নিজের বক্তব্য, আচরণ কিংবা শব্দ চয়নে কেউ কষ্ট পেয়ে থাকলে তার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন বিএনপির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা।
ফেসবুকে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতা হাসনাত আবদুল্লাহকে নিয়ে তীর্যক মন্তব্য করার পর শুরু হয় আলোচনা-সমালোচনা। এর দুদিন পর কারও নাম উল্লেখ না করেই নিজের বক্তব্যর জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন রুমিন ফারহানা।
বুধবার (২৭ আগস্ট) একটি বেসরকারি টেলিভিশনের টক শোতে অংশ নিয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, “আমার কথায়, আমার অযৌক্তিক কোনো ব্যবহারে, অযৌক্তিক কোনো শব্দ চয়নে যদি কেউ কষ্ট পেয়ে থাকেন ডেফিনেটলি আমি দুঃখিত।”
নির্বাচন কমিশনে সীমানা পুর্ননির্ধারণ নিয়ে শুনানি চলাকালে তার কর্মী ও অনুসারীদের সঙ্গে এনসিপির নেতাকর্মীদের মারামারির জেরে সোমবার রাতে ফেইসবুকে এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ'র ‘ছাত্রলীগ সংযোগ’ তুলে ধরে একটি পোস্ট দেন তিনি।
একই পোস্টে ২০২০ সালের ১৮ মার্চ দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে হাসনাতের লেখা, ২০২০ সালের ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন উপলক্ষে হাসনাতের দেওয়া পোস্ট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আখতারুজ্জামানের সঙ্গে হাসনাতের ছবি ছবি যুক্ত করে তাকে ‘ফকিন্নির বাচ্চা’ বলে মন্তব্য করেন। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকে সমালোচনা করেন।
বুধবার টিভির ওই আলোচনায় রুমিন ফারহানা বলেন, “আমি যদি নিজেকে আরো নিয়ন্ত্রণ করতে পারতাম, আরো ভালো হত৷ কিন্তু দিন শেষেতো আমি একজন মানুষ। একজন মানুষের ধৈর্যেরও একটা সীমা থাকে। বহুদিন ধরে কেউ যদি ট্রলড হতেই থাকে, একটা সময় মনে হয় জবাব দেই। সেটা না হলেই ভালো।”
রাজনীতিবিদদের জীবন সহজ নয় মন্তব্য করে রুমিন বলেন, “রাজনতিবিদদের লাইফ একেবারেই স্মুথ না, নারী রাজনতিবিদের লাইফ আরও স্মুথ না, আর ভোকাল নারী রাজনতিবিদদের লাইফ একেবারেই স্মুথ না। সবমিলিয়ে বিবেচনা করলে মনে হয়, আমি তো ভালোই আছি।“
গত রবিবার নির্বাচন ভবনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ২ ও ৩ সংসদীয় আসনের সীমানা পুর্ননিধারণের শুনানিতে মারামারির এ ঘটনা ঘটে।
সেদিন খসড়া সীমানা নিয়ে দাবি-আপত্তির শুনানি শুরু করে (ইসি)। এক পর্যায়ে বিএনপি ও এনসিপির প্রতিনিধিরা উত্তেজিত হয়ে পড়েন এবং মারামারিতে জড়িয়ে পড়েন।
শুনানিতে বিএনপির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক রুমিন ফারহানা ইসির খসড়ার পক্ষে যুক্তি তুলে ধরেন। এরপর খসড়ার বিপক্ষে যুক্তি তুলে ধরছিলেন এনসিপির যুগ্ম মুখ্য সংগঠক মোহাম্মদ আতাউল্লাহ। এর মধ্যে সেখানে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়ে দুই পক্ষে।
পরে হাসনাত সংবাদ সম্মেলনে রুমিন ফারহানাকে ‘বিএনপির আওয়ামী লীগ বিষয়ক সম্পাদক’ বলে আখ্যা দিয়ে বক্তব্য দেন।
এর জবাবে সোমবার রাতে ফেইসবুকে হাসনাতের ‘ছাত্রলীগ সংযোগ’ তুলে ধরে কয়েকটি ছবি পোস্ট দিয়ে এই এনসিপি নেতাকে 'ফকিন্নির বাচ্চা' বলে মন্তব্য করেন রুমিন ফারহানা।
তবে রুমিন ফারহানাকে সাইবার বুলিং করা হচ্ছে জানিয়ে হাসনাত আবদুল্লাহ সবাইকে এ ধরনের চর্চা থেকে বেরিয়ে আসার আহ্বান জানান।
গত মঙ্গলবার এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “রুমিন ফারহানাকে সাইবার বুলিং করা হচ্ছে। বিভিন্নভাবে ওনাকে নিয়ে বাজে মন্তব্য করা হচ্ছে। কোনো ব্যক্তিগত বা রাজনৈতিক মতপার্থক্যের কারণে একজন নারীকে নিয়ে বাজে মন্তব্য করা, চরিত্র হনন করা-এসব থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।”
সেখানে হাসনাত আবদুল্লাহকে নিয়ে রুমিন ফারহানার পোস্ট প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “কুৎসা; ব্যক্তিগত কুৎসা, তারপরে হচ্ছে ভিন্নমত দমন, ব্যক্তিগত চরিত্রহনন—এই বিষয়গুলো হচ্ছে গণতন্ত্রের শত্রু। ৫ আগস্টের পূর্বে যে ক্রিয়াশীল রাজনৈতিক দলগুলো রাস্তায় নেমে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে, সেটি ধরে রাখতে হবে।”
ঢাকা/ইভা
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র ম ন ফ রহ ন হ সন ত র এনস প র ব এনপ র
এছাড়াও পড়ুন:
সংগীতশিল্পী দীপ মারা গেছেন
রাস্টফ ব্যান্ডের ভোকাল আহরার মাসুদ মারা গেছেন। সেমাবার (১৫ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। ভক্তদের কাছে দীপ নামে পরিচিত ছিলেন আহরার মাসুদ।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সকাল ৮টায় ব্যান্ডের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে এ তথ্য জানানো হয়। তবে এ শিল্পীর মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে কিছু জানা যায়নি।
আরো পড়ুন:
৫০ শয্যার থানচি হাসপাতাল চলছে একজন চিকিৎসকে
সিজেএফবি পারফরম্যান্স অ্যাওয়ার্ড ঘোষণা
রাস্টফ ব্যান্ডের ফেসবুক পেজে দীপের মৃত্যুর খবর জানিয়ে লেখা হয়, “এমন এক বেদনাদায়ক মুহূর্তে সঠিক শব্দ খুঁজে পাওয়া বা কোনো শব্দ খুঁজে পাওয়া—প্রায় অসম্ভব। প্রিয় ভোকালিস্ট, বন্ধু ও সহযাত্রী আহারার ‘দীপ’ মাসুদের মৃত্যুসংবাদ আমাদের স্তম্ভিত করেছে। আমরা শোকে ভেঙে পড়েছি, এখনো অবিশ্বাসের ভেতর ডুবে আছি। গত রাতেই তিনি আমাদের ছেড়ে চিরবিদায় নিয়েছেন।”
দীপের শূন্যতা ব্যাখ্যা করে লেখা হয়, “তার পরিবার, বন্ধু ও প্রিয়জনদের প্রতি আমাদের অন্তরের সমবেদনা ও প্রার্থনা। আপনাদের মতো আমরাও এই অপূরণীয় ক্ষতি বোঝার চেষ্টা করছি, চেষ্টা করছি দীপের অসাধারণ প্রতিভাকে সম্মান জানাতে এবং তার চেয়েও বড় কথা—মানুষ হিসেবে তিনি আমাদের কাছে যে অমূল্য ছিলেন, তাকে স্মরণ করতে। এই কঠিন সময়ে সবার কাছে অনুরোধ, দয়া করে পরিবার ও কাছের মানুষদের ব্যক্তিগত পরিসরকে সম্মান করুন এবং তার আত্মার শান্তির জন্য প্রার্থনা করুন। শান্তিতে ঘুমাও, দীপ। তোমার শূন্যতা চিরকাল বেদনাময় হয়ে থাকবে।”
তরুণদের কাছে জনপ্রিয় আরেকটি ব্যান্ড পাওয়ারসার্চও দীপের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছে। ব্যান্ডের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে লেখা হয়েছে, “স্মরণ করছি আহরার মাসুদ দীপকে। কিছুক্ষণ আগে আমরা হারিয়েছি আমাদের প্রিয় ভাই, ঘনিষ্ঠ বন্ধু এবং এক সত্যিকারের শিল্পীকে। এক্লিপস, কার্ল, ক্যালিপসো ও সবশেষ রাস্টফ ব্যান্ডের অবিস্মরণীয় কণ্ঠ আহরার মাসুদ দীপ আমাদের মাঝে আর নেই। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।”
পাওয়ারসার্চ আরো লেখেন, “আহরার মাসুদ দীপ শুধু একজন ভোকালিস্টই ছিলেন না, তিনি ছিলেন শক্তি, সৃজনশীলতা আর আবেগের প্রতীক, যিনি তার চারপাশের সবাইকে অনুপ্রাণিত করেছেন; একই সাথে তার অত্যন্ত নমনীয় ব্যবহার, যা সবাইকে তাঁর শুভাকাঙ্ক্ষীই করে ফেলত! শান্তিতে থাকো ভাই, তুমি সব সময় আমাদের গল্পের অংশ হয়ে থাকবে।”
ঢাকা/শান্ত