গাজীপুরের শ্রীপুরে একটি পাইপ কারখানায় ডাকাতির সময় ছয়জনকে আটক করে পিটুনি দিয়েছেন এলাকাবাসী। পরে তাঁদের পুলিশে সোপর্দ করা হয়। গতকাল সোমবার রাত পৌনে ১১টার দিকে উপজেলার সাতখামাইর গ্রামের পিপিএস প্লাস্টিক পাইপ ইন্ডাস্ট্রিজে ঘটনাটি ঘটে।

আটক ব্যক্তিদের বাড়ি ময়মনসিংহ, নরসিংদী, চাঁদপুর, বগুড়া ও নওগাঁ জেলায়। তাঁদের বয়স ২১ থেকে ৪৫ বছরের মধ্যে।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, উৎপাদন বন্ধ থাকা কারখানাটিতে কেবল দুজন নিরাপত্তা প্রহরী থাকেন। তিনতলায় থাকেন একটি ব্যাংকের এক কর্মকর্তা। তিনি সন্দেহজনক গতিবিধি দেখে স্থানীয় এক বাসিন্দা ও পুলিশকে খবর দেন।

স্থানীয় বাসিন্দা জাহাঙ্গীর আলম ঘটনার বর্ণনা দিয়ে বলেন, গতকাল রাত পৌনে ১১টার দিকে ১০ থেকে ১২ জনের একটি দল কারখানার ফটক টপকে ভেতরে ঢোকে। আরও কয়েকজন একটি ট্রাক নিয়ে কারখানার বাইরের সড়কে অবস্থান করছিলেন। ব্যাংকের ওই কর্মকর্তা বিষয়টি শ্রীপুর থানার পুলিশ ও স্থানীয় মো.

শহীদ নামের এক ব্যক্তিকে জানান। ডাকাত দলের সদস্যরা নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা মকবুল হোসেনকে মারধর করে তাঁর হাত-পা বেঁধে ফেলেন। এরপর তাঁরা লুটপাট শুরু করেন। ব্যাংক কর্মকর্তার কাছে খবর পেয়ে খুব দ্রুত আশপাশের লোকজনকে নিয়ে ঘটনাস্থলে আসেন মো. শহীদ ও তাঁর স্বজনেরা। পরে তাঁদের সঙ্গে যোগ দেন এলাকাবাসী। তাঁরা কারখানা ঘেরাও করেন। এ সময় কারখানা ভেতর থেকে ডাকাত দলের ছয়জন পেছন দিক দিয়ে পালানোর চেষ্টা করেন। পরে স্থানীয় লোকজন কারখানায় ঢুকে ওই ছয়জনকে পিটুনি দেন। এ সময় পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। পরে ছয়জনকে পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়।

শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুল বারিক বলেন, ডাকাত দলের দুজন দেয়াল টপকে পালাতে গিয়ে আহত হন। তাঁদের গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাকি চারজন পুলিশি হেফাজতে আছেন। তাঁদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: কর মকর ত

এছাড়াও পড়ুন:

ট্রেনের ছাদে ভ্রমণকালে বৈদ্যুতিক লাইনের নেটের আঘাতে নিহত ১, আহত ৫

টাঙ্গাইলে ট্রেনের ছাদে অবৈধভাবে ভ্রমণের সময় বৈদ্যুতিক সঞ্চালন লাইনের নেটের সঙ্গে ধাক্কা লেগে একজন নিহত ও পাঁচজন আহত হয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত ব্যক্তির নাম রিপন আলী (৩৭)। তিনি রাজশাহীর পবা উপজেলার কালিয়ানপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। আহতদের মধ্যে অজ্ঞাতপরিচয়ের এক ব্যক্তি টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

রেলওয়ে পুলিশের টাঙ্গাইল ফাঁড়ির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হারুন অর রশীদ জানান, ঢাকা থেকে রাজশাহীগামী আন্তনগর সিল্কসিটি এক্সপ্রেস ট্রেনটি বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টার দিকে টাঙ্গাইল স্টেশনে পৌঁছানোর পর ছাদে রক্তাক্ত অবস্থায় ছয়জনকে পাওয়া যায়। আহত যাত্রীরা পুলিশকে জানান, তাঁরা ঢাকা থেকে ট্রেনের ছাদে উঠেছিলেন। টাঙ্গাইল স্টেশনে পৌঁছানোর ১৫–২০ মিনিট আগে রেলপথের ওপর দিয়ে অতিক্রম করা একটি বৈদ্যুতিক সঞ্চালন লাইনের নিচের নেটের সঙ্গে ধাক্কা লেগে তাঁরা আহত হন।

আহত ছয়জনকে পুলিশ উদ্ধার করে টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ১০টার দিকে রিপন আলীর মৃত্যু হয়। আহতদের মধ্যে আশরাফুলকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। আহত আমিরুল ইসলাম (২৫), আলিম (২৫) ও ফয়সাল (২৭) চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। অজ্ঞাতপরিচয়ের এক কিশোর (১৫–১৬) এখনো টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের ৬ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন। দুপুরে গিয়ে দেখা যায়, তার হাতে ব্যান্ডেজ বাঁধা অবস্থায় শুয়ে আছে। কর্তব্যরত নার্স জানান, ছেলেটি কথা বলতে পারছে না।

এদিকে নিহত রিপন আলীর রাজশাহীর বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। আজ শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে কালিয়ানপাড়া গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, বাড়ির ভেতরে স্বজন ও প্রতিবেশীরা আহাজারি করছেন। বাইরে রিপনের দাফনের জন্য কবর খোঁড়া হচ্ছে, কেউ বাঁশ কাটছেন।

রিপনের বাবা ইসরাফিল হোসেন জানান, রিপন ঢাকার একটি ইলেকট্রনিকস কোম্পানিতে চাকরি করত। কয়েক মাস আগে চাকরি ছেড়ে দিয়ে নতুন কাজ খুঁজছিল। গত বুধবার (২৯ অক্টোবর) দুপুরে কাউকে কিছু না বলে বাড়ি থেকে বের হয়। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় টাঙ্গাইল হাসপাতাল থেকে রিপনের মোবাইল নম্বর ব্যবহার করে তার ছোট ছেলের ফোনে যোগাযোগ করা হয়। তখনই তাঁরা জানতে পারেন, রিপন ট্রেন দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ট্রেনের ছাদে ভ্রমণকালে বৈদ্যুতিক লাইনের নেটের আঘাতে নিহত ১, আহত ৫