যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প স্থানীয় সময় গতকাল বৃহস্পতিবার এক নির্বাহী আদেশে বিভিন্ন দেশ থেকে তাঁর দেশের আমদানি করা পণ্যে নতুন পাল্টা শুল্ক আরোপ করেছেন। এর মধ্যে অসম বাণিজ্যিক সম্পর্কের কারণে কিছু দেশের ওপর উচ্চ হারে শুল্ক বসিয়েছেন তিনি।

জেনে নেওয়া যাক, কোন কোন দেশের ওপর বেশি শুল্ক বসানো হয়েছে এবং সেসব দেশের শুল্কহার কত:

সিরিয়ার ওপর সবচেয়ে বেশি শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। দেশটির নতুন শুল্কহার ৪১ শতাংশ। ১৪ বছরের দীর্ঘ গৃহযুদ্ধের ধ্বংসস্তূপ থেকে সদ্য উঠে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে সিরিয়া। এ সময় দেশটির জন্য এ উচ্চ শুল্কহার বড় আঘাত।

পরের অবস্থানে রয়েছে লাওস ও মিয়ানমার। উভয় দেশের ওপর ৪০ শতাংশ হারে শুল্ক আরোপ করা হয়েছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, ট্রাম্পের এ সিদ্ধান্ত এশিয়ার অর্থনীতিতে নতুন চাপ সৃষ্টি করবে, বিশেষ করে যেসব দেশ আগে থেকেই রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকটে আছে।

সুইজারল্যান্ড থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর ৩৯ শতাংশ শুল্ক বসানো হয়েছে। এটি একমাত্র উন্নত অর্থনীতির দেশ, যেটির ওপর ট্রাম্প প্রশাসন এত উচ্চ হারে শুল্ক আরোপ করলেন। দেশটি যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক অংশীদারও।

সুইজারল্যান্ড থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর ৩৯ শতাংশ শুল্ক বসানো হয়েছে। এটি একমাত্র উন্নত অর্থনীতির দেশ, যেটির ওপর ট্রাম্প প্রশাসন এত উচ্চ হারে শুল্ক আরোপ করলেন। দেশটি যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক অংশীদারও।

এদিকে কানাডার পণ্যের ওপর আমদানি শুল্ক ২৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৩৫ শতাংশ করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কোনো বাণিজ্য চুক্তি না হওয়ায় দেশটির ওপর এ শুল্ক আজ শুক্রবার থেকে কার্যকর হয়ে গেছে।

মধ্যপ্রাচ্যের আরেক গুরুত্বপূর্ণ দেশ ইরাক ও ইউরোপের সার্বিয়ার ওপরও ৩৫ শতাংশ হারে শুল্ক বসানো হয়েছে।

অন্যদিকে চারটি দেশের ওপর ৩০ শতাংশ হারে শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। দেশগুলো হলো আলজেরিয়া, বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা, লিবিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকা।

ঠিক আছে। তাহলে ওনার (ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট) যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ব্যবসা করতে হবে না। আমার এতে কোনো সমস্যা নেই।ডোনাল্ড ট্রাম্প, মার্কিন প্রেসিডেন্ট

ডোনাল্ড ট্রাম্প এনবিসি নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, তাঁর নতুন শুল্কনীতির বাস্তবায়ন ‘খুব ভালোভাবে, খুব মসৃণভাবে’ চলছে।

ট্রাম্প বলেন, যেসব দেশ এখনো যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি করেনি, তাদের জন্য ‘অনেক দেরি হয়ে গেছে’। তবে তিনি আরও বলেন, এমন নয় যে কেউ চার সপ্তাহ পর এসে কোনো ধরনের চুক্তির প্রস্তাব দেবে না। সেটা হতেই পারে।

আরও পড়ুনভারতের ৬ প্রতিষ্ঠানের ওপর ট্রাম্পের নিষেধাজ্ঞা, ইরানের পণ্যের বাণিজ্যে জড়িত থাকার অভিযোগ ৩১ জুলাই ২০২৫

সাক্ষাৎকারে ট্রাম্পকে জিজ্ঞাসা করা হয়, তাঁর শুল্কের কারণে মার্কিন ভোক্তাদের জন্য পণ্যের দাম বাড়ছে কি না। উত্তরে ট্রাম্প বলেন, শুধু একটা জায়গায় দাম বাড়ছে। তা হলো শত শত বিলিয়ন ডলার এখন যুক্তরাষ্ট্রের কোষাগারে ঢুকছে।

ট্রাম্পকে জিজ্ঞাসা করা হয়, ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দ্য সিলভা তাঁর শুল্কনীতির বিরোধিতা করছেন, এ বিষয়ে তাঁর মন্তব্য কী। জবাবে ট্রাম্প বলেন, ‘ঠিক আছে। তাহলে ওনার যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ব্যবসা করতে হবে না। আমার এতে কোনো সমস্যা নেই।’

ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, তিনি কানাডার সঙ্গে বাণিজ্য আলোচনা চালিয়ে যেতে আগ্রহী। তবে তিনি সতর্ক করেছেন, নতুন ৩৫ শতাংশ শুল্ক কার্যকর হওয়ার আগে আর কোনো চুক্তির সুযোগ নেই।

ট্রাম্পকে জিজ্ঞাসা করা হয়, তাঁর শুল্কের কারণে মার্কিন ভোক্তাদের জন্য পণ্যের দাম বাড়ছে কি না। উত্তরে ট্রাম্প বলেন, শুধু একটা জায়গায় দাম বাড়ছে। তা হলো শত শত বিলিয়ন ডলার এখন যুক্তরাষ্ট্রের কোষাগারে ঢুকছে।

ট্রাম্প বলেন, তিনি আজ রাতেই কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নির সঙ্গে ফোনে কথা বলার কথা ভাবছেন।

হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, কানাডার ওপর উচ্চ শুল্ক আরোপের কারণ হচ্ছে, তারা যুক্তরাষ্ট্রে ভয়ানক মাদক ফেন্টানিলের অব্যাহত প্রবাহ ঠেকাতে সহযোগিতা করতে ব্যর্থ হয়েছে। তবে কানাডার বাণিজ্য ব্যুরো এ অভিযোগ সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেছে।

আরও পড়ুনকোন দেশে কত শুল্ক বসালেন ট্রাম্প৩ ঘণ্টা আগেআরও পড়ুনবাণিজ্যবিরোধ: ভারত কেন ট্রাম্পের নিশানায়২৬ মিনিট আগে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ট র ম প বল ন ত দ র জন য শ ল ক বস ন দ শ র ওপর আমদ ন

এছাড়াও পড়ুন:

জকসুতে এআই ব্যবহারে থাকবে শিথিলতা, তবে অপব্যবহার করা যাবে না: নির্বাচন কমিশন

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জকসু) নির্বাচনে এআই (কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা) ব্যবহারে শিথিলতা থাকবে। তবে এর অপব্যবহার করা যাবে না বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনের সদস্য জুলফিকার মাহমুদ।

রোববার উপাচার্যের সভাকক্ষে রাজনৈতিক ও সক্রিয় সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত জকসু ও হল সংসদ নির্বাচন-২০২৫-এর আচরণবিধিবিষয়ক মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।

ছাত্রশক্তির আহ্বায়ক ফয়সাল মুরাদের এক দাবির জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন। এর আগে ফয়সাল মুরাদ বলেন, ‘নির্বাচনী আচরণবিধির ৭–এর ঘ ধারায় বলা হয়েছে, নির্বাচনী প্রচারণায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই ব্যবহার করা যাবে না। আমরা যারা ছোট সংগঠন, আমাদের তহবিল সীমিত। আমরা নির্বাচনী প্রচারের জন্য এআই ব্যবহার করে দু-এক মিনিটের ভিডিও বানিয়ে প্রচার কার্যক্রম চালাতে চাই। আমাদের দাবি, এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশন যেন শিথিল নীতি গ্রহণ করে।’

মুরাদ আরও বলেন, বিগত চারটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচনে কিছু ত্রুটি লক্ষ করা গেছে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জকসু) নির্বাচনকে স্বচ্ছ, সুষ্ঠু ও বিতর্কমুক্ত রাখার জন্য যতগুলো ভোটকক্ষ থাকবে, সব কটি সিসিটিভি ফুটেজের আওতায় রাখতে হবে। সবার জন্য সেই সিসিটিভি ফুটেজ উন্মুক্ত রাখতে হবে। ভোট গ্রহণকে স্বচ্ছ রাখার জন্য ভোটকক্ষের ভেতরে জাতীয় গণমাধ্যমকে সরাসরি সম্প্রচার করার অনুমতি দেওয়ার কথা বলেন তিনি।

দাবির পরিপ্রেক্ষিতে জকসুর নির্বাচন কমিশনার জুলফিকার মাহমুদ বলেন, ‘এআই ব্যবহার করে বিভিন্নজনের চরিত্র হনন করা হয়, অপপ্রচার চালানো হয়। সেদিক থেকে চিন্তা করে এআই ব্যবহার নিষিদ্ধ রেখেছিলাম। তোমাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এআই ব্যবহারে শিথিলতা থাকবে প্রচার–প্রসারে, তবে অপব্যবহার করা যাবে না। আর সরাসরি সম্প্রচারের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে আলোচনা করে।’

প্রধান নির্বাচন কমিশনার মোস্তফা হাসানের সভাপতিত্বে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপাচার্য রেজাউল করিম, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ ও হল শিক্ষার্থী সংসদ নির্বাচন ২০২৫–এর নির্বাচন কমিশনার ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্রিয়াশীল সংগঠন ও রাজনৈতিক সংগঠনের নেতারা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ