Samakal:
2025-11-02@21:31:49 GMT

কেবল কমিটিই করিয়া যাইব!

Published: 2nd, June 2025 GMT

কেবল কমিটিই করিয়া যাইব!

কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে সিলেটসহ উত্তর-পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের জনজীবন যখন চরম দুর্ভোগে পতিত, তখন সিলেট হইতে আসিল গভীরতর বেদনাদায়ক দুঃসংবাদ। সমকালসহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমসূত্রে জানা যাইতেছে, শনিবার গভীর রাত্রিতে গোলাপগঞ্জ উপজেলার বখতিয়ারঘাট এলাকায় টিলা ধসিয়া এক পরিবারের চারজন ঘুমন্ত অবস্থাতেই প্রাণ হারাইয়াছেন। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান জানাইয়াছেন, কয়েকদিন ধরিয়া টিলাধসের আশঙ্কায় উক্ত এলাকায় মাইকিংযোগে সংশ্লিষ্ট সকলকে সতর্ক করা হইতেছিল। স্পষ্টত, সেই সতর্কবার্তা কাহারও কর্ণকুহরে প্রবেশ করে নাই। আমরা মনে করি, স্থানীয় প্রশাসনও দায়িত্ব উপেক্ষা করিতে পারে না। ভঙ্গুর পাহাড়ের পাদদেশ যে বসবাসের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ– তাহা কাহারও অজানা নহে। কিন্তু ইহাও সত্য, এহেন ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশে বসবাসকারীরা প্রায় ব্যতিক্রমহীনভাবে দরিদ্র ও অসহায়। প্রাণ হারানো গৃহকর্তারও বিকল্প বাসস্থান ছিল না। নিতান্ত নিয়তির উপর ভরসা করিয়াই যে তিনি সপরিবার প্রশাসনের সতর্কবার্তা সত্ত্বেও পাহাড়ের পাদদেশে থাকিয়া গিয়াছিলেন, তাহা বুঝিতে বিশেষজ্ঞ হইতে হয় না। আমরা মনে করি, এইখানেই স্থানীয় প্রশাসনের ব্যর্থতা নিহিত। একদিকে তাহারা বিপন্ন মানুষদের জন্য নিরাপদ আবাসস্থল গড়িয়া তুলিতে পারে নাই, অন্যদিকে অন্তত দুর্যোগকালেও এই সকল মানুষকে কোনো আশ্রয়কেন্দ্রে স্থানান্তরের তাগিদ অনুভব করে নাই। 

দেশে পাহাড়ধসের ঘটনাও নূতন নহে; বিশেষত টানা বৃষ্টিপাতে কয়েক দশক ধরিয়াই বিভিন্ন পাহাড়ি অঞ্চলে কোনো না কোনো ধসের ঘটনা ঘটিয়াছে। সেই সকল ঘটনায় প্রাণহানিও কম ঘটে নাই। ২০২৪ সালের ১০ জুন সিলেটেই মেজরটিলা চামেলীবাগ এলাকায় টিলা ধসিয়া শিশুসহ একই পরিবারের তিনজন প্রাণ হারাইয়াছিলেন। ২০২২ সালের ৬ জুন জেলার জৈন্তাপুর উপজেলার পূর্ব সাতজনি গ্রামে টিলা ধসিয়া একই পরিবারের চারজনের প্রাণহানি ঘটিয়াছিল। আগের দিন সংঘটিত কক্সবাজার সদর উপজেলা এবং উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পৃথক পাহাড়ধসের ঘটনায় ছয়জনের মৃত্যুসংবাদ দিতে গিয়া গত বৎসরের ১৩ সেপ্টেম্বর স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানাইয়াছিল, ঐ দিন অবধি উক্ত বৎসরের বর্ষা মৌসুমে পাহাড়ধসে এই এলাকায় রোহিঙ্গাসহ মোট ২৭ জনের প্রাণহানি ঘটিয়াছিল। এই সকল প্রাণঘাতী পাহাড়ধসের পরও অসহায় মানুষের সুরক্ষায় অগ্রগতি হইয়াছে, বলা যাইবে না।

আমরা দেখিতেছি, ২০১৭ সালের জুনের মধ্যভাগ অবধি চট্টগ্রাম, রাঙামাটি ও বান্দরবানে পাহাড়ধসে ১২৬ জনের মৃত্যুর পরিপ্রেক্ষিতে ঐ বৎসরের ১২ জুলাই পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয় একটি কমিটি গঠন করিয়াছিল। সেই কমিটি পাহাড়ধসের ১৩টি কারণ চিহ্নিত করিয়াছিল, যেইগুলির আটটি ছিল মানবসৃষ্ট এবং পাঁচটি প্রাকৃতিক। মানবসৃষ্ট কারণগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল নির্বিচারে বন ও গাছপালা ধ্বংস, অপরিকল্পিতভাবে পাহাড় কাটিয়া বসতি স্থাপন, সড়ক নির্মাণ, অন্যান্য উন্নয়নমূলক স্থাপনা নির্মাণে ইমারত বিধিমালা মান্য না করা ইত্যাদি।
বলা বাহুল্য, উক্ত কমিটির প্রতিবেদন প্রধানত দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলবিষয়ক হইলেও উহা সিলেট অঞ্চলের জন্যও প্রযোজ্য ছিল। কিন্তু ঐ প্রতিবেদনে সমাধান হিসাবে যেই সকল সুপারিশ অন্তর্ভুক্ত হইয়াছিল, সেইগুলির কোনোটাই অদ্যাবধি আলোর মুখ দেখে নাই। আমাদের প্রত্যাশা, অন্তর্বর্তী সরকার বিষয়টা লইয়া কার্যকর কিছু করিবে। শুধু কমিটি করিয়া প্রাণ রক্ষা হইবে না। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: প হ ড়ধস র পর ব র এল ক য় ই সকল

এছাড়াও পড়ুন:

শেফালি আর দীপ্তিতে নতুন মুম্বাইয়ে নতুন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ভারত

নাবি মুম্বাই। নয়া মুম্বাই। নতুন সেই মুম্বাইয়ে কাল নতুন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন পেল মেয়েদের ওয়ানডে বিশ্বকাপ। ফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ভারত।

দীপ্তি শর্মার করা ৪৬তম ওভারের তৃতীয় বলে নাদিন ডি ক্লার্কের তোলা ক্যাচটি এক্সট্রা কাভারে ভারত অধিনায়ক হারমানপ্রীত কৌরের হাতে জমা হতেই বিশ্ব চ্যাম্পিয়নের আনন্দে মাতল পুরো ভারত। দক্ষিণ আফ্রিকা ২৪৬ রানে অলআউট, ভারত ৫২ রানে জয়ী।

ভারতের জয়ের উৎসব অবশ্য শুরু হয়ে গিয়েছিল পাঁচ ওভার আগেই। লরা ভলভার্টকে ফিরিয়ে পথের কাঁটা উপড়ে ফেলেই উদ্‌যাপন শুরু করেছিল ভারতীয়রা। অসাধারণ এক সেঞ্চুরি করে দক্ষিণ আফ্রিকান অধিনায়ক চোখ রাঙাছিলেন ভারতের উৎসব ভন্ডুল করার। কিন্তু সেঞ্চুরি করার পরপরই ক্যাচ তুললেন ভলভার্ট। আর সেই ক্যাচ নিতে গিয়ে আমানজোত কৌর ভারতের প্রায় শত কোটি মানুষের হৃৎস্পন্দন প্রায় থামিয়ে দিয়েছিলেন। একবার নয়, দুবার নয়, তৃতীয়বারের চেষ্টাতেই ক্যাচ নিতে পারেন আমানজোত। এবারও বোলার সেই অফ স্পিনার দীপ্তি শর্মা।

৯৮ বলে ১০১ রান করে ভলভার্ট যখন ফিরলেন দক্ষিণ আফ্রিকার স্কোর ৪১.১ ওভারে ২২০/৭। এরপর শুধু আনুষ্ঠানিকতাই ছেড়েছে ভারত। দীপ্তি আরও ২টি উইকেট নিয়ে পেয়ে গেছেন ৫ উইকেট। আর ভারত হয়ে গেছে চ্যাম্পিয়ন। এর আগে ব্যাট হাতেও ৫৮ বলে ৫৮ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলেছেন দীপ্তি।

ব্যাট হাতে ৮৭ রান করা শেফালি বর্মা বল হাতে নিয়েছেন ২ উইকেট

সম্পর্কিত নিবন্ধ