কক্সবাজারে ট্রেনের ধাক্কায় ৫ জনের মৃত্যুর পর বিক্ষুব্ধ জনতা আটকে রেখেছে সৈকত এক্সপ্রেস
Published: 2nd, August 2025 GMT
কক্সবাজারের রামু উপজেলার রশিদনগর এলাকায় ট্রেনের ধাক্কায় অটোরিকশার চালক ও চার যাত্রীর মৃত্যুর ঘটনায় বিক্ষুব্ধ জনতা রেললাইন অবরোধ করেছে। এতে চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে যাওয়া কক্সবাজারগামী সৈকত এক্সপ্রেস ট্রেন আটকে পড়েছে। আজ শনিবার বেলা দুইটা থেকে বিকেল সাড়ে চারটায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত দুর্ঘটনাস্থল রশিদনগরের ধলিরছড়া রেলক্রসিংয়ে ট্রেনটি আটকে রাখে বিক্ষোভকারীরা। আটকে পড়া ট্রেনের যাত্রীদের নিরাপত্তা দিতে ও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে প্রশাসনের কর্মকর্তা, পুলিশ, বিজিবি, র্যাব ও সেনাবাহিনী সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়েছেন।
এর আগে বেলা দেড়টার দিকে রামুর রশিদনগর রেলক্রসিংয়ে কক্সবাজার থেকে ঢাকাগামী ট্রেনের ধাক্কার অটোরিকশার চালক ও চার যাত্রী নিহত হন। নিহত চারজনই একই পরিবারের সদস্য।
রামু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.
রশিদনগর ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আবদুল মালেক বলেন, দুপুরে কক্সবাজার আইনিক রেলস্টেশন থেকে ছেড়ে আসা ট্রেনটি ধলিরছড়া রেলক্রসিং এলাকায় পৌঁছায়। এ সময় ভারুয়াখালী থেকে রামুমুখী একটি যাত্রীবাহী অটোরিকশা রেলক্রসিং অতিক্রম করছিল। ট্রেনের ধাক্কায় অটোরিকশাটি অনেক দূর ছিটকে পড়ে ও চালকসহ পাঁচজন নিহত হন।
আবদুল মালেক আরও বলেন, রামুর কালিরছড়া গ্রামে নিহত রেণু আরার শ্বশুরবাড়ি। অটোরিকশা নিয়ে রেণু আরা ছোট বোন আসমা ও দুই ছেলে নিয়ে বাপের বাড়ি থেকে শ্বশুরবাড়ি ফিরছিলেন। দুর্ঘটনার পরপর ট্রেনটি গন্তব্যে চলে গেলেও বিক্ষুব্ধ জনতা চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজারগামী সৈকত এক্সপ্রেস ট্রেনটি দুর্ঘটনাস্থলে আটকে রেখেছে। এ সময় রেললাইনে উঠে চেকপোস্ট স্থাপনের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করে করে জনতা।
কক্সবাজার জেলা পুলিশের মুখপাত্র ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) মো. জসীম উদ্দিন চৌধুরী বলেন, আটকে রাখা ট্রেনটির যাত্রীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ও ট্রেনের সামনে জড়ো হওয়া লোকজনকে সরানোর চেষ্টা চালাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: দ র ঘটন ট র নট ল রছড়
এছাড়াও পড়ুন:
নরসিংদীতে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষ, গুলিতে বৃদ্ধ নিহত
নরসিংদীতে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে স্থানীয় বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষের সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে এক বৃদ্ধ নিহত হয়েছেন। এ সময় গুলিবিদ্ধসহ আহত হয়েছেন অন্তত পাঁচজন। আজ বৃহস্পতিবার ভোর পাঁচটার দিকে সদর উপজেলার মুরাদনগর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত ব্যক্তির নাম মো. ইদন মিয়া (৬০)। তিনি মুরাদনগর এলাকার বাসিন্দা। গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত ব্যক্তিদের মধ্যে নরসিংদী সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগ থেকে মোস্তাকিম (৩০) ও আবুল হোসেন (৬০) নামের দুজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ, স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা ও হতাহত ব্যক্তিদের স্বজনদের সূত্রে জানা গেছে, ৫ আগস্টের পর আলোকবালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের অধিকাংশ নেতা-কর্মী আত্মগোপনে গেলে সেখানে বিএনপির দুটি পক্ষকে সক্রিয় হতে দেখা যায়। একটি পক্ষে ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক শাহ আলম চৌধুরী এবং আরেক পক্ষে সদ্য বহিষ্কৃত সদস্যসচিব আবদুল কাইয়ুম মিয়া নেতৃত্ব দেন। মেঘনা নদী থেকে অপরিকল্পিতভাবে বালু তোলাসহ নানা অভিযোগে সম্প্রতি দলীয় পদ থেকে বহিষ্কৃত হন আবদুল কাইয়ুম। স্থানীয় বিএনপির রাজনীতিতে তাঁর সক্রিয় থাকার বিষয়টি মানতে পারছিল না শাহ আলম পক্ষ।
অভিযোগ আছে, আবদুল কাইয়ুমকে ঠেকাতে শাহ আলম চৌধুরীর ইন্ধন ও হস্তক্ষেপে আওয়ামী নেতা-কর্মীদের আবার এলাকায় ফেরানোর পরিকল্পনা করা হয়। এর অংশ হিসেবে আজ ভোর পাঁচটার দিকে ইঞ্জিনচালিত নৌকায় করে এলাকায় ফিরতে শুরু করে আত্মগোপনে থাকা স্থানীয় আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা-কর্মী। এ খবর পেয়ে আবদুল কাইয়ুমের সমর্থকেরা বাধা দেয়। এ সময় উভয় পক্ষ টেঁটা, আগ্নেয়াস্ত্র ও দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে ইদন মিয়াসহ অন্তত ছয়জন গুলিবিদ্ধ হন। আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে নরসিংদী সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে ইদন মিয়াকে মৃত ঘোষণা করেন জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নরসিংদী সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ফরিদা গুলশানারা কবীর। তিনি জানান, ইদন মিয়াকে বুকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় আনায় হয়। ওই সময় তিনি মৃত ছিলেন। মরদেহ এই হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে শাহ আলম চৌধুরী ও আবদুল কাইয়ুম মিয়ার ব্যবহৃত মুঠোফোন নম্বরে একাধিকবার কল দিলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।
নরসিংদী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ এমদাদুল হক বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।