মাউশির ৪ পদের চূড়ান্ত ফলের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি
Published: 17th, June 2025 GMT
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) প্রদর্শক, গবেষণা সহকারী (কলেজ), ল্যাবরেটরি সহকারী ও সহকারী গ্রন্থাগারিক কাম ক্যাটালগার পদের চূড়ান্ত ফলের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন চাকরিপ্রার্থীরা। আজ মঙ্গলবার দুপুর থেকে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের সামনে এ কর্মসূচি পালন করছেন তাঁরা।
অবস্থান কর্মসূচিতে আসা প্রার্থীরা জানান, ২০২০ সালে মাউশির প্রদর্শক, গবেষণা সহকারী (কলেজ), ল্যাবরেটরি সহকারী ও সহকারী গ্রন্থাগারিক কাম ক্যাটালগার পদসহ আরও কয়েকটি পদের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। ২০২১ সালে সব পদের লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। প্রদর্শক, গবেষণা সহকারী (কলেজ), ল্যাবরেটরি সহকারী ও সহকারী গ্রন্থাগারিক কাম ক্যাটালগার—এ চারটি বাদে অন্য পদগুলোর নিয়োগ কার্যক্রম শেষ হয়েছে। কিন্তু এই চার পদে লিখিত ও ভাইভা শেষ হলেও চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করা হচ্ছে না।
চূড়ান্ত ফলের অপেক্ষায় থাকা এক প্রার্থী প্রথম আলোকে বলেন, ‘নানা জটিলতা কাটিয়ে প্রায় আড়াই বছর পরে গত বছরের ২৪ এপ্রিল প্রদর্শক, গবেষণা সহকারী (কলেজ), ল্যাবরেটরি সহকারী ও সহকারী গ্রন্থাগারিক কাম ক্যাটালগার পদের লিখিত পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়। এরপর লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের মৌখিক পরীক্ষা নেওয়া হয়। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের চার বছর শেষ হয়ে পঞ্চম বছর চলছে এবং ভাইভা নেওয়ার এক বছর শেষ হয়েছে। তবুও চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করা হচ্ছে না। আমরা মাউশিতে যোগাযোগ করলে জানানো হয়েছিল, কোটাসংক্রান্ত সমস্যার সমাধান হলে তিন কর্মদিবসের মধ্যে চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করা হবে। কোটাসংক্রান্ত সমস্যা সমাধান করে মতামত দিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় গত ২৭ নভেম্বর মাউশিতে চিঠি দিয়েছে। তবুও চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করা হচ্ছে না।’
অবস্থান কর্মসূচিতে আসা আরেক প্রার্থী প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা বৃষ্টিতে ভিজে ন্যায্য দাবি আদায়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছি। আমাদের অনেকের সরকারি চাকরির বয়স শেষ হয়েছে। তাই এই ফলাফল নিয়ে উদ্বিগ্ন ও দুশ্চিন্তায় দিন পার করছি। আমাদের একটাই দাবি, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করা হোক।’
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
প্রতারণা করে জুলাই অভ্যুত্থানের সুবিধা নিলে ২ বছর কারাদণ্ড
‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ পরিবার এবং জুলাইযোদ্ধাদের কল্যাণ ও পুনর্বাসন অধ্যাদেশ, ২০২৫’ জারি করেছে সরকার। মঙ্গলবার রাতে এ অধ্যাদেশের গেজেট জারি করা হয়। প্রতারণার মাধ্যমে জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ পরিবার ও আহতদের দেওয়া সুযোগ-সুবিধা নিলে এতে সর্বোচ্চ দুই বছরের কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। একই সঙ্গে দুই লাখ টাকা জরিমানা বা নেওয়া আর্থিক সহায়তার দ্বিগুণ পরিমাণ অর্থদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে অধ্যাদেশে। এর আগে গত ১৫ মে অধ্যাদেশের খসড়া অনুমোদন দেয় উপদেষ্টা পরিষদ।
অধ্যাদেশের ১৫ ধারায় বলা হয়েছে, ‘যদি কোনো ব্যক্তি জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ পরিবারের সদস্য বা যে কোনো শ্রেণির আহত জুলাইযোদ্ধা না হওয়া সত্ত্বেও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বা জ্ঞাতসারে কোনো মিথ্যা বা বিকৃত তথ্য প্রদান বা তথ্য গোপন করে বা বিভ্রান্তিকর কাগজাদি দাখিল করে নিজেকে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ পরিবারের সদস্য বা আহত জুলাইযোদ্ধা দাবি করে কোনো চিকিৎসা সুবিধা বা আর্থিক সহায়তা বা পুনর্বাসন সুবিধা দাবি করেন বা গ্রহণ করেন, তাহলে তিনি অপরাধ করেছেন বলে গণ্য হবে। এ ক্ষেত্রে তাঁকে সর্বোচ্চ দুই বছরের কারাদণ্ড এবং দুই লাখ টাকা জরিমানা বা নেওয়া সুবিধা বা আর্থিক সহায়তার দ্বিগুণ পরিমাণ জরিমানা দিতে হবে।’
অধ্যাদেশে বলা হয়েছে, ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ পরিবার ও জুলাইযোদ্ধাদের কল্যাণ, পুনর্বাসনসহ গণঅভ্যুত্থানের মর্ম ও আদর্শকে রাষ্ট্রীয় ও জাতীয় জীবনে সুপ্রতিষ্ঠিত করা এবং ইতিহাস সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে অধ্যাদেশ জারি করা হয়েছে। যেহেতু সংসদ ভেঙে যাওয়া অবস্থায় রয়েছে এবং রাষ্ট্রপতির কাছে এটি সন্তোষজনকভাবে প্রতীয়মান হয়েছে– আশু ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রয়োজনীয় পরিস্থিতি বিদ্যমান রয়েছে, তাই সংবিধানের ৯৩(১) অনুচ্ছেদে প্রদত্ত ক্ষমতাবলে রাষ্ট্রপতি এই অধ্যাদেশ প্রণয়ন ও জারি করলেন।’
পুনর্বাসনের বিষয়ে অধ্যাদেশে বলা হয়েছে, জুলাই গণঅভ্যুত্থান চলাকালে শহীদ হয়েছেন এমন ব্যক্তির পরিবারের এক বা একাধিক সদস্য এবং আহত জুলাইযোদ্ধাদের অনুকূলে বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে। এসব কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে শিক্ষা বা কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি। তার দক্ষতা ও অভিজ্ঞতাভিত্তিক উপার্জনমুখী কাজের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা। যোগ্যতা অনুযায়ী কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা। আত্মকর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে সহজ শর্তে ঋণ বা এমন সুবিধাদি প্রদান এবং প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সহায়তা প্রদান।
এরই মধ্যে গঠন করা ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান অধিদপ্তর’ এ অধ্যাদেশের অধীনে আনা হয়েছে। জুলাই শহীদ ও আহতদের তালিকাও এই অধ্যাদেশের অধীনে প্রকাশ করা হয়েছে বলে ধরা হবে। অধ্যাদেশে আহতদের তিন শ্রেণিতে ভাগ করা হয়েছে। গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ও আহত ব্যক্তিদের যথাক্রমে ‘জুলাই শহীদ’ এবং ‘জুলাইযোদ্ধা’র স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে।