রংপুরে আনুষ্ঠানিকভাবে হাঁড়িভাঙা আম বাজারজাতকরণ শুরু
Published: 18th, June 2025 GMT
রংপুরের মিঠাপুকুরে আনুষ্ঠানিকভাবে বাজারজাত শুরু হয়েছে জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃত সুস্বাদু হাঁড়িভাঙা আম।
মঙ্গলবার (১৭ জুন) দুপুরে পদাগঞ্জ স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে আমচাষি ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এ ঘোষণা দেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রবিউল ফয়সাল।
উপজেলা প্রশাসন ও কৃষি বিভাগের যৌথ আয়োজনে আয়োজিত এ সভায় সভাপতিত্ব করেন মিঠাপুকুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মুলতামিস বিল্লাহ। সভায় কৃষি বিভাগ, আমচাষি, ব্যবসায়ী ও স্থানীয় রাজনৈতিক নেতারা বক্তব্য দেন।
স্বাগত বক্তব্যে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মুহাম্মদ সাইফুল আবেদীন জানান, এ বছর মিঠাপুকুরে ১,৩০০ হেক্টর জমিতে ২৬ হাজার মেট্রিক টন হাঁড়িভাঙা আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। এ বছর হাঁড়িভাঙ্গা আম প্রায় আড়াইশ’ কোটি টাকা বিকিনি হবে বলে ধারণা করেন তিনি। তবে আমের মান ধরে রাখতে তিন–চার ইঞ্চি বোঁটাসহ আম সংগ্রহ, কুসুম গরম পানিতে ধৌতকরণ ও বরিক অ্যাসিড দিয়ে প্লে করার পরামর্শ দেন তিনি।
তিনি জানান, হাঁড়িভাঙা আমের রপ্তানির লক্ষ্যে প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে এবং কৃষক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে গুণগত মান ধরে রাখতে কাজ করছে কৃষি বিভাগ।
এদিকে, চাষিরা অভিযোগ করেন, পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই হঠাৎ তারিখ পরিবর্তনের কারণে বাজারে সমন্বয়হীনতা দেখা দিয়েছে। প্রতিবছর জেলা প্রশাসন তারিখ ঘোষণা করলেও এবার আগে জানানো হয়নি। কৃষি বিভাগ ২০ জুন তারিখ নির্ধারণ করলেও তা পাঁচ দিন এগিয়ে আনা হয়।
চাষিরা আরও অভিযোগ করেন, পদাগঞ্জ বাজারের রাস্তা-মার্কেট অবকাঠামো দুর্বল এবং ব্যাংকের কোনো শাখা নেই, যা বিপণনে ভোগান্তি বাড়ায়। রংপুর থেকে পদাগঞ্জের দূরত্ব ২৪ কিলোমিটার। বদরগঞ্জ থেকে ১২ কিলোমিটার হলেও সড়ক উন্নয়ন হয়নি।
রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক (উদ্যান) হাবিবুর রহমান বলেন, “চলতি মৌসুমে অতিরিক্ত গরমে আম দ্রুত পেকে গেছে। হাঁড়িভাঙা আম পাকলে নরম হয়ে যায় এবং ভেতরে গলে যায়। এ সমস্যা সমাধানে আমকেন্দ্রিক শিল্পকারখানা গড়ে তোলা জরুরি।”
রংপুর জেলা প্রশাসক বলেন, “বিশ্ববাজারে রপ্তানির জন্য হাঁড়িভাঙার গুণগত মান নিশ্চিত করতে হবে। অতিরিক্ত হরমোন বা কার্বাইডের ব্যবহার বন্ধ করতে হবে।”
তিনি পদাগঞ্জের যোগাযোগব্যবস্থা উন্নয়নের আশ্বাস দেন এবং পরে বাজার এলাকা ঘুরে দেখেন। ব্যবসায়ীরা বাজারের জমি নির্ধারণ, শেড নির্মাণ, ড্রেনেজ ও সড়ক উন্নয়নের দাবি জানান।
সভায় জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তারা ছাড়াও পদাগঞ্জের আম চাষি ও ব্যবসায়ীরা উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা/আমিরুল/এস
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উপজ ল ব যবস
এছাড়াও পড়ুন:
গুমের বিচারপ্রক্রিয়া ত্বরান্বিত চায় জাতিসংঘ, ঢাকায় তদন্ত কমিশনের সঙ্গে বৈঠক
জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদের ওয়ার্কিং গ্রুপ অন এনফোর্সড অর ইনভলান্টারি ডিজঅ্যাপিয়ারেন্সের (ডব্লিউজিইআইডি) প্রতিনিধিদল গুমসংক্রান্ত তদন্ত কমিশনের সঙ্গে ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক করেছে। সেখানে তাঁরা গুমের প্রতিটি ঘটনার তদন্ত, অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিচারপ্রক্রিয়া ত্বরান্বিতকরণের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন।
সোমবার রাজধানীর গুলশানে কমিশনের কার্যালয়ে ডব্লিউজিইআইডির ভাইস চেয়ারপারসন গ্রাজিনা বারানোস্কা এবং সদস্য আনা লোরেনা ডেলগাদিয়ো পেরেজের সমন্বয়ে পাঁচ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
গুমসংক্রান্ত তদন্ত কমিশনের সভাপতি বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী তাঁদের স্বাগত জানান এবং কমিশনের কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত করেন। তিনি বলেন, কমিশনে অদ্যাবধি গুমসংক্রান্ত ১ হাজার ৮৩০টি অভিযোগ জমা পড়েছে। কমিশন সব অভিযোগ পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে তদন্ত করছে।
কমিশনের সভাপতি বলেন, গুমের শিকার হয়ে ফেরত না আসা ১০০ অভিযোগ পুলিশের কাছে তদন্তের জন্য দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ভুক্তভোগী ও তাঁদের পরিবারের সঙ্গে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও রাজশাহীতে তিনটি কনসালটেন্সি (পরামর্শ) সভা করা হয়েছে। কমিশন ইতিমধ্যে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কাছে দুটি অন্তর্বর্তী প্রতিবেদন হস্তান্তর করেছে।
কমিশনের সদস্য মো. সাজ্জাদ হোসেন বলেন, লজিস্টিক, জনবলসংকট ও রাজনৈতিক নানা সীমাবদ্ধতার মাঝেও কমিশন দৃঢ়তার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে। ভুক্তভোগী ও তাঁদের পরিবারের আকাঙ্ক্ষাকে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে কার্যক্রম এগিয়ে নিচ্ছে।
ঘণ্টাব্যাপী অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে কমিশনের আরও দুই সদস্য বিচারপতি মো. ফরিদ আহমেদ শিবলী ও মো. নূর খান উপস্থিত ছিলেন।
তদন্ত কমিশনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রতিনিধিদলের সদস্যরা কমিশনের কাজের প্রশংসা করেন। তাঁরা গুমের প্রতিটি ঘটনার তদন্ত, অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিচারপ্রক্রিয়া ত্বরান্বিতকরণ এবং প্রয়োজনীয় প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। এ ছাড়া গুম থেকে ফেরত না আসা ব্যক্তিদের সন্ধানে সার্চ কমিটি গঠনে করণীয় সম্পর্কে সরকারের উচ্চপর্যায়ে আলোচনার কথা উল্লেখ করেন। পাশাপাশি সুষ্ঠু তদন্তের জন্য কমিশনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদার করাসহ কমিশনের কার্যক্রমে সার্বিক সহযোগিতাদানের আশা প্রকাশ করেন।