বিমান বিধ্বস্তের সময় স্কুল ছুটি হওয়ায় স্বল্পসংখ্যক শিক্ষার্থী ছিল, নিহত ২২: মাইলস্টোন কর্তৃপক্ষ
Published: 24th, July 2025 GMT
রাজধানী উত্তরার দিয়াবাড়িতে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় হতাহতের সংখ্যা ও সার্বিক পরিস্থিতি জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ কর্তৃপক্ষ। আজ বৃহস্পতিবার দেওয়া ওই বিবৃতিতে স্কুল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বিমান বিধ্বস্তের সময় স্কুল ছুটি হয়ে যাওয়ায় স্বল্পসংখ্যক শিক্ষার্থী অভিভাবকের জন্য অপেক্ষা করছিল।
বিবৃতিতে বলা হয়, আনুমানিক বেলা ১টা ১২ মিনিট থেকে ১টা ১৪ মিনিটের মধ্যে যুদ্ধবিমানটি বিধ্বস্ত হয়। বেলা ১টায় স্কুল ছুটি হয়ে যাওয়ায় তখন অভিভাবকদের জন্য স্বল্পসংখ্যক শিক্ষার্থী অপেক্ষা করছিল।
এ ঘটনায় নিখোঁজ ও হতাহতের তালিকা জানিয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। বিবৃতিতে যে তালিকা দেওয়া হয়েছে, তাতে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় মোট ২২ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে স্কুল শাখার ১৮ জন শিক্ষার্থী, দুজন শিক্ষক, দুজন অভিভাবক নিহত হয়েছেন। গুরুতর আহত হয়েছেন ৫১ জন। তাঁদের মধ্যে ৪০ জন শিক্ষার্থী, ৭ জন শিক্ষক, একজন অভিভাবক, একজন আয়া ও একজন পিয়ন রয়েছেন। বাকি একজনের পরিচয় বিবৃতিতে জানানো হয়নি। স্কুল কর্তৃপক্ষ আরও বলেছে, এ ঘটনায় নিখোঁজ রয়েছে ৫ জন। তাদের মধ্যে ৩ জন শিক্ষার্থী ও ২ জন অভিভাবক।
মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের পক্ষ থেকে গত মঙ্গলবার তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এর ধারাবাহিকতায় হতাহত ও নিখোঁজের তথ্য জানিয়েছে বলছে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ কর্তৃপক্ষ। হতাহতের তথ্য হালনাগাদের কাজ চলছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
মাইলস্টোন কর্তৃপক্ষ বলেছে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, বিএনসিসি, রোভার স্কাউট, রেড ক্রিসেন্ট, অভিভাবক ও এলাকাবাসী পাশে দাঁড়িয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও বাংলাদেশ বিমানবাহিনী আহত ব্যক্তিদের উন্নত ও সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করেছে। এ ব্যাপারে চিকিৎসা ও সেবা কার্যক্রম সমন্বয়ের জন্য একটি জরুরি সেল গঠন করেছে বাংলাদেশ বিমানবাহিনী।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব ম ন ব ধ বস ত ম ইলস ট ন জন শ ক ষ হত হত ঘটন য়
এছাড়াও পড়ুন:
লাইলীকে বিশ্ব দরবারে নিয়ে যেতে চান আনোয়ার
বরগুনার বিষখালী নদীর পাড়ে বেড়ে উঠেছেন লাইলী বেগম। বাবার মৃত্যুর পর ভাইয়েরা অসুস্থ মায়ের দায়িত্ব নিতে অস্বীকৃতি জানান, তখন কন্যা হয়েও লাইলী সেই দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেন। অভাব, ক্ষুধা আর সমাজের অবহেলা তার নিত্যসঙ্গী হয়। তারপরও থেমে যাননি লাইলী।
জীবনের চাকা ঘুরাতে, মাছ ধরা থেকে বর্গাচাষ—সবই করেছেন লাইলী। গত ২১ বছর ধরে নদী ও সাগরে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করছেন। বরগুনা জেলার সরকারিভাবে নিবন্ধিত একমাত্র নারী জেলে তিনি। এই লাইলীকে নিয়ে নির্মিত হয়েছে প্রামাণ্যচিত্র ‘উত্তরের বৈঠা’। এটি নির্মাণ করেছেন আনোয়ার হোসেন।
পরিচালক আনোয়ার হোসেন
আরো পড়ুন:
জসীমের কবরে রাতুলকে সমাহিত করে দুই ভাইয়ের আবেগঘন পোস্ট
নীনার অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার খবরে কী বলেছিলেন ক্রিকেটার ভিভ?
এ নিয়ে রাইজিংবিডির সঙ্গে কথা বলেন পরিচালক আনোয়ার হোসেন। তরুণ এই নির্মাতা বলেন, “এই চলচ্চিত্র শুধু একজন নারী জেলের গল্প নয়, এটি একজন মানুষের বেঁচে থাকার অদম্য চেষ্টা, একাকিত্বে গড়ে ওঠা সাহসিকতার প্রতিচ্ছবি। লাইলী বেগম যখন নদীতে জাল ছুঁড়ে দেন, সেই মুহূর্তে তিনি শুধু মাছ খোঁজেন না—তিনি খুঁজে ফেরেন নিজের অবস্থান, নিজের সম্মান, আর অস্তিত্বের উত্তর।”
লাইলীর চোখ দিয়ে বাস্তবতা দেখাতে চেয়েছেন নির্মাতা। তার ভাষায়, “এই ফিল্মে আমি কোনো কৃত্রিম কণ্ঠ বা নাটকীয় ভাষা ব্যবহার করিনি। কারণ আমি চেয়েছি দর্শক যেন লাইলীর চোখ দিয়েই এই বাস্তবতা দেখেন। তার নীরবতা, তার কথাবার্তা, তার দৃষ্টি—সবই যেন একেকটি দৃশ্যপট হয়ে ওঠে। একজন নির্মাতা হিসেবে আমার দায়িত্ব ছিল শুধু একটি ফ্রেম তৈরি করে দেওয়া, বাকিটা বলে গেছেন লাইলী নিজেই—তার জীবনযাত্রা, নদী এবং অব্যক্ত যন্ত্রণা দিয়ে।”
‘লাইলী’-কে বিশ্ব দরবারে নিয়ে যেতে চান পরিচালক। তা জানিয়ে আনোয়ার হোসেন বলেন, “এই ফিল্মটি তাদের জন্য, যারা নিঃশব্দে লড়াই করেন এবং যারা কখনো আলোয় আসেন না। এখানে আমি সংক্ষিপ্ত আকারে প্রামাণ্য চিত্রটি তৈরি করেছি, পূর্ণদৈর্ঘ্য আকারে তৈরি করার প্রস্তুতি চলছে। আপনাদের সহযোগিতা ও আগ্রহ আমাকে অনুপ্রাণিত করবে। এই জীবন সংগ্রামের কথা বিশ্ব দরবারে নিয়ে যেতে চাই।”
সমাজের বাঁকা চোখ উপেক্ষা করে লাইলী প্রমাণ করেছেন, নারীর স্থান কেবল ঘরে নয়, সাহস আর সংগ্রামেও। লাইলী কেবল একজন নারী জেলে নন, এক অনুপ্রেরণার নাম। নারী চাইলে সব পারে—লাইলী তা নিঃশব্দে প্রমাণ করেছেন বলেও মনে করেন নির্মাতা।
ঢাকা/শান্ত