পিএসজির এত দিনের লালিত স্বপ্ন আজ মিউনিখে ধরা দেবে? নাকি ইন্টার মিলানের বুড়ো হাড়ের ভেলকিতেই মাত হবে! অ্যালিয়াঞ্জ অ্যারেনাতে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে মুখোমুখি হচ্ছে দুই দল। জিততে পারলে এই প্রথম চ্যাম্পিয়ন্স লিগের স্বাদ পাবে ফরাসি ক্লাবটি। আর ইন্টার মিলান নামছে চতুর্থ শিরোপার আশায়। এই ফাইনাল দিয়ে পর্দা নামতে যাচ্ছে ইউরোপিয়ান ক্লাব ফুটবলের মৌসুমের। 

চ্যাম্পিয়ন্স লিগ শিরোপার আশায় কাতারভিত্তিক পিএসজির মালিকরা গত কয়েক বছরে বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করে মেসি-নেইমার-এমবাপ্পেকে দলে টেনেছিলেন। তবে তারার হাট বসিয়েও সেই কাঙ্ক্ষিত শিরোপার দেখা পাননি। ২০২০ সালে করোনাভাইরাসের কারণে সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটে রূপ নেওয়া ওই আসরের ফাইনাল খেলাই এই টুর্নামেন্টে পিএসজির সর্বোচ্চ সাফল্য। 

তবে লুইস এনরিকের নেতৃত্বে পিএসজির যেন নবজন্ম হয়েছে। দেম্বেলে, ভিতিনহা, খাভারতাস্কেলিয়ার মতো তরুণদের হাত ধরে দুরন্ত এক দল হয়ে উঠেছে তারা। লিভারপুল, আর্সেনালের মতো ফেভারিটদের হারিয়ে ফাইনালে এসেছে। সেই তুলনায় ইতালির ক্লাবটির জৌলুস একটু কম। যদিও দুই হটফেভারিট বার্সেলোনা ও বায়ার্ন মিউনিখকে হারিয়ে এসেছে তারা, কিন্তু দলটির অধিকাংশ খেলোয়াড় বুড়ো। 

টেকটিশিয়ান হিসেবেও কোচ সিমোনে ইনজাঘি কিছুটা পিছিয়ে। অবশ্য অভিজ্ঞ স্কোয়াডের একটা সুফলও আছে। তারা ফরমেশন অনুযায়ী খেলায় বেশ পাকা, অভিজ্ঞতার কারণে ফুটবল মস্তিষ্কও তাদের টনটনে। তাই আজকের ফাইনালকে তারুণ্য বনাম অভিজ্ঞতার লড়াইয়ের ট্যাগ দেওয়াই যায়। 

ফাইনালে ইন্টারের সম্ভাব্য একাদশের গড় বয়স ৩০ বছরের উপরে। সেখানে পিএসজির গড় বয়স ২৪-এর কাছাকাছি। ইন্টারের আটজন খেলোয়াড়ের চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনাল খেলার অভিজ্ঞতা আছে। আর পিএসজির কেবল মার্কুইনহোসের ফাইনাল খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে। আজকের ফাইনালে এই অভিজ্ঞতা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে। 

তবে পিএসজির তরুণরা যদি ‘শিরোপা জিততেই হবে’ এই চাপ না নিয়ে পুরো মৌসুমের স্বাভাবিক খেলাটা খেলেন, তাহলে তাদেরকে আটকানো কঠিন হয়ে যাবে। আর্সেনালের বিপক্ষে সেমির দ্বিতীয় লেগে ২৬ পাসে দেম্বেলে গোল করেছিলেন। সেই খেলাটা খেলতে পারলেই হবে। 

ইন্টারের মূল শক্তি হলো দুই স্ট্রাইকার লাওতারো মার্টিনেজ ও মার্কাস থুরামের দুর্দান্ত বোঝাপড়া। তাদের রক্ষণও বেশ আঁটোসাঁটো। বাস্তোনি, আচেরবিদের রক্ষণ ভাঙা বেশ কষ্টের। পিএসজির তরুণদের জন্যই এটাই মূল চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে। সর্বশেষ চার ম্যাচে দুই দলের দুটি করে জয়। এর মধ্যে ইন্টারের একটি জয় টাইব্রেকারে। আজও যদি খেলা টাইব্রেকারে গড়ায়, তাহলে দুই দলের দুই তারকা গোলরক্ষকের পরীক্ষাও হয়ে যাবে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: প এসজ ইন ট র ম ল ন ইন ট র র র ফ ইন ল প এসজ র

এছাড়াও পড়ুন:

উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে মারাত্মক সংকটে তিস্তা নদী

আন্তর্জাতিক নিয়ম না মেনে উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের ফলে তিস্তা নদী মারাত্মক সংকটে পড়েছে। আর প্রস্তাবিত তিস্তা প্রকল্প নিয়েও কেউ খোলামেলা কথা বলতে চাইছেন না।

রোববার রাজধানীর প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশে (পিআইবি) ‘সংকটে তিস্তা নদী: সমাধানের পথ কী?’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় বক্তারা এ কথা বলেন। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ও বাংলাদেশ পরিবেশ নেটওয়ার্ক (বেন) যৌথভাবে এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করে।

মতবিনিময় সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাপার সহসভাপতি অধ্যাপক মো. খালেকুজ্জমান। প্রবন্ধে তিনি উল্লেখ করেন, ভারতের সঙ্গে কোনো পানিবণ্টন চুক্তি না থাকায় এবং আন্তর্জাতিক নিয়ম না মেনে উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের ফলে তিস্তা নদী মারাত্মক সংকটে পড়েছে। শুষ্ক মৌসুমে পানির অভাবে আর বর্ষাকালে নিয়ন্ত্রণহীন পানিনির্গমনের ফলে বাংলাদেশ অংশে বন্যা ও ভাঙনের ঝুঁকি বাড়ছে।

মতবিনিময় সভায় বিশেষজ্ঞরা তিস্তা সমস্যার সমাধানে ভারতের সঙ্গে গঠনমূলক সম্পৃক্ততা, আন্তর্জাতিক আইনের প্রয়োগ এবং প্রকল্পে স্থানীয় জনগণের মতামত গ্রহণের ওপর জোর দেন। তাঁরা তিস্তা মহাপরিকল্পনা সম্পর্কে স্বচ্ছতা ও পুনর্মূল্যায়নের দাবি জানান।

অর্থনীতিবিদ আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘সরকারের কাছে তিস্তা মহাপরিকল্পনার কোনো তথ্য নেই। বিগত বছরগুলোতে উন্নয়নের নামে দেশের নদীগুলোকে সংকুচিত করা হয়েছে। আমরা আর সংকুচিত করার উন্নয়ন চাই না। নদীকে নদীর মতোই রাখতে হবে।’

আনু মুহাম্মদ আরও বলেন, দেশের উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণের ক্ষেত্রে ব্যক্তিস্বার্থকে উপেক্ষা করে দেশের স্বার্থকে বড় করে দেখতে হবে। যেসব প্রকল্প দীর্ঘমেয়াদি, সেসব প্রকল্প গ্রহণের আগে অবশ্যই জনগণের মতামত নিতে হবে।

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাবেক সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন বলেন, ‘আমাদের নিজস্ব সামর্থ্য অনুযায়ী প্রকল্প নেওয়া উচিত। নদীকে রক্ষা করতে হবে কিন্তু তাকে খালে পরিণত করে নয়। এই প্রকল্প পুনর্মূল্যায়ন করা প্রয়োজন।

বাপার প্রতিষ্ঠাতা নজরুল ইসলাম বলেন, ‘বাপা কখনো উন্নয়নবিরোধী নয়। আমরাও চাই দেশের উন্নয়ন হোক। কিন্তু সেই উন্নয়ন হতে হবে দেশের প্রাণপ্রকৃতি, পরিবেশ ও নদীকে ঠিক রেখে। তিস্তা প্রকল্প নিয়ে কেউ খোলামেলা কথা বলতে চাইছেন না। সরকার ও বিরোধী দল উভয়ই চীন-বাংলাদেশ সম্পর্ক নিয়ে সংবেদনশীল হওয়ায় এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি উপেক্ষিত থেকে যাচ্ছে।’

বাপার সভাপতি অধ্যাপক নুর মোহাম্মদ তালুকদারের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবিরের সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, পরিবেশবিদ, গবেষক ও তিস্তাপাড়ের বাসিন্দারা অংশ নেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ