গাইবান্ধায় সাঘাটা থানায় ঢুকে পুলিশের ওপর হামলা করা যুবকের লাশ উদ্ধারের ঘটনায় ব্রিফ করেছে পুলিশ। শুক্রবার বেলা আড়াইটার দিকে সাঘাটা থানা চত্বরে ব্রিফ করেন গাইবান্ধার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এ সার্কেল) বিদ্রোহ কুমার কুন্ডু।

এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে এক যুবক থানায় এসে কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে পুলিশের এক কনস্টেবলের বন্দুক ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। পুলিশের অন্য সদস্যরা বাধা দিলে এক এএসআইকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যান তিনি। পরে আজ সকালে থানার পাশে একটি পুকুর থেকে তাঁর লাশ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস।

ব্রিফিংয়ে পুলিশ জানায়, ওই ব্যক্তির নাম সিজু মিয়া (২৫)। বাড়ি গাইবান্ধা সদর উপজেলার বাগুরিয়া গ্রামে। তিনি ওই গ্রামের দিনমজুর দুলাল মিয়ার ছেলে।

পুলিশ কর্মকর্তা বিদ্রোহ কুমার কুন্ডু জানান, বৃহস্পতিবার রাত ৮টা ৪০ মিনিটে ওই যুবক সাঘাটা থানায় আসেন। তিনি একটি মুঠোফোন হারিয়ে গেছে মর্মে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে চান। দায়িত্বরত কর্মকর্তা (ডিউটি অফিসার) তাঁর কাছে মুঠোফোন নম্বর, আইএমইআই নম্বর এবং কবে, কখন, কোথায় হারিয়ে গেছে, তা জানতে চান। সিজু মিয়া ১৫ থেকে ২০ মিনিট পুলিশে ওই কর্মকর্তার সামনে থাকলেও এ–সংক্রান্ত কোনো তথ্য দিতে পারেননি। এরপর রাত ৯টার দিকে তিনি থানা থেকে বের হয়ে যান।

ব্রিফিংয়ে বলা হয়, পরে রাত ৯টা ৫৬ মিনিটের দিকে একটি ছুরি হাতে সিজু মিয়া আবার থানায় আসেন। এরপর তিনি দায়িত্বরত কনস্টেবল সিরাজুল ইসলামকে আঘাত করেন ও তাঁর কাছ থেকে অস্ত্র ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। তাঁরা দুজনে হাতাহাতি করা অবস্থায় দায়িত্বরত কর্মকর্তার কক্ষে প্রবেশ করেন। সিজু মিয়া হাতে থাকা ছুরি দিয়ে পুলিশকে এলোপাতাড়ি আক্রমণ করার চেষ্টা করেন। এ সময় একজন এএসআই আহত হন। এ সময় আরও কয়েকজনকে আঘাত করতে উদ্যত হন সিজু মিয়া। রাত ৯টা ৫৭ মিনিটের দিকে তিনি দৌড়ে পাশের একটি পুকুরে লাফ দেন। থানার পুলিশ ও এলাকাবাসী সেখানে তাঁকে খুঁজতে চেষ্টা করে। বিষয়টি ফায়ার সার্ভিসকেও জানানো হয়। পুকুরের গভীরতা বেশি থাকায় রাতে উদ্ধারকাজ শুরু করা যায়নি।

পুলিশ কর্মকর্তা বিদ্রোহ কুমার কুন্ডু বলেন, আজ সকালে ফায়ার সার্ভিস উদ্ধারকাজ শুরু করলে পুকুর থেকে সিজু মিয়ার লাশ উদ্ধার করা হয়। পরে তাঁর নাম, ঠিকানা ও পরিচয় জানা যায়।

এদিকে ভাগনের মৃত্যুর খবর লোকমুখে শুনে সাঘাটা থানায় ছুটে যান বাগুরিয়া গ্রামের চা–দোকানি শাহ আলম (৪৫)। তিনি বলেন, সিজুর বাড়ি কয়েক কিলোমিটার দূরে, তারপরও কী কারণে তিনি সাঘাটা থানায় যায়, তাঁরা জানেন না। থানায় যাওয়ার আগে মা–বাবাকেও বলেননি। আজ সকালে তাঁরা তাঁর মৃত্যুর খবর পান। তিনি বলেন, সিজু এইচএসসি পাস করেছেন। গাইবান্ধায় কম্পিউটারের কাজ শিখছেন। তিনি ভদ্র ছেলে, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়তেন। এলাকায় তাঁর বিরুদ্ধে কেউ কোনো কথা বলতে পারবে না। তিনি এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে বিচার চান।

এদিকে বিকেলে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়। সাঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বাদশা আলম মুঠোফোনে বলেন, ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন না পাওয়া পর্যন্ত মৃত্যুর কারণ জানা যাবে না। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন। ঘটনাটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

আরও পড়ুনগাইবান্ধায় থানায় ঢুকে পুলিশকে ছুরিকাঘাত করা যুবকের লাশ মিলল পাশের পুকুরে২ ঘণ্টা আগে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: কর মকর ত ঘ ত কর তদন ত

এছাড়াও পড়ুন:

প্রেমিকার দেখা পেতে বোমা ছুঁড়ে গ্রেপ্তার প্রেমিক

রাগ করে কথা বন্ধ করেছিল প্রেমিকা। রাগ ভাঙিয়ে প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে, একটু কথা বলতে ইউটিউব থেকে বোমা তৈরিত কৌশল শিখেছিল প্রেমিক। বোম ফাটার শব্দে যদি প্রেমিকা বেরিয়ে আসে... এই আশায়। এক্সপার্টের মতো বানিয়েও ফেলে বোমা। কিন্তু বোমা ফাটার তীব্র সেই শব্দে আতঙ্কিত হয়ে প্রেমিক ও তার বন্ধুরা পালিয়ে যায় নিজেরাই। 

গত ২৮ অক্টোবর, ছট পূজার রাতে পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলার বৈদ্যবাটি এক আবাসিক এলাকা গভীর রাতে বোমা বিস্ফোরণের তীব্র আওয়াজে কেঁপে উঠে। বোমা মারার সেই ঘটনা দুষ্কৃতী আক্রমণ ভেবে লেগেছিল রাজনৈতিক রং, তৈরি হয়েছিল আতঙ্ক। হয়েছিল সংবাদমাধ্যমে খবরের শিরোনাম। স্বাভাবিকভাবেই দুষ্কৃতীদের ধরতে চাপে পড়ে পুলিশ প্রশাসন। কিন্তু তদন্তে প্রেমিক প্রেমিকার রাগ ভাঙানোর তথ্যে তদন্ত যেন মোড় নিয়েছে আশ্চর্যের এক প্রেমের গল্পে। 

আরো পড়ুন:

বিশ্ব র‌্যাংকিংয়ে ভারতীয় পাসপোর্টের অবনতি কেন?

জঙ্গি সন্দেহে ভারতে গ্রেপ্তার বাংলাদেশি ‘মুফতি মাসুদ’

পুলিশ জানায়, ১৮ নম্বর ওয়ার্ড মালিরবাগান খামারডাঙা এলাকায় একটি বাড়িতে বোমা ছোঁড়া হয়। বাড়িটির দেয়ালে লাগে বোমা, জানালার কাঁচ ভেঙে যায়।

ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ বাড়িটির বাসিন্দাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে। কিন্তু কোনো সূত্র পাওয়া যায় না। এরপর এলাকার লোকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করার পাশাপাশি সিসিটিভির ফুটেজে একটি বাইকের ছবি দেখে তার সন্ধান শুরু করে।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মালিরবাগান এলাকায় যেখানে বোমাবাজি হয়েছিল সেখানে এক তরুণীর সঙ্গে চাঁপদানীর স্থানীয় যুবক সাগর মালিকের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। সেই সম্পর্কে অবনতি হওয়ায় বেশ কিছুদিন ধরে প্রেমিক প্রেমিকার দেখা-সাক্ষাৎ হচ্ছিল না। এর মধ্যেই প্রেমিক বন্ধুদের মারফত জানতে পারে প্রেমিকা অন্য এক যুবকের সঙ্গে মেলামেশা করছে। এদিকে সাগরের ফোন ধরা বন্ধ করে দেয় তরুণী।

কী করে প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করা যায় সেটাই ভাবতে থাকে প্রেমিক। এরপরেই বন্ধুদের সঙ্গে আলোচনা করে দেখা করার বুদ্ধি বের করে সাগর। ইউটিউব দেখে বেশ কয়েক ধরনের পটকার উপদান দিয়ে বোমা বানায়। সেটি ফাটানোর পরিকল্পনা করা হয় প্রেমিকার বাড়ির পাশে। 

বোমা ফাটার আওয়াজে তরুণী প্রেমিকা যদি বেরিয়ে আসে তাহলে তার সঙ্গে কথা বলবে- এই উদ্দেশ্য নিয়ে ছট পূজার রাতে চার বন্ধু পৌঁছে যায় মালিরবাগান এলাকায়। বোমা ছোঁড়ে একটি বাড়ির দেওয়ালে। এতটাই জোরে শব্দ হয় যে তারা নিজেরাই ভয় পেয়ে পালিয়ে যায়।

এদিকে পুলিশ ওই তরুণীর সঙ্গে সাগরের সম্পর্কের কথা জানতে পেরে তার খোঁজ শুরু করে। পাশাপাশি বাইকের নম্বর দেখে খোঁজ শুরু করে। সাগর এবং তার বন্ধুদের বাড়ি গিয়ে পুলিশ জানতে পারে যে, তারা ঘটনার পর থেকে আর বাড়িতে থাকছিল না। ঘটনার পর চার বন্ধুই কল্যাণীতে পালিয়ে গিয়েছিল বলে জানতে পারে পুলিশ। মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে গতকাল শুক্রবার পুলিশ তাদেরকে ব্যারাকপুর থেকে গ্রেপ্তার করেছে।

পুলিশ জানিয়েছে, আটক সাগর মালিক, প্রিন্স যাদব, প্রণীত পাল, আয়ুস যাদব, চারজনেরই বয়স ১৮-২০ বছর।ইতিমধ্যেই তাদের শ্রীরামপুর আদালতে পেশ করা হয়েছে। আরো জিজ্ঞাসাবাদ জন্য পুলিশ তাদের রিমান্ডে নিয়েছে।

ঢাকা/সুচরিতা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • রোহিতের পর কোহলির রেকর্ডও কাড়লেন বাবর, পাকিস্তানের সিরিজ জয়
  • নাজমুলই থাকছেন টেস্ট অধিনায়ক
  • বন্দীদের ফুল দিয়ে বরণ, চালু হলো ফেনীর দ্বিতীয় কারাগার
  • সিলেটে বাসদ কার্যালয়ে পুলিশের অভিযান, আটক ২২
  • প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে মারধরের শিকার কিশোরের মৃত্যু
  • প্রেমিকার দেখা পেতে বোমা ছুঁড়ে গ্রেপ্তার প্রেমিক
  • যাত্রাবাড়ীতে বিদ্যুৎমিস্ত্রিকে পিটিয়ে হত্যা
  • বোনকে খুন করে লাশ বস্তায় ভরেন, পুলিশ জিজ্ঞেস করলে জানান বস্তায় গম
  • বায়ার্নের টানা ১৪ ম্যাচ জয়ের অবিশ্বাস্য রেকর্ড
  • মাহিমা চৌধুরী-সঞ্জয় মিশ্রা বিয়ে করেছেন?