পাবনার ভাঙ্গুড়ায় বিয়ে না পড়ানোর কারণে ওসমান গনি মোল্লা (৬২) নামে এক ইমামকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে অভিযুক্তের বাড়িতে ভাঙচুর ও আগুন দিয়েছে ক্ষিপ্ত জনতা।

মঙ্গলবার (১০ জুন) সকালে বগুড়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এর আগে সোমবার (৯ জুন) দিবাগত রাত একটার দিকে মাদরাসার কক্ষ থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান স্থানীয় বাসিন্দারা। 

নিহত ওসমান উপজেলার খানমরিচ ইউনিয়নের চন্ডিপুর গ্রামের মৃত রিয়াজ উদ্দিন মোল্লার ছেলে। তিনি কাজীপাড়া জামে মসজিদের ইমাম ছিলেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার বৃদ্ধ মরিচ কাজীপাড়া এলাকার মৃত বদরুজ্জামানের ছেলে শাহাদত হোসেনের সঙ্গে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে ময়মনসিংহ এলাকার এক মেয়ের। ঘটনার দিন রাতে চন্ডিপুর এলাকায় নিয়ে আসেন শাহাদাত হোসেন ও তার দুলাভাই ইয়াসিন আলী। তারা সিকেবি আলিম মাদরাসায় গনি মোল্লার কাছে গিয়ে শাহাদতের সঙ্গে ওই মেয়ের বিয়ে পড়ানোর জন্য দাবি করেন। কিন্তু শাহাদাতের অন্যপক্ষের সন্তান ও স্ত্রী থাকায় ইমাম গনি তাদের বিয়ে পড়াতে অস্বীকৃতি জানান।

এতে ক্ষুব্ধ হয়ে শাহাদত হোসেন ও তার দুলাভাই ইয়াসিন আলী মিলে গনি মোল্লাকে দা দিয়ে কুপিয়ে আহত করেন। পরে তার সাথে থাকা একটি ছেলে দৌঁড়ে চন্ডিপুর বাজারে চিৎকার করতে করতে বাজারের নৈশ প্রহরীকে অবগত করেন। 

খবর পেয়ে তারা আহত গণি মোল্লাকে উদ্ধার করে বগুড়া শহিদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। আহত গনি মোল্লা চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার সকালে মারা যান। 

খবর পেয়ে রাতেই ভাঙ্গুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শফিকুল ইসলামসহ পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এ সময় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য একজনকে আটক করা হয়। 

এদিকে, গনি মোল্লার মৃত্যুর খবর এলাকায় জানাজানি হলে মঙ্গলবার দুপুরে বিক্ষিপ্ত জনতা অভিযুক্ত শাহাদাত হোসেনের বাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। 

এ বিষয়ে কথা বলতে মাদরাসার অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদকে ফোন করলেও তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

ভাঙ্গুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.

শফিকুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, পূর্ব বিরোধের জেরে এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। এ ঘটনায় হত্যাকারীকে শনাক্ত করতে এক ব্যক্তিকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। আশা করছি দ্রুতই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা উদঘাটন করা সম্ভব হবে। এ ব্যাপারে মামলার প্রস্তুতি চলছে।

ঢাকা/শাহীন/এস

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

সোয়া ২ কোটি টাকার চেক নেন সাবেক এমপির কাছ থেকে

সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) শাম্মী আহমেদের বাসায় গিয়ে চাঁদা নেওয়ার ঘটনায় গ্রেপ্তার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক নেতা আবদুর রাজ্জাক বিন সোলাইমান ওরফে রিয়াদের নাখালপাড়ার ভাড়া বাসা থেকে ২ কোটি ২৫ লাখ টাকার চারটি চেক উদ্ধার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে গতকাল বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে চেক উদ্ধারের বিষয়টি জানান ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপকমিশনার (গণমাধ্যম ও জনসংযোগ) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান। তবে এই চেক কোন প্রতিষ্ঠান দিয়েছে, তা তিনি জানাননি।

পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, ওই সোয়া দুই কোটি টাকার চেক নেওয়া হয়েছে রংপুর-৬ আসনে (পীরগঞ্জ) আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ‘ট্রেড জোন’ থেকে। ট্রেড জোনের পোশাক কারখানাসহ নানা ব্যবসা রয়েছে।

ট্রেড জোনের ব্যবস্থাপক সাইফুল ইসলাম গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, সোয়া দুই কোটি নয়, মোট ৫ কোটি টাকার ১১টি চেক নিয়েছিলেন আবদুর রাজ্জাকসহ ছয়জন। তবে একটি চেকের বিপরীতেও তাঁরা টাকা উত্তোলন করতে পারেননি। কারণ, সংশ্লিষ্ট ব্যাংক হিসাবগুলোতে ট্রেড জোন কর্তৃপক্ষ টাকা রাখেনি। তিনি বলেন, টাকা উত্তোলন করতে না পেরে রাজ্জাকসহ অন্যরা ট্রেড জোনের মালিককে হুমকি দিচ্ছিলেন।

রাজ্জাকসহ অন্যরা কীভাবে চেক নিয়েছিলেন, তা প্রথম আলোকে বিস্তারিত জানিয়েছেন সাইফুল ইসলাম।

শাম্মী আহমেদের স্বামী সিদ্দিক আবু জাফরের কাছ থেকে প্রথম দফায় ১০ লাখ টাকা নেওয়ার পর দ্বিতীয়বার টাকা নিতে গিয়ে ১৭ জুলাই হাতেনাতে পুলিশের হাতে ধরা পড়েন আবদুর রাজ্জাকসহ পাঁচজন। বাকি চারজন হলেন ইব্রাহিম হোসেন ওরফে মুন্না, সাকাদাউন সিয়াম, সাদমান সাদাব ও অপ্রাপ্তবয়স্ক একজন। প্রাপ্তবয়স্ক চার আসামির এখন রিমান্ড চলছে। ঘটনাটিতে মামলা করেছেন সিদ্দিক আবু জাফর।

ইব্রাহিম হোসেন ওরফে মুন্না বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঢাকা মহানগর শাখার আহ্বায়ক ছিলেন। আবদুর রাজ্জাক ছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সম্মিলিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক। পরে তিনি গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হন। সাকাদাউন সিয়াম ও সাদমান সাদাব বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঢাকা মহানগর শাখার সদস্য। গ্রেপ্তারের পর সবাইকে বহিষ্কার করা হয়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় বাদে অন্য সব কমিটি স্থগিত করা হয়েছে।

চাঁদাবাজির মামলায় গ্রেপ্তার আব্দুর রাজ্জাক বিন সোলাইমান ওরফে রিয়াদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ