দ
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, ‘‘জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ইস্যুর সমাধান আলোচনার টেবিলেই সম্ভব।’’
তিনি মনে করেন, আলোচনার মাধ্যমেই সমাধান এলে যেকোনো অসাংবিধানিক প্রক্রিয়া ঠেকানো যাবে।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘‘আগামী নির্বাচনকে যদি অনিশ্চিত করা হয় বা বিলম্বিত করা হয়, তাহলে তার সুযোগ নেবে ফ্যাসিবাদী বা অসাংবিধানিক শক্তি। এর পরিণতি জাতি অতীতে বহুবার ভোগ করেছে। আমরা আবার সে পরিস্থিতি চাই না।’’
অন্তর্বর্তী সরকারের বৈধতা নিয়ে পৃথক এক প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের মতামতের ভিত্তিতেই সাংবিধানিকভাবে এই সরকার গঠিত হয়েছে। রাষ্ট্রপতির রেফারেন্সে দেওয়া সেই মতামত এখনো বহাল আছে। এর বিপরীতে সুপ্রিম কোর্ট কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি। তাই এ বিষয়ে প্রশ্ন তোলা আসলে রাজনৈতিক বক্তব্য, এর কোনো আইনি ভিত্তি নেই।’’
সালাহউদ্দিন আহমদ আরো বলেন, ‘‘যেকোনো সাংবিধানিক আদেশ জারি হলে তা আগামীকাল বা পরশু চ্যালেঞ্জ হতে পারে। আমরা এমন খারাপ নজির জাতির সামনে আনতে চাই না। তাই সমাধানের বিকল্প প্রস্তাব উত্থাপন করেছি। সবাইকে বিবেচনায় নিতে আহ্বান জানাচ্ছি।’’
পিআর পদ্ধতি প্রসঙ্গে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘‘রাজনৈতিক দলের আন্দোলনের অধিকার আছে। তবে পিআর পদ্ধতি চাপিয়ে দেওয়ার বিষয় নয়, শেষ পর্যন্ত জনগণই সিদ্ধান্ত নেবে।’’
তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘‘পিআর পদ্ধতিতে ঝুলন্ত পার্লামেন্টের ঝুঁকি থেকে যায়। তাতে রাষ্ট্র ও জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণ সম্ভব হয় না। আমরা অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে যেতে পারি না।’’
সালাহউদ্দিন আহমদ আরো বলেন, ‘‘জনগণই হলো সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ। এই দেশের জনগণ মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে এবং বারবার গণতন্ত্রকে সংকট থেকে উদ্ধার করেছে।’’
আগামী সংসদে কিছু মৌলিক বিষয়ে সংশোধনের পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করেন তিনি বলেন, ‘‘আমরা কিছু বিষয়ে ইতোমধ্যে একমত হয়েছি। তবে, ঐকমত্য কমিশনের সনদের ভেতরে যেসব পরিবর্তন হবে, সেগুলোতে অবশ্যই গণভোট নিতে হবে।’’
ঢাকা/আসাদ/রাজীব