যেভাবে মিয়ানমার সীমান্ত দিয়ে আসা চোরাই পশু হয়ে যাচ্ছে দেশি
Published: 27th, May 2025 GMT
কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির কয়েকটি সীমান্ত পয়েন্ট দিয়ে মিয়ানমার থেকে আসছে চোরাই পশু। বিজিবিকে ফাঁকি দিয়ে রাতের আঁধারে নিয়ে আসা এসব গরু-মহিষ স্থানীয় হাটবাজার থেকে দেশি পশু হিসেবে পাচার হয়ে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন হাটে। এতে ক্ষতির শিকার হচ্ছেন স্থানীয় খামারিরা।
মিয়ানমার থেকে পশু আমদানির বৈধ করিডরের অবস্থান টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপে। ৩ বছর ১১ মাস ধরে করিডর দিয়ে পশু আমদানি বন্ধ আছে। খামারিদের অভিযোগ, বৈধ করিডর বন্ধ থাকলেও বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্ত দিয়ে পশু চোরাচালান হচ্ছে। জেলার সীমান্তবর্তী বিভিন্ন পশুর হাটে গিয়ে এই অভিযোগের সত্যতা মিলেছে।
চোরাই পশুর কারণে একদিকে সরকার যেমন রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে, অন্যদিকে স্থানীয় খামারিদের পশু বিক্রি হচ্ছে না। কক্সবাজার খামার মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম বলেন, মিয়ানমারের চোরাই গরু-মহিষ সস্তায় বিক্রি হওয়ায় খামারের পালিত কোরবানির পশু লোকসানে বিক্রি করতে হচ্ছে। মিয়ানমারের চোরাই পশুর গায়ে বিশেষ চিহ্নের সিল মারা থাকে। স্থানীয় হাটবাজারে সিল মারা পশু বিক্রি হলেও কেউ ধরছে না।
যেভাবে চোরাই পশু দেশি হয়
চোরাই গরু-মহিষ রামু ও নাইক্ষ্যংছড়ির কয়েকটি বাজারে আনার পর স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের সনদপত্র নিয়ে দেশি পশু হিসেবে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে সরবরাহ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন খামারিরা। বিজিবি ও পুলিশের অভিযানে কিছু পশু ধরা পড়লেও বেশির ভাগ পাচার হয়ে যাচ্ছে। চোরাই পশুর বেশির ভাগ রোগাক্রান্ত। সীমান্তে চোরাই পশু পরীক্ষার কোনো ব্যবস্থা নেই। দেশীয় হাটবাজারে স্থানীয় গরু-মহিষে সঙ্গে চোরাই পশু বেচাবিক্রি হওয়ায় রোগ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কায় খামারিরা।
পশু ব্যবসায়ী ও খামারিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নাইক্ষ্যংছড়ির ১৭ কিলোমিটার সীমান্তের কম্বনিয়া, তুমব্রু, বাইশফাঁড়ি, চাকমাপাড়া, জলপাইতলী, হাতিরছড়া, ফুলতলী, ভাল্লুকখাইয়া, দোছড়িসহ ১২টি পয়েন্ট দিয়ে পশু আনা হচ্ছে। সম্প্রতি বিজিবি তৎপর হলে সিন্ডিকেট সদস্যরা পাশের আলীকদম ও লামা সীমান্ত দিয়ে পশু আনা শুরু করেছে।
মিয়ানমার সীমান্তে অবস্থানকারী সে দেশের সশস্ত্র গোষ্ঠী, সীমান্তের এপারে সন্ত্রাসী দল ও সরকারি বিভিন্ন সংস্থাকে চাঁদা দিয়ে একটি গরু মিয়ানমার সীমান্ত থেকে রামু ও নাইক্ষ্যংছড়ির বাজার পর্যন্ত পৌঁছে দেয় পাচারকারীরা। এভাবে কয়েক দফায় একটি গরুর জন্য ১৭ হাজার টাকা পর্যন্ত খরচ হয় বলে এ কাজে নিয়োজিত একজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে জানান।
মিয়ানমার থেকে চোরাইপথে আনা পশুর গায়ে থাকে এ রকম বিশেষ সিল। কক্সবাজারের রামুর একটি হাট থেকে সম্প্রতি তোলা.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
অবৈধভাবে বিএনপিকে ক্ষমতায় আসতে দেওয়া হবে না: ফয়জুল করীম
হত্যা, চাঁদাবাজি, লুটতরাজ করে অবৈধভাবে বিএনপিকে ক্ষমতায় আসতে দেওয়া হবে না বলে মন্তব্য করেছেন ইসলামী আন্দোলনের জ্যেষ্ঠ নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম। শনিবার বিকেলে বরিশাল নগরীতে বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এ মন্তব্য করেন। ইসলামী যুব আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে নগরের অশ্বিনী কুমার টাউন হলে এ সমাবেশ হয়। সমাবেশ শুরুর আগে ঢাকার সোহাগ হত্যার প্রতিবাদ জানিয়ে বিক্ষোভ মিছিল নগরী প্রদক্ষিণ করে।
মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম এ সময় বলেন, বিএনপি ও আওয়ামী লীগের চরিত্র একই। দল দুটির নেতাকর্মীরা খুনি, ধর্ষক। হাতে তাদের রক্তমাখা থাকে। লোক দেখানো বহিষ্কার নয়, রাজধানীতে পাথর ছুড়ে প্রকাশ্যে যুবক হত্যার দায় দায়িত্ব বিএনপিকে নিতে হবে।
তিনি আরও বলেন, যারা রাজনীতিকে অর্থ উপার্জনের হাতিয়ার বানাচ্ছে তারাই অতীতে দেশকে দুর্নীতিতে ৫ বার চ্যাম্পিয়ন বানিয়েছে। ঢাকায় সোহাগ হত্যার ঘটনাটি পুলিশ ভিন্নখাতে নিতে ষড়যন্ত্র চালাচ্ছে।
সমাবেশে প্রধান বক্তা ছিলেন- ইসলামী যুব আন্দোলন বাংলাদেশের মুহতারাম কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি জেনারেল মুফতি মানসুর আহমাদ সাকী।
মহানগর সভাপতি হাফেজ মাওলানা মুহাম্মাদ রেজাউল করীমের সভাপতিত্বে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- ইসলামী আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক উপাধ্যক্ষ মাওলানা মুহাম্মাদ সিরাজুল ইসলাম, যুব আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা মুহাম্মাদ আলামিন, মাওলানা মুহাম্মাদ রফিকুল ইসলাম, ইসলামী আন্দোলনের বরিশাল মহানগরের সভাপতি অধ্যাপক মুহাম্মাদ লোকমান হাকিম, সহ-সভাপতি শেখ শামসুল আলম মিলন, সেক্রেটারি মাওলানা আবুল খায়ের আশ্রাফী, জেলা সেক্রেটারি মাওলানা মুহাম্মাদ কাওছারুল ইসলাম প্রমুখ।