রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের একটি ভবনে বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে যাঁরা চিকিৎসাধীন, তাঁদের মধ্যে চারজনের অবস্থা সংকটাপন্ন (ক্রিটিক্যাল)। নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) রেখে তাঁদের চিকিৎসা চলছে।

আরও ৯ জনের অবস্থা কম গুরুতর (সিভিয়ার)। তাঁরাও শঙ্কামুক্ত নন। এই ১৩ জনসহ বার্ন ইনস্টিটিউটে এখন মোট ৩৬ জন ভর্তি রয়েছেন। আর সেরে ওঠায় দুই শিক্ষার্থী আজ শনিবার বাসায় ফিরেছে।

আজ বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে বার্ন ইনস্টিটিউটের জরুরি বিভাগে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক অধ্যাপক নাসির উদ্দীন এসব তথ্য জানান। তিনি বলেন, বিদেশ থেকে আসা চিকিৎসকদের সঙ্গে আলোচনা করে সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসা চলছে।

অধ্যাপক নাসির উদ্দীন জানান, সেরে ওঠা দুই শিক্ষার্থীকে আজ ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। চলতি সপ্তাহে আরও ১০ জন বাসায় ফিরতে পারবেন বলে আশা করা হচ্ছে। যাঁদের অবস্থা সংকটাপন্ন, তাঁদের আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে সব সময় কথা বলা হচ্ছে। এসব রোগীর প্রত্যেকের পাশে একজন চিকিৎসক ও নার্স সব সময় অবস্থান করছেন।

বার্ন ইনস্টিটিউটের পরিচালক আরও জানান, চিকিৎসাসহায়তা দিতে ভারত থেকে দুই চিকিৎসক ও দুই নার্স, সিঙ্গাপুর থেকে তিন চিকিৎসক ও দুই নার্স এবং চীন থেকে তিন চিকিৎসক ও ছয় সহকারী কর্মী (সাপোর্টিং স্টাফ) এসেছেন। তাঁরা ও স্থানীয় চিকিৎসক–নার্সদের সমন্বয়ে রোগীদের চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে।

এর আগে আজ সকালে বার্ন ইনস্টিটিউটের আবাসিক চিকিৎসক শাওন বিন রহমান প্রথম আলোকে দুজনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেন। সকাল ৯টার দিকে আইসিইউয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় শিক্ষার্থী জারিফ ফারহান। তার শরীরের ৪০ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিল। সে মাইলস্টোনের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। অপরজন ছিলেন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির কর্মচারী। তাঁর নাম মাসুমা। বেলা পৌনে ১১টার দিকে তিনি মারা যান। তাঁর শরীরের ৯০ শতাংশ পুড়েছিল।

এ নিয়ে প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় বার্ন ইনস্টিটিউটে ১৭ জন মারা গেলেন। আর এ দুর্ঘটনায় এই নিয়ে মোট মৃত মানুষের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৩৫।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, গতকাল শুক্রবার রাত পর্যন্ত মোট নিহত মানুষের সংখ্যা ছিল ৩৩। এর মধ্যে দুজন ছাড়া অন্যদের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে।

গত সোমবার (২১ জুলাই) উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের একটি ভবনের ওপর বিমানবাহিনীর যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়। বিমানটি প্রশিক্ষণের কাজে ব্যবহার করা হচ্ছিল। এ দুর্ঘটনায় দেড় শতাধিক আহত হন।

আরও পড়ুনচিকিৎসা শেষে বার্ন ইনস্টিটিউট থেকে দুজন শিক্ষার্থী আজ বাড়ি ফিরছে৬ ঘণ্টা আগে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব ম ন ব ধ বস ত চ ক ৎসক ও র অবস থ র ঘটন য়

এছাড়াও পড়ুন:

নির্বাচনের দিন অমোচনীয় কালি সরবরাহ না হলে ভোট গ্রহণ বন্ধ থাকবে: ছাত্রদল

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জকসু) নির্বাচনে অমোচনীয় কালি সরবরাহ না করলে ভোট গ্রহণ বন্ধ থাকবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের নেতারা। এ ছাড়া এমফিল কোর্সে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের ভোটার ও প্রার্থী হওয়ার যোগ্যতা না দিয়ে ইচ্ছাকৃতভাবে ছাত্রদলকে ভোট প্রক্রিয়া থেকে বাদ দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেছেন তাঁরা।

রোববার উপাচার্যের সভাকক্ষে রাজনৈতিক ও সক্রিয় সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত জকসু ও হল সংসদ নির্বাচন ২০২৫–এর আচরণবিধিবিষয়ক এক মতবিনিময় সভায় ছাত্রদলের নেতারা এমন মন্তব্য করেন।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সদস্যসচিব শামসুল আরেফিন বলেন, ‘নির্বাচনে যদি কোনো ধরনের অনিয়মের ঘটনা ঘটে, তাহলে আমরা একচুল ছাড় দেব না। আমি প্রতিজ্ঞা করছি, যদি কোনো ধরনের অনিয়ম হয়— কোনো ছাড় হবে না। নির্বাচনের সময় অমোচনীয় কালি ব্যবহার করতে হবে। যদি নির্বাচন কমিশন অমোচনীয় কালি ব্যবহার করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে ভোট গ্রহণ বন্ধ থাকবে।’

ভোটের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে ‘ম্যানুয়ালি’ ভোট গণনার দাবি জানিয়ে শামসুল আরেফিন বলেন, ‘কত ব্যালট ছাপানো হলো, কত ভোট গণনা হলো, কত ব্যালট নষ্ট হলো—এসব তথ্য স্বচ্ছতার সঙ্গে প্রকাশ করতে হবে। কারণ, আমরা ডাকসুতে ব্যালট কেলেঙ্কারির অভিযোগ সম্পর্কে জানি।’

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মেহেদী হাসান অভিযোগ করেন, কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ বিধিমালায় এমফিল শিক্ষার্থীদের ভোটার ও প্রার্থী হওয়ার যোগ্যতা না দিয়ে ছাত্রদলকে ‘মাইনাস’ করার একটি মাস্টারপ্ল্যান করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘জকসু গঠন ও পরিচালনা বিধিমালায় বলা হয়েছে, তফসিল ঘোষণার পর নিয়মিত শিক্ষার্থী ভোটার কিংবা প্রার্থী ছাড়া কেউ বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করতে পারবে না। অন্যদিকে এমফিল শিক্ষার্থীদের ভোটার ও প্রার্থীর যোগ্যতা না দিয়ে আমাদের মাইনাস করা ছিল মাস্টারপ্ল্যান—আর সেই মাস্টারপ্ল্যান সফল হয়েছে।’

প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মোস্তফা হাসানের সভাপতিত্বে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন উপাচার্য রেজাউল করিম, প্রক্টর, সিন্ডিকেটের সদস্য, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ ও হল শিক্ষার্থী সংসদ নির্বাচন ২০২৫-এর নির্বাচন কমিশনার এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে সক্রিয় বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ