চট্টগ্রাম বন্দরের মাশুল বাড়ছে, খরচ বাড়বে ব্যবসার
Published: 25th, July 2025 GMT
চট্টগ্রাম বন্দরে সেবার মাশুল বাড়ানো হচ্ছে। এখন গেজেট জারির অপেক্ষা। সরকারের ভাষ্য হচ্ছে মাশুল বাড়ানো হলেও তা বিশ্বের অনেক দেশের চেয়ে এখনো কম। অপর দিকে ব্যবহারকারীরা বলছেন, তাঁদের প্রস্তাবের চেয়ে কয়েক গুণ মাশুল বাড়ানো হচ্ছে, যা ব্যবসার খরচ বাড়াবে।
নৌপরিবহন উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন আজ শুক্রবার সকালে বন্দরের নিউমুরিং টার্মিনাল পরিদর্শনে এসে বলেন, মন্ত্রণালয় এককভাবে মাশুল বাড়ায়নি। আন্তমন্ত্রণালয় আলোচনা হয়েছে। ব্যবহারকারীদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে বন্দরের মাশুল বাড়ানো হয়েছে। মাশুল বাড়ানোর পরও বিশ্বের অনেক বন্দরের চেয়ে চট্টগ্রাম বন্দরের মাশুল এখনো অনেক কম।
বন্দর কর্তৃপক্ষ জাহাজ ও পণ্য খাতে সেবার জন্য মাশুল আদায় করে। একেক খাতে মাশুলের হার একেক রকম। এই মাশুল দেয় দেশি–বিদেশি জাহাজ মালিক, কনটেইনার পরিচালনাকারী ও আমদানিকারকেরা।
এখন বন্দর কর্তৃপক্ষ যেসব মাশুল আদায় করছে, তার বড় অংশই ১৯৮৬ সালে নির্ধারণ করা হয়েছিল। এরপর ২০০৭ ও ২০০৮ সালে পাঁচটি খাতে মাশুলের হার বাড়ানো হয়। এরপর ২০১২ সালে আরও এক দফা মাশুল বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হলেও তা কার্যকর করা হয়নি।
নতুন করে যে মাশুল বাড়ানো হচ্ছে, তার কাজ শুরু হয় ২০২০ সালে। স্পেনের একটি পরামর্শক প্রতিষ্ঠান মাশুল হালনাগাদ করে বন্দরের কাছে প্রস্তাব দেয়। এ বছরের ১০ ফেব্রুয়ারি গেজেট নোটিফিকেশন জারি করার জন্য বন্দর থেকে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। এ নিয়ে ব্যবহারকারীদের সঙ্গে এক দফা আলোচনা হয়।
ব্যবহারকারীরা বলছেন, গত ২ জুন মাশুল নিয়ে আলোচনার পর তাঁরা ৩০ জুনের মধ্যে মাশুল কত বাড়ানো যেতে পারে, তা নিয়ে প্রস্তাব জমা দিয়েছেন। তাতে ১০ থেকে ২০ শতাংশ হারে মাশুল বাড়ানোর পক্ষে মত দেয় ব্যবহারকারী সংগঠনগুলো। এ নিয়ে দ্বিতীয় দফায় ব্যবহারকারীদের নিয়ে চূড়ান্ত আলোচনা হওয়ার কথা ছিল। তবে তার আগেই মাশুল বাড়ানো হচ্ছে।
চট্টগ্রাম বন্দর পরিদর্শনের সময় সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন নৌ-পরিবহন উপদেষ্টা সাখাওয়াত হোসেন। আজ বেলা ১১টায় চট্টগ্রাম বন্দরে.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
গিল-সুন্দর-জাদেজার সেঞ্চুরিতে ভারতের জয়ের সমান এক ড্র
ম্যান্ডেটরি শেষ এক ঘণ্টার খেলা যখন শুরু হবে ইংল্যান্ড অধিনায়ক বেন স্টোকস এগিয়ে গেলেন ভারতীয় দুই ব্যাটসম্যানের দিকে। উদ্দেশ্য ড্র মেনে নিয়ে করমর্দন করা। কিন্তু রবীন্দ্র জাদেজা ও ওয়াশিংটন সুন্দর ফিরিয়ে দিলেন স্টোকসকে। না, ওল্ড ট্রাফোর্ড টেস্ট জয়ের কোনো সম্ভাবনাই ছিল না জাদেজা-সুন্দরের ভারতের। ৮৯ ও ৮০ রানে দাঁড়ানো দুই ব্যাটসম্যান সেঞ্চুরির এত কাছে থেকে ফিরতে চাননি বলেই ফিরিয়ে দিয়েছেন স্টোকসের প্রস্তাব।
এরপর যা হলো সেটিকে হাস্যকর বলাই ভালো। প্রায় অন্ধকার হয়ে আসা মাঠে বল করলেন হ্যারি ব্রুক ও জো রুটের মতো অনিয়মিত স্পিনাররা। আর জাদেজা ও সুন্দর মেরেকেটে দ্রুতই তুলে নিলেন সেঞ্চুরি। প্রথমে সেঞ্চুরিতে পৌঁছালেন জাদেজাই। ব্রুককে ছক্কা মেরেই পঞ্চম টেস্ট সেঞ্চুরি তুলে নিলেন।
প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরির অপেক্ষায় থাকা সুন্দর তিন অঙ্ক ছুঁলেন ১৫ বল পর ব্রুকের বলেই ২ রান নিয়ে। এরপরই দুই দলের খেলোয়াড়েরা হাত মিলিয়ে ড্র মেনে মাঠ ছাড়েন। আর তাতে ওভালে সিরিজের শেষ ম্যাচটাই হয়ে গেল সিরিজ নির্ধারণী। চার ম্যাচ শেষে ইংল্যান্ড এগিয়ে ২-১ ব্যবধানে।
শেষটা অদ্ভুতুড়ে হলেও জাদেজা ও সুন্দরের অবশ্য সেঞ্চুরি পাওনা হয়েই গিয়েছিল। সকালে লোকেশ রাহুল ও শুবমান গিলের বিদায়ের পর শেষ দুই সেশনে কী প্রতিরোধটাই গড়েছেন দুজন। ইনিংস হারের শঙ্কা উড়িয়ে ম্যাচটা ড্র করে ভারতকে সিরিজে টিকিয়ে রাখার পুরস্কারই তো সেঞ্চুরিতে পেলেন দুজন।
ম্যাচটা যখন শেষ হলো ভারতের স্কোর ৪২৫/৪। ইংল্যান্ডের প্রথম ইনিংসে চেয়ে দলটি এগিয়ে গিয়েছিল ১১৪ রানে। স্টোকস যখন প্রথমবার ড্রর প্রস্তাব দিলেন তখন দলটি এগিয়ে ছিল ৭৫ রানে। পঞ্চম উইকেটে ২০৩ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়া জাদেজা ১৮৫ বলে ১০৭ ও সুন্দর ২০৬ বলে ১০১ রানে অপরাজিত ছিলেন।
আজ শেষ দিনটা ভারত শুরু করে ২ উইকেটে ১৭৪ রান নিয়ে। ৩১১ রানের ঘাটতি নিয়ে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করা দলটি গতকাল শূন্য রানেই প্রথম ২ উইকেট হারিয়ে ইনিংস ব্যবধানে হারার শঙ্কায় পড়ে। তবে গিল-রাহুল সেদিন আর উইকেট পড়তে দেননি। দলটি তৃতীয় উইকেট হারায় ১৮৮ রানে। ভারতের ওপেনার লোকেশ রাহুলকে এলবিডব্লু করেন ইংল্যান্ড অধিনায়ক বেন স্টোকস। ১০ রানের জন্য সেঞ্চুরির পাননি রাহুল। তবে ১৮৮ রানের জুটিতে তাঁর সঙ্গী শুবমান গিল সেঞ্চুরি তুলেই ফিরেছেন, করেছেন ১০৩ রান। এই সিরিজে যা ভারত অধিনায়কের চতুর্থ সেঞ্চুরি। তাতে এক সিরিজে অধিনায়ক হিসেবে সবচেয়ে বেশি সেঞ্চুরির রেকর্ডে দুই কিংবদন্তি স্যার ডন ব্র্যাডম্যান ও সুনীল গাভাস্কারের পাশে বসেছেন গিল।
গিল ফেরেন ২২২ রানে চতুর্থ ব্যাটসম্যান হিসেবে। ভারত তখন পিছিয়ে ৮৯ রানে। এরপর আর উইকেট হারায়নি ভারত।
সংক্ষিপ্ত স্কোরভারত: ৩৫৮ ও ১৪৩ ওভারে ৪২৫/৪ (গিল ১০৩, জাদেজা ১০৭*, সুন্দর ১০১, রাহুল ৯০; ওকস ২/৬৭, স্টোকস ১/৩৩, আর্চার ১/৭৮)।ইংল্যান্ড ১ম ইনিংস: ৬৬৯।
ফল: ড্র
সিরিজ: ৫-ম্যাচ সিরিজে ইংল্যান্ড ২-১-এ এগিয়ে।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: বেন স্টোকস।