জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন জরুরি: জামায়াতের নায়েবে আমির
Published: 6th, July 2025 GMT
জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে স্থানীয় পর্যায়ে নির্বাচন আয়োজন অপরিহার্য বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান।
রোববার সকালে রাজধানীর পুরানা পল্টনে পবিত্র আশুরা উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। সভাটির আয়োজন করে জামায়াতে ইসলামীর ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখা।
সভায় অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেন, ‘জাতীয় সংসদ হলো রাষ্ট্র পরিচালনার মেরুদণ্ড। এই নির্বাচনে কোনো বিশৃঙ্খলা বা ত্রুটি হলে পুরো জাতি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তাই তার আগে স্থানীয় নির্বাচন আয়োজন করে নির্বাচনী ব্যবস্থার বাস্তব পরীক্ষা জরুরি।’
তিনি বলেন, ‘একটি রেলগাড়ির সামনে ইঞ্জিনের আগে কিছু মালবাহী বগি থাকে, যাতে দুর্ঘটনা ঘটলেও ইঞ্জিন অক্ষত থাকে। জাতীয় সংসদ ঠিক যেন সেই ইঞ্জিন—সর্বোচ্চ গুরুত্বপূর্ণ। তাই আগে স্থানীয় নির্বাচন দিয়ে পুরো ব্যবস্থাকে যাচাই করা দরকার।’
জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির বলেন, ‘স্থানীয় নির্বাচন যদি বিতর্কিতও হয়, তাতে জাতীয় রাজনীতির তেমন ক্ষতি হয় না। কিন্তু জাতীয় নির্বাচন ভেস্তে গেলে তার প্রভাব সর্বত্র পড়বে।’
এ সময় আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ‘গণতন্ত্রবিরোধী চরিত্র’ বজায় রাখার অভিযোগ তুলে মুজিবুর রহমান বলেন, ‘যারা আগের শাসকদের পদলেহন করেছে, তারা গণতন্ত্রের ধার ধারেনি। সত্যিকারের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় এদের রাজনীতি থেকে বিদায় নিতে হবে। দেশে কোনো টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি আর বরদাস্ত করা হবে না।’
তিনি জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে অপরাধীদের বিচার এবং নির্বাচনী ব্যবস্থায় কাঙ্ক্ষিত সংস্কার ও পিআর (প্রোপোরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন) পদ্ধতি বাস্তবায়নের ওপরও জোর দেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য মো.
সভায় মহানগরী দক্ষিণের আমির মো. নূরুল ইসলাম বুলবুলের সভাপতিত্বে আরো বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমীর এডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি কবির আহমেদ, কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি মো. শামছুর রহমান প্রমুখ।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: জ ম য় ত ইসল ম র রহম ন ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
জামায়াত কীভাবে জাতীয় পার্টিকে নিষিদ্ধ করার দাবি তোলে: আনিসুল ইসলাম মাহমুদ
কয়েকটি রাজনৈতিক দলের জাতীয় পার্টির কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার দাবিকে অনভিপ্রেত, অগণতান্ত্রিক এবং দেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতির জন্য বিপজ্জনক আখ্যায়িত করেছেন দলটির একাংশের চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। প্রশ্ন তুলে তিনি বলেছেন, যে জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ করার বিপক্ষে জাতীয় পার্টি অতীতে দৃঢ় অবস্থান নিয়েছিল, সেই জামায়াত কীভাবে জাতীয় পার্টিকে নিষিদ্ধ করার দাবি তোলে? বিষয়টি বিস্ময়কর ও দুঃখজনক বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
গতকাল সোমবার রাতে রাজধানীর গুলশানে জাতীয় পার্টির এই অংশের মহাসচিবের বাসভবনে জরুরি মতবিনিময় সভায় এ কথা বলেন আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। সভায় জাতীয় পার্টির মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদারসহ দলের জ্যেষ্ঠ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
আনিসুল ইসলাম মাহমুদ আরও বলেন, জাতীয় পার্টি তার জন্মলগ্ন থেকেই জনগণের অধিকার, গণতান্ত্রিক চর্চা এবং শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের ধারক ও বাহক। দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে জাতীয় পার্টি কখনোই কোনো রাজনৈতিক অপরাধে জড়িত হয়নি বা এমন কোনো কর্মকাণ্ডে অংশ নেয়নি, যার কারণে দলটিকে নিষিদ্ধ করার প্রয়োজন হতে পারে। তিনি বলেন, জাতীয় পার্টি শুধু একটি রাজনৈতিক দল নয়; বরং দেশের উন্নয়ন ও গণতন্ত্রের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। স্বাধীনতার পর দেশের রাজনীতিতে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনা, গ্রাম থেকে শহরে উন্নয়ন ছড়িয়ে দেওয়া, আধুনিক অবকাঠামো নির্মাণ ও শিক্ষাব্যবস্থায় পরিবর্তন আনার ইতিহাস জাতীয় পার্টির রয়েছে।
আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করতে হলে সব দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা জরুরি। তিনি যোগ করেন, কাউকে রাজনৈতিকভাবে নিষিদ্ধ করার দাবি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে দুর্বল করে এবং জনগণের কণ্ঠস্বরকে স্তব্ধ করে দেয়।
সভায় জাতীয় পার্টির জ্যেষ্ঠ নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মো. মুজিবুল হক চুন্নু, কাজী ফিরোজ রশিদ, সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, সাহিদুর রহমান টেপা, শফিকুল ইসলাম সেন্টু, জহিরুল ইসলাম জহির, মোস্তফা আল মাহমুদ, মাসরুর মওলা, জসিম উদ্দিন ভূঁইয়া, মো. আরিফুর রহমান খান, সরদার শাহজাহান, ফখরুল আহসান শাহজাদা, মো. বেলাল হোসেন প্রমুখ।