ফেব্রুয়ারিতে সংসদ নির্বাচনের ঘোষণা ‘অনেকের পছন্দ হয় নাই’: মির্জা ফখরুল
Published: 18th, June 2025 GMT
আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ঘোষণা ‘অনেকের পছন্দ হয় নাই। কারণ, নির্বাচন হলেই তাদের বিপদ’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আজ বুধবার দুপুরে রাজধানীর উত্তরায় ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির এক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আমরা বলেছিলাম ডিসেম্বরে নির্বাচনে যেতে হবে। আর ইউনূস (মুহাম্মদ ইউনূস) সাহেব বলেছিলেন, এপ্রিলে ইলেকশন দেবেন… তাই না। তিনি (তারেক রহমান) আলোচনার মধ্যে গিয়ে ওই ডিসেম্বরে থাকেননি, তিনি কিন্তু ফেব্রুয়ারিতে চলে গেছেন এবং ইউনূস সাহেবও ফেব্রুয়ারিতে এসেছেন। এটাকেই বলে রাষ্ট্রনায়কোচিত নেতা।’
জামায়াতে ইসলামীকে ইঙ্গিত করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘রাষ্ট্রনায়ক জনগণের শান্তির কথা চিন্তা করে, কোনো বিভেদ-বিভাজনে না গিয়ে, কোনো সংঘর্ষে না গিয়ে এ দুই নেতা (অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও তারেক রহমান) আমাদের একটা শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের সুযোগ করে দিয়েছেন। এটা অনেকের পছন্দ হয় নাই, অনেকের পছন্দ হয় নাই। কারণ, নির্বাচন হলেই তাদের বিপদ।’
এখন নির্বাচন নেই, সুতরাং তাদের অনেক গুরুত্ব আছে উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘যেই নির্বাচন হয়ে যাবে, জনগণের যারা ভালোবাসার দল তারাই তো ক্ষমতায় আসবে, তাই না? তখন তাদের গুরুত্ব কতটুকু থাকবে কি থাকবে না…তখন নির্ধারিত হবে। যে কারণে ওরা নারাজ হইছে এবং নারাজ হয়ে গতকালকে একটা বৈঠকে ওরা হাজির হয় নাই।’
আওয়ামী লীগের কর্ম ভুলে গেলে চলবে না বলে মন্তব্য করেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ হচ্ছে সেই দল, যারা নিজেকে ছাড়া আর কিছু বোঝে নাই। ওরা দেশকে ধ্বংস করেছে। আমি শুধু আওয়ামী লীগের কথাগুলো আপনাদের মনে করিয়ে দিতে চাই কেন জানেন? ওই নিজেদের মধ্যে ঝগড়া করতে করতে ওদের শয়তানিগুলো ভুলে গেছি আমরা। ওরা যে হাজার হাজার ছেলেমেয়েকে হত্যা করেছে, প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করেছে, গুম করেছে, লুট করেছে, বাড়ি দখল করেছে, দোকান দখল করেছে…ওই কথাগুলো আমরা ভুলে যাচ্ছি। ওটা মনে করিয়ে দেওয়ার জন্য আমি বারবার এ কথাগুলো বলি।’
আওয়ামী লীগ নিজের স্বার্থ ছাড়া আর কারও স্বার্থ দেখতে পারে না বলে মন্তব্য করেন বিএনপির মহাসচিব। এ প্রসঙ্গে দলের নেতা-কর্মীদের সতর্ক করে তিনি বলেন, ‘তাই তাদের কাউকে দলে নেওয়া যাবে না। তবে নিরপেক্ষ কেউ থাকলে তাকে অবশ্যই দলে আসার জন্য আহ্বান জানানো হবে। আমরা আওয়ামী লীগ নেব না, কিন্তু যারা ভালো মানুষ তাদের বাদও দেব না। আওয়ামী লীগের যারা প্রমাণিত খারাপ মানুষ, মাফিয়া, দখলদার, ডাকাত, তাদের দলে নেওয়া যাবে না। তবে যারা রাজনীতি করেনি, খারাপ না, ভালো মানুষ, তাদের বাছাই করে দলে নিতে হবে।’
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর শেখ হাসিনা সরকারের ‘ছায়া’ দেখছেন আনু মুহাম্মদ
বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনা সরকারের ‘ছায়া’ দেখছেন অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ। তিনি বলেছেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকার যেভাবে পরিচালিত হচ্ছে, তাতে আমরা অন্তর্বর্তী সরকারের ওপরে শেখ হাসিনা সরকারের ছায়া দেখতে পাচ্ছি। সেই একই রকম স্বৈরতন্ত্র, একই রকম জনগণের ওপর বিভিন্ন ধরনের নিপীড়ন, একই রকম বৈষম্যমূলক ব্যবস্থা টিকিয়ে রাখা হচ্ছে।’ সরকারের এই উল্টোযাত্রা চলতে থাকলে জনগণের দ্রোহযাত্রা অবশ্যই অব্যাহত রাখতে হবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় গত বছরের ২ আগস্ট ঢাকার রাস্তায় প্রতিবাদী কর্মসূচি ‘দ্রোহযাত্রার’ বর্ষপূর্তি ছিল আজ শনিবার। এই দিনটি উপলক্ষে ‘ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রকাঠামোর বিলোপ, চব্বিশের গণহত্যাসহ পাহাড় ও সমতলের সব গণহত্যার বিচার এবং নব্য ফ্যাসিবাদী প্রবণতা প্রতিহতের’ আহ্বানে আজ বিকেলে ‘শিক্ষার্থী-শ্রমিক-জনতার দ্রোহযাত্রার’ আয়োজন করা হয়। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বিভিন্ন বামপন্থী রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক, নারী, শ্রমিক ও ছাত্রসংগঠন এই আয়োজন করে। গত বছরের মতো আজকের দ্রোহযাত্রায়ও সভাপতিত্ব করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ।
‘শিক্ষার্থী-শ্রমিক-জনতার দ্রোহযাত্রার’ মিছিল কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে বের করা হয়। এতে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেয়। ঢাকা, ২ আগস্ট