চাঁদপুর শহরে লেকের পানি থেকে আল-আমিন (১৭) নামে এক স্কুলছাত্রের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। শনিবার রাত ৯টার দিকে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। আল-আমিন চাঁদপুরের গনি স্কুল থেকে এবার এসএসসি পরীক্ষায় পাস করে। 

চাঁদপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বলেন, রাতে ওই শির্ক্ষাথীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে তার চোখে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তার সাত সহপাঠীকে থানায় আনা হয়েছে। 

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, রাজরাজেশ্বর ইউনিয়ন যুবদলের সাধারণ সম্পাদক রমজান আলী প্রধানিয়ার ছেলে আল-আমিন। তাদের পরিবার বর্তমানে চাঁদপুর শহরের মমিনপাড়া এলাকায় বসবাস করেন।

শনিবার বিকেলে আল-আমিন বাসা থেকে বের হয়। শহরের ‘অঙ্গীকার সম্মুখে’ লেকেরপাড় এলাকায় কয়েকজন সহপাঠীর সঙ্গে আড্ডা দিচ্ছিলেন। পরে রাত ৯টার দিকে হঠাৎ লেকের পানিতে ভাসমান অবস্থায় তাকে উদ্ধার করা হয়। হাসপাতালে আনার পর তার শরীরে আঘাতের চিহ্ন দেখতে পান স্বজনরা।

এ ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে আল-আমিনের সঙ্গে থাকা সহপাঠী মামুন, দিদার গাজী, জাহেদ, দিদার ইসলাম, মঈন ইসলাম, শামীমসহ সাতজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে চাঁদপুর মডেল থানা পুলিশ।

আল-আমিনের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে হাসপাতালে ভিড় করেন তার স্বজন ও এলাকার মানুষজন। কান্নায় ভারী হয়ে ওঠে হাসপাতালের পরিবেশ। নিহতের পরিবার দাবি করেছে, এটি নিছক দুর্ঘটনা নয়; বরং কিশোর গ্যাং সদস্যরা পরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যা করে লেকের পানিতে ফেলে দিয়েছে।

ঘটনার খবর পেয়ে চাঁদপুর মডেল থানার ওসি ও সদর সার্কেল হাসপাতালে গিয়ে পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে বিস্তারিত জানেন। স্বজনরা দ্রুত সময়ের মধ্যে সুষ্ঠু তদন্ত করে জড়িতদের গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: মরদ হ সহপ ঠ

এছাড়াও পড়ুন:

গাইবান্ধায় চোর সন্দেহে মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যা

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় তিস্তা নদীর দুর্গম চরাঞ্চলে গরু চোর সন্দেহে আব্দুস সালাম (৫০) নামে মানসিক ভারসাম্যহীন এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যা করেছে স্থানীয়রা। এ ঘটনায় দুলালী বেগম (৪৩) নামে এক নারীকে আটক করেছে পুলিশ।

শনিবার (১ নভেম্বর) সকালে উপজেলার বেলকা ইউনিয়নের বেলকা নবাবগঞ্জ গ্রামের তিস্তার চরে তাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। খবর পেয়ে সুন্দরগঞ্জ থানা পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। 

আরো পড়ুন:

গাজীপুরে যুবককে কুপিয়ে হত্যা

ঝিনাইদহে কৃষকের হাত-পা ও গলা বাঁধা মরদেহ উদ্ধার

নিহত আব্দুস সালাম একই ইউনিয়নের রামডাকুয়া গ্রামের ওমেদ আলীর ছেলে। স্বজনরা জানান, সালাম দীর্ঘদিন ধরে মানসিক ভারসাম্যহীন অবস্থায় মানবেতর জীবন যাপন করছিল। 

আটক দুলালী বেগম বেলকা নবাবগঞ্জ গ্রামের আব্দুল গণি মিয়ার স্ত্রী।

সুন্দরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল হাকিম আজাদ বলেন, ‘‘খবর পাওয়ার পর পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাইবান্ধা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে। হত্যাকাণ্ডে গ্রেপ্তার দুলালী বেগম ছাড়াও যারা জড়িত ছিল, তা শনাক্তে তদন্ত চলছে।’’ 

নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) গভীর রাতে সালাম আব্দুল গণি মিয়ার গোয়ালঘরে প্রবেশ করে। বিষয়টি টের পেয়ে দুলালী বেগম স্বামী ও আশপাশের লোকজনকে খবর দেয়। স্থানীয়রা সালামকে রশি দিয়ে বেঁধে বেধড়ক মারধর করে। একপর্যায়ে তিনি অচেতন হয়ে পড়লে তাকে পুকুরপাড়ে রেখে দেওয়া হয়। ভোরের দিকে আবার তাকে পাশের গোয়ালঘরে নিয়ে নির্যাতন চালানো হয়। এতে ঘটনাস্থলে তার মৃত্যু হয়।

অভিযুক্ত আব্দুল গণি মিয়া বলেন, ‘‘কয়েক দিন আগে শ্যালো মেশিন চুরি হয়ে গেছে। রাতে গোয়ালে সালামকে দেখি। তাই প্রতিবেশীদের খবর দেই। পরে তারা এসে মারধর করে।’’ 

আটক দুলালী বেগম বলেন, ‘‘এক সপ্তাহ আগে মেশিন হারিয়েছে। রাতে শব্দ শুনে দেখি গোয়ালের বাঁধন খুলছে। পরে লোকজন এসে মারধর করে।’’ 

নিহতের স্বজনরা জানান, আব্দুস সালাম দীর্ঘদিন ধরে মানসিকভাবে ভারসাম্যহীন ছিলেন এবং মানুষের সাহায্যে জীবন চলত। তার বিরুদ্ধে আগে কখনো চুরির অভিযোগ ওঠেনি। তারা দাবি করেন, পরিকল্পিতভাবে নির্যাতন করে তাকে হত্যা করা হয়েছে। নিহতের তিনটি ছোট ছেলে রয়েছে, বাবাকে হারিয়ে তারা অসহায় অবস্থায় পড়েছে। 

বেলকা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইব্রাহিম খলিলুল্যাহ জানান, ঘটনাস্থল দুর্গম চরাঞ্চল হওয়ায় খবর পেতে দেরি হয়। স্বজনদের বক্তব্য অনুযায়ী নিহত ব্যক্তি মানসিকভাবে অসুস্থ ছিলেন।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এ সার্কেল) বিদ্রোহ কুমার কুণ্ডু, সুন্দরগঞ্জ থানার ওসি আব্দুল হাকিম আজাদ এবং স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

ঢাকা/মাসুম/বকুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গাইবান্ধায় চোর সন্দেহে মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যা