আহমেদাবাদের বিমান দুর্ঘটনা নিয়ে কয়েক দিন ধরেই মন খারাপ ছিল প্রিয়াঙ্কা চোপড়ার। এরই মাঝে এসেছে আরেক দুঃসংবাদ। পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছেন এই বলিউড অভিনেত্রীর পিসেমশাই রমণ হান্দা। যে কারণে প্রিয়জনকে হারিয়ে এখন শোকে কাতর প্রিয়াঙ্কা। বর্তমানে অভিনেত্রী যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন। সেখানে পৌঁছে গেছে পিসেমশাইকে হারানোর দুঃসংবাদটি। শোক প্রকাশ করতেও এক মুহূর্ত দেরি করেননি এই বলিউড ডিভা।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শোক প্রকাশ করে প্রিয় মানুষটিকে উদ্দেশ করে প্রিয়াঙ্কা লিখেছেন, ‘তুমি সব সময়ে আমাদের মনে থেকে যাবে। এবার শান্তিতে বিশ্রাম নাও রমণ পিসেমশাই। ওম শান্তি।’ এই পোস্টে প্রিয়াঙ্কা তাঁর তুতো বোন অভিনেত্রী মানারা চোপড়া ও পিসি কামিনী চোপড়াকেও ট্যাগ করে দিয়েছেন।

এ খবরের পাশাপাশি ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার আরও জানিয়েছে, প্রয়াত রমণ হান্দা একই সঙ্গে বলিউড ডিভা প্রিয়াঙ্কার পিসেমশাই এবং ‘বিগবস্ ১৭’-খ্যাত অভিনেত্রী মানারা চোপড়ার বাবা। সোমবার মুম্বাইতে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৭২ বছর। মানারার পরিবারের পক্ষ থেকেই একটি পোস্টের মাধ্যমে রমণ হান্দার মৃত্যুর খবর প্রকাশ করা হয়।

সেই পোস্টে লেখা ছিল, ‘গভীর শোক ও দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি, আমাদের বাবা পরলোকগমন করেছেন। আমাদের পরিবারের শক্তির স্তম্ভ ছিলেন তিনি।’

ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো আরও জানিয়েছে, বুধবার মুম্বাইতে দুপুর ১টায় রমণ হান্দার শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে। তবে পিসেমশাইয়ের শেষকৃত্যে যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রিয়াঙ্কা মুম্বাইতে আসবেন কিনা, তা এখনও স্পষ্ট নয়।

সোমবার বাবার মৃত্যুর খবর জানতে কাঁদতে কাঁদতে মুম্বাই ছোটেন মানারা চোপড়া। বিমানবন্দরে ছবিশিকারিদের ক্যামেরায় সেই মুহূর্ত ধরা পড়ে। সঙ্গে ছিলেন মানারার বোন মিতালি। তবে মানারার বাবার মৃত্যুতে এখনও শোকপ্রকাশ করেননি মানারার আরেক দিদি অভিনেত্রী পরিণীতি চোপড়া। তাঁর পক্ষ থেকে কোনো বিবৃতি আসেনি।

প্রিয়াঙ্কার সঙ্গে মানারার সম্পর্ক ভালো হলেও পরিণীতির সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক খুব একটা মধুর নয়। এমনকি পরিণীতির সঙ্গে তাঁর চেহারায় মিল রয়েছে বলাতেও আপত্তি জানিয়েছিলেন মানারা।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: রমণ হ ন দ

এছাড়াও পড়ুন:

পদ্মার ভাঙনে আতঙ্কে দিন কাটছে মানুষের

ফরিদপুরের সদরপুর ও চরভদ্রাসন উপজেলার কয়েকটি এলাকা দিয়ে বয়ে গেছে পদ্মা নদী। গত তিন সপ্তাহ ধরে পদ্মার ভাঙনে আতঙ্কে দিন কাটছে এখানকার চরাঞ্চলের মানুষের। নদীতীরসংলগ্ন বেশ কয়েকটি রাস্তা ইতোমধ্যে ভেঙে গেছে। কিছু এলাকায় নতুন করে ভাঙন শুরু হয়েছে।
ভাঙন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) নজর দিচ্ছে না বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। পাউবো বলছে, প্রতি বছর জুন ও জুলাইয়ে নদীতে পানি বাড়ার ফলে ভাঙন দেখা যায়। গত কয়েক সপ্তাহে ভাঙনের শিকার হয়েছে সদরপুর ও চরভদ্রাসন উপজেলার শয়তানখালি ঘাট, খোকারাম সরকারের ডাঙ্গী, গোপালপুর ঘাটসহ বেশ কয়েকটি এলাকা।
গত সোমবার সরেজমিন দেখা যায়, ভাঙনের ঝুঁকিতে আছে সদরপুরের আকোটেরচর ইউনিয়নের মুন্সীরচর, পিয়াজখালীরচর, আকোট, আকোটেরচর, ছলেনামা ও খোকারামে আশ্রয়ণ প্রকল্পের শতাধিক ঘর। নদী ভাঙতে ভাঙতে এই ঘরগুলোর মাত্র কয়েক গজ দূরে এখন পদ্মা। এ ছাড়া উপজেলার নারিকেলবাড়িয়া ইউনিয়নের বিশ্বনাথপুর, নুরুদ্দিন সরদারকান্দি, কাচিকাটা গ্রাম, নন্দলালপুর, ফকিরকান্দি, তালপট্টিরচর, কাড়ালকান্দি, জঙ্গিকান্দি, জামাল শিকদারকান্দি এবং চরমানাইর ইউনিয়ন ও চরনাসিরপুর ইউনিয়নের শিমুলতলী ঘাট, কাজীরসুরা, দুর্বারটেক, মফিজদ্দিনেরকান্দি, হাফেজকান্দি, রাড় চরগজারিয়া ও গিয়াস উদ্দীন মুন্সীরকান্দি গ্রাম ভাঙছে। কমপক্ষে ৬০টির বেশি ঘর অন্য জায়গায় সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
এসব ভাঙন এলাকায় কেউ কেউ এখনও নদীর তীরে ঝুঁকি নিয়ে আছেন। বসতঘর ভেঙে অন্য জায়গায় নিয়ে যাচ্ছেন অনেকে। তারা বাড়ির চাল খুলে অন্য জায়গায় সরিয়ে রাখলেও খুঁটি ও বেড়া সরাচ্ছেন না। তাদের আশা, যদি ভাঙন থেমে যায়।
চরভদ্রাসনের চরহরিরামপুর ইউনিয়নের সবুল্লা শিকদারেরডাঙ্গী গ্রাম, সদর ইউনিয়নের টিলারচর ও এমপিডাঙ্গী গ্রাম, চরঝাউকান্দা ইউনিয়নের চরকালকিনিপুর, চরমির্জাপুর, চরতাহেরপুর, চরকল্যাণপুর, দিয়ারা গোপালপুর গ্রামেও ভাঙন চলছে। নারিকেলবাড়িয়া ইউনিয়নের কাচিকাটা গ্রামের আইয়ুব শেখ বলেন, ‘নদীর পাশেই আমার ঘর ছিল। হঠাৎ দেখি ফাটল। রাতে ভাঙন বেশি হয়, তাই ঘর ডুবে যাওয়ার ভয়ে আমি সরিয়ে নিয়েছি। যদি না সরাতাম এখন আমার ঘর থাকত নদীতে।’
আকোটেরচর ইউনিয়ন খোকারাম সরকারের ডাঙ্গী গ্রামের গুচ্ছগ্রামের নুর ইসলাম বলেন, এখান থেকে প্রতি বছর অবৈধভাবে বালু তোলা হয়। বালু তোলেন যারা, তারা প্রভাবশালী–তাই কেউ প্রতিবাদ করতে পারতেন না। প্রতিবাদ করলে তাদের হুমকি দেওয়া হতো। এখন নদীভাঙনে তার খেসারত দিচ্ছেন এলাকাবাসী। 
ঢেউখালি ইউনিয়নের শয়তানখালি ঘাট এলাকার বাসিন্দা কাজী নজরুল। তিনি জানান, পদ্মায় কয়েক সপ্তাহ ধরে পানি বাড়ছে। পানি বাড়ার ফলে ভাঙনও দেখা দিয়েছে। ভাঙনরোধে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না। যতদ্রুত সম্ভব ভাঙনরোধে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি তাঁর। 
আকোটেরচর ইউনিয়নের কলাবাগান এলাকার কৃষক ইসমাইল মুন্সি বলেন, প্রতি বছর নদীর তীর কেটে নিচ্ছেন কিছু লোক। এখনও নদীর তীর কেটে নেওয়া হচ্ছে। এই মাটি বিক্রি করা হচ্ছে। এতে নদীভাঙনের মুখে রয়েছে অনেক বসতবাড়ি।
রিনা বেগম নামে আশ্রয়ণ প্রকল্পের এক বাসিন্দা বলেন, ‘কে করে দেবে আমাদের ঘরবাড়ি? সরকার একটি ঘর দিয়েছে সেখানে থাকি। নদী যেভাবে ভাঙছে হয়তো বেশিদিন থাকতে পারব না। ঘর চলে যাবে নদীতে। কীভাবে থাকব, বুঝতে পারছি না।’
গত দুই সপ্তাহে পদ্মা নদীর ভাঙনে চরঝাউকান্দা ইউনিয়নের চারটি পরিবারের বাড়ি বিলীন হয়েছে বলে জানিয়েছেন ইউপি চেয়ারম্যান বদরুজ্জামান মৃধা। তিনি বলেন, ৩ হাজার বিঘা বাদামের ক্ষেত পানিতে তলিয়ে গেছে। পাউবোর কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে। এখনও পদক্ষেপ নেননি তারা।
আকোটেরচর ইউপি চেয়ারম্যান আসলাম বেপারী বলেন, শুধু এ বছর নয়, প্রতি বছরই নদী ভাঙছে। চরাঞ্চলের মানুষের জন্য নদীভাঙন নিত্যদিনের সঙ্গী। তিনি পাউবোসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানিয়েছেন। আশা করছেন দ্রুত তারা ভাঙনরোধে ব্যবস্থা  নেবেন।
গত ২০ দিনে যে স্থানগুলো ভেঙেছে সেখানে নদীর গভীরতা অনেক বেশি। তাই জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন রোধ করা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন ফরিদপুর পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাকিব হোসেন। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে তাদের একটি দল ভাঙনরোধে কাজ করছে। তারা একটি রিপোর্ট তৈরি করবেন। এরপর ভাঙনরোধে টেকসই স্থায়ী প্রকল্প অনুমোদনের জন্য উচ্চমহলে পাঠানো হবে।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • পদ্মার ভাঙনে আতঙ্কে দিন কাটছে মানুষের
  • সাকিবকে এখনও দেশের সবচেয়ে বড় তারকা মানেন তামিম
  • সাকিবকে এখনও বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় তারকা মানেন তামিম