আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ঘোষণা ‘অনেকের পছন্দ হয় নাই। কারণ, নির্বাচন হলেই তাদের বিপদ’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আজ বুধবার দুপুরে রাজধানীর উত্তরায় ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির এক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আমরা বলেছিলাম ডিসেম্বরে নির্বাচনে যেতে হবে। আর ইউনূস (মুহাম্মদ ইউনূস) সাহেব বলেছিলেন, এপ্রিলে ইলেকশন দেবেন… তাই না। তিনি (তারেক রহমান) আলোচনার মধ্যে গিয়ে ওই ডিসেম্বরে থাকেননি, তিনি কিন্তু ফেব্রুয়ারিতে চলে গেছেন এবং ইউনূস সাহেবও ফেব্রুয়ারিতে এসেছেন। এটাকেই বলে রাষ্ট্রনায়কোচিত নেতা।’

জামায়াতে ইসলামীকে ইঙ্গিত করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘রাষ্ট্রনায়ক জনগণের শান্তির কথা চিন্তা করে, কোনো বিভেদ-বিভাজনে না গিয়ে, কোনো সংঘর্ষে না গিয়ে এ দুই নেতা (অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও তারেক রহমান) আমাদের একটা শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের সুযোগ করে দিয়েছেন। এটা অনেকের পছন্দ হয় নাই, অনেকের পছন্দ হয় নাই। কারণ, নির্বাচন হলেই তাদের বিপদ।’

এখন নির্বাচন নেই, সুতরাং তাদের অনেক গুরুত্ব আছে উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘যেই নির্বাচন হয়ে যাবে, জনগণের যারা ভালোবাসার দল তারাই তো ক্ষমতায় আসবে, তাই না? তখন তাদের গুরুত্ব কতটুকু থাকবে কি থাকবে না…তখন নির্ধারিত হবে। যে কারণে ওরা নারাজ হইছে এবং নারাজ হয়ে গতকালকে একটা বৈঠকে ওরা হাজির হয় নাই।’

আওয়ামী লীগের কর্ম ভুলে গেলে চলবে না বলে মন্তব্য করেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ হচ্ছে সেই দল, যারা নিজেকে ছাড়া আর কিছু বোঝে নাই। ওরা দেশকে ধ্বংস করেছে। আমি শুধু আওয়ামী লীগের কথাগুলো আপনাদের মনে করিয়ে দিতে চাই কেন জানেন? ওই নিজেদের মধ্যে ঝগড়া করতে করতে ওদের শয়তানিগুলো ভুলে গেছি আমরা। ওরা যে হাজার হাজার ছেলেমেয়েকে হত্যা করেছে, প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করেছে, গুম করেছে, লুট করেছে, বাড়ি দখল করেছে, দোকান দখল করেছে…ওই কথাগুলো আমরা ভুলে যাচ্ছি। ওটা মনে করিয়ে দেওয়ার জন্য আমি বারবার এ কথাগুলো বলি।’

আওয়ামী লীগ নিজের স্বার্থ ছাড়া আর কারও স্বার্থ দেখতে পারে না বলে মন্তব্য করেন বিএনপির মহাসচিব। এ প্রসঙ্গে দলের নেতা-কর্মীদের সতর্ক করে তিনি বলেন, ‘তাই তাদের কাউকে দলে নেওয়া যাবে না। তবে নিরপেক্ষ কেউ থাকলে তাকে অবশ্যই দলে আসার জন্য আহ্বান জানানো হবে। আমরা আওয়ামী লীগ নেব না, কিন্তু যারা ভালো মানুষ তাদের বাদও দেব না। আওয়ামী লীগের যারা প্রমাণিত খারাপ মানুষ, মাফিয়া, দখলদার, ডাকাত, তাদের দলে নেওয়া যাবে না। তবে যারা রাজনীতি করেনি, খারাপ না, ভালো মানুষ, তাদের বাছাই করে দলে নিতে হবে।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ফখর ল ইউন স আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

জুলাই সনদ জনগণের নয়, কিছু উপদেষ্টার প্রয়োজন: হাফিজ

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, ‘‘জুলাই সনদ নিয়ে অনেক কথাবার্তা হচ্ছে। আমি মনে করি—জুলাই সনদ দেশের জনগণের প্রয়োজন নেই। কিছু ব্যক্তি যারা উপদেষ্টা হয়েছেন, যারা ভবিষ্যতে বাংলাদেশে বসবাস করতে গেলে বিভিন্ন প্রশ্নের মুখে পড়বেন; তাদের জন্য হয়তো প্রয়োজন আছে।’’

শনিবার (১ নভেম্বর) ঢাকায় জাতীয় প্রেস ক্লাবে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের আয়োজনে ‘স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্র রক্ষায় আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন অপরিহার্য’ শীর্ষক মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশে তিনি এই কথা বলেন।

আরো পড়ুন:

রাজশাহী মহানগর বিএনপির সভাপতি মামুন, সম্পাদক রিটন

একাত্তরের গণহত্যার জন্য জামায়াত নিষিদ্ধ চান আলাল

হাফিজ উদ্দিন আহমদ বলেন, ‘‘এই ধরনের সনদের আমাদের প্রয়োজন নেই। আমাদের প্রয়োজন–একটা পার্লামেন্ট। যেখানে আগামী দিনের ভাগ্য নির্ধারণ করবে। যেই পার্লামেন্ট এই সনদকে বাস্তবায়িত করবে এবং আগামী গণতন্ত্রকে পরিপূর্ণভাবে বিকশিত করতে সক্ষম হবে।’’

তিনি বলেন, ‘‘বাংলাদেশে প্রয়োজন একটি নির্বাচন। যেখানে জনগণ প্রতিনিধিদের নির্বাচিত করতে পারবে। আমরা আশা করব, আগামীতে একটি জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পাদিত হবে। এই নির্বাচনে যারা বিজয়ী হবেন, জনগণের প্রতিনিধি হবেন; তারাই জুলাই সনদকে সমর্থন করবেন।’’

‘‘আমার দল বিএনপি জুলাই সনদকে সমর্থন করে, আমরাও এটি সমর্থন করতে বাধ্য। কিন্তু, এটার মধ্যে এমন জিনিস ঢোকাবেন না, যেটি নিয়ে আগে ঐকমত্য কমিশনের মিটিংয়ে আলোচনা হয়নি।’’- যোগ করেন তিনি।

বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘‘পিআর নিয়ে কথা হচ্ছে। দেশের জনগণকে জিজ্ঞেস করেন, কেউ পিআর চিনেও না। পিআর কেউ চায়ও না। আমরা শত বছর ধরে একজন ব্যক্তিকে নির্বাচিত করে আসছি। তারা (পিআর দাবি করা দলগুলো) ব্যক্তির কাছ থেকে, ভোটারের কাছ থেকে ক্ষমতা তুলে নিয়ে একটা রাজনৈতিক দলের কাছে সমর্পণ করতে চায়। আমরা চাই, বর্তমান যে ব্যবস্থায় নির্বাচন হচ্ছে, সেই ব্যবস্থার মাধ্যমে যাতে নির্বাচন হয়।’’

হাফিজ উদ্দিন আরো বলেন, ‘‘আমাদের একটা প্রতিবেশী রাষ্ট্র আছে, যারা চায় না বাংলাদেশ স্বনির্ভর হোক। নিজের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব অক্ষত থাকুক, এটা তারা চায় না। তারা আশ্রয় দিয়েছে মাফিয়া শেখ হাসিনাকে। শেখ হাসিনা সেখানে বসে কীভাবে বাংলাদেশে নাশকতা করা যায়, সে বিষয়ে নানা ধরনের ষড়যন্ত্র করছেন। কলকাতায় তারা অফিস খুলেছেন। আমি তাদেরকে একটা পরামর্শ দেব। শুধু কলকাতা নয়, ভারতের প্রত্যেকটা প্রদেশে আপনারা একটা করে অফিস খুলেন। ভারতের কাছ থেকে সনদ নেন। তারপরে ভারতের রাজনীতিতে আপনারা মিশে যান। বাংলাদেশে আপনাদের কোনো প্রয়োজন নেই।’’

ঢাকা/রায়হান/রাজীব

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ইরান পারমাণবিক স্থাপনাগুলো আরো শক্তিশালী করে পুনর্নির্মাণ করবে
  • বর্তমান সংকটের জন্য সরকার দায়ী, দলগুলোর চাপে সিদ্ধান্ত বদল
  • জুলাই সনদ জনগণের নয়, কিছু উপদেষ্টার প্রয়োজন: হাফিজ
  • জ্বালানি সুবিচার নিশ্চিতে সংগ্রাম, শপথ যুব সংসদের সদস্যদের
  • বন্দরে বিএনপি নেতা তাওলাদের উপর হামলাকারীদের গ্রেপ্তারে আল্টিমেটাম
  • বিএনপি ও জামায়াত কে কোন ফ্যাক্টরে এগিয়ে
  • অন্তর্বর্তী সরকার জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করেছে: ফখরুল
  • সরকার নিরপেক্ষতা হারালে জনগণ মাঠে নামবে: তাহের
  • সংস্কার ইস্যুতে সব দল ঐক্যবদ্ধ থাকলেও বিএনপি অবস্থান পরিবর্তন করে
  • বিএনপি-জামায়াত দেশকে অন্য এক সংকটের দিকে নিয়ে যাচ্ছে: নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী