ক্রেতাদের ভালো সাড়ায় শেষ হলো রেফ্রিজারেটর মেলা
Published: 24th, May 2025 GMT
প্রথম আলো ডটকমের আয়োজনে তিন দিনব্যাপী অফলাইন রেফ্রিজারেটর মেলা আজ শনিবার শেষ হয়েছে। রাজধানীর তেজগাঁও-গুলশান লিংক রোডের আলোকি কনভেনশন সেন্টারে ২২ মে তিন দিনের এই অফলাইন মেলা অনুষ্ঠিত হয়। তবে অনলাইনে এই মেলা চলবে ২৭ মে পর্যন্ত।
মেলার ব্যাংকিং অংশীদার ইস্টার্ন ব্যাংক এবং পাওয়ার্ড বাই এমইপি গ্রুপ। পৃষ্ঠপোষক হিসেবে ছিল স্যামসাং ইলেকট্রনিকস বাংলাদেশ, ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ, ইলেক্ট্রোমার্ট (কনকা), সিঙ্গার-বেকো, র্যাংগ্স ইলেকট্রনিকস (সনি-র্যাংগ্স), ট্রান্সকম ডিজিটাল, স্মার্ট ইলেকট্রনিকস (সনি-স্মার্ট) এবং মিনিস্টার হাইটেক পার্ক ইলেকট্রনিকস।
অফলাইনে অনুষ্ঠিত এই মেলা প্রতিদিন বেলা ২টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত ছিল। মেলা উপলক্ষে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের রেফ্রিজারেটরে ছিল বিশেষ ছাড়, সহজ কিস্তি সুবিধা, ব্যাংক অফারসহ নানা উপহার। মেলায় অনেকে এসেছেন সপরিবার। আবার তরুণ প্রজন্মের উপস্থিতিও ছিল চোখে পড়ার মতো।
মেলা চলাকালে প্রতিদিন সন্ধ্যা ছয়টায় দর্শনার্থীদের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত হয় ‘ইনস্ট্যান্ট র্যাফল ড্র’। বিজয়ীরা পেয়েছেন বিশেষ পুরস্কার। অনলাইন মেলা শেষে আয়োজন করা হবে মেগা র্যাফল ড্র। বিজয়ীরা পুরস্কার হিসেবে পাবেন ফ্রিজ, ঢাকা-কক্সবাজার-ঢাকা বিমান টিকিট, স্মার্টফোনসহ আকর্ষণীয় পুরস্কার। আজ মহাখালী থেকে ফ্রিজ কিনতে মেলায় এসেছিলেন মো.
ক্রেতাদের চাহিদা, বাজেট ও প্রযুক্তিগত সুবিধাগুলো বিবেচনায় রেখে প্রতিবারের মতো এবারও আয়োজন করা হয়েছে এই রেফ্রিজারেটর মেলার। বিশেষ করে ঈদুল আজহা সামনে রেখে যেসব পরিবার নতুন রেফ্রিজারেটর কেনার কথা ভাবছে, তাদের জন্য এই মেলা ছিল ভালো সুযোগ।
মেলায় ক্রেতাদের সাড়া বেশ ভালো ছিল বলে জানান স্যামসাংয়ের প্রশিক্ষণ বিভাগের সহকারী ম্যানেজার দেওয়ান মোহাম্মদ ফয়সাল। তিনি বলেন, ‘কোরবানির ঈদে ডিপ ফ্রিজের চাহিদা বেশি থাকে। বিশেষ করে আমাদের নো ফ্রস্ট ফ্রিজটির প্রতি সবাই আগ্রহ দেখাচ্ছে। আশা করি, শুধু ঈদ নয়; অন্য উৎসব উপলক্ষেও প্রথম আলো এমন আয়োজন করবে।’
সিঙ্গারের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ বি এম আকিজুর রহমান বলেন, ‘আমরা আশানুরূপ বিক্রি করতে পেরেছি। মেলার সবচেয়ে ভালো দিক হলো, ঢাকার বিভিন্ন এলাকার মানুষ এসে আমাদের রেফ্রিজারেটরের সুযোগ–সুবিধাগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারছে। অনেকেই নগদ ও কিস্তিতে পণ্য কিনেছেন।’
ওয়ালটনের অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রিন্সিপাল অফিসার জুয়েল গাজী বলেন, ‘ক্রেতারা আমাদের নতুন মডেলগুলো বেশি পছন্দ করছেন। নতুন ফিচার জানার পরে তাঁদের আগ্রহ আরও বাড়ছে। প্রথম দিন একটু কম হলেও তিন দিনের মোট বিক্রিতে আমরা খুশি।’
ঈদের মতো একটি উৎসব সামনে রেখে এমন উদ্যোগ নিঃসন্দেহে ক্রেতা ও ব্র্যান্ড উভয়ের জন্যই ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে মনে করেন মেলায় ঘুরতে আসা দর্শনার্থীরা। অনলাইনে ২৭ মে পর্যন্ত মেলার বিস্তারিত জানা যাবে www.refrigeratormela.pro ওয়েবসাইটে।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
কুষ্টিয়ায় এবার ২৫০টি মন্দিরে দুর্গাপূজা, বেড়েছে ২২টি মন্ডপ
হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজাকে সামনে রেখে কুষ্টিয়ার মন্ডপগুলোতে চলছে নানা প্রস্ততি। তাই ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রতিমা শিল্পী ও আয়োজকেরা। গত বছরের তুলনায় এ বছর জেলায় বেড়েছে ২২টি পূজা মন্ডপ। সব ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছে প্রশাসন। জেলায় ২৫০টি মন্দিরে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে।
বিভিন্ন মন্দির ঘুরে দেখা গেছে, কোথাও চলছে প্রতিমা তৈরির কাজ। আবার কোথাও শুরু হয়েছে রঙের কাজ। আপন মনে প্রতিমাগুলো ফুটিয়ে তুলছেন শিল্পীরা। এখন শেষ সময়ের পূজার প্রস্ততি নিচ্ছেন আয়োজকেরা। দুর্গাপূজা উপলক্ষে সনাতন ধর্মালম্বীদের মাঝে বইছে উৎসবের আমেজ। প্রতিমা শিল্পীরা ৫টি থেকে ১০টি পর্যন্ত প্রতিমা তৈরি করেছেন।
প্রতিমা শিল্পী কুমারেশ দাস ও মৃত্যুঞ্জয় কুমার পাল জানান, শেষ সময়ে প্রতিমা শিল্পীদের বেশ বেগ পেতে হচ্ছে। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবারে চাহিদাও বেশি।
এদিকে সকলের সহযোগিতায় অনাড়ম্বরভাবে দুর্গোৎসব পালন করতে চান আয়োজকরা।
হরিবাসর সার্বজনীন পূজা মন্দিরের উপদেষ্টা বিপ্রজিৎ বিশ্বাস বলেন, “আশা করছি প্রতিবছরের মতো এবছরও উৎসব মুখর পরিবেশে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। প্রশাসনের সহযোগিতা ও আশ্বাসে আমরা আমাদের পূজার কার্যক্রম এগিয়ে নিচ্ছি।”
মিলপাড়া সাবর্জনীন পূজা মন্দিরের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক বাপ্পী বাগচী বলেন, “প্রত্যেক ধর্মকে সন্মান জানানো প্রত্যেকটি মানুষের দায়িত্ব ও কর্তব্য। আমাদের উৎসবে জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে এলাকার সকলেই আমাদের পাশে থাকেন। আশাকরি এবারও তার ব্যত্যয় হবে না।”
কুষ্টিয়া মহাশ্মশান মন্দিরের পুরোহিত পলাশ চক্রবর্ত্তী বলেন, “আগামী ২১ সেপ্টেম্বর মহালয়ার মধ্য দিয়ে দেবী পক্ষের সূচনা হবে। এরপর ২৮ সেপ্টেম্বর মহাষষ্ঠী এবং ২ অক্টোবর প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শারদীয়া দুর্গোৎসবের সমাপ্তি ঘটবে। এবার পৃথিবীতে দশভূজার আগমন হবে হাতিতে চড়ে আর কৈলাশে ফিরবেন দোলায়।”
জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সূত্রে জানা গেছে, কুষ্টিয়ার ৬ উপজেলায় ২৫০ মন্দিরে শারদীয়া দুর্গোৎসব অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ৮১টি, খোকসা উপজেলায় ৫৯টি, কুমারখালী উপজেলায় ৫৯টি, মিরপুর উপজেলায় ২৮টি, ভেড়ামারা উপজেলায় ১১টি ও দৌলতপুর উপজেলায় ১২টি মন্ডবে শারদীয় দুর্গোৎসব অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া এ বছর গত বছরের তুলনায় ২২টি মন্ডপে পূজা বেড়েছে।
কুষ্টিয়া জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জয়দেব বিশ্বাস বলেন, “গত বছরের তুলনায় এ বছর ২২টি পূজা বেশি হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা নিয়ে প্রশাসনের সাথে পূজা উদযাপন পরিষদের নেতৃবৃন্দের বৈঠক হয়েছে। এছাড়া ১৯টি ঝুঁকিপূর্ণ মন্ডপের তালিকা প্রশাসনকে দেওয়া হয়েছে।”
কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার (এসপি) মো. মিজানুর রহমান বলেন, “প্রতিটা পূজা মন্দিরে কঠোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে। সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করতে পূজা মন্দিরে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপনসহ পুলিশ ও আনসার মোতায়েন করা হবে।”
কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক (ডিসি) আবু হাসনাত মোহাম্মদ আরেফীন জানান, যার যার ধর্মীয় উৎসব স্বাধীনভাবে ও উৎসব মুখর পরিবেশে পালন করা তাদের অধিকার। কোন প্রোপাগান্ডা ও গুজবে কান দেওয়া যাবে না। বর্তমান সরকারের মবের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছে। মব সৃষ্টি করলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ঢাকা/কাঞ্চন/এস